হিমশৈল কাকে বলে? হিমশৈলের বৈশিষ্ট্য ও সৃষ্টির কারণ

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “হিমশৈল সম্পর্কে টীকা লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “হিমশৈল সম্পর্কে টীকা লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তার দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – হিমবাহের বিভিন্ন কাজ ও তাদের দ্বারা সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

হিমশৈল সম্পর্কে টীকা লেখ।
হিমশৈল সম্পর্কে টীকা লেখ।

হিমশৈল সম্পর্কে টীকা লেখো।

সংজ্ঞা – সমুদ্রের জলে ভাসমান বিশালাকার বরফের চাঁই বা খণ্ডকে হিমশৈল বলে।

বৈশিষ্ট্য –

  • হিমশৈলের 10 ভাগের 1 ভাগ জলের ওপরে এবং বাকি 7 ভাগ জলের নীচে ডুবে থাকে।
  • জলের ঊর্ধ্বচাপ; সমুদ্রস্রোত ও বায়ুপ্রবাহের ফলে মহাদেশীয় হিমবাহের প্রান্তভাগের কিছু অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে হিমশৈল হিসেবে সমুদ্রজলে ভাসতে থাকে।
  • এর দৈর্ঘ্য হয় 1-57 মিটার।
  • হিমশৈলগুলি গলে গেলে গলিত নুড়ি, কাঁকর, পলি সঞ্চিত হয়ে মগ্নচড়ার সৃষ্টি করে।
  • হিমশৈল ভাসতে ভাসতে উষ্ণ স্রোতের নিকটে গেলে সমুদ্রের আকাশে মেঘ-কুয়াশার সৃষ্টি হয়।

সৃষ্টির কারণ – জল জমে বরফে পরিণত হলে তা আয়তনে প্রায় 1/10 ভাগ বৃদ্ধি পায় এবং ঘনত্ব হ্রাস পায়। ফলে বরফ জলে ভাসতে থাকে। মহাদেশীয় হিমবাহগুলি সমুদ্র উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত হলে সমুদ্রের ঢেউ -এর আঘাতে অনেক সময় ভেঙে যায় এবং ভাঙা হিমবাহের অংশ সমুদ্রের জলে ভাসতে থাকে। এভাবে হিমশৈলের উৎপত্তি হয়।

উদাহরণ – ল্যাব্রাডর উপকূলে অবস্থিত এক বৃহৎ আকৃতির হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ‘Titanic’ নামক বিশাল জাহাজটি 1912 খ্রিস্টাব্দে 15 এপ্রিল আটলান্টিক মহাসাগরের জলে ডুবে যায়। অনুমান করা হয়, এতে প্রায় 1500 -এর বেশি মানুষ মারা যায়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

হিমশৈল কী?

হিমশৈল হল সমুদ্রের জলে ভাসমান বিশালাকার বরফের চাঁই বা খণ্ড। এটি মূলত মহাদেশীয় হিমবাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সমুদ্রে ভাসতে থাকে।

হিমশৈলের বৈশিষ্ট্য কী?

হিমশৈলের বৈশিষ্ট্যগুলি হল –
1. হিমশৈলের মাত্র 10 ভাগের 1 ভাগ জলের ওপরে থাকে এবং বাকি 9 ভাগ জলের নীচে ডুবে থাকে।
2. এর দৈর্ঘ্য সাধারণত 1-57 মিটার পর্যন্ত হয়।
3. হিমশৈল গলে গেলে গলিত নুড়ি, কাঁকর, পলি সঞ্চিত হয়ে মগ্নচড়ার সৃষ্টি করে।
4. হিমশৈল উষ্ণ স্রোতের নিকটে গেলে সমুদ্রের আকাশে মেঘ-কুয়াশার সৃষ্টি হয়।

হিমশৈল কীভাবে সৃষ্টি হয়?

হিমশৈল সৃষ্টির কারণ হল –
1. জল জমে বরফে পরিণত হলে তা আয়তনে প্রায় 1/10 ভাগ বৃদ্ধি পায় এবং ঘনত্ব হ্রাস পায়, ফলে বরফ জলে ভাসতে থাকে।
2. মহাদেশীয় হিমবাহগুলি সমুদ্র উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত হলে সমুদ্রের ঢেউয়ের আঘাতে ভেঙে যায় এবং ভাঙা হিমবাহের অংশ সমুদ্রের জলে ভাসতে থাকে। এভাবেই হিমশৈলের উৎপত্তি হয়।

হিমশৈলের উদাহরণ দাও।

একটি বিখ্যাত উদাহরণ হল 1912 খ্রিস্টাব্দে ‘Titanic’ নামক বিশাল জাহাজটি ল্যাব্রাডর উপকূলে অবস্থিত এক বৃহৎ আকৃতির হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়।

হিমশৈল কেন বিপজ্জনক?

হিমশৈল বিপজ্জনক কারণ এর বেশিরভাগ অংশ জলের নীচে থাকে এবং এটি জাহাজ চলাচলের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা থাকে, যা দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।

হিমশৈল গলে গেলে কী হয়?

হিমশৈল গলে গেলে গলিত নুড়ি, কাঁকর, পলি সঞ্চিত হয়ে মগ্নচড়ার সৃষ্টি করে। এছাড়াও, হিমশৈল গলে গেলে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পেতে পারে।

হিমশৈল কীভাবে পরিবেশকে প্রভাবিত করে?

হিমশৈল পরিবেশকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে –
1. হিমশৈল গলে গেলে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পেতে পারে।
2. হিমশৈল উষ্ণ স্রোতের নিকটে গেলে সমুদ্রের আকাশে মেঘ-কুয়াশার সৃষ্টি হয়, যা আবহাওয়াকে প্রভাবিত করতে পারে।

হিমশৈল এবং হিমবাহের মধ্যে পার্থক্য কী?

হিমশৈল এবং হিমবাহের মধ্যে পার্থক্য হল –
1. হিমবাহ হল স্থলভাগে অবস্থিত বরফের বিশাল স্তর, যা ধীরে ধীরে প্রবাহিত হয়।
2. হিমশৈল হল হিমবাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সমুদ্রে ভাসমান বরফের চাঁই বা খণ্ড।

হিমশৈল কীভাবে জাহাজ চলাচলে প্রভাব ফেলে?

হিমশৈল জাহাজ চলাচলে প্রভাব ফেলে কারণ এর বেশিরভাগ অংশ জলের নীচে থাকে এবং এটি জাহাজের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা থাকে, যা দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।

হিমশৈল সম্পর্কে আরও জানার জন্য কোন উৎস ব্যবহার করা যেতে পারে?

হিমশৈল সম্পর্কে আরও জানার জন্য ভূগোলের পাঠ্যবই, বৈজ্ঞানিক জার্নাল, এবং অনলাইন রিসোর্স যেমন – ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক বা NASA এর ওয়েবসাইট ব্যবহার করা যেতে পারে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “হিমশৈল সম্পর্কে টীকা লেখ।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “হিমশৈল সম্পর্কে টীকা লেখ।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তার দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – হিমবাহের বিভিন্ন কাজ ও তাদের দ্বারা সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

রাশিবিজ্ঞান-গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান-কষে দেখি 26.4-মাধ্যমিক গণিত

মাধ্যমিক গণিত – রাশিবিজ্ঞান: গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান – কষে দেখি 26.4

রাশিবিজ্ঞান-গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান-কষে দেখি 26.3-মাধ্যমিক গণিত

মাধ্যমিক গণিত – রাশিবিজ্ঞান: গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান – কষে দেখি 26.3

রাশিবিজ্ঞান-গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান - কষে দেখি 26.2-মাধ্যমিক গণিত

মাধ্যমিক গণিত – রাশিবিজ্ঞান: গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান – কষে দেখি 26.2

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

Madhyamik Physical Science Suggestion 2026

Madhyamik Life Science Suggestion 2026

Madhyamik Physical Science Suggestion 2026 – রচনাধর্মী প্রশ্ন

Madhyamik Physical Science Suggestion 2026 – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

Madhyamik Physical Science Suggestion 2026 – সত্য মিথ্যা