গুরুকে শ্রদ্ধেয় হতে হবে শিষ্যের কাছে। – বক্তা কে? মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।

“গুরুকে শ্রদ্ধেয় হতে হবে শিষ্যের কাছে।” এই উক্তিটি দশম বাংলা সহায়ক পাঠ কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। “গুরুকে শ্রদ্ধেয় হতে হবে শিষ্যের কাছে।’ – বক্তা কে? মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।” এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যান্ত গুরুত্তপূর্ণ। কোনি উপন্যাসের এই রচনাধর্মী প্রশ্নটি তৈরী করে গেলে মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় একটি ৫ নম্বরের পাওয়া যেতে পারে।

দশম বাংলা সহায়ক পাঠ “কোনি” উপন্যাসের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ কর্তৃক উচ্চারিত “চ্যাম্পিয়ন তৈরি হতে হলে শুধু খাওয়া-দাওয়া বা অনুশীলনই যথেষ্ট নয়, মন-মানসিকতা বুঝে শেখাতে হয়” এই উক্তিটির প্রেক্ষাপট নিম্নরূপ:

গোষ্ঠী-রাজনীতির শিকার: জুপিটার সুইমিং ক্লাবের সাথে ক্ষিতীশ সিংহের প্রায় ৩৫ বছরের সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও তিনি ক্লাবের গোষ্ঠী-রাজনীতির শিকার হন। তার বিশ্বস্ত অনুগামী ভেলোর কাছে তিনি জানান যে তার বিরুদ্ধে ক্লাবের ছেলেদের দিয়ে অভিযোগপত্র লেখানো হয়েছে।

ক্ষিতীশের বিরুদ্ধে অভিযোগ: হরিচরণ মিত্র এবং তার দলের অভিযোগ ছিল যে ক্ষিতীশ সিংহ ক্লাবের সাঁতারুদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। ক্ষিতীশ কঠোর মেজাজের মানুষ হলেও একজন নিবেদিতপ্রাণ প্রশিক্ষক। তিনি জানতেন যে হরিচরণের ইচ্ছা ক্লাবের প্রধান প্রশিক্ষক হওয়ার।

ক্ষিতীশের প্রতিক্রিয়া: ক্ষিতীশ হরিচরণকে বোঝান যে চ্যাম্পিয়ন তৈরি করতে শুধু খাওয়া-দাওয়া বা অনুশীলনই যথেষ্ট নয়। একজন সাঁতারুর মন-মানসিকতা বুঝে তাকে শেখাতে হয়। একজন প্রশিক্ষককে মনস্তাত্ত্বিকের মতো সাধারণজ্ঞান প্রয়োগ করে শিষ্যের কাছে গুরু হয়ে উঠতে হবে। গুরুর কথা শিষ্য তখন বেদবাক্যের মতো গ্রহণ করবে এবং গুরুর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। শিষ্যকে জয়ের জন্য অনুপ্রাণিত করে তুলতে পারলেই একজন প্রকৃত প্রশিক্ষক হিসেবে গড়ে উঠা সম্ভব। ক্ষিতীশ মনে করেন হরিচরণের মধ্যে এই গুণাবলী নেই।

এই উক্তির মাধ্যমে ক্ষিতীশ একজন প্রকৃত প্রশিক্ষকের গুণাবলী ব্যাখ্যা করেন এবং হরিচরণের প্রশিক্ষক হিসেবে অযোগ্যতা প্রমাণ করেন।

গুরুকে শ্রদ্ধেয় হতে হবে শিষ্যের কাছে। - বক্তা কে? মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।

“গুরুকে শ্রদ্ধেয় হতে হবে শিষ্যের কাছে।” – বক্তা কে? মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।

বক্তা – মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন।

প্রেক্ষাপট –

  • গোষ্ঠী-রাজনীতির শিকার – জুপিটার সুইমিং ক্লাবের সঙ্গে ক্ষিতীশ সিংহের প্রায় পঁয়ত্রিশ বছরের সম্পর্ক। অথচ এই মানুষটিই ক্লাবের গোষ্ঠী-রাজনীতির শিকার হন। বিশ্বস্ত অনুগামী ভেলোর সঙ্গে ক্ষিতীশের কথা থেকে জানা যায়, তাঁর বিরুদ্ধে ক্লাবের ছেলেদের দিয়ে অভিযোগপত্র লেখানো হয়েছে।
  • ক্ষিতীশের বিরুদ্ধে অভিযোগ – হরিচরণ মিত্র এবং তাঁর দলের অভিযোগ ছিল ক্ষিতীশ সিংহ ক্লাবের সাঁতারুদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করে থাকেন। আসলে ক্ষিতীশ কড়া মেজাজের মানুষ। সাঁতার প্রশিক্ষক হিসেবে তিনি ছাত্র তথা শিষ্যের প্রবল কৃচ্ছ্রসাধনে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি জানতেন যে, হরিচরণের ইচ্ছা ক্লাবের প্রধান প্রশিক্ষক হওয়ার।
  • ক্ষিতীশের প্রতিক্রিয়া – কথা প্রসঙ্গেই ক্ষিতীশ হরিচরণকে বলেছিলেন যে চ্যাম্পিয়ন শুধু খাওয়াদাওয়া বা অনুশীলন দ্বারা তৈরি করা যায় না। একজন সাঁতারুর মন-মানসিকতা বুঝে তাকে শেখাতে হয়। একজন প্রশিক্ষককে মনস্তাত্ত্বিকের মতো সাধারণজ্ঞান প্রয়োগ করে শিষ্যের কাছে গুরু হয়ে উঠতে হবে। গুরুর কথা শিষ্য তখন বেদবাক্যের মতো গ্রহণ করবে। গুরু শিষ্যের কাছে হবেন শ্রদ্ধেয়। শিষ্যকে তিনি জয়ের জন্য অনুপ্রাণিত করে তুলবেন। তবেই যথার্থ প্রশিক্ষক হয়ে ওঠা সম্ভব হবে। হরিচরণের পক্ষে তা সম্ভব নয় জানিয়েই আলোচ্য মন্তব্যটি করেন ক্ষিতীশ।

আরও পড়ুন, আমাকে রাগালে কী হয়, এবার বুঝলি তো। – কে, কাকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলেছে? কোন্ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মন্তব্যটি করা হয়েছে?

উপসংহারে বলা যায়, “চ্যাম্পিয়ন তৈরি হতে হলে শুধু খাওয়া-দাওয়া বা অনুশীলনই যথেষ্ট নয়, মন-মানসিকতা বুঝে শেখাতে হয়” এই উক্তিটির মাধ্যমে ক্ষিতীশ সিংহ একজন প্রকৃত প্রশিক্ষকের গুণাবলী তুলে ধরেছেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে একজন প্রশিক্ষক শুধুমাত্র সাঁতার কাটার প্রশিক্ষণ দিলেই হবে না, তাকে শিষ্যের মন-মানসিকতা বুঝে তাকে শেখাতে হবে। একজন প্রশিক্ষককে শিষ্যের কাছে গুরু হয়ে উঠতে হবে এবং শিষ্যকে জয়ের জন্য অনুপ্রাণিত করে তুলতে হবে।

ক্ষিতীশের এই উক্তিটি হরিচরণের প্রশিক্ষক হিসেবে অযোগ্যতাকেই প্রমাণ করে। হরিচরণ কেবল খাওয়া-দাওয়া এবং অনুশীলনের উপর জোর দেন, শিষ্যের মন-মানসিকতার দিকে তার কোনও দৃষ্টি নেই।

এই উক্তিটির মাধ্যমে লেখক ক্রীড়াঙ্গনে সাফল্যের জন্য শুধুমাত্র শারীরিক শ্রমের গুরুত্বের উপর নয়, মানসিক শক্তির উপরও জোর দিয়েছেন। একজন সফল ক্রীড়াবিদ হতে হলে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার পাশাপাশি মানসিকভাবেও শক্তিশালী হতে হবে।

Share via:

মন্তব্য করুন