মাধ্যমিক ভূগোল – ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ – ভারতের মৃত্তিকা – সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নাবলী

Diptesh Khamaru

নমস্কার! আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় – ভারতের মৃত্তিকা বিভাগ – থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো শুধুমাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্যই নয়, বরং বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

Table of Contents

মাধ্যমিক ভূগোল - ভারতের মৃত্তিকা - সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নাবলী

মাটি কাকে বলে?

সূক্ষ্ম শিলাচূর্ণের সঙ্গে বিভিন্ন জৈব পদার্থের সংমিশ্রণের ফলে ভূত্বকের সবচেয়ে ওপরে যে আবরণের সৃষ্টি হয় তাকে সাধারণভাবে মৃত্তিকা বলে। মৃত্তিকার মধ্যে থাকা শিলাচূর্ণের খনিজ উপাদানের পরিমাণ, গ্রথন, সচ্ছিদ্রতা এবং জৈব পদার্থের পরিমাণের ওপর মৃত্তিকার উর্বরতা নির্ভর করে।
যেমন – পলি মৃত্তিকা, ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা প্রভৃতি।

ভূমিক্ষয় বা মৃত্তিকাক্ষয় সমস্যার সমাধানের পদ্ধতিগুলি সম্পর্কে লেখো।

যেসব পদ্ধতি গ্রহণ করলে ভূমিক্ষয় বা মৃত্তিকাক্ষয় সমস্যার সমাধান করা যায়, সেগুলি হল – বেশি করে গাছ লাগানো বা বৃক্ষরোপণ, বৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষ, ঝুমচাষ বা স্থান পরিবর্তনশীল কৃষিকাজ রোধ, পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ, পার্বত্য ও মালভূমি অঞ্চলে ভূমির ঢাল অনুসারে চাষ, জায়গা উন্মুক্ত না রেখে সেখানে কৃষিকাজ বা যে-কোনো ধরনের বৃক্ষরোপণ, শস্যাবর্তন পদ্ধতিতে চাষ ইত্যাদি।

ভারতের প্রধান প্রধান মাটির নাম করো।

ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে শিলার প্রকৃতি, উদ্ভিদ ও জলবায়ুর পার্থক্যের জন্য এখানে প্রধানত ছয় ধরনের মাটি দেখা যায় পলিমাটি, কৃষ্ণমৃত্তিকা বা কালোমাটি, লোহিত মৃত্তিকা বা লালমাটি, ল্যাটেরাইট মাটি, মরু অঞ্চলের মাটি এবং পার্বত্য মাটি।

ভারতীয় কৃষিতে কোন্ কোন্ প্রকার মৃত্তিকা গুরুত্বপূর্ণ?

আঞ্চলিক বিস্তৃতি এবং ফসল উৎপাদনের বিচারে ভারতের কৃষিতে তিন প্রকার মৃত্তিকা গুরুত্বপূর্ণ। এগুলি হল- পলিমাটি, কৃষ্ণ মৃত্তিকা বা কালোমাটি এবং লোহিত মৃত্তিকা বা লালমাটি।

বুনন অনুসারে অনুসারে পলিমাটির শ্রেণিবিভাগ করো।

পলি, বালি ও কাদার অনুপাত বা মৃত্তিকার বুনন অনুসারে পলিমাটি তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত। যেমন – বেলেমাটি (বালির ভাগ বেশি থাকে); দোআঁশ মাটি (বালি, পলি ও কাদার অনুপাত প্রায় সমান থাকে); এঁটেল মাটি (কাদার ভাগ বেশি থাকে)।

পলিমাটিতে কী কী ফসল উৎপন্ন হয়?

পলিমাটিতে ধান, গম, পাট, তুলো, আখ প্রভৃতি ফসল উৎপন্ন হয়।

পডসল মৃত্তিকা কাকে বলে?

সরলবর্গীয় অরণ্য অঞ্চলের জৈব পদার্থ বা হিউমাস সমৃদ্ধ ‘অম্লধর্মী’ মাটিকে পডসল মৃত্তিকা বলে। পশ্চিম হিমালয়ের হিমাচল ও জম্মু অঞ্চলের সরলবর্গীয় বনাঞ্চলে পডসল মৃত্তিকা দেখা যায়।

ভারতের কোন্ কোন্ অঞ্চলে কৃষ্ণ মৃত্তিকা দেখা যায়?

মহারাষ্ট্র মালভূমি, গুজরাতের ভারুচ, ভাদোদরা, সুরাট, মধ্যপ্রদেশের পশ্চিমাংশ ও কর্ণাটকের উত্তরাংশে কৃষ্ণ মৃত্তিকা দেখা যায়।

লবণাক্ত মৃত্তিকা ভারতের কোন্ কোন্ অঞ্চলে দেখা যায়?

সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে, যেমন – সুন্দরবন এলাকায় লবণাক্ত মৃত্তিকা দেখা যায়। এ ছাড়া, রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের মরুপ্রায় অঞ্চলেও লবণাক্ত মৃত্তিকা দেখা দেয়।

ভারতের কোন্ অঞ্চলে ল্যাটেরাইট মাটি দেখা যায়?

দাক্ষিণাত্যের পশ্চিমঘাট, নীলগিরি ও কার্ডামম পার্বত্য অঞ্চলে, ওডিশার পাহাড়ি এলাকায় এবং ছোটোনাগপুর মালভূমি অঞ্চলে ল্যাটেরাইট মাটি দেখা যায়।

ভুর ও রেণুর কী?

1. উচ্চ গঙ্গা সমভূমি অঞ্চলে বিশেষত পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের উচ্চ দোয়াব অঞ্চলে অত্যন্ত সূক্ষ্ম কণার মৃত্তিকা দ্বারা গঠিত তরঙ্গায়িত উচ্চভূমি দেখা যায়। একে ভুর বলে।
2. দাক্ষিণাত্যের উত্তর-পশ্চিম ভাগে ব্যাসল্ট শিলাসৃষ্ট যে অত্যন্ত উর্বর কুয় মৃত্তিকা আছে, তারই স্থানীয় নাম রেগুর। তেলুগু শব্দ ‘রেগাডা’ থেকে এই নামের উৎপত্তি।

খাদার (khadar) কী?

উত্তর ভারতের গঙ্গা সমভূমি অঞ্চলে নদীর উভয় তীরের প্লাবনভূমিতে যে নতুন পলিগঠিত উর্বর মৃত্তিকা দেখা যায়, তাকে খাদার (khadar) বলে।

ভূমিক্ষয় বা মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণ কী?

প্রাকৃতিক কারণ – ঝড়, বৃষ্টিপাত, ও নদী নালার মাধ্যমে ক্ষয় প্রভৃতি। মনুষ্যসৃষ্ট কারণ: যথেচ্ছ বৃক্ষচ্ছেদন, অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ, অনিয়ন্ত্রিত পশুচারণ প্রভৃতি।

পডসল মাটি ভারতের কোথায় দেখা যায়?

পশ্চিম হিমালয়, পশ্চিমঘাট, নীলগিরি, কার্ডামম প্রভৃতি পর্বতের উঁচু অংশে এমন মাটি দেখা যায়।

ডেকান ট্র্যাপ অঞ্চলে কৃষ্ণ মৃত্তিকার সৃষ্টি হয়েছে কেন?

দাক্ষিপাত্য মালভূমির উত্তর-পশ্চিমাংশে লাভা গঠিত মালভূমিকে ডেকান ট্র্যাপ বলে। এই মাটি কালো রঙের ব্যাসল্ট শিলার আবহবিকারে তৈরি এবং এতে টাইটানিয়াম অক্সাইড থাকে বলে এর রং কালো।

মৃত্তিকা ক্ষয় বলতে কী বোঝ?

প্রবহমান জলধারা, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তি এবং মানুষের অনিয়ন্ত্রিত কার্যকলাপের ফলে মাটির উপরিস্তরের আলগা ও শিথিল হয়ে অপসারণকে মৃত্তিকা ক্ষয় বলে। মৃত্তিকা ক্ষয় হলে মাটির উর্বরতাও নষ্ট হয়ে যায়।

ভারতের কোথায় কোথায় মৃত্তিকা ক্ষয়ের প্রাধান্য বেশি?

উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, ছোটোনাগপুর মালভূমি, পূর্ব ও পশ্চিমঘাট পর্বত, রাজস্থানের মরুভূমি, পাঞ্জাব, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্যগুলিতে মৃত্তিকা ক্ষয়ের প্রাধান্য রয়েছে।

রেণুর মাটির রং কালো কেন?

লাভাগঠিত কালো ব্যাসল্ট শিলা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে রেগুর মৃত্তিকা সৃষ্টি হয় বলে এই মাটির রং কালো। এই মাটিতে টাইটানিয়াম অক্সাইড থাকে বলে এর রং কালো হয়।

কৃষ্ণ মৃত্তিকার দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

কৃষ্ণ মৃত্তিকার দুটি বৈশিষ্ট্য- কৃয় মৃত্তিকায় সূক্ষ্ম কণার পলি ও কাদার পরিমাণ বেশি থাকায় অর্থাৎ গ্রথন সূক্ষ্ম হওয়ায় এই মৃত্তিকার জলধারণক্ষমতা বেশি। কৃয় মৃত্তিকায় নাইট্রোজেন ও জৈব পদার্থ কম পরিমাণে থাকলেও ক্যালশিয়াম, চুন, অ্যালুমিনিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম কার্বনেট প্রভৃতি খনিজ পদার্থ পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে বলে এই মৃত্তিকা খুবই উর্বর।

কৃষ্ণ মৃত্তিকার জলধারণক্ষমতা বেশি কেন?

কৃষ্ণ মৃত্তিকার জলধারণক্ষমতা: মৃত্তিকার জলধারণক্ষমতা বহুলাংশে মৃত্তিকার গ্রথনের ওপর নির্ভরশীল। মৃত্তিকার প্রথন সূক্ষ্ম হলে অর্থাৎ মৃত্তিকার কণাগুলি সূক্ষ্ম ও ঘনসন্নিবিষ্টি হলে ওই মৃত্তিকার জলধারণক্ষমতা বাড়ে। আর গ্রথন স্থূল হলে অর্থাৎ মৃত্তিকা বড়ো বড়ো বালুকণা দ্বারা সৃষ্টি হলে জল ধরে রাখতে পারে না, অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়। কৃয় মৃত্তিকায় সূক্ষ্ম পলি ও কাদা (মন্টমরিলোনাইট কাদা) কণার পরিমাণ বেশি থাকে বলে এই মৃত্তিকার প্রথনও সূক্ষ্ম হয়। তাই এর জলধারণক্ষমতাও বেশি।

সিরোজেম কী?

সিরোজেম – রাজস্থানের মরু অঞ্চলে এবং গুজরাতের কচ্ছ ও কাথিয়াবাড় উপদ্বীপের উত্তরাংশে জৈব পদার্থহীন বা স্বল্প জৈব পদার্থযুক্ত, বালিপূর্ণ ও লবণের আধিক্যযুক্ত যে মাটি দেখা যায়, যার নাম মরু মাটি, তারই অপর নাম সিরোজেম।

সমোন্নতি রেখা চাষ কীভাবে মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ করে?

সমোন্নতি রেখা চাষ- পার্বত্য উপত্যকার ঢালু জমিতে একই উচ্চতা বা সমোন্নতি রেখা বরাবর ঢালের সঙ্গে আড়াআড়িভাবে যে চাষ করা হয়, তাকে সমোন্নতি রেখা চাষ বলে। এই ধরনের চাষে সমোন্নতি রেখা বরাবর দীর্ঘাকার উঁচু বাঁধ দেওয়া হয়। এর ফলে চালের দিকে জলের ভূপৃষ্ঠীয় প্রবাহ নিয়ন্ত্রিত হয় এবং তাই মাটির ওপরের স্তর অভিকর্ষের টানে নীচের দিকে গড়িয়ে যেতে পারে না। সুতরাং সমোন্নতি রেখা চাষ করলে জলের সঙ্গে বাহিত মাটি ধাপের বাঁধ বা আল দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ওখানেই থেকে যায়, অর্থাৎ মৃত্তিকাক্ষয় হতে পারে না।

মৃত্তিকা ক্ষয় প্রতিরোধের দুটি পদ্ধতি উল্লেখ করো।

মৃত্তিকাক্ষয় প্রতিরোধের দুটি পদ্ধতি –
1. মৃত্তিকা সংরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হল ভূমিকে বৃক্ষ দ্বারা আবৃত রাখা এবং এজন্য বৃক্ষরোপণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। চালু জমিতে দ্রুত জলপ্রবাহের জন্য মৃত্তিকা ক্ষয় বেশি হয়।
2. কিন্তু সেই ঢালে ধাপ কেটে চাষাবাদ করলে ভূপৃষ্ঠীয় প্রবাহ হ্রাস পায় এবং তার ফলে মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ করা যায়।

পলিমাটি অত্যন্ত উর্বর হয় কেন?

পলিমাটিতে ফসফরাস ও পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে। এ ছাড়া এই মাটির মধ্যে পলি, কাদা, বালির পরিমাণ প্রায় সমান সমান থাকায় দোআঁশ মাটির জলধারণক্ষমতাও বেশি। তাই এই মাটি উর্বর হয়।

ল্যাটেরাইট মাটির নামকরণ কীভাবে হল?

লাতিন শব্দ ‘ল্যাটার’ শব্দের অর্থ ‘ইট’, এই মাটির রং ইটের মতো বলে এই মাটিকে ল্যাটেরাইট মাটি বলে।

পলিমাটিতে কী ধরনের ফসলের চাষ হয়?

পলিমাটি খুব উর্বর। তাই এই মাটিতে সবধরনের ফসল চাষ করা হয়। ধান, গম, পাট, আলু, আখ, ভুট্টা, তরমুজ, নানা ধরনের সবজি, তৈলবীজ প্রভৃতি উৎপাদনে পলিমাটি আদর্শ।

ঝুমচাষ কীভাবে মাটি ক্ষয় করে।

ঝুমচাষ করার সময় পার্বত্য অঞ্চলে জঙ্গল কেটে পুড়িয়ে ফেলতে হয়। এতে মাটির স্তর উন্মুক্ত হওয়ার জন্য বৃষ্টির জল ওই মাটিকে ক্ষয় করে অপসারিত করে।

ল্যাটেরাইট মৃত্তিকার রং লাল কেন?

বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে অত্যধিক বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে মৃত্তিকার বিভিন্ন খনিজ উপাদান, যেমন- পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম প্রভৃতি ধুয়ে মাটির নীচে চলে যায়। কেবলমাত্র লোহা ও অ্যালুমিনিয়ামের অক্সাইড ও হাইড্রক্সাইড অবশিষ্টরূপে পড়ে থাকে। মাটির উপরিস্তরে লোহার উপস্থিতির জন্য এই মৃত্তিকার রং লাল হয়।

রেগুরমাটি বা কালোমাটি খুব উর্বর কেন?

এই মাটিতে নাইট্রোজেন, ফসফেট এবং জৈব কম থাকলেও ক্যালশিয়াম, চুন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম প্রভৃতি খনিজ পদার্থ থাকে। এ ছাড়া কালোমাটিতে পলি ও কাদার ভাগ বেশি থাকে বলে জলধারণক্ষমতাও খুব বেশি হয়। তাই এই মাটি উর্বর হয়।

পশুচারণ কীভাবে মাটি ক্ষয়কে ত্বরান্বিত করে?

পশুচারণের সময় পশুরা তৃণ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এ ছাড়া ছোটো ছোটো গাছকেও উপড়ে ফেলে। এতে মাটির বাঁধন শিথিল হয়ে যায়। এ ছাড়া পশুর পায়ের খুরের চাপে মাটির ওপরের স্তরে ক্ষয় হয়। ওই শিথিল মাটির ওপর বৃষ্টির জল পড়লে মাটি ক্ষয় তরান্বিত হয়।

কৃষ্ণ মৃত্তিকায় কী কী ফসল উৎপন্ন হয়?

কৃয় মৃত্তিকা খুব উর্বর। এই মাটিতে নানাধরনের ফসল উৎপাদিত হয়- কার্পাস বা তুলো, চিনাবাদাম, গম, পেঁয়াজ, তৈলবীজ, তামাক প্রভৃতি। সামান্য জলসেচের ব্যবস্থা করতে পারলে কৃয় মৃত্তিকায় কৃষি উৎপাদন বাড়ানো যায়।

লোহিত বা লালমাটিতে কী কী ফসল চাষ হয়?

লোহিত মাটি খুব উর্বর নয়। এই মাটিতে – ভুট্টা, সয়াবিন, চিনাবাদাম, কফি, মিলেট, আঙুর প্রভৃতি ফসল জন্মায়।

উপকূলীয় মাটির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উপকূলের মাটি সমুদ্র তীরবর্তী স্থানে গঠিত হয় বলে এই মাটির লবণতা বেশি। উপকূলের মাটিতে বালির ভাগ বেশি থাকে। তবে নদী অধ্যুষিত অঞ্চলে কাদার ভাগ বেশি হয়।

পার্বত্য মাটিতে কী কী ফসল ভালো জন্মায়?

পার্বত্য মাটিতে নানা ধরনের বাগিচা ফসল ভালো জন্মায়। চা, কফি, মশলা, গম, বার্লি, প্রভৃতি চাষ হয়। এ ছাড়া নানা ধরনের ফলের বাগিচা যেমন – কমলালেবু, আপেল, চেরি ও অন্যান্য ফলের চাষ হয়।

মরু মাটিতে কী কী ফসল ভালো জন্মায়?

এই ধরনের মাটিতে চাষাবাদ খুব কম হয়। জলসেচ করতে পারলে লবণ সহ্যকারী ফসল যেমন – তুলো, গম, বার্লি, ডাল, মিলেট ইত্যাদি ফসলের চাষ হয়।

ভূপ্রকৃতি কীভাবে মৃত্তিকা ক্ষয়ে প্রভাব বিস্তার করে?

সমভূমির তুলনায় পার্বত্য অংশে বা মালভূমিতে মাটি ক্ষয় বেশি হয়। ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে মাটির স্তর পুরু হয় না এবং বৃষ্টিপাত বা অন্য কারণে দ্রুত অপসারিত হয়। তাই পার্বত্য অঞ্চলে সমভূমির তুলনায় মাটির ক্ষয় বেশি হয়।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি কীভাবে মাটি ক্ষয়ে প্রভাব বিস্তার করে।

যেখানে মানুষের বসবাস বেশি সেখানে মাটির ক্ষয় বেশি হয়। মানুষ বাড়িঘর নির্মাণ, রাস্তাঘাট তৈরি, জলনিকাশি ব্যবস্থার প্রয়োগ এবং কৃষিকাজ বেশি করায় সেখানে মাটির ক্ষয় বৃদ্ধি পায়।

প্রথাগত কৃষি কীভাবে মাটি ক্ষয় করে?

প্রথাগত কৃষি পদ্ধতিতে ফলন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে জমির প্রকৃতি বা মাটির উপাদান বিচার না করে, রাসায়নিক সার, কীটনাশক প্রয়োগ করলে মাটি ক্ষয়ের মাত্রা বাড়তে থাকে। ট্রাক্টর, হারভেস্টর, ইত্যাদি অত্যধিক ব্যবহার করলে মাটি সহজে হালকা হয় ও মাটির ক্ষয়কে বাড়িয়ে তোলে।

ধাপচাষ কীভাবে মাটি ক্ষয় প্রতিরোধ করে?

পাহাড়ি বা ঢালু জমিতে ধাপ গঠন করে কৃষিকাজ করলে সেখানে প্রবহমান জলের গতি হ্রাস পায়। এধরনের ধাপচাষের দ্বারা মাটিক্ষয় অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

সমোন্নতি রেখা বরাবর চাষ বলতে কী বোঝ?

পার্বত্য অঞ্চলে সমান উচ্চতাযুক্ত বিন্দুগুলিকে যোগ করে যে রেখা পাওয়া যায়, তাকে সমোন্নতি রেখা বলে। ওই রেখা বরাবর জমি সমতল করে শস্যক্ষেত্র তৈরি করা হয় এবং জলপ্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। এই পদ্ধতিতে চাষ করলে ভূমিক্ষয় হ্রাস পায়।

আজকের আর্টিকেলে, আমরা মাধ্যমিক মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায়ের “ভারতের মৃত্তিকা বিভাগ” বিষয়টির উপর সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলি কেবল মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্যই নয়, বরং বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই বিষয়টি প্রায়শই এসব পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত থাকে।

আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন বা অসুবিধা হয়, তাহলে আমাকে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন। আমি উত্তর দেওয়ার জন্য আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করবো।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

মাধ্যমিক - ভূগোল - বারিমন্ডল - জোয়ার ভাটা - রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

মাধ্যমিক – ভূগোল – বারিমন্ডল – জোয়ার ভাটা – রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – About Author and Story

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – About Author and Story

The Passing Away of Bapu

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – Question and Answer

Tags

“মাধ্যমিক ভূগোল – ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ – ভারতের মৃত্তিকা – সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নাবলী” এ একটি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer