ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল। এই প্রতিরোধ ও বিদ্রোহগুলির কারণ, বৈশিষ্ট্য ও ফলাফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অধ্যায়ে আমরা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংঘটিত বিভিন্ন প্রতিরোধ ও বিদ্রোহের কারণ, বৈশিষ্ট্য ও ফলাফল সম্পর্কে আলোচনা করব।
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
প্রথম চুয়াড় বিদ্রোহ কত খ্রিস্টাব্দে শুরু হয়েছিল?
১৭৬৭ খ্রিস্টাব্দে।
চুয়াড় বিদ্রোহ কোথায় হয়েছিল।
মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও ধলভূমের ব্যাপক এলাকা জুড়ে।
চুয়াড় বিদ্রোহের কারণ কী?
দুর্ভিক্ষ, রাজস্ববৃদ্ধি ও রাজস্ব আদায়ে কঠোরতা।
কত খ্রিস্টাব্দে মেদিনীপুর কোম্পানির হাতে চলে যায়?
১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে।
চুয়াড়দের প্রধান পেশা কী ছিল?
কৃষিকাজ ও পশুশিকার।
পাইক কাদের বলা হয়?
ইংরেজ শাসনের আগে জমিদারের অধীনস্থ লেঠেল বাহিনী।
জমিদারের অধীনে পাইকের কাজ করার বিনিময়ে যে জমি পেতেন তার নাম কী?
পাইকান জমি।
দ্বিতীয় চুয়াড় বিদ্রোহ কত খ্রিস্টাব্দে শেষ হয়?
১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে।
প্রথম চুয়াড় বিদ্রোহ কোথায় হয়?
ধলভূমে।
প্রথম চুয়াড় বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কে?
জগন্নাথ বল।
জগন্নাথ বলের সঙ্গে কোন্ কোন্ মহলের জমিদাররা যোগ দেন?
ধোলক, বড়ভূম প্রভৃতি মহলের জমিদাররা।
প্রথম চুয়াড় বিদ্রোহে বিদ্রোহীদের কাছে কে পরাজিত হন?
স্টিফেন মরগান। (ইংরেজ সেনাপতি)
১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দের চুয়াড় বিদ্রোহের নেতৃত্ব কে দেন?
দুর্জন সিং।
কোন্ বড়লাটের নির্দেশে ব্রিটিশ সেনাদল সাঁড়াশি আক্রমন চালিয়ে চুয়াড় বিদ্রোহীদের পর্যদস্তু করে।
লর্ড ওয়েলেসলি।
আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য চুয়াড় বিদ্রোহের নেতাদের কী করা হয়েছিল?
বিদ্রোহীদের ফাঁসি দেওয়া এবং তাঁদের ঘাঁটিগুলিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
চুয়াড় বিদ্রোহ সম্পর্কে জে. সি. প্রাইস কী লিখেছেন?
১৭৯৮ ও ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দকে ভয়ংকর চুয়াড় বছর হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
কোলরা কোথায় বাস করত?
বর্তমান ঝাড়খণ্ডের ছোটোনাগপুরে।
ছোটোনাগপুরে কোলরা ছাড়াও কোন্ কোন্ উপজাতির বাস ছিল?
মুন্ডা, হো, ওরাওঁ প্রভৃতি।
অরণ্যের অধিকারকে কোলরা কী মনে করত?
ঈশ্বর প্রদত্ত অধিকার।
দৰ্পনাথ সাহি কোথাকার রাজা ছিলেন?
পালমৌর রাজা।
দর্পনাথ সাহির সঙ্গে কোম্পানি কি চুক্তি হয়েছিল?
ইতিপূর্বে নির্ধারিত বাৎসরিক খাজনা ছাড়াও অতিরিক্ত ছয় হাজার টাকা কোম্পানিকে দেওয়ার চুক্তি।
কত খ্রিস্টাব্দে কোম্পানি ও দর্শনাথ সাহির চুক্তি হয়?
১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে।
কোম্পানি কত খ্রিস্টাব্দে ছোটোনাগপুরের শাসনভার সরাসরি গ্রহণ করে?
১৮২০ খ্রিস্টাব্দে।
কোল বিদ্রোহের একটি কারণ বলো।
সরকারি কাজে কোলদের বেগার খাটানো।
কোল বিদ্রোহের সূচনা কবে হয়?
১৮৩১-৩২ খ্রিস্টাব্দে।
কোল বিদ্রোহ কোথায় প্রথম শুরু হয়?
ছোটোনাগপুরের রাঁচিতে।
কোল বিদ্রোহের নেতৃত্বে কারা ছিলেন?
সুই মুন্ডা, সিংরাই মানকি, বুন্ধু ভগৎ, জোয়া ভগৎ,খাঁদু পাতর প্রমুখ নেতা।
কোল বিদ্রোহে আর কোন্ কোন্ উপজাতির লোকেরা যোগ দিয়েছিল?
ওরাওঁ, মুন্ডা, হো উপজাতির লোকেরা।
কোলরা কী বাজিয়ে বিদ্রোহের সূচনা করত?
ঢাক বাজিয়ে।
কোল বিদ্রোহীদের আক্রণের লক্ষ্য কারা ছিল?
জমিদার, মহাজন, শস্য ব্যবসায়ী, কোম্পানির কর্মচারী।
কোলরা পুলিশ বাহিনীকে কাদের সহযোগী মনে করত?
জমিদার ও মহাজনদের।
কোল বিদ্রোহ দমন করতে কার নেতৃত্বে ইংরেজবাহিনী এসেছিল?
ক্যাপটেন উইলকিনসনের নেতৃত্বে।
কোলদের সমরাস্ত্র কী কী ছিল?
তির, ধনুক, বল্লম প্রভৃতি।
দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত এজেন্সি নামক পৃথক অঞ্চল কত খ্রিস্টাব্দে গঠন করা হয়?
১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে।
মাধব সিং কে ছিলেন।
মাধব সিং ছিলেন কোম্পানির দেওয়ান।
ফসল বিক্রি করতে গেলে কোলদের কারা প্রতারিত করত?
মহাজন, জমিদাররা।
কোলদের ঐতিহ্যবিরোধী কাজ কোনটি ছিল?
আফিম চাষ।
একটি উপজাতি বিদ্রোহের নাম বলো?
কোল/সাঁওতাল/মুন্ডা বিদ্রোহ।
দামিন-ই কোহ কথার অর্থ কী?
পাহাড়ের প্রান্তদেশ।
দিক্ শব্দের অর্থ কী?
উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় বহিরাগত মহাজন।
The Santal Insurrection of 1855-57 গ্রন্থটির লেখক কে?
কালীকিঙ্কর দত্ত।
মহাজনরা সাঁওতালদের ক্রীতদাসের স্তরে নামিয়ে এনেছেন — কথাটি কে বলেছেন?
ব্র্যাডলে বার্ট।
দামিন-ই-কোহ্তে কতজন সাঁওতাল বাস করত (১৮৫১ খ্রিস্টাব্দের পরিসংখ্যান অনুযায়ী)?
প্রায় ৮৩,০০০ জন।
কবে সাঁওতাল বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল?
১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন।
বহিরাগত বাঙালি ব্যবসায়ীরা বাইরে থেকে কোন কোন্ পণ্য কিনে এনে চড়া দামে বিক্রি করত?
তেল, নুন প্রভৃতি।
সাঁওতাল বিদ্রোহের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল কীভাবে?
খাদ্য সামগ্রীর লুঠ বা ডাকাতি দিয়ে।
হুল কী?
সাঁওতালদের বিদ্রোহ।
হুল কবে গড়ে উঠে?
১৮৫৫ সালের জুন-জুলাই মাসে।
সাঁওতাল ও অন্যান্য উপজাতিদের ঐক্যের প্রতীক কী ছিল?
শালগাছ।
দিঘি থানার করেছিল কোন্ দারোগাকে সাঁওতালরা হত্যা?
মহেশলাল দত্তকে।
সাঁওতালদের হাতিয়ার কী কী ছিল।
বিষ মাখানো তির, ধনুক, কুঠার, তলোয়ার প্রভৃতি।
মাল ও ভুয়ান কী?
দুটি উপজাতি যাঁরা সাঁওতাল বিদ্রোহে শামিল হয়েছিল।
কে সাঁওতালদের হাতে পরাজিত হন?
মেজর বারোস্।
সাঁওতাল বিদ্রোহ কোথায় কোথায় ছড়িয়ে পড়েছিল।
ভাগলপুর, সিংভূম, মুঙ্গের, হাজারিবাগ, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদে।
গোছ মাঝি কে ছিলেন?
সাঁওতাল বিদ্রোহকালে পাকুড়ের নেতা।
কাদের নেতৃত্বে পাকুড়ের রাজবাড়ি লুণ্ঠন হয়।
সিধু, কানহু, চাঁদ ও ভৈরবের নেতৃত্বে।
সাঁওতাল বিদ্রোহীরা কোথায় কোথায় ব্যাপক লুণ্ঠন চালায়?
লক্ষ্মীপুর, লিটিপুরা, হিরণপুর, মানসিংহপুর, অম্বর পরগনা প্রভৃতি এলাকায়।
সাঁওতাল বিদ্রোহীরা কাদের কোনো ক্ষতি করেননি?
কামার, কুমোর, ছুতোর, তেলি, গয়লা —এই পাঁচ শ্রেণির মানুষের।
কারা বিদ্রোহীদের তথ্য সরাবরাহ করত?
গোয়ালাদের একাংশ।
সাঁওতালরা গ্রাম লুঠ করে সেখানে কী রেখে যেতেন?
চামড়া বাঁধা বাঁশ পুঁতে রেখে যেতেন।
সাঁওতাল বিদ্রোহ দমনে ইংরেজ সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছিল?
সামরিক বাহিনীর ৭ম এবং ৬৩তম পদাতিক বাহিনীকে নিয়োগ করেছিল।
সিধুকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছিল?
গ্রেফতার করার সাথে সাথে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
কানহু কোথায় ধরা পড়েন?
উপেনবান্দায় (১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারি মাসে)।
কানহুর কী শাস্তি হয়?
ফাঁসি দেওয়া হয়।
মহাজনরা সাঁওতালদের কাছ থেকে কত সুদ নিত?
৫০-৫০০ শতাংশ।
ছোটো বাউ ও বড়ো বাউ কী?
ওজনের হেরফেরযুক্ত বাটখারার নাম।
ফেডারিক হ্যাডসি সিলে কে ছিলেন?
বাংলার ছোটো লাট।
সাঁওতাল বিদ্রোহে অন্য কোন্ মানুষেরা যোগ দিয়েছিলেন?
মধ্য ও নিম্নবর্ণের বহু হিন্দুরা এতে যোগ দিয়েছিলেন।
মাঝি পরগাইন, প্রামাণিক এঁরা কারা ছিলেন?
সাঁওতাল গোষ্ঠীপতি।
গিরা কী?
গিরা হল শালগাছের ডাল।
খেরওয়ারি কী ধরনের আন্দোলন?
খেরওয়ারি সাঁওতালদের একটি ধর্মীয় আন্দোলন।
সাঁওতাল বিদ্রোহের নেতা ছিলেন কারা?
সিধু, কানহু, চাঁদ, ভৈরব, ডোমন মাঝি, কালো প্রামাণিক প্রমুখ।
কার বিশ্বাসঘাতকতায় সিধু ধরা পড়েছিলেন?
ভাগনা মাঝির বিশ্বাসঘাতকতায়।
মুণ্ডা বিদ্রোহ কবে শুরু হয়?
১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে।
মুন্ডা চাষিরা কার আহ্বানে বিদ্রোহের জন্য প্রস্তুত হতে থাকে?
বিরসা মুন্ডা।
মুন্ডারা কেমন মানুষ ছিলেন?
নিরীহ, সহজ-সরল প্রকৃতির মানুষ।
খুঁৎকাঠি প্রথা মানে কী?
জমির যৌথ মালিকানা।
মাঝি হাম মানে কী?
খাসজমি।
বেট বেগার বেগারি মানে কী?
বিনা মজুরিতে কাজ করতে বাধ্য করা।
মুন্ডাদের খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করতে চেষ্টা করেছিল এমন দুই মিশনারি সম্প্রদায়ের নাম লেখো।
লুথারান ও অ্যাংলিকান।
The curious History of a Munda Fanatic গ্রন্থের লেখক কে?
শরৎ রায়।
কত খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার ছোটোনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইন পাস করে?
১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে।
ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে শেষ উল্লেখযোগ্য উপজাতি অভ্যুত্থান কোনটি?
মুন্ডা বিদ্রোহ।
খুঁৎকাঠি প্রথার আরেক নাম কী?
কুন্তকাঠি।
বিরসা মুন্ডার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর অনুগামীরা কোন্ সম্প্রদায় সৃষ্টি করেছিল?
বিরসা সম্প্রদায়।
মুন্ডা বিদ্রোহের প্রভাবে ওরাওঁ সম্প্রদায় যে আন্দোলনটি শুরু করে তার নাম কী?
তানা ভগৎ আন্দোলন।
মুন্ডা উপজাতির লোকেরা কী কাজ করত?
কৃষিকাজ।
বিরসা মুন্ডাকে তাঁর অনুগামীরা কী রূপে দেখত?
ভগবান রূপে।
প্রথম জীবনে বিরসা কী কাজ শুরু করেছিলেন?
ধর্মপ্রচারের কাজ।
মুন্ডা বিদ্রোহীরা ব্রিটিশদের কার সঙ্গে তুলনা করেছিল?
রাবণের সঙ্গে।
বিরসা মুন্ডা গ্রেফতার হবার কতদিন পরে মুক্তি পান?
২ বছর বাদে।
মুণ্ডা বিদ্রোহ কোথায় কোথায় ছড়িয়ে পড়েছিল?
রাঁচি, হাজারিবাগ, ছোটোনাগপুর, সিংভূম অঞ্চলে।
বিরসা মুন্ডার কবে মৃত্যু হয়?
১৯০০ খ্রিস্টাব্দে।
ওয়াহাবি কী?
ওয়াহাবি ছিল মুসলমানদের একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী।
আরবে ওয়াহাবি গোষ্ঠীর প্রবর্তক কে?
আব্দুল ওয়াহাব।
ভারতে ওয়াহাবি আন্দোলনের পুরোধা কে ছিলেন?
উত্তরপ্রদেশের রায়বেরিলি অঞ্চলের সৈয়দ আহমদ।
দার-উল-হারব কথার অর্থ কী?
শত্রুর দেশ।
দার-উল-ইসলাম কথার অর্থ কী?
ধর্মরাজ্য বা ইসলামের দেশ।
কত খ্রিস্টাব্দে সৈয়দ আহমদ কলকাতায় আসেন?
১৮২১ খ্রিস্টাব্দে।
মির নিসার আলির আরেক নাম কী?
তিতুমির।
তিতুমির কোন্ আদর্শ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন?
সৈয়দ আহমদের প্রভাবে ওয়াহাবি মতাদর্শ দ্বারা।
বাংলাদেশে ওয়াহাবি আন্দোলনের নেতৃত্ব কে দেন?
মির নিসার আলি/তিতুমির।
প্রথম জীবনে তিতুমির কীসের কাজ করতেন?
নদিয়ার জমিদারের অধীনে লেঠেলের কাজ।
মক্কাতে হজ করতে গিয়ে তিতুমিরের কার সাথে সাক্ষাৎ হয়েছিল?
সৈয়দ আহমদের।
তিতুমির প্রথম দিকে কাদের কাছে ওয়াহাবি আদর্শ প্রচার করেন?
দরিদ্র মুসলমান চাষি ও জেলেদের (তাঁতি) মধ্যে।
কৃষ্ণদেব রায় কে ছিলেন?
একজন জমিদার।
তিতুমিরের অনুগামীরা নিজেদের কী বলে পরিচয় দিত?
হেদায়তি।
ধর্ম প্রচার ও ধর্ম সংস্কার লক্ষ্য হলেও তিতুমিরের আন্দোলনের অন্যতম লক্ষ্য কী ছিল?
উৎপীড়ক জমিদার ও নীলকরদের থেকে কৃষকদের মুক্ত করা এবং ইংরেজ বিতাড়ন।
তিতুমির কীসের রাজত্বের কথা ঘোষণা করেন?
দীন মহম্মদের রাজত্বের কথা।
কৃয়দেব রায়ের সঙ্গে তিতুমিরের সংঘর্ষ বাধে কৰে?
৬ নভেম্বর ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে।
ওয়াহাবি আন্দোলন কত খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশে তীব্র আকার ধারণ করে?
১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে।
কলভিন কে ছিলেন?
বারাসতের যুগ্ম ম্যাজিস্ট্রেট।
কলভিন করে তিতুমিরের বিরুদ্ধে সিপাহি ও বরকন্দাজ নিয়ে অগ্রসর হন?
১৮৩১ খ্রিস্টাব্দের ৭ নভেম্বর।
গোলাম মাসুম কে ছিলেন?
তিতুমিরের প্রধান সেনাপতি তথা সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান।
বসিরহাট থানার দারোগাকে ওয়াহাবি বিদ্রোহীরা হত্যা করেছিল কেন?
দারোগা রামরতন চক্রবর্তীর চক্রান্তেই জমিদার কৃষ্ণচন্দ্র রায় মসজিদ পোড়ানোর অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি পান।
তিতুমিরের বিদ্রোহ আর কী নামে পরিচিত?
বারাসত বিদ্রোহ নামে।
বিদ্রোহ ঘোষণা হতেই তিতুমির কী বলেন?
কোম্পানির সরকারের অবসান আসন্নপ্রায়।
তিতুমির বাঁশের কেল্লা তৈরি করেছিলেন কীসের প্রতীক হিসেবে?
সার্বভৌমত্বের প্রতীক হিসেবে।
তিতুমির কী উপাধি ধারণ করেন?
বাদশা।
তিতুমিরের অভিষেক অনুষ্ঠান কোথায় হয়?
মইন উদ্দিনের বাড়িতে।
তিতুমিরের সদর দফতর কোথায় ছিল?
নারকেলবেড়িয়ার বাঁশের কেল্লায়।
তিতুমিরের প্রধানমন্ত্রী পদে কে নিযুক্ত হন?
মইন উদ্দিন নামক একজন দরিদ্র জেলে।
মালগুজারি মানে কি?
খাজনা।
বাঁশের কেল্লা কীভাবে ধ্বংস হয়?
ব্রিটিশ বাহিনীর কামানের আঘাতে।
তিতুমিরের জীবনীকারের নাম কী?
বিহারীলাল সরকার।
তিতুমিরের অনুগামীরা কীসের বিরোধী ছিলেন?
মূর্তিপূজা, পিরের পূজা, মহাজনি কারবার কুসংস্কারের।
মিকিন শাহ কে ছিলেন?
তিতুমিরের গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান।
কে তিতুমিরকে নিয়ে গান লিখেছেন?
সাজন গাজি।
তিতুমিরের মৃত্যু হয় কত খ্রিস্টাব্দে?
১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে।
ফরাজি আন্দোলনের প্রবর্তক কে?
হাজি শরিয়ত উল্লাহ।
ফরাজি আন্দোলন কোথায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল?
পূর্ববঙ্গের ফরিদপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বাখরগঞ্জ জেলাতে।
ফরাজি শব্দের অর্থ কী?
আল্লাহ্র আদেশ।
দুদু মিয়াঁ কে ছিলেন?
হাজি শরিয়ত উল্লাহের পুত্র এবং ফরাজি আন্দোলনের সংগঠক।
দুদু মিয়ার অন্য নাম কী?
মহম্মদ মহসীন।
ফরাজিদের বেজুম্মাওয়ালা বলা হত কেন?
ফরাজিরা জুম্মা প্রার্থনায় আপত্তি করতেন তাই।
ফরাজি আন্দোলনের অন্য নাম কী?
মিয়া আন্দোলন।
হাজি শরিয়ত উল্লাহের মতে ইংরেজ অধিকৃত ভারতবর্ষ কী ছিল?
দার-উল-হারর্।
আদি-ইসলামীয় সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন কে?
হাজি শরিয়ত উল্লাহ।
দুদু মিয়াঁ জমি নিয়ে কী প্রচার করেছিলেন?
জমি আল্লাহ্র দান, সুতরাং সেখানে জমিদারের কর ধার্য করার অধিকার নেই।
দুদু মিয়ার আদর্শে কারা অনুপ্রাণিত হয়?
বহু মুসলিম কৃষক ও তাঁতি।
দুদু মিয়া যে প্রশাসনটি গড়ে তোলেন তার নাম কী?
ফরাজি খিলাফত।
ফরাজি খিলাফতের শীর্ষব্যক্তিকে কী বলা হত?
ওস্তাদ।
হচ্ছা কথার অর্থ কী?
অঞ্চল।
দুদু মিয়ার প্রধান কার্যালয় কোথায় ছিল?
বাহাদুরপুর।
ফরাজিরা জমিদারদের দুর্গা পূজার কর দিতেন না কেন?
কারণ তাঁরা ছিলেন পৌত্তলিকতা বিরোধী।
ফরাজিরা পির ও মুরিদের নাম বদলে কী রাখেন?
ওস্তাদ ও কারিগর।
দুদু মিয়াঁ করে সংগ্রাম ঘোষণা করেন?
১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে।
দুদু মিয়াঁ কত খ্রিস্টাব্দে গ্রেফতার হন?
১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে।
দুদু মিয়ার মৃত্যুর পর কে ফরাজি আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন?
নোয়া মিয়া।
ভারতের প্রথম নীলকর কে ছিলেন?
ফরাসি বণিক লুই বোনার্ড।
কে ভারতে প্রথম নীল শিল্প গড়ে তোলেন?
ইংরেজ বণিক কার্ল ব্ল্যাম।
নীল বিদ্রোহে কৃষকদের প্রধান প্রতিপক্ষ কারা ছিলেন?
নীলকররা।
নীল বিদ্রোহে চাষি ছাড়াও কারা অংশ নেন?
ছোটো জমিদাররা। এমনকি কয়েকজন খ্রিস্টান মিশনারিও।
শিল্পবিপ্লব কোন্ দেশে প্রথম হয়?
ইংল্যান্ডে।
বাংলায় নীল চাষ মূলত কারা প্রবর্তন করেন?
ইংরেজ বণিকরা।
ব্রিটিশ মূলধন সর্বপ্রথম কোন্ কাজে বিনিয়োগ করা হয়?
ভারতে নীলচাষে।
কোন আইনে শ্বেতাঙ্গরা ভারতে জমি কেনার অধিকার পান?
১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার আইনে।
নীলকররা কেমন মানুষ ছিলেন?
অত্যন্ত ধূর্ত ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির।
নীলচাষ না করলে চাষিদের কী করা হত?
তাদের ঘরে আটকে রেখে প্রহার করা হত।
দাদন কথার অর্থ কী?
অগ্রিম।
নীলকররা গ্রামে কিছু রাস্তাঘাট করেছিলেন কেন?
নিজেদের স্বার্থে।
দাদন নিলে কৃষকরা কীসে বাধ্য থাকত?
নীল কুঠিতে উৎপাদিত নীল জমা দিতে।
তিন কাঠিয়া প্রথা কোথায় প্রবর্তিত হয়েছিল?
বিহারের চম্পারণে।
নীল বিদ্রোহের প্রথম শহিদ কে ছিলেন?
বিশ্বনাথ সর্দার বা বিশে ডাকাত।
স্যামুয়েল ফেডি কে ছিলেন?
নদিয়ার নীল কুঠিয়াল।
রেনি কোথাকার নীল কুঠিয়াল ছিলেন?
খুলনার।
নীল বিদ্রোহ কবে প্রথম শুরু হয়?
১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে।
নীলবিদ্রোহ প্রথম কোথায় হয়?
কৃয়নগরের চৌগাছা গ্রামে।
নীল বিদ্রোহকালে বাংলার বেশিরভাগ জমিদার জোতদাররা কাকে সমর্থন করেছিল?
নীল বিদ্রোহীদের।
বাংলাদেশের ওয়াট-টাইলার কাদের বলা হত?
দিগম্বর বিশ্বাস ও বিচরণ বিশ্বাসদের।
হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?
হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়।
নীল বিদ্রোহের কাহিনি কোন্ কোন্ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল?
সমাচার চন্দ্রিকা, সমাচার দর্পণ ও তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায়।
নীল দর্পণ নাটকটি কার লেখা?
দীনবন্ধু মিত্রের।
নীল দর্পণ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ কে প্রকাশ করেন?
পাদ্রি জেমস লং সাহেব।
নীলচাষিদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে যে কমিশনটি গঠিত হয় তার নাম কী?
ইন্ডিগো কমিশন।
১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দের অষ্টম আইনে কী বলা হয়?
নীল চুক্তি আইন রদ করা হয় এবং বলা হয় নীলচাষ সম্পূর্ণ চাষিদের ইচ্ছার ব্যাপার।
নীল বিদ্রোহের নেতৃত্ব কারা দিয়েছিলেন?
মহেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাদের মোল্লা, রফিক মণ্ডল, মেঘাই সর্দার, বৈদ্যনাথ সর্দার, বিশ্বনাথ সর্দার, দিগম্বর বিশ্বাস, বিষুচরণ বিশ্বাস প্রমুখ।
মহাবিদ্রোহ কত খ্রিস্টাব্দে হয়?
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে।
প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতবাসীর স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার দুটি গুরুত্বপূর্ণ রূপ। এদের মাধ্যমে ভারতবাসী ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তাদের অসন্তোষ ও প্রতিরোধের বার্তা জানিয়েছিল। প্রতিরোধ ও বিদ্রোহের ফলে ব্রিটিশ শাসনের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়েছিল এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করেছিল।