আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো অতিরিক্ত জলসেচের সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে। দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” অধ্যায়ের “ভারতের জলসম্পদ” বিভাগের অন্তর্গত।
অতিরিক্ত জলসেচের ফলে বিপদ
অতিরিক্ত জলসেচের ফলে নিম্নলিখিত বিপদগুলি ঘটতে পারে –
- উদ্ভিদের অক্সিজেনের অভাব – জলাবদ্ধ মাটিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকায় উদ্ভিদ শিকড়ের সাহায্যে পর্যাপ্ত অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে না। ফলে উদ্ভিদের বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়।
- উদ্ভিদের বিভিন্ন প্রকার রোগ সৃষ্টি – জলাবদ্ধ মাটিতে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটিরিয়া, জীবাণু ইত্যাদি সক্রিয় হওয়ার ফলে গাছের শিকড় পচে যায়। এ ছাড়া উদ্ভিদদেহে নানা রকম ছত্রাকঘটিত রোগের সংক্রমণ ঘটে।
- বিষাক্ত বস্তুর সৃষ্টি – মাটিতে দীর্ঘকাল জল থাকলে নানা রকম বিষাক্ত পদার্থ, যেমন – হাইড্রোজেন সালফাইড, ভোলাটাইল ফ্যাটি অ্যাসিড ইত্যাদি উৎপন্ন হয়।
- জমির উর্বরতা হ্রাস – জলসেচের সুবিধা নিয়ে বহু জমিতে সারাবছর চাষ করা হয়। অনেকসময় একই ফসল বারবার চাষ করা হয়। এর ফলে মাটির ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং জমির স্বাভাবিক উর্বরতা কমতে থাকে।
- মাটির লবণতা বৃদ্ধি – অতিরিক্ত জলসেচের ফলে মাটির নীচের স্তর থেকে লবণ সেচের জলে দ্রবীভূত হয়ে মাটির ওপরের স্তরে এসে সঞ্চিত হয়। এভাবে মাটি লবণাক্ত হয়ে পড়ে।
- ভৌমজলতলের পতন – অতিরিক্ত জল তোলার ফলে মাটির নীচে ভৌমজলতলের পতন ঘটে। ফলে গ্রীষ্মকালে প্রয়োজনমতো জল পাওয়া যায় না।
এ ছাড়া অতিরিক্ত জলসেচের ফলে
- বাস্তুতন্ত্রের নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে,
- জলবাহিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে পারে এবং
- আর্সেনিক দূষণের সম্ভাবনা বাড়তে পারে।
আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় হল অতিরিক্ত জলসেচের ফলে সৃষ্ট বিপদ। জলসেচ কৃষিক্ষেত্রে অপরিহার্য, কিন্তু অতিরিক্ত জলসেচ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে। এই বিষয়টি দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” অধ্যায়ের “ভারতের জলসম্পদ” বিভাগে এই বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।