এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ হলে তাপ উৎপন্ন হয় কেন? একটি পরিবাহীতে তড়িৎপ্রবাহের ফলে যে তাপ উৎপন্ন হয় তা কীসের ওপর নির্ভর করে?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ হলে তাপ উৎপন্ন হয় কেন? একটি পরিবাহীতে তড়িৎপ্রবাহের ফলে যে তাপ উৎপন্ন হয় তা কীসের ওপর নির্ভর করে?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের ষষ্ঠ অধ্যায় “চলতড়িৎ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।
পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ হলে তাপ উৎপন্ন হয় কেন?
কোনো পরিবাহীর রোধ সর্বদা ওর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহকে বাধা দান করে। তাই কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ চালানোর জন্য তড়িৎ উৎসকে ওই বাধার বিরুদ্ধে কিছু পরিমাণ কাজ করতে হয়। ওই কাজই প্রকৃতপক্ষে তাপে রূপান্তরিত হয়। ফলে কিছু পরিমাণ তড়িৎশক্তি তাপশক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে পরিবাহীটিকে উত্তপ্ত করে তোলে।
একটি পরিবাহীতে তড়িৎপ্রবাহের ফলে যে তাপ উৎপন্ন হয় তা কীসের ওপর নির্ভর করে?
পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপ –
- পরিবাহীর তড়িৎ প্রবাহমাত্রা,
- পরিবাহীর রোধ ও
- তড়িৎপ্রবাহের সময়ের ওপর নির্ভর করে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ হলে উৎপন্ন তাপের গাণিতিক সূত্রটি কী?
উৎপন্ন তাপ (H)-এর গাণিতিক সূত্রটি হলো জুলের তাপ সূত্র –
I²Rt
(যেখানে, H = জুলে উৎপন্ন তাপ, I = অ্যাম্পিয়ারে প্রবাহমাত্রা, R = ওহমে রোধ, এবং t = সেকেন্ডে সময়)।
পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ হলে উৎপন্ন তাপ কি শুধু রোধীর (Resistor) জন্যই প্রযোজ্য?
না, যেকোনো পরিবাহীর জন্যই এই নীতি প্রযোজ্য, কারণ সকল পরিবাহীরই কিছু না কিছু রোধ আছে। তবে, যেসব উপাদানের রোধ কম (যেমন: তামা), সেগুলোতে কম তাপ উৎপন্ন হয়। আর যেসব উপাদানের রোধ বেশি (যেমন: নাইক্রোম), সেগুলোতে বেশি তাপ উৎপন্ন হয় এবং সাধারণত সেগুলোকে ‘রোধী’ বা ‘হিটিং এলিমেন্ট’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
বৈদ্যুতিক বাল্বের ফিলামেন্টে তাপ বেশি উৎপন্ন হয় কেন?
বাল্বের ফিলামেন্ট খুব সরু এবং উচ্চ রোধবিশিষ্ট টাংস্টেন ধাতুর তৈরি। যখন এর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ চলে, তখন H = I²Rt সূত্র অনুযায়ী উচ্চ রোধ (R) এবং প্রবাহমাত্রার (I) কারণে প্রচুর পরিমাণে তাপ উৎপন্ন হয়। এতে ফিলামেন্ট এতটাই গরম হয়ে ওঠে যে তা আলো বিকিরণ করতে শুরু করে।
বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য ব্যবহৃত মোটা তারে তাপ কম উৎপন্ন হয় কীভাবে?
বিদ্যুৎ সঞ্চালনের তার সাধারণত তামা বা অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি হয়, যাদের রোধ (R) খুব কম। আবার, এই তারগুলো খুব মোটা (cross-sectional area বেশি) হওয়ায় তাদের রোধ আরও কমে যায়। যেহেতু উৎপন্ন তাপ রোধের (R) সাথে সরাসরি সমানুপাতিক, তাই এই মোটা তারে তাপ উৎপাদন খুবই কম হয় এবং শক্তির অপচয় রোধ করা যায়।
পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ হলে তাপ উৎপাদন কি সবসময় কাঙ্ক্ষিত? উদাহরণ দিয়ে বোঝাও।
না, এই তাপ উৎপাদন সবসময় কাঙ্ক্ষিত নয়।
1. ইচ্ছাকৃত ব্যবহার (Desirable) – ইলেকট্রিক হিটার, ইস্ত্রি, বাল্ব, টোস্টার ইত্যাদিতে ইচ্ছে করেই উচ্চ রোধবিশিষ্ট তার ব্যবহার করা হয় যাতে বেশি তাপ উৎপন্ন হয়।
2. অনিচ্ছাকৃত ফলাফল (Undesirable) – কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, বা বিদ্যুৎ সঞ্চালনের তারে এই তাপ উৎপাদন শক্তির অপচয় এবং যন্ত্রের ক্ষতির কারণ হয়। এই অপচয় রোধ করতে ফ্যান, হিট সিংক ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ হলে তাপ উৎপন্ন হয় কেন? একটি পরিবাহীতে তড়িৎপ্রবাহের ফলে যে তাপ উৎপন্ন হয় তা কীসের ওপর নির্ভর করে?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ হলে তাপ উৎপন্ন হয় কেন? একটি পরিবাহীতে তড়িৎপ্রবাহের ফলে যে তাপ উৎপন্ন হয় তা কীসের ওপর নির্ভর করে?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের ষষ্ঠ অধ্যায় “চলতড়িৎ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন