আজকের আর্টিকেলে আমরা পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্রসমাজের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করবো। পরিবেশ সুরক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষা এবং স্কুল পরীক্ষায় প্রায়ই প্রশ্ন হিসেবে দেখা যায়। এই প্রবন্ধটি মুখস্ত করলে আপনি ক্লাস ৬ থেকে ১২ পর্যন্ত যেকোনো পরীক্ষায় এই প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারবেন।
পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্রসমাজের ভূমিকা – প্রবন্ধ রচনা
ভূমিকা –
উদ্ভিদ ও জীবজগৎ-সহ যে প্রাকৃতিক ঘেরের মধ্যে আমরা বাস করি, তা-ই হল পরিবেশ। প্রাকৃতিক নিয়মে এই পরিবেশের মধ্যে যুগ যুগ ধরে ভারসাম্য রক্ষিত হয়ে আসছে বলে জীবকুল আজও পৃথিবীতে সুস্থ-স্বাভাবিকভাবে বসবাস করতে পারছে। আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্যরক্ষার একটি অনিবার্য সম্পর্ক রয়েছে।
আধুনিক যন্ত্রসভ্যতা ও পরিবেশের ভারসাম্য –
আধুনিক যন্ত্রসভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্যে সংকটের সূচনা ঘটেছে। জীবনযাপনের সুখস্বাচ্ছন্দ্যের জন্য আমরা হাতের কাছে পেয়েছি অজস্র উপকরণ, গড়ে উঠেছে বড়ো বড়ো কলকারখানা। যত বেশি আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতিতে উল্লসিত হয়েছি তার থেকে অনেক কম মনোযোগ দিয়েছি পরিবেশের ভারসাম্যের দিকে।
ভারসাম্যের সংকট –
পরিবেশের প্রতি মনোযোগের অভাবের জন্য পরিবেশে দেখা দিয়েছে নানা প্রতিকূলতা। বাতাসে, জলে, মাটিতে দেখা দিয়েছে মারাত্মক দূষণ। অজস্র যানবাহন আর কলকারখানা থেকে প্রতি মুহূর্তে বের হচ্ছে বিষাক্ত ধোঁয়া। বনজঙ্গল কেটে নগরায়ণ করতে গিয়ে এবং শিল্পের প্রসার ঘটাতে গিয়ে কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও সালফার ডাইঅক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাসে ভরে গেছে বাতাস। রাসায়নিক সার, কীটনাশক ওষুধ এবং কলকারখানা থেকে যে বর্জ্য পদার্থ বের হচ্ছে, তা থেকে দূষিত হচ্ছে নদী, সমুদ্র ও ভূগর্ভের জল, দূষিত হচ্ছে মাটি। শব্দদানবতো আজকের যুগের একটি বড়ো সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। যানবাহনের শব্দ, বাজি ও মাইকের আওয়াজে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। এসবের সঙ্গে আছে পরমাণু বোমার বিস্ফোরণের ফলে ছড়িয়ে পড়া দূষণ। সবমিলিয়ে আমাদের পরিবেশ যে ভারসাম্যহীনতায় ভুগছে, তাতে দেখা দিচ্ছে অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি এবং নানা অসুখ।
ভারসাম্যরক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা –
সমস্যা আছে, অতএব প্রতিকারও চাই। এই প্রতিকারে পৃথিবীর সমস্ত স্তরের মানুষেরই ভূমিকা আছে। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকাটি এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি। পরিবেশের ভারসাম্যরক্ষায় বৃক্ষরোপণ ও বনসংরক্ষণ খুবই জরুরি, বলা যায়, এই সমস্যাসমাধানের অন্যতম প্রধান উপায়। ছাত্রছাত্রীরা বন-সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন মহলে দাবি জানাতে পারে। তারা পরিকল্পিতভাবে রাস্তার ধারে, বিদ্যালয়ে কিংবা পোড়ো জমিতে বৃক্ষ রোপণ করতে পারে। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য তারা সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তোলার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। জল ও বাতাসকে যথাসম্ভব বিশুদ্ধ রাখার জন্য মানুষকে পরিবেশের ভারসাম্যের সংকটের কথা বোঝানোর চেষ্টা করবে। এর জন্য তারা আলোচনা সভা, পথ-নাটিকা প্রভৃতির আয়োজন করতে পারে। কেন-না যারা আজকের ছাত্রছাত্রী, ভবিষ্যতে তারাই হবে দেশের দায়িত্বশীল নাগরিক। সুতরাং এখন থেকে তারা যদি সচেতন হয় ও সক্রিয় ভূমিকা নেয় তাহলে পরিবেশকে রক্ষা করা অসম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
উপসংহার –
একটি বিষয়ে আমরা সবাই বোধহয় একমত যে, এই পৃথিবীতে আমরা সবাই সুস্থভাবে বাঁচতে চাই। কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য একটা সুস্থ পরিবেশও যে খুবই প্রয়োজন, সে বিষয়ে আমরা এখনও সবাই সচেতন নই। এক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের গুরুদায়িত্ব রয়েছে। তারা অদম্য প্রাণশক্তি দিয়ে এগিয়ে এলে চারপাশের মানুষকে পরিবেশ সচেতন করে তোলা অসম্ভব হবে না নিশ্চয়ই।
এই আর্টিকেল এ একটি পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্রসমাজের ভূমিকা – প্রবন্ধ রচনা নিয়ে আলোচনা করেছি , এই রচনা মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় বা স্কুলের পরীক্ষায় দেখা যাই, পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্রসমাজের ভূমিকা – প্রবন্ধ রচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা এই রচনা প্রায়ই পরীক্ষায় দেখা যাই, এই রচনাটি তোমরা একবার মুখস্ত করলে ক্লাস ৬ থেকে ১২ পর্যন্ত যেকোনো পরীক্ষায় এই প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারবে।