এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত কীভাবে সংঘটিত হয় উপযুক্ত উদাহরণ ও চিত্রসহ বর্ণনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত কীভাবে সংঘটিত হয় উপযুক্ত উদাহরণ ও চিত্রসহ বর্ণনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত কীভাবে সংঘটিত হয় উপযুক্ত উদাহরণ ও চিত্রসহ বর্ণনা করো।
শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত –
শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতের সংজ্ঞা – ‘শৈল’ শব্দের অর্থ পর্বত এবং ‘উৎক্ষেপ’ -এর অর্থ ওপরে ওঠা। জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ুর প্রবাহপথে পর্বতের অবস্থান থাকলে সেই বায়ু পর্বতের ঢাল বরাবর উপরে ওঠে এবং শীতলতার সংস্পর্শে এসে বৃষ্টিপাত ঘটায়, একে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত বলে।
শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতের পদ্ধতি – জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু তার গতিপথে আড়াআড়িভাবে অবস্থিত কোনো পর্বতে বাধা পেয়ে পর্বতের গা বরাবর উপরে উঠে যায়। এই জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু ওপরে উঠে শীতল হয় এবং জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে জলকণায় পরিণত হয়। জলকণাগুলি একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বড়ো হতে থাকে এবং পর্বতের যে ঢাল বরাবর ওপরে ওঠে সেই ঢালেই (প্রতিবাত ঢাল) প্রচুর শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটায়। এরপর পর্বত অতিক্রম করে যখন বিপরীত ঢালে (অনুবাত ঢাল) পৌঁছোয় তখন বায়ুতে জলীয়বাষ্প থাকে না। পর্বতের অনুবাত ঢালটি বৃষ্টিপাতের অভাবে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে পরিণত হয়।
শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতের উদাহরণ – ভারতে মেঘালয়ে খাসি পাহাড়ের প্রতিবাত ঢালে অবস্থিত মৌসিনরামে জলীবাষ্পপূর্ণ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাধা পেয়ে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটায় (অনুবাত ঢালে অবস্থিত শিলং একটি বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল)।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত কী?
জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু পর্বতের ঢাল বরাবর উপরে উঠে শীতল হয়ে যে বৃষ্টিপাত ঘটায়, তাকে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত বলে।
শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতের প্রক্রিয়া কী?
1. জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু পর্বতের গায়ে বাধা পেয়ে ওপরে উঠে।
2. উচ্চতায় শীতল হয়ে বাষ্প ঘনীভূত হয় ও মেঘ সৃষ্টি করে।
3. মেঘ থেকে বৃষ্টিপাত হয় (প্রতিবাত ঢালে)।
4. পর্বতের অপর পাশে (অনুবাত ঢালে) শুষ্ক বায়ু নামে, ফলে সেখানে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল তৈরি হয়।
শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতের উদাহরণ দাও।
1. মৌসিনরাম (মেঘালয়) – দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু খাসি পাহাড়ে বাধা পেয়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়।
2. শিলং – মৌসিনরামের অনুবাত ঢালে অবস্থিত বলে এখানে বৃষ্টিপাত কম (বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল)।
শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতের বৈশিষ্ট্য কী?
1. পর্বতের প্রতিবাত ঢালে ভারী বৃষ্টিপাত।
2. অনুবাত ঢালে শুষ্কতা বা মরুভাব।
3. ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে বেশি দেখা যায়।
বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল কী?
পর্বতের অনুবাত ঢালে বৃষ্টিপাত কম হয়, ফলে শুষ্ক অঞ্চল সৃষ্টি হয়। যেমন — শিলং (মৌসিনরামের অনুবাত ঢাল)।
শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত কোথায় বেশি হয়?
1. ভারত – মেঘালয়, পশ্চিমঘাট পর্বত।
2. বিশ্ব – হাওয়াই, আন্দিজ পর্বত।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত কীভাবে সংঘটিত হয় উপযুক্ত উদাহরণ ও চিত্রসহ বর্ণনা করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত কীভাবে সংঘটিত হয় উপযুক্ত উদাহরণ ও চিত্রসহ বর্ণনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন