আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে দেখবো যে হিমবাহ কী কী প্রক্রিয়ায় ক্ষয় করে? এই প্রশ্ন দশম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, হিমবাহ কী কী প্রক্রিয়ায় ক্ষয় করে? প্রশ্নটি আপনি পরীক্ষার জন্য তৈরী করে গেলে আপনি লিখে আস্তে পারবেন।
হিমবাহ কী কী প্রক্রিয়ায় ক্ষয় করে?
হিমবাহ সাধারণত দুইভাবে ক্ষয় করে থাকে —
- উৎপাটন – প্রবহমান হিমবাহের চাপে পর্বতের দেহ থেকে পাথর খুলে আসে, একে বলা হয় উৎপাটন বা প্লাকিং।
- অবঘর্ষ – হিমবাহের সঙ্গে যেসব পাথরখণ্ড থাকে সেগুলির সঙ্গে সংঘর্ষে হিমবাহ উপত্যকা বা পর্বতগাত্র ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত এবং মসৃণ হয়, একে বলা হয় অবঘর্ষ।
আরও পড়ুন – হিমবাহ বলতে কী বোঝ?
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
হিমবাহ ক্ষয়কার্য বেশি করে কোন প্রক্রিয়ায়?
হিমবাহ দুভাবে ভূমি ক্ষয় করে:
1. প্লাকিং: বরফের চাপে পাহাড় থেকে পাথর খুলে যায়, খাঁড়াচি তৈরি করে।
2. ঘর্ষণ: হিমবাহের পাথর গুলো পাহাড় ঘষে ক্ষয় করে।
সাধারণত, প্লাকিং বেশি ক্ষয়কারী, কারণ এতে বড় পাথর খুলে পড়ে।
হিমদ্রোনী কি?
হিমদ্রোনী হল বরফের একটি বিশাল স্তর যা সমুদ্রের পানির উপরে ভেসে বেড়ায়। এগুলি সাধারণত মেরু অঞ্চলে, অ্যান্টার্কটিকা এবং গ্রিনল্যান্ডের উপকূলে পাওয়া যায়। হিমদ্রোনী বিভিন্ন আকারের হতে পারে, কয়েক কিলোমিটার থেকে শুরু করে কয়েকশ কিলোমিটার পর্যন্ত।
হিমদ্রোনী তৈরি হয় যখন বরফ ভেঙে সমুদ্রে পড়ে। এই বরফ সমুদ্রের পানির উপরে ভেসে বেড়ায় এবং ধীরে ধীরে একত্রিত হয়ে হিমদ্রোনী তৈরি করে। হিমদ্রোনী স্থির থাকতে পারে, অথবা সমুদ্রের স্রোতের সাথে ভেসে বেড়াতে পারে।
হিমদ্রোনী সমুদ্রের জীববৈচিত্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অনেক প্রাণী, যেমন পেঙ্গুইন এবং সীল, হিমদ্রোনীকে তাদের বাসস্থান এবং শিকারের স্থান হিসেবে ব্যবহার করে। হিমদ্রোনী সমুদ্রের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে।
অবঘর্ষ প্রক্রিয়া কি?
অবঘর্ষ প্রক্রিয়া হলো এক ধরণের ভূ-ক্ষয় প্রক্রিয়া যেখানে বাতাসের মাধ্যমে বহনযোগ্য বালি, ধূলিকণা, এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র কণাগুলো ভূ-পৃষ্ঠের সাথে ঘর্ষণ তৈরি করে ভূমি ক্ষয় করে। এই প্রক্রিয়াটি মরুভূমি এবং শুষ্ক অঞ্চলে বেশি দেখা যায়।
ঝুলন্ত উপত্যকার মধ্য দিয়ে নদী প্রবাহিত হলে কি সৃষ্টি হয়?
ঝুলন্ত উপত্যকার মধ্য দিয়ে নদী প্রবাহিত হলে জলপ্রপাত তৈরি হয়।
পৃথিবীর বৃহত্তম পাদদেশীয় হিমবাহের নাম কি?
পৃথিবীর বৃহত্তম পাদদেশীয় হিমবাহ হল আলাস্কার মালাসপিনা হিমবাহ। এটি 5,000 বর্গ কিলোমিটার (1,900 বর্গ মাইল) এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এবং এর দৈর্ঘ্য 60 কিলোমিটার (37 মাইল) পর্যন্ত। এই হিমবাহ লিয়াকোট উপসাগর থেকে শুরু করে আলাস্কার রাঙ্গেল পর্বতমালার পাদদেশে নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন – নদী ও হিমবাহের কাজের পার্থক্য লেখাে।
আজকের আলোচনায় আমরা হিমবাহের ক্ষয় প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানলাম। আমরা দেখলাম যে হিমবাহ দুটি প্রধান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষয় করে:
- ঘর্ষণ: হিমবাহের নীচে থাকা বরফ ও পাথর খণ্ডগুলি পাহাড়ের পাদদেশের সাথে ঘষা খেয়ে পাহাড়কে ক্ষয় করে।
- প্লাকিং: হিমবাহের চাপে পাহাড়ের দেহ থেকে পাথর খুলে এসে হিমবাহের সাথে মিশে যায়।
এই দুটি প্রক্রিয়া ছাড়াও, হিমবাহের বরফ গলে পানিতে পরিণত হওয়ার ফলেও ক্ষয় ঘটে।
হিমবাহের ক্ষয় প্রক্রিয়া পৃথিবীর ভূ-দৃশ্যের উপর বিরাট প্রভাব ফেলে। হিমবাহের ক্ষয়ের ফলে তৈরি হয় U-আকৃতির উপত্যকা, ঝর্ণা, হিমবাহ হ্রদ, এবং আরও অনেক ভূ-প্রকৃতি।