কৃষি বনসৃজন সম্পর্কে টীকা লেখো।

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “কৃষি বনসৃজন সম্পর্কে টীকা লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদ” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

কৃষি বনসৃজন সম্পর্কে টীকা লেখো
কৃষি বনসৃজন সম্পর্কে টীকা লেখো

কৃষি বনসৃজন সম্পর্কে টীকা লেখো।

সংজ্ঞা – যে জমি বা পতিত জমিতে শস্য উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে কাঠ, ভেষজদ্রব্য ও ফলমূল প্রভৃতি সংগ্রহের জন্য বৃক্ষরোপণ করে যে বনভূমি সৃষ্টি করা হয় তাকে কৃষি বনসৃজন বলে।

কৃষি বনসৃজন
কৃষি বনসৃজন

বার্নাড ও কোলের মতে, যে সমস্ত প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের নিজের জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে বৃক্ষরোপণ করতে উৎসাহ দান করা হয় তাকে ‘কৃষি বনসৃজন’ বলে।

উদ্দেশ্য – ভারত সরকার ‘জাতীয় অরণ্য নীতির’ অঙ্গ হিসেবে ‘কৃষি বনসৃজন’ প্রকল্প চালু করেছে। সংবাদপত্র, রেডিয়ো, টেলিভিশন প্রভৃতি গণমাধ্যমের দ্বারা নানাধরনের উদ্ভিদ চারা রোপণ করতে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। এই উদ্দেশ্যে প্রত্যেক বছর বর্ষাকালে কৃষকদের বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরনের গাছের চারা সরবরাহ করা হয়।

সাফল্য – ভারতে এ ধরনের জমির পরিমাণ প্রায় 8 কোটি 19 লক্ষ হেক্টর। এ ধরনের বনসৃজনের দ্বারা পাঞ্জাব-হরিয়ানাতে পপলার, তামিলনাড়ু-কর্ণাটকে করনজ, পশ্চিমবঙ্গ-বিহার-ওড়িশায় ইউক্যালিপটাস, মহুয়া, সেগুন এবং গুজরাটে খয়ের গাছ লাগানো হচ্ছে। ভারতে কৃষি বনসৃজনকে কেন্দ্র করে কৃষি বনায়নের সঙ্গে সঙ্গে পশুচারণেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

কৃষি বনসৃজন কী?

কৃষি বনসৃজন হলো এমন একটি পদ্ধতি যেখানে কৃষিজমি বা পতিত জমিতে শস্য উৎপাদনের পাশাপাশি কাঠ, ভেষজ উদ্দীপক, ফলমূল ইত্যাদি সংগ্রহের জন্য গাছ লাগানো হয়। এটি কৃষি ও বনায়নের সমন্বিত রূপ।

কৃষি বনসৃজনের প্রধান উদ্দেশ্য কী?

1. কৃষিজমির বহুমুখী ব্যবহার।
2. পরিবেশ সংরক্ষণ ও মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি।
3. কৃষকদের অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ সৃষ্টি।
4. জ্বালানি কাঠ ও চারণভূমির চাহিদা পূরণ।

ভারতে কৃষি বনসৃজনের সাফল্য কোথায় দেখা যায়?

1. পাঞ্জাব ও হরিয়ানা – পপলার চাষ।
2. তামিলনাড়ু ও কর্ণাটক – করনজ (Pongamia) গাছ।
3. পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা – ইউক্যালিপটাস, মহুয়া, সেগুন।
4. গুজরাট – খয়ের গাছ।

কৃষি বনসৃজনের সুবিধাগুলো কী?

1. মাটির ক্ষয় রোধ।
2. জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহায়তা।
3. জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ।
4. কৃষকদের আয় বৃদ্ধি।

সরকার কীভাবে কৃষি বনসৃজনে সহায়তা করে?

1. বিনামূল্যে গাছের চারা বিতরণ।
2. প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কর্মসূচি।
3. আর্থিক সহায়তা ও ভর্তুকি প্রদান।

কৃষি বনসৃজনের কিছু জনপ্রিয় গাছের নাম বলুন।

1. ইউক্যালিপটাস।
2. পপলার।
3. মহুয়া।
4. সেগুন।
5. নিম।
6. খয়ের।
7. করনজ।

কৃষি বনসৃজন পরিবেশের জন্য কীভাবে উপকারী?

1. কার্বন শোষণ করে বায়ুদূষণ কমায়।
2. মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখে।
3. বন্য প্রাণীদের আবাসস্থল তৈরি করে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “কৃষি বনসৃজন সম্পর্কে টীকা লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদ” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

বায়ুর সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপগুলির বর্ণনা দাও।

বায়ুর সঞ্চয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপগুলির বর্ণনা দাও।

সক্রিয় সেনসর ও নিষ্ক্রিয় সেনসর বলতে কী বোঝো? সক্রিয় সেনসর ও নিষ্ক্রিয় সেনসরের মধ্যে পার্থক্য করো।

সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় সেনসর বলতে কী বোঝো? সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় সেনসরের মধ্যে পার্থক্য

জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহ কী? জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহের মধ্যে পার্থক্য

জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহ কী? জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহের মধ্যে পার্থক্য

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

মাধ্যমিক গণিত – রাশিবিজ্ঞান: গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান – কষে দেখি 26.4

মাধ্যমিক গণিত – রাশিবিজ্ঞান: গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান – কষে দেখি 26.3

মাধ্যমিক গণিত – রাশিবিজ্ঞান: গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান – কষে দেখি 26.2

মাধ্যমিক গণিত – রাশিবিজ্ঞান: গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান – কষে দেখি 26.1

মাধ্যমিক গণিত – রাশিবিজ্ঞান: গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান – প্রয়োগ