পৃথিবীর একটি বৃহৎ অংশ জুড়ে বিস্তৃত ভারত একটি বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক পরিবেশের অধিকারী। দেশটিতে রয়েছে উচ্চ পর্বতমালা, মালভূমি, সমভূমি, মরুভূমি, বনভূমি, নদী, হ্রদ ইত্যাদি। এই প্রাকৃতিক পরিবেশগুলি দেশের ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু, জীববৈচিত্র্য, অর্থনীতি, সংস্কৃতি প্রভৃতির উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।
মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায়টি ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ নিয়ে আলোচনা করে। এই অধ্যায়ে ভারতের ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু, জীববৈচিত্র্য, নদনদী, হ্রদ, মালভূমি, সমভূমি, মরুভূমি ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
![ভারতের প্রকৃতিক পরিবেশ - ভারতের অবস্থান, প্রশাসনিক বিভাগ - রচনাধর্মী উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর 1 ভারতের অবস্থান, প্রশাসনিক বিভাগ – রচনাধর্মী উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর।](http://solutionwbbse.com/wp-content/uploads/2023/12/ভারতের-অবস্থান-প্রশাসনিক-বিভাগ-–-রচনাধর্মী-উত্তর-ভিত্তিক-প্রশ্ন-ও-উত্তর।.webp)
1947 থেকে 1950 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতের রাজ্য পুনর্গঠন সম্পর্কে আলোচনা করো।
অথবা, 1947 থেকে 1950 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতের রাজনৈতিক কাঠামো আলোচনা করো।
1947 থেকে 1950 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতের রাজনৈতিক কাঠামো
1947 সালের 15 আগস্ট অবিভক্ত ভারতবর্ষকে দুটি ভাগে ভাগ করে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করা হয়। বিভাজিত স্বাধীন ভারতের অংশে থাকে ৭টি গভর্নর শাসিত প্রদেশ, এটি চিফ কমিশনার শাসিত প্রদেশ এবং 600 – র বেশি স্বাধীন দেশীয় রাজ্য। এরপর 1948 49 সালে স্বাধীন ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের কূটকৌশলে স্বাধীন দেশীয় রাজ্যগুলি ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। কতকগুলি গভর্নর শাসিত প্রদেশের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং অন্যগুলি রাজপ্রমুখ – শাসিত রাজ্যে রূপান্তরিত হয়। 1950 সালের 26 জানুয়ারি ভারত একটি স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং ভারতের নিজস্ব সংবিধান চালু হয়। এই সময় ভারতের রাজ্যগুলিকে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয় —
ক শ্রেণির রাজ্য Part-A, গভর্নর শাসিত রাজ্য | খ শ্রেণির রাজ্য Part-B, রাজপ্রমুখ-শাসিত রাজ্য | গ শ্রেণির রাজ্য Part-C, চিফ কমিশনার শাসিত রাজ্য | ঘ শ্রেণির রাজ্য Part-D, কেন্দ্রশাসিত রাজ্য |
পশ্চিমবঙ্গ, অসম, বিহার, ওডিশা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, পাতিয়ালা ও পূর্ব পাঞ্জাব রাজ্য মুম্বাই, মাদ্রাজ ও পাঞ্জাব – মোট 9 টি | হায়দরাবাদ, মধ্যভারত, মহীশূর, পাতিয়ালা ও পূর্ব পাঞ্জাব রাজ্য ইউনিয়ন (পেপসু বা PEPSU), জম্মু ও ত্রিবাঙ্কুর-কোচিন – মোট ৪টি | আজমের, ভোপাল, বিলাসপুর, হিমাচল প্রদেশ, কচ্ছ, কুর্গ, দিল্লি, মণিপুর, ত্রিপুরা ও বিন্ধ্য প্রদেশ – মোট 10টি | আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ |
1956 থেকে এখন পর্যন্ত ভারতের রাজ্য পুনর্বিন্যাস আলোচনা করো।
1956 সাল থেকে এখন পর্যন্ত ভারতের রাজ্যগুলির পুনর্বিন্যাস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি পূর্বাভাস করে যাচ্ছে যে এই বিষয়টি একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং বিন্যাসের ফল।
1956 থেকে বৰ্তমান সময় পর্যন্ত ভারতের রাজ্য পুনর্বিন্যাস
ভারতের ১৯৫৬ সাল থেকে পর্যন্ত রাজ্য পুনর্বিন্যাসের প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখন ভারতে ২৮টি রাজ্য এবং ৮টি কেন্দ্রশাসিত এলাকা রয়েছে।
1956 সালে ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন
1953 সালের ডিসেম্বর মাসে ভারত সরকার রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন তৈরি করে। সেই কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে 1956 সালের 1 নভেম্বর ভারত সরকার ভাষার ভিত্তিতে 14টি রাজ্য এবং প্রশাসনিক সুবিধার জন্য চটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করে। এগুলি হল —
ভারতের রাজ্য
- অন্ধ্রপ্রদেশ
- অসম
- ওডিশা
- উত্তরপ্রদেশ
- কেরল
- জম্মু ও কাশ্মীর
- পশ্চিমবঙ্গ
- পাঞ্জাব
- বিহার
- মুম্বাই
- মধ্যপ্রদেশ
- মহীশূর
- মাদ্রাজ এবং
- রাজস্থান
ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল
- ত্রিপুরা
- আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ
- দিল্লি
- লাক্ষাদ্বীপ
- মণিপুর এবং
- হিমাচল প্রদেশ।
ভারতের পরবর্তী সময়ে রাজ্য পুনর্গঠন
1956 সালে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্য পুনর্গঠিত হওয়ার পরও বিভিন্ন সময়ে কোনো কোনো রাজ্যকে নতুন করে পুনর্গঠন করা হয়, যেমন —
তারিখ ও সাল | রাজ্য পুনর্গঠন |
19 আগস্ট, 1949 | ওড়িশা রাজ্য গঠন সম্পূর্ণ হয়। |
1 নভেম্বর, 1956 | অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও কেরল রাজ্য গঠন করা হয়। |
1 মে, 1960 | পূর্বতন মুম্বাই রাজ্যকে ভাগ করে মহারাষ্ট্র ও গুজরাত রাজ্য গঠন করা হয়। |
1 ডিসেম্বর, 1963 | নাগাল্যান্ড পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা লাভ করে। |
1 নভেম্বর, 1966 | পূর্বতন পাঞ্জাব রাজ্যকে ভাগ করে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্য এবং চণ্ডীগড় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হয়। |
20 ফেব্রুয়ারি, 1970 | পূর্বতন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত অঞ্চল (NEFA) অরুণাচল প্রদেশ নামে পরিচিত হয়। |
25 জানুয়ারি, 1971 | কেন্দ্রশাসিত হিমাচল প্রদেশ পূর্ণাঙ্গ রাজ্যরূপে পরিগণিত হয়। |
1 নভেম্বর, 1973 | পূর্বতন মহীশূর রাজ্য কর্ণাটক রাজ্য নামে পরিচিত হয়। |
26 এপ্ৰিল, 1975 | চোগিয়াল শাসিত সিকিম ভারতের 22 তম অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয়। |
20 ফেব্রুয়ারি, 1987 | কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিজোরাম ও অরুণাচল প্রদেশ যথাক্রমে ভারতের 23 তম ও 24 তম পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা পায়। |
30 মে, 1987 | কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গোয়া ভারতের 25 তম পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা লাভ করে। |
1993 | ভারতের রাজধানী দিল্লিকে জাতীয় রাজধানী অঞ্চল আখ্যা দেওয়া হয়। |
1 নভেম্বর, 2000 | মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের পূর্বাংশ থেকে ভারতের 26 তম রাজ্য ছত্তিশগড়ের জন্ম হয়। |
8 নভেম্বর, 2000 | পূর্বতন উত্তরপ্রদেশ রাজ্য থেকে ভারতের 27 তম রাজ্য উত্তরাখণ্ডের জন্ম হয়। |
15 নভেম্বর, 2000 | পূর্বতন বিহার রাজ্য থেকে ভারতের 28 তম রাজ্য ঝাড়খণ্ডের উৎপত্তি ঘটে। |
2 জুন 2014 | পূর্বতন অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য থেকে ভারতের 29 তম রাজ্য তেলেঙ্গানার উৎপত্তি ঘটে। |
ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই বিষয়টি সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা দেশের ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু, জীববৈচিত্র্য, অর্থনীতি, সংস্কৃতি প্রভৃতির উপর একটি সুস্পষ্ট ধারণা পেতে পারবে।
মন্তব্য করুন