পাঁচটি কঠিন বর্জ্য পদার্থের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আলোচনা করো।

Rohit Mondal

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “পাঁচটি কঠিন বর্জ্য পদার্থের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “পাঁচটি কঠিন বর্জ্য পদার্থের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের চতুর্থ অধ্যায় “বর্জ্য ব্যবস্থাপনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

পাঁচটি কঠিন বর্জ্য পদার্থের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আলোচনা করো।
পাঁচটি কঠিন বর্জ্য পদার্থের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আলোচনা করো।

পাঁচটি কঠিন বর্জ্য পদার্থের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আলোচনা করো।

বর্জ্য পদার্থের পুনর্ব্যবহার দ্বারা সম্পদ সংরক্ষণ করা হয় এবং পরিবেশের দূষণমাত্রা কমানো যায় এবং পরিবেশ সংরক্ষণ করা যায়। সুতরাং, অর্থনৈতিক দিক দিয়ে লাভজনক 5টি বর্জ্য পদার্থের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নীচে আলোচনা করা হল।

ফ্লাই অ্যাশ –

কয়লা নির্ভর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রচুর পরিমাণে ফ্লাই অ্যাশ (Fly Ash) ও তলানি ছাই (Bottom Ash) উৎপন্ন হয়। ফ্লাই অ্যাশ সিমেন্ট ও ইট তৈরির কাজে ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া বাঁধ তৈরি করতে, খনির ফাঁকা স্থান পূরণ করার কাজে, নীচু জমি ভরাট করতে, মৎস্য প্রকল্পে ফ্লাই অ্যাশ ব্যবহার করা হয়।

বর্জ্য কাগজ –

স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালত, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে কাগজ বর্জ্য হিসেবে উৎপাদিত হয় যার পুনর্ব্যবহার সম্ভব। বর্জ্য কাগজ থেকে ধুলো, ময়লা প্রভৃতি অবাঞ্ছিত পদার্থকে আলাদা করে কাগজের মণ্ড তৈরি করা যায়। এই কাগজের মণ্ড দিয়ে কাগজের ব্যাগ, বোর্ড প্রভৃতি তৈরি করা যায়। আবার বর্জ্য কাগজকে পুনরায় কাগজের প্যাকেট ও ঠোঙা হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

ধাতব পদার্থ –

কলকারখানা, নির্মাণ শিল্প ও পৌর বর্জ্যের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে ধাতব সামগ্রী যেমন – লোহা, অ্যালুমিনিয়াম, তামা ইত্যাদি থাকে। ‘লোহাজাত পদার্থগুলিকে চৌম্বক পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা হয়। অলৌহজাত ধাতব পদার্থগুলিকে তাপীয়, রাসায়নিক পদ্ধতির দ্বারা পৃথককরণ করা হয়। পৃথকৃত ধাতুগুলি থেকে পুনরায় শিল্প কারখানাগুলিতে ব্যবহার্য সম্পদ তৈরি করা হয়।

আখের ছিবড়া –

চিনি শিল্প কেন্দ্রগুলিতে প্রচুর পরিমাণে আখের ছিবড়া বর্জ্য পদার্থ হিসেবে উৎপাদিত হয়। আখের ছিবড়া দিয়ে কাগজের মন্ড, জৈব গ্যাস ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। কাগজ শিল্পে কাঠের তন্তুর বদলে আখের ছিবড়াকে তত্ত্ব হিসেবে ব্যবহার করলে কাঠের ব্যবহার কমানো সম্ভব হয়।

কাচ –

গৃহস্থালি বা শিল্প বর্জ্যে কাচ থাকে। এখান থেকে কাচকে পৃথক করা হয়। এই পৃথকৃত কাচকে গলিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাচের সামগ্রী তৈরি করা হয়। বর্জ্য কাচ অ্যাসফল্টের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

কঠিন বর্জ্য পদার্থ কী?

কঠিন বর্জ্য পদার্থ হল বাসাবাড়ি, শিল্পকারখানা, হাসপাতাল, অফিস-আদালত ইত্যাদি থেকে উৎপন্ন বর্জ্য যেমন — ফ্লাই অ্যাশ, কাগজ, ধাতু, প্লাস্টিক, কাচ ইত্যাদি।

বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের প্রধান পদ্ধতিগুলো কী কী?

বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের প্রধান পদ্ধতিগুলো হলো —
1. পুনর্ব্যবহার (Recycling)।
2. পুনঃব্যবহার (Reuse)।
3. জৈব প্রক্রিয়ায় পচন (Composting)।
4. ভরাটকরণ (Landfilling)।
5. তাপীয় ধ্বংস (Incineration)।

ফ্লাই অ্যাশ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়?

ফ্লাই অ্যাশ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপন্ন হয়। এটি সিমেন্ট, ইট, বাঁধ নির্মাণ, নিচু জমি ভরাট ও মৎস্য চাষে ব্যবহার করা যায়।

বর্জ্য কাগজের পুনর্ব্যবহার কীভাবে সম্ভব?

বর্জ্য কাগজ থেকে মণ্ড তৈরি করে নতুন কাগজ, ব্যাগ, কার্ডবোর্ড ইত্যাদি তৈরি করা যায়। স্কুল-কলেজ ও অফিস থেকে সংগ্রহ করে এটি পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা যায়।

ধাতব বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের উপায় কী?

লৌহজাত ধাতু চৌম্বক শক্তি দিয়ে এবং অলৌহজাত ধাতু (অ্যালুমিনিয়াম, তামা) রাসায়নিক বা তাপীয় পদ্ধতিতে পৃথক করে পুনর্ব্যবহার করা যায়।

আখের ছিবড়া দিয়ে কী কী করা যায়?

আখের ছিবড়া দিয়ে কাগজের মণ্ড, বায়োগ্যাস, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং জৈবসার তৈরি করা যায়।

কাচের বর্জ্য কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়?

কাচ গলিয়ে নতুন পণ্য তৈরি করা যায়। এছাড়া এটি রাস্তা নির্মাণে অ্যাসফল্টের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।

বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের সুবিধা কী?

1. প্রাকৃতিক সম্পদের সাশ্রয়।
2. পরিবেশ দূষণ হ্রাস।
3. শক্তি সাশ্রয়।
4. অর্থনৈতিক লাভ।

বর্জ্য নিয়ন্ত্রণে আমাদের ভূমিকা কী?

1. বর্জ্য আলাদা করে ফেলা (কাগজ, প্লাস্টিক, ধাতু ইত্যাদি)।
2. পুনর্ব্যবহারযোগ্য জিনিস ব্যবহার করা।
3. কম্পোস্টিং করে জৈবসার তৈরি করা।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন গুরুত্বপূর্ণ?

বর্জ্য সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা না করলে মাটি, জল ও বায়ু দূষিত হয়, যা মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “পাঁচটি কঠিন বর্জ্য পদার্থের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আলোচনা করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “পাঁচটি কঠিন বর্জ্য পদার্থের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আলোচনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের চতুর্থ অধ্যায় “বর্জ্য ব্যবস্থাপনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

নর্দমার জলকে কীভাবে পরিশোধন করা হয়

নর্দমার জলকে কীভাবে পরিশোধন করা হয়?

BOD এবং COD বলতে কী বোঝো

BOD এবং COD বলতে কী বোঝো?

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় তোমারশিক্ষার্থীর ভূমিকা লেখো।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থীর ভূমিকা লেখো।

About The Author

Rohit Mondal

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

পাঁচটি কঠিন বর্জ্য পদার্থের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আলোচনা করো।

নর্দমার জলকে কীভাবে পরিশোধন করা হয়?

BOD এবং COD বলতে কী বোঝো?

মাতঙ্গিনী হাজরা বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে স্মরণীয় নাম কেন?

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থীর ভূমিকা লেখো।