“কমলের স্বর অদ্ভুত করুণ একটা আবেদনের মতো শোনাল।” এই উক্তিটি দশম বাংলা সহায়ক পাঠ কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। “কমলের স্বর অদ্ভুত করুণ একটা আবেদনের মতো শোনাল।” – কমল কী বলেছিল? তার স্বরকে ‘করুণ আবেদনের মতো’ বলার কারণ কী? এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যান্ত গুরুত্তপূর্ণ। কোনি উপন্যাসের এই রচনাধর্মী প্রশ্নটি তৈরী করে গেলে মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় একটি ৫ নম্বরের পাওয়া যেতে পারে।
কমল, একজন দরিদ্র ও অসুস্থ যুবক, তার বোন কনকচাঁপাকে বিশ্বসেরা সাঁতারু হতে দেখার স্বপ্ন দেখে। নিজের অপূর্ণ স্বপ্ন পূরণের আশায় সে কোনিকে উৎসাহিত করে। কমল জানে, সুযোগ পেলে কোনি অনেক দূর এগোতে পারবে। কিন্তু দারিদ্র্য ও অসুস্থতা তাকে নিরুৎসাহিত করে।
কমল সংসার-সমুদ্রে দিকহারা নাবিকের মতো। তার বাবার মৃত্যু এবং নিজের অসুস্থতা তাকে ভেঙে দিয়েছে। মাসে মাত্র দেড়শো টাকা রোজগারে সংসার চালানো কঠিন। একসময় কমলও সাঁতারু হবার স্বপ্ন দেখত, কিন্তু দারিদ্র্যের কাছে হার মানতে বাধ্য হয়।
কোনির মাধ্যমে কমল তার অপূর্ণ স্বপ্ন পূরণের আশা পোষণ করে। কিন্তু সংসারের ভার ও নিজের অসুস্থতা তাকে হতাশ করে। কোনির স্বপ্ন পূরণের জন্য কমলের প্রাণপণ চেষ্টা, তবুও ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা তাকে আতঙ্কিত করে।
এই গল্পে স্বপ্ন ও বাস্তবতার সংঘাত স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। কমল ও কোনির স্বপ্ন তাদের দারিদ্র্যের কাছে বারবার ভেঙে পড়ে। কমলের করুণ আবেদন পাঠকের মনে সহানুভূতি ও বেদনার সঞ্চার করে।
এই গল্প আমাদের জীবনের বাস্তবতার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। স্বপ্ন দেখা সহজ, কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম ও সংগ্রামের প্রয়োজন। দারিদ্র্য ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা সৃষ্টি করলেও, হতাশ না হয়ে লড়াই করে যেতে হবে।
এই গল্পের মাধ্যমে লেখক আমাদের জীবনে স্বপ্নের গুরুত্ব বোঝাতে চেয়েছেন। স্বপ্নই আমাদের জীবনকে অর্থবহ করে তোলে। স্বপ্ন পূরণের জন্য লড়াই করতে হবে, তবেই জীবনের সার্থকতা লাভ করা সম্ভব।
“কমলের স্বর অদ্ভুত করুণ একটা আবেদনের মতো শোনাল।” – কমল কী বলেছিল? তার স্বরকে ‘করুণ আবেদনের মতো’ বলার কারণ কী?
কমলের বক্তব্য – কমল দরিদ্র, অসুস্থ অথচ এই দারিত্র্যের মধ্য থেকেও সে স্বপ্ন দেখে তার বোন কনকচাঁপা একদিন বিশ্বসেরা সাঁতারু হয়ে উঠবে। তার এই স্বপ্নকে সে বোনের মধ্যেও চারিয়ে দিতে চায়। কোনিকে উদ্বুদ্ধ করতে সে বলে ওঠে – ইচ্ছে থাকলে মানুষের অসাধ্য কিছু নেই। ইন্ডিয়া রেকর্ড ভাঙতে হবে তোকে। তারপর এশিয়ান, তারপর অলিম্পিক। পারবি না? তার শেষের কথাগুলো করুণ আবেদন হয়ে ওঠে।
করুণ আবেদনের মতো বলার কারণ –
- দিকহারা নাবিক – কমল যেন সংসার-সমুদ্রে দিকহারা নাবিক। তার বাবার মৃত্যু হয়েছে টিবি রোগে। কমল নিজেও শরীরের ভেতরে রোগ পুষে রেখেছে। মাসে মাত্র দেড়শো টাকা তার রোজগার। সংসারের অবস্থা নুন আনতে পান্তা ফুরায়।
- স্বপ্নভঙ্গের হাহাকার – একসময় কমলও স্বপ্ন দেখত বড়ো সাঁতারু হবার। অলিম্পিকে যাবার সাধ তারও ছিল। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর সংসারের দায়িত্ব এসে পড়ে তার ওপর। টাকার অভাবে সে সাঁতার ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। তাই তার মধ্যেও লুকিয়ে আছে স্বপ্নভঙ্গের হাহাকার।
- অপূর্ণ স্বপ্ন পূর্ণ হওয়ার সম্ভবনা – কোনি যদি সত্যিই বড়ো সাঁতারু হতে পারে, তবে কমলের অপূর্ণ স্বপ্ন কিছুটা পূরণ হবে। কমল জানে, সুযোগ পেলে, দু-বেলা দু-মুঠো ঠিকমতো খেতে পেলে কোনি ঠিকই অনেক দূর এগোতে পারবে। কিন্তু সে বুঝে গেছে সংসারে তারও মেয়াদ আর বেশিদিন নেই। তার মৃত্যু হলে সংসারটা জলে ভেসে যাবে, স্বপ্নভঙ্গ হবে কোনিরও। এই কারণেই কোনিকে বড়ো সাঁতারু হতে বলার সময় তার স্বর করুণ আবেদনের মতো শুনিয়েছে।
আরও পড়ুন, ক্লাবই সুইমার তৈরি করে, ওরা করে মোড়লি — কাকে উদ্দেশ্য করে কথাটা বলা হয়েছে? এর তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
কমলের গল্প একটি বেদনাদায়ক বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। দারিদ্র্য ও অসুস্থতার কষাঘাতে জর্জরিত হলেও কমল তার বোন কোনির মাধ্যমে তার অপূর্ণ স্বপ্ন পূরণের আশা পোষণ করে। কোনিকে বিশ্বসেরা সাঁতারু হতে দেখার স্বপ্ন তাকে বারবার সংগ্রাম করতে অনুপ্রাণিত করে।
কমলের চরিত্র আমাদের জীবনে স্বপ্নের গুরুত্ব বোঝায়। স্বপ্নই আমাদের জীবনকে অর্থবহ করে তোলে। দারিদ্র্য ও প্রতিবন্ধকতা স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা হলেও, হতাশ না হয়ে লড়াই করে যেতে হবে।
কোনির চরিত্র আশার প্রতীক। সুযোগ পেলে কোনি তার ভাইয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। তার মধ্যে লুকিয়ে থাকা প্রতিভা বিকশিত হলে সে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে পারবে।
এই গল্প আমাদের জীবনের বাস্তবতার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। স্বপ্ন দেখা সহজ, কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম ও সংগ্রামের প্রয়োজন। দারিদ্র্য ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা সৃষ্টি করলেও, হতাশ না হয়ে লড়াই করে যেতে হবে।
কমলের করুণ আবেদন আমাদের মনে সহানুভূতি ও বেদনার সঞ্চার করে। তার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।