আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক বাংলার তৃতীয় পাঠের দ্বিতীয় বিভাগ “হারিয়ে যাওয়া কালি কলম” এর ওপর কিছু গুরুত্বপূর্ণ অতিসংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো পরীক্ষায় প্রায়শই দেখা যায়। আশা করছি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য সহায়ক হবে।
শ্রীপান্থ কোন সাহিত্যিকের ছদ্মনাম?
শ্রীপান্থ হল নিখিল সরকারের ছদ্মনাম।
পাঠ্য হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনাটি কোন্ গ্রন্থের অন্তর্গত?
পাঠ্য হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনাটি নিখিল সরকার রচিত কালি আছে কাগজ নেই, কলম আছে মন নেই গ্রন্থের অন্তর্গত।
কালি আছে কাগজ নেই, কলম আছে মন নেই গ্রন্থটি ছাড়া নিখিল সরকার রচিত অপর দুটি গ্রন্থের নাম লেখো।
কালি আছে কাগজ নেই, কলম আছে মন নেই গ্রন্থটি ছাড়া নিখিল সরকার রচিত অপর দুটি গ্রন্থ হল যখন ছাপাখানা এলো এবং মেটিয়াবুরুজের নবাব।
লেখে তিন জন। – এই তিন জন বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে?
শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনায় ব্যবহৃত উদ্ধৃতাংশে তিন জন বলতে কালি, কলম এবং মনকে বোঝানো হয়েছে।
লেখক যেখানে কাজ করেন সেটা কীসের অফিস এবং সবাই সেখানে কী?
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনায় লেখক শ্রীপান্থ যেখানে কাজ করেন, সেটা লেখালেখির অফিস এবং সেখানে সবাই লেখক।
লেখকের অফিসে লেখক ছাড়া সকলের সামনে কী থাকে?
লেখকের অফিসে লেখক ছাড়া সকলের সামনে চৌকো আয়নার মতো একটা কাচের স্ক্রিন বা পর্দা, অর্থাৎ কম্পিউটার থাকে।
লেখকরা অনবরত তা দিয়ে লিখে চলেছেন – তা বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনায় আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে তা বলতে ছাপা হরফ-সহ কম্পিউটারের কী-বোর্ডকে বোঝানো হয়েছে।
লেখক একদিন অফিসে কলম নিয়ে যেতে ভুলে গেলে তবেই বিপদ কেন বলেছেন?
এক্ষেত্রে বিপদ হল, লেখক ছাড়া তাঁর অফিসে কেউ লেখার কাজে কলম ব্যবহার করেন না। এমনকি কারও কাছে কলম পাওয়া গেলেও সেই ভোঁতা মুখের কলমে লিখে লেখক সুখ পান না।
দায়সারা ভাবে কোনও মতে সেদিনকার মতো কাজ সারতে হয়। – দায়সারা কথাটি ব্যবহার করেছেন কেন?
অফিসে লেখকই একমাত্র কলম ব্যবহার করতেন। তাই কোনোদিন অফিসে কলম নিয়ে যেতে ভুলে গেলে কারও ভোঁতা মুখের কলমেই অগত্যা কাজ চালাতে হত তাঁকে। এজন্য লেখক ‘দায়সারা’ কথাটি ব্যবহার করেছেন।
বাংলায় একটা কথা চালু ছিল। – কোন্ কথা চালু ছিল?
বাংলায় চালু কথাটি ছিল, কালি নেই, কলম নেই, বলে আমি মুনশি।
কালগুণে বুঝিবা আজ আমরাও তা-ই। – আমরাও তা-ই’ বলতে লেখক কী বলেছেন?
বাংলার এক প্রচলিত প্রবাদ ছিল ‘কালি নেই, কলম নেই, বলে আমি মুনশি’। কম্পিউটারের বহুল ব্যবহারের ফলে লেখক বলেছেন, কালি ও কলম ছাড়া এখন সবাই মুনশি বা লেখক হয়ে উঠেছে।
বড়োরা শিখিয়ে দিয়েছিলেন – বড়োরা কী শিখিয়েছিলেন?
ছোটোবেলায় কলম তৈরি করার সময় বড়োরা শিখিয়েছিলেন, বাঁশের কঞ্চির ছুঁচোলো মুখটা চিরে দিতে, তবেই কালি একসঙ্গে না গড়িয়ে ধীরে ধীরে পড়বে।
লেখকদের শৈশবে লেখার পাত কেমন ছিল?
শৈশবে লেখকদের লেখার পাত বলতে ছিল কলাপাতা। এটিকে কাগজের মতো ব্যবহার করে তাতে লেখক ও তাঁর সহপাঠীরা হোমটাস্ক করতেন।
কলাপাতায় হোমটাস্ক করার পর সেগুলি নিয়ে শৈশবে লেখকরা কী করতেন?
লেখকরা কলাপাতায় হোমটাস্ক করে সেগুলি বান্ডিল বেঁধে স্কুলে নিয়ে গিয়ে মাস্টারমশাইকে দেখাতেন। মাস্টারমশাই সেগুলো দেখার পর আড়াআড়িভাবে ছিঁড়ে ফেরত দিলে তাঁরা সেটা পুকুরে ফেলে দিতেন।
গোরুকে অক্ষর খাওয়ানোও নাকি পাপ। – তাই লেখকরা শৈশবে কী করতেন?
শৈশবে লেখকরা মাস্টারমশাইয়ের ফেরত দেওয়া ছেঁড়াখোঁড়া কলাপাতার টুকরোগুলি পুকুরে ফেলে দিতেন। কারণ সেযুগে মনে করা হত, ওগুলো গোরু খেলে অমঙ্গল হবে।
কালি তৈরির উৎকৃষ্ট পদ্ধতি সম্পর্কে প্রচলিত প্রবাদটি লেখো।
প্রচলিত প্রবাদটি হলো – তিল ত্রিফলা সিমুল ছালা/ছাগ দুগ্ধে করি মেলা/লৌহপাত্রে লোহায় ঘসি/ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি।
বড়োদের সাহায্য নিয়ে শৈশবে লেখকরা কীভাবে নিজেরাই কালি তৈরি করতেন?
অথবা, আমাদের ছিল সহজ কালি তৈরি পদ্ধতি। – সহজ পদ্ধতিটি কী ছিল?
শৈশবে লেখকরা বড়োদের সাহায্য নিয়ে কাঠের উনুনে ব্যবহৃত কড়াইয়ের নিচে জমে থাকা কালিকে লাউ পাতা দিয়ে ঘষে তুলে, পাথরের বাটিতে জলে গুলে কালি তৈরি করতেন।
বলতে গেলে তাই নিয়ে আমাদের প্রথম লেখালেখি। – কী কী নিয়ে প্রথম লেখালেখি ছিল?
প্রথম লেখালেখি শুরু হয়েছিল বাঁশের কলম, মাটির দোয়াত, ঘরে তৈরি কালি এবং লেখার জন্য কলাপাতা দিয়ে।
তখন মনে কষ্ট হয় বইকী। – কী কারণে মনে কষ্ট হয়েছে?
কলম ক্রমশ হারিয়ে যেতে শুরু করলে এবং কালি কলমের প্রচলন কমে যাওয়ায় লেখকের মনে কষ্ট হয়েছিল।
লেখকের জন্ম মিশরে হলে লেখক কী করতেন বলেছেন?
লেখক যদি মিশরে জন্মাতেন, তাহলে নীল নদের তীর থেকে নলখাগড়া সংগ্রহ করে তা দিয়ে কলম বানিয়ে লিখতেন।
প্রাচীন সুমেরীয়রা কীভাবে কলম বানাত?
প্রাচীন সুমেরীয়রা নলখাগড়া সংগ্রহ করে সেটাকে ভোঁতা করে তুলি বানিয়ে লিখতেন।
ফিনিসীয় হলে লেখক কী করতেন?
লেখক জানিয়েছেন, তিনি ফিনিসীয় হলে বনপ্রান্ত থেকে হাড় কুড়িয়ে তা দিয়ে কলম তৈরি করতেন।
এমনকী আমি যদি রোম সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হতাম। – কোন্ রোমান অধীশ্বরের কথা বলা হয়েছে?
এখানে রোম সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হিসেবে জুলিয়াস সিজারের কথা বলা হয়েছে।
স্টাইলাস কী?
স্টাইলাস হলো ব্রোঞ্জের সরু শলাকা, যা প্রাচীন রোমে কলম হিসেবে ব্যবহৃত হত।
স্টাইলাসকে ঘিরে রোমের ইতিহাসের কোন ঘটনার কথা লেখক বলেছেন?
স্টাইলাস দিয়ে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার কাসকাকে আঘাত করেছিলেন, সে-কথাই লেখক উল্লেখ করেছেন।
আমরা ফেরার পথে কোনও পুকুরে তা ফেলে দিয়ে আসতাম। – বক্তা কেন তা পুকুরে ফেলে দিতেন?
শৈশবে লেখক কলাপাতায় হোমটাস্ক করতেন, যা গোরু খেয়ে ফেললে অমঙ্গল হবে বলে প্রচলিত ধারণা ছিল। এজন্য সেগুলি পুকুরে ফেলে দেওয়া হত।
লেখক শ্রীপান্থ ছোটোবেলায় কীসে ‘হোম-টাস্ক’ করতেন?
লেখক শ্রীপান্থ কলাপাতাকে কাগজের মাপে কেটে নিয়ে হোম-টাস্ক করতেন।
খাগের কলমের ব্যবহার এখন কোন্ সময়ে দেখা যায়?
সরস্বতী পুজোর সময় এখনো খাগের কলমের ব্যবহার দেখা যায়।
পালকের কলমের ইংরেজি নাম কী?
পালকের কলমের ইংরেজি নাম হলো কুইল (Quill)।
বাঙালি সাংবাদিকদের ইংরেজি দেখে কে, কী বলতেন?
লর্ড কার্জন বাঙালি সাংবাদিকদের ইংরেজি দেখে বলতেন “বাবু কুইল ড্রাইভারস”।
পালকের কলম বর্তমানে দেখার জন্য কীসের ওপর নির্ভর করতে হয়?
অথবা, ‘কুইল’ এখন কোথায় দেখতে পাওয়া যায়?
পালকের কলম বর্তমানে পুরোনো তৈলচিত্র বা ফোটোগ্রাফে দেখা যায়।
এমন দুটি চিত্রের উল্লেখ করো যাতে পালকের কলম দেখা যায়।
উইলিয়াম জোন্স ও স-মুনশি কেরি সাহেবের চিত্রে পালকের কলম দেখা যায়।
পালক কেটে কলম তৈরি করার জন্য সাহেবরা কী করেছিলেন?
পালক কেটে কলম তৈরি করার জন্য সাহেবরা এক ধরনের যন্ত্র তৈরি করেছিলেন, যা দেখতে পেনসিল শার্পনারের মতো ছিল এবং তাতে ব্লেড ছিল।
কিন্তু সে সব ফাঁকি মাত্র। – এই উক্তির তাৎপর্য কী?
লেখক বলেছেন, পালক কলম এবং দোয়াত কলমের পরিবর্তে অফিসে ছদ্মবেশী বল-পেন সাজানো থাকে, যাকে লেখক “ফাঁকি মাত্র” বলেছেন। এটি প্রকৃত কলমের প্রতিনিধিত্ব করে না, বরং এটি এক ধরনের সস্তা এবং আধুনিক প্রতিস্থাপন, যা কালি কলমের মৌলিকত্ব হারিয়ে যাওয়ার প্রতীক।
কিছুকাল আগে একজন বিদেশি সাংবাদিক লিখেছিলেন – কী লিখেছিলেন?
কিছুকাল আগে একজন বিদেশি সাংবাদিক লিখেছিলেন যে, কলকাতার চৌরঙ্গিতে তিনজন ফেরিওয়ালার মধ্যে একজন কলম বিক্রেতা। এই ঘটনা লেখক উল্লেখ করেছেন কলমের ব্যাপক প্রচলন এবং সস্তা প্রাপ্তির উদাহরণ হিসেবে।
দার্শনিক তাঁকেই বলে – দার্শনিক কাকে বলা হয়?
লেখক উল্লেখ করেছেন যে, হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনায় যিনি কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন তাকেই দার্শনিক বলা হয়। এখানে দার্শনিক বলতে এমন একজন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে যিনি নিজের চিন্তা-ভাবনা এবং অনুসন্ধানের মাধ্যমে জীবনকে উপলব্ধি করেন।
কেউ কেউ অবশ্য চুলেও কলম ধারণ করেন। – এই প্রসঙ্গে শ্রীপান্থ কী উদাহরণ দিয়েছেন?
শ্রীপান্থ উদাহরণ দিয়েছেন যে, ভিড় ট্রাম বা বাস থেকে নামার সময় দেখা যায়, কোনো কোনো মহিলা যাত্রীর খোঁপায় কলম গোঁজা রয়েছে। এটি মূলত সমাজে কলমের সর্বজনীন ব্যবহার এবং মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে ওঠা বোঝাতে বলা হয়েছে।
কলম এখন সর্বজনীন। – তাৎপর্য কী?
লেখক বলছেন যে, কলম এখন সস্তা এবং সর্বজনীন হয়ে গেছে। এটি আর শুধু লেখক বা শিক্ষিত মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সাধারণ মানুষের হাতেও পৌঁছে গেছে। সস্তা এবং সবার জন্য সহজলভ্য হওয়ার কারণে এটি সর্বজনীন হয়ে উঠেছে।
কলম তাদের কাছে আজ অস্পৃশ্য। – অস্পৃশ্য কেন?
লেখক বলছেন যে, কলম এতটাই সস্তা এবং সাধারণ হয়ে গেছে যে এখন আর পকেটমাররা কলম চুরি করে না। কলমের এমন সস্তা হয়ে যাওয়া এবং সবার হাতের নাগালে পৌঁছে যাওয়ার ফলে এটি পকেটমারদের কাছে অস্পৃশ্য হয়ে গেছে।
কলম তাদের কাছে আজ অস্পৃশ্য। – কাদের কাছে?
লেখক এখানে পকেটমারদের কথা উল্লেখ করেছেন। আগে দামী কলম চুরি করা হতো, কিন্তু কলম এখন সস্তা হয়ে যাওয়ায় পকেটমারদের কাছে কলমের আর কোনো মূল্য নেই। তাই কলম তাদের কাছে অস্পৃশ্য হয়ে উঠেছে।
কলমের দুনিয়ায় সত্যিকারের বিপ্লব কীভাবে ঘটেছে?
লেখক বলছেন, কলমের দুনিয়ায় সত্যিকারের বিপ্লব ঘটেছে ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারের মাধ্যমে। ফাউন্টেন পেনের প্রচলন কলম ব্যবহারের ঐতিহ্য এবং পদ্ধতিতে এক বিশাল পরিবর্তন এনেছে, যা কলমের ইতিহাসে একটি বিপ্লব হিসেবে ধরা হয়।
নামটা রবীন্দ্রনাথের দেওয়াও হতে পারে। – কোন্ নামের কথা বলা হয়েছে?
ফাউন্টেন পেনের যে বাংলা নাম ‘ঝরনা কলম’ একসময় প্রচলিত ছিল, এখানে সেই নামের কথা বলা হয়েছে।
ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক কে?
ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক ছিলেন লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান।
আমার মনে পড়ে প্রথম ফাউন্টেন পেন কেনার কথা। – কোথায় লেখক ফাউন্টেন পেন কিনতে গিয়েছিলেন?
লেখক কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের একটি নামকরা দোকানে ফাউন্টেন পেন কিনতে গিয়েছিলেন।
পেনের দোকানদার লেখকের পকেটের অবস্থা বুঝতে পেরে কী পেন দিয়েছিলেন?
পেনের দোকানদার লেখকের পকেটের অবস্থা বুঝতে পেরে একটি সস্তা জাপানি পাইলট পেন দিয়েছিলেন।
এই দেখো। নিব ঠিক আছে। — কোন ঘটনায় দোকানদার এরুপ বলেছিলেন?
দোকানদার একটি কাঠের বোর্ডের দিকে পাইলট পেনটির খাপ খুলে সেটি ছুঁড়ে দিয়ে দেখিয়েছিলেন যে পেনটির নিব অক্ষত আছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই তিনি উক্ত মন্তব্যটি করেছিলেন।
তা লেখককে নেশাগ্রস্ত করে। — কী, কীভাবে লেখককে নেশাগ্রস্ত করে?
এখানে ফাউন্টেন পেনের কথা বলা হয়েছে। ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের আনন্দ লেখককে নেশাগ্রস্ত করে।
কোন লেখকের ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ দেখে লেখক নেশাগ্রস্ত হওয়ার কথাটি এনেছেন?
সাহিত্যিক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ দেখে লেখক ‘নেশাগ্রস্ত’ হওয়ার কথা বলেছেন।
জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন – ফাউন্টেন পেনের জন্মবৃত্তান্তটি উল্লেখ করো।
লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যানের হাত ধরে ফাউন্টেন পেনের জন্ম হয়েছে। প্রথমে এর নাম ছিল রিজার্ভার পেন।
দুজন সাহিত্যিকের নাম করো যাঁদের নেশা ছিল ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ করা।
সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এবং শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশা ছিল।
দোকানদার লেখককে কলম বিক্রি করার আগে কী দেখিয়েছিলেন?
লেখক কলম দেখতে চাইলে, দোকানদার কলমের খাপ খুলে সেটি ছুঁড়ে দেন টেবিলের পাশে দাঁড়ানো কাঠের বোর্ডের দিকে। তবুও কলমটির নিব অক্ষত ছিল, এটি দেখানোর জন্যই তিনি এমনটি করেছিলেন।
প্রথমে ফাউন্টেন পেনের নাম কী ছিল?
শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনায় জানা যায়, প্রথমে ফাউন্টেন পেনের নাম ছিল রিজার্ভার পেন।
আমি ছিলাম কালি কলমের ভক্ত। – এখানে কী বলতে চেয়েছেন লেখক?
লেখক পুরোনো দিনের দোয়াত-ভরা কালি আর নিবের ভক্ত ছিলেন। আলোচ্য অংশে লেখক সেই কথাটিই বলতে চেয়েছেন।
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে দোয়াতে এবং বোতলে তৈরি করে রাখা কালির কী কী নাম পেয়েছ?
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে দোয়াতে এবং বোতলে তৈরি করে রাখা কালির কাজল কালি, সুলেখা ইত্যাদি নাম পাওয়া যায়।
বিদেশে উন্নত ধরনের নিব টেকসই করার জন্য কী দিয়ে বানানো হত?
বিদেশে উন্নত ধরনের নিব টেকসই করার জন্য গোরুর শিং অথবা কচ্ছপের খোল কেটে বানানো হত।
ক্রমে হঠিয়ে দেওয়া হলো দোয়াত আর কলমকে। – কীভাবে হঠিয়ে দেওয়া হল?
ফাউন্টেন পেনের সস্তা, দামি, উন্নত নানা ধরনের সম্ভার বাজারে আসার ফলে দোয়াত এবং কলম ক্রমশ বাজার থেকে হটে গেল।
একসময় লেখা শুকোনো হত কী দিয়ে?
শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনা থেকে জানা যায়, প্রথমে বালি এবং পরে ব্লটিং পেপার দিয়ে লেখা শুকোনো হত।
না দেখলে বিশ্বাস করা শক্ত। – কী প্রসঙ্গে লেখক এরূপ বলেছেন?
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনায় দোয়াতের বৈচিত্র্য প্রসঙ্গে লেখক এই কথা বলেছেন।
গ্রামে কেউ 2-1টা পাস করতে পারলে বুড়োবুড়িরা কী বলে আশীর্বাদ করতেন?
গ্রামে কেউ 2-1টা পাস করতে পারলে বুড়োবুড়িরা তাকে সোনার দোয়াতকলম হোক বলে আশীর্বাদ করতেন।
সোনার দোয়াত কলম যে সত্যিই হতো – তা লেখক কীভাবে জেনেছিলেন?
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনা থেকে জানা যায়, সোনার দোয়াতকলম যে সত্যিই হত, তা লেখক সুভো ঠাকুরের দোয়াতের সংগ্রহ দেখে জেনেছিলেন।
সুভো ঠাকুরের দোয়াতের সংগ্রহ দেখে অবাক হয়ে মনে মনে লেখক কী ভেবেছিলেন?
লেখক অবাক হয়ে মনে মনে ভেবেছিলেন, এই ধরনের দোয়াতের কালি ও কলম দিয়েই শেকসপিয়র, দান্তে, মিল্টন, কালিদাস, কাশীরাম, রবীন্দ্রনাথ প্রমুখ সাহিত্যিক তাঁদের অমর রচনা লিখেছেন।
ক্রমে তা-ও বুঝিবা যায় যায়।— কেন লেখক এরূপ বলেছেন?
যন্ত্রযুগের উন্নতির কারণে ফাউন্টেন পেনও তার আধিপত্য এবং বাজারজোড়া সর্বজনীন রূপ হারিয়ে বল-পেনের জয় দেখতে চলেছে। সেই প্রসঙ্গেই লেখক এরূপ বলেছেন।
ফাউন্টেন পেন বিক্রি করে এমন একটি কোম্পানি গর্ব প্রকাশ করে কী বিজ্ঞাপন দিয়েছিল?
ফাউন্টেন পেন বিক্রি করে, এমন একটি কোম্পানি গর্ব করে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল যে, তাদের তহবিলে 700 রকমের নিব রয়েছে।
যন্ত্রযুগ সকলের দাবি মেটাতেই তৈরি। – উক্তিটির প্রসঙ্গ লেখো।
গায়ক, শিল্পী, শ্রুতিলেখক, বাম হাতে লেখা লোক, এমনকি ধনী ব্যক্তি — সকলের আলাদা আলাদা নিবের চাহিদা পূরণ করা প্রসঙ্গে এরূপ বলা হয়েছে।
আশ্চর্য, সবই আজ অবলুপ্তির পথে। – কী আজ অবলুপ্তির পথে?
ফাউন্টেন পেন থেকে বল পয়েন্ট পেন — সবই আজ অবলুপ্তির পথে। কম্পিউটার যুগে কলমের ব্যবহার কমতে থাকায় লেখক এই কথা বলেছেন।
আমার মতো আরো কেউ কেউ নিশ্চয় বিপন্ন বোধ করছেন। – কী বিষয়ে বিপন্ন বোধের কথা বলা হয়েছে?
লেখকের মতো যারা কলম ব্যবহার করেন তাদের বিপন্ন অবস্থা, কারণ কম্পিউটারের দৌলতে কলম আজ ক্রমশ অবলুপ্তির পথে।
কিন্তু ইতিহাসে ঠাঁই কিন্তু তার পাকা। – লেখক কী প্রসঙ্গে এরুপ বলেছেন?
ইতিহাসে কলমের স্থান পাকা। কারণ প্রাচীনকাল থেকে কলম শিক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতিকে ব্যাপকভাবে সমৃদ্ধ করেছে।
ক্যালিগ্রাফিস্ট বা লিপিকুশলী কাদের বলা হয়?
পারদর্শী লিপিকার বা ক্যালিগ্রাফিস্টদের বলা হয় লিপিকুশলী।
মুঘল দরবারে একদিন তাঁদের কত না খাতির – কাদের কথা বলা হয়েছে?
শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনার অন্তর্গত প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে লিপিকুশলী বা ক্যালিগ্রাফিস্টদের কথা বলা হয়েছে।
সমানি সম শীর্ষাণি ঘনানি বিরলানি চ। – বাংলা অর্থ কী?
শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনার অন্তর্গত থেকে প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটির বাংলা অর্থ হল — সব অক্ষর সমান, প্রতিটি ছত্র সুশৃঙ্খল ও পরিচ্ছন্ন।
অথচ কত সামান্যই না রোজগার করতেন ওঁরা। – এরকম বক্তব্যের কোন্ উদাহরণ লেখক দিয়েছেন?
উদ্ধৃত বক্তব্যের সপক্ষে উদাহরণ দিতে গিয়ে লেখক জানিয়েছেন, 18শ শতকে 4 খণ্ড রামায়ণ লিখে একজন লেখক পেয়েছিলেন নগদ 7 টাকা, কিছু কাপড় ও মিঠাই।
লিখে কম রোজগার হত – এ-প্রসঙ্গে সাহেব কী লিখে গেছেন?
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, এক সাহেব লিখে গেছেন, 19শ শতকে 12 আনায় 32 হাজার অক্ষর লেখানো হত।
তাকে ঘিরে লিপিকরের কত না গর্ব। – এ প্রসঙ্গে লেখক কী বলেছেন?
কোনো কোনো পুথির লেখক পুথিতে এ কথাও লিখতেন যে, তাঁর পুথি যেন কেউ চুরি না করে। পুথিকে চুরির হাত থেকে রক্ষা করতে এইসব লিপিকর সম্ভাব্য বা কাল্পনিক চোরকে গালমন্দ ও অভিশাপও দিতেন। আলোচ্য প্রসঙ্গে লেখক উক্ত বক্তব্যটি করেছেন।
কলমকে কীসের চেয়েও শক্তিধর বলা হয়?
শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে কলমকে তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর বলা হয়েছে।
ফাউন্টেন পেনও হয়তো আভাসে ইঙ্গিতে তা-ই বলতে চায়। – আভাস ইঙ্গিতটি কীরকম?
শ্রীপান্থ তাঁর হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে মন্তব্য করেছেন, ফাউন্টেন পেন হয়তো আভাসে ইঙ্গিতে বলতে চায় যে, কলম তলোয়ারের চেয়ে শক্তিশালী।
কোন প্রবীণ কবি বা লেখক কলমের বদলে টাইপরাইটারে লিখেছেন?
শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, অন্নদাশঙ্কর রায় কলমের বদলে টাইপরাইটারে লিখেছেন।
আধুনিক যুগে নিবের কলম ব্যবহার করতেন কোন্ বিখ্যাত বাঙালি লেখক?
শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, আধুনিক যুগে নিবের কলম ব্যবহার করতেন সত্যজিৎ রায়।
রবীন্দ্রনাথের চিত্রশিল্পের সূচনা হয়েছিল কীভাবে?
রবীন্দ্রনাথের চিত্রশিল্পের সূচনা হয়েছিল হাতে লেখা পান্ডুলিপির পাতায় অক্ষর কাটাকুটি করতে গিয়ে।
হাতে লেখা পান্ডুলিপিতে রবীন্দ্রনাথ কীভাবে সম্মানিত হয়েছেন?
হাতে লেখা পান্ডুলিপির পাতায় অক্ষর কাটাকুটি করতে গিয়েই রবীন্দ্রনাথের চিত্রচর্চা শুরু, যা পরবর্তী সময়ে তাঁকে বিশ্বময় সম্মানিত করেছে।
তবু যদি আমাকে হত্যা করতে চাও, আচ্ছা, তবে তা-ই হোক। – কী প্রসঙ্গে লেখক এরূপ বলেছেন?
বাঁশের পেন, নিব-পেন ছেড়ে লেখক বল-পেনের কাছে আত্মসমর্পণ করে আধুনিক অগ্রগতির কাছে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গেই লেখক এরূপ উক্তি করেছেন।
একবার অন্তত নিবের কলমকে দেখা গেছে খুনির ভূমিকায়। – কোন ঘটনা লেখক বলেছেন?
সাহিত্যিক ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় অসাবধানতাবশত বুকে কলম ফুটে মারা যান। আলোচ্য অংশে সেই ঘটনার কথাই লেখক উল্লেখ করেছেন।
সেই আঘাতেরই পরিণতি নাকি তাঁর মৃত্যু। — এখানে কার মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে?
শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধ থেকে গৃহীত অংশে ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে।
সেই আঘাতের পরিণতি নাকি তাঁর মৃত্যু – কোন্ আঘাতের পরিণতিতে মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে?
বিখ্যাত লেখক ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় মারা গিয়েছিলেন নিজের হাতের কলম অসাবধানতাবশত বুকে ফুটে গিয়ে। এখানে সেই আঘাতের পরিণতিতে তাঁর মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে।
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম-এ বর্ণিত সবচেয়ে দামি কলমটির কত দাম?
শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে বর্ণিত সবচেয়ে দামি কলমটির দাম 2500 পাউন্ড।
আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক বাংলার তৃতীয় পাঠের দ্বিতীয় বিভাগ ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অতিসংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনাদের উপকারী হয়েছে। যদি কোনো প্রশ্ন বা সমস্যা থাকে, নির্দ্বিধায় টেলিগ্রামে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, আমি সহায়তার চেষ্টা করবো। তাছাড়া, এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জন বা যাদের প্রয়োজন হতে পারে, তাদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।