এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “প্লাবন খাল ও নিত্যবহ খাল কী? প্লাবন খাল ও নিত্যবহ খালের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারত” -এর “ভারতের নদনদী ও হ্রদসমূহ” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

প্লাবন খাল ও নিত্যবহ খাল কী?
প্লাবন খাল –
নদীর ওপর কোনোরকম জলাধার নির্মাণ না করে যদি সরাসরি নদী থেকে খাল কেটে জলসেচ করা হয় তাকে প্লাবন খাল বলে। কেবল বর্ষাকালে নদীর জল বৃদ্ধি পেলেই এই খালে জল প্রবাহিত হয়। প্রধানত বন্যা নিয়ন্ত্রণেই এই খাল বিশেষ উপযোগী। দক্ষিণ ভারতের বদ্বীপ অঞ্চলেই এই খাল বেশি দেখা যায়।
উদাহরণ – তামিলনাড়ুর কাবেরী বদ্বীপে প্লাবন খাল দেখা যায়।
নিত্যবহ খাল –
নিত্যবহ নদীতে বাঁধ দিয়ে জলাধার নির্মাণ করে সেই জল খালের দ্বারা নিয়ে গেলে তা নিত্যবহ খাল নামে পরিচিত। প্রধানত নিত্যবহ নদীগুলির সঙ্গে এই খাল যুক্ত থাকে। উত্তর ভারতের সমভূমিতে এই ধরনের খালের দ্বারা জলসেচ করা হয়।
উদাহরণ – পাঞ্জাবের পশ্চিম যমুনা খাল নিত্যবহ খালের উদাহরণ।
প্লাবন খাল ও নিত্যবহ খালের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
প্লাবন খাল ও নিত্যবহ খালের মধ্যে পার্থক্য –
বিষয় | প্লাবন খাল | নিত্যবহ খাল |
জলের উৎস | বর্ষার জলে পুষ্ট বলে কেবলমাত্র বর্ষাকালে অধিক বৃষ্টি হলে এই খালে জল প্রবেশ করে। | বৃষ্টির জল ও বরফ গলা জলে পুষ্ট বলে এই খালগুলি বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভরশীল নয়। |
স্থান | বন্যাপ্রবণ অঞ্চলে এই খাল খনন করা হয়। | যে সমস্ত অঞ্চলে নদীতে সারাবছর জল থাকে, সেই অঞ্চলে এই খাল দেখা যায়। |
জলের জোগান | সারাবছর খালে জল না থাকলেও বর্ষাকালে খালে জল থাকে। | সারাবছরই খালে জল থাকে। |
গুরুত্ব | বন্যা নিয়ন্ত্রণে এই খালের গুরুত্ব খুব বেশি। | বন্যা নিয়ন্ত্রণে এই খালের গুরুত্ব কম। |
নদীপ্রবাহ | সাধারণত নদীর নিম্নপ্রবাহে বদ্বীপ অংশে এই খাল দেখা যায়। | মূলত নদীর সমভূমি বা মধ্যপ্রবাহে এই খাল বেশি দেখা যায়। |
উপযোগিতা | কৃষিজমিতে জলসেচ ও কৃষির উন্নতিতে এই খালের উপযোগিতা কম। | কৃষির উন্নতিতে এই খালের গুরুত্ব খুব বেশি। |
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
প্লাবন খাল কী?
প্লাবন খাল হলো এমন একটি খাল যা নদী থেকে সরাসরি কেটে তৈরি করা হয়, কোনো জলাধার ছাড়াই। এটি প্রধানত বর্ষাকালে নদীর জল বাড়লে সেচের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
নিত্যবহ খাল কী?
নিত্যবহ খাল হলো এমন একটি খাল যা নিত্যবহ নদীতে বাঁধ দিয়ে জলাধার তৈরি করে তারপর খালের মাধ্যমে জল সরবরাহ করা হয়। এটি সারা বছর জল সরবরাহ করে এবং কৃষিকাজে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
প্লাবন খালের উদাহরণ দাও।
তামিলনাড়ুর কাবেরী নদীর বদ্বীপে প্লাবন খাল দেখা যায়।
নিত্যবহ খালের উদাহরণ দাও।
পাঞ্জাবের পশ্চিম যমুনা খাল একটি নিত্যবহ খাল।
প্লাবন খাল কোথায় বেশি দেখা যায়?
দক্ষিণ ভারতের বদ্বীপ অঞ্চলে, যেমন – তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশে।
নিত্যবহ খাল কোথায় বেশি ব্যবহৃত হয়?
উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চলে, যেমন – পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশে।
কোন খাল কৃষির জন্য বেশি উপযোগী?
নিত্যবহ খাল, কারণ এটি সারা বছর জল সরবরাহ করে।
প্লাবন খালের প্রধান সুবিধা কী?
এটি বন্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং বর্ষাকালে অতিরিক্ত জল নিষ্কাশন করে।
নিত্যবহ খালের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?
এটি সারা বছর জল সরবরাহ করে এবং কৃষি, শিল্প ও গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত হয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “প্লাবন খাল ও নিত্যবহ খাল কী? প্লাবন খাল ও নিত্যবহ খালের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারত” -এর “ভারতের নদনদী ও হ্রদসমূহ” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন