এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “অধঃক্ষেপণ বলতে কী বোঝো? বিভিন্ন প্রকার অধঃক্ষেপণের পরিচয় দাও।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “অধঃক্ষেপণ বলতে কী বোঝো? বিভিন্ন প্রকার অধঃক্ষেপণের পরিচয় দাও।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

অধঃক্ষেপণ বলতে কী বোঝো? বিভিন্ন প্রকার অধঃক্ষেপণের পরিচয় দাও।
অধঃক্ষেপণ –
জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু ওপরে উঠে ঘনীভূত হয় এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণা বা তুষারকণায় পরিণত হয়। মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে এই জলকণা বা তুষারকণার ভূপৃষ্ঠে পতনকেই অধঃক্ষেপণ বলে। ঘনীভূত জলীয়বাষ্পের প্রকৃতি অনুসারে বিভিন্ন ধরনের অধঃক্ষেপণ দেখা যায়। যথা –
- বৃষ্টিপাত।
- তুষারপাত।
- শিলাবৃষ্টি প্রভৃতি।
মোট অধঃক্ষেপণের প্রায় 90 শতাংশই বৃষ্টিপাত আকারে ঘটে থাকে। তাই অধঃক্ষেপণ বলতে সাধারণভাবে বৃষ্টিপাতকেই বোঝায়। বিভিন্ন প্রকার অধঃক্ষেপণ হল –
বৃষ্টিপাত –
জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু ঊর্ধ্বাকাশে গিয়ে ঘনীভূত হওয়ার পর জলকণাগুলি পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়ে ফোঁটা ফোঁটা আকারে ভূপৃষ্ঠে পতিত হলে তাকে বৃষ্টিপাত বলে। বৈশিষ্ট্য, প্রকৃতি ও সংঘটনের প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে তিন ধরনের বৃষ্টিপাত দেখা যায়। যথা –
- পরিচলন বৃষ্টিপাত।
- শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত।
- ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত।
তুষারপাত –
শীতপ্রধান দেশে বা উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু হিমাঙ্কের থেকে কম উষ্ণতায় ঘনীভূত হয়ে জলকণার পরিবর্তে তুষারকণায় পরিণত হয়। এই তুষারকণা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূপৃষ্ঠে পতিত হলে, তাকে তুষারপাত বলে।
স্লিট –
ভূপৃষ্ঠের কাছে শীতল মেঘের স্তর ও তার ওপরে উষ্ণ মেঘের স্তর অবস্থান করলে তুষার নীচে পতিত হওয়ার সময় উষ্ণ বায়ুস্তরের মধ্যে গলে জলকণায় পরিণত হয়, এই জলকণাগুলি ভুপৃষ্ঠের নিকটে শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তুষারকণায় পরিণত হয়। উচ্চ ও মধ্য অক্ষাংশে এই প্রকার অধঃক্ষেপণকে বলে স্লিট।
গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি –
0.5 মিমির কম ব্যাসযুক্ত জলকণা গুঁড়িগুঁড়ি আকারে ভূপৃষ্ঠে পতিত হলে তাকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি বলে।
শিলাবৃষ্টি –
জলীয় বাষ্পপূর্ণ ঊর্ধ্বমুখী বায়ু ওপরে উঠে যায় এবং অধিক শৈত্যের জন্য জলকণা জমাট বেঁধে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বরফকণায় পরিণত হয়। অবশেষে এই বরফকণাগুলি পরস্পর যুক্ত হয়ে আয়তনে বৃদ্ধি পেলে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলের টানে ভূপৃষ্ঠে নেমে আসে। একে শিলাবৃষ্টি বলে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
অধঃক্ষেপণ বলতে কী বোঝো?
জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু উপরে উঠে ঘনীভূত হয়ে জলকণা বা তুষারকণায় পরিণত হয় এবং মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে ভূপৃষ্ঠে পতিত হলে তাকে অধঃক্ষেপণ বলে।
অধঃক্ষেপণের প্রধান প্রকারগুলি কী কী?
অধঃক্ষেপণের প্রধান প্রকারগুলি হলো —
1. বৃষ্টিপাত।
2. তুষারপাত।
3. শিলাবৃষ্টি।
4. স্লিট।
5. গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি।
অধঃক্ষেপণের সর্বাধিক প্রচলিত রূপ কোনটি?
অধঃক্ষেপণের প্রায় 90% বৃষ্টিপাত আকারে ঘটে।
বৃষ্টিপাত কাকে বলে? এর প্রকারভেদ উল্লেখ করো।
জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ফোঁটার আকারে ভূপৃষ্ঠে পতিত হলে তাকে বৃষ্টিপাত বলে। বৃষ্টিপাত তিন প্রকার—
1. পরিচলন বৃষ্টিপাত।
2. শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত।
3. ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত।
তুষারপাত কীভাবে সৃষ্টি হয়?
শীতল অঞ্চলে জলীয়বাষ্প হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রায় ঘনীভূত হয়ে তুষারকণায় পরিণত হয় এবং মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূপৃষ্ঠে পড়লে তাকে তুষারপাত বলে।
স্লিট কী?
যখন তুষারকণা নিচে পড়ার সময় উষ্ণ বায়ুস্তরে গলে জলকণায় পরিণত হয় এবং আবার নিচের শীতল বায়ুস্তরে এসে ক্ষুদ্র তুষারকণা তৈরি করে, তখন তাকে স্লিট বলে। এটি সাধারণত উচ্চ ও মধ্য অক্ষাংশে দেখা যায়।
গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি কাকে বলে?
0.5 মিমির চেয়ে ছোট জলকণা ধীরে ধীরে ভূপৃষ্ঠে পড়লে তাকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি বলে।
শিলাবৃষ্টি কীভাবে সৃষ্টি হয়?
ঊর্ধ্বমুখী বায়ুপ্রবাহে জলকণা জমাট বেঁধে বরফের গোলাকার কণা তৈরি করে এবং তা ভারী হয়ে ভূপৃষ্ঠে পড়লে তাকে শিলাবৃষ্টি বলে।
অধঃক্ষেপণের জন্য কী কী শর্ত প্রয়োজন?
অধঃক্ষেপণের জন্য প্রয়োজন—
1. জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু।
2. বায়ুর ঊর্ধ্বগতি।
3. ঘনীভবন ও মেঘ সৃষ্টি।
4. জলকণা/তুষারকণার ভারী হয়ে পতন।
শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত কোথায় দেখা যায়?
পার্বত্য অঞ্চলে যখন আর্দ্র বায়ু পর্বত বেয়ে উপরে উঠে ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়, তাকে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত বলে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “অধঃক্ষেপণ বলতে কী বোঝো? বিভিন্ন প্রকার অধঃক্ষেপণের পরিচয় দাও।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “অধঃক্ষেপণ বলতে কী বোঝো? বিভিন্ন প্রকার অধঃক্ষেপণের পরিচয় দাও।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন