এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “শ্রীনিকেতন কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “শ্রীনিকেতন কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায় “বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

শ্রীনিকেতন কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?
শ্রীনিকেতন কী –
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতন থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে সুরুল গ্রামে পল্লি সংগঠনের জন্য একটি কুঠিবাড়ি কিনে 1922 খ্রিষ্টাব্দে শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠা করেন, এই কাজে তাঁর প্রধান সহায়ক ছিলেন লেনার্ড এলমহার্স্ট ও কালীমোহন ঘোষ।
শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল –
শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে পল্লি সংগঠন –
শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল গ্রামের মানুষকে পল্লি জীবনের নানা দিক সম্বন্ধে সচেতন করে গ্রামীণ শিল্প ও বৃত্তিশিক্ষার মাধ্যমে তাদের স্বনির্ভর বা আত্মনির্ভরশীল করে তোলা।
শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে গ্রামীণ উন্নয়ন –
শ্রীনিকেতন আধুনিক পদ্ধতিতে হাতেকলমে কৃষি, পশুপালন, কুটির শিল্প, বস্ত্রবয়নের শিক্ষানবিশের উদ্যোগ নেয়, গড়ে তোলা হয় সুরুল ফার্ম, সমবায় ও পল্লি মঙ্গল সমিতি, পোলট্রি ফার্মিং ইত্যাদি, যার মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়।
শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে গণশিক্ষা –
সকল স্তরের জনসাধারণের মধ্যে শিক্ষার সুযোগকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য গড়ে তোলা হয় ‘শিক্ষাসত্র’ যা বিদ্যাশিক্ষার পাশাপাশি সংগীত, চারুকলা, হস্তশিল্প শেখানোয় ব্রতী হয়, 1936 খ্রিস্টাব্দে স্থাপন করা হয় ‘লোকশিক্ষা সংসদ’।
শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে জনস্বাস্থ্য –
স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন করে গ্রামীণ মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গোড়ে তোলা হয়, এবং 1941 খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত হয় ‘শিশু ও মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র’।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
শ্রীনিকেতন কী?
শ্রীনিকেতন হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একটি পল্লি উন্নয়ন কেন্দ্র, যা শান্তিনিকেতনের নিকটস্থ সুরুল গ্রামে 1922 সালে স্থাপিত হয়। এর মূল লক্ষ্য ছিল গ্রামীণ সমাজের সার্বিক উন্নয়ন।
শ্রীনিকেতন কেন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল?
শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল –
1. গ্রামবাসীদের স্বনির্ভর করে তোলা।
2. কৃষি, শিল্প ও হস্তশিল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা।
3. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার প্রসার ঘটানো।
শ্রীনিকেতনের প্রধান কার্যক্রমগুলি কী ছিল?
শ্রীনিকেতনের প্রধান কার্যক্রমগুলি ছিল –
1. পল্লি সংগঠন – গ্রামীণ শিল্প ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার।
2. কৃষি ও পশুপালন – আধুনিক কৃষি পদ্ধতি ও সমবায় চাষের প্রচলন।
3. শিক্ষা – শিক্ষাসত্র ও লোকশিক্ষা সংসদের মাধ্যমে গণশিক্ষা।
4. স্বাস্থ্য – গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও শিশু-মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র স্থাপন।
শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠায় কারা সহায়তা করেছিলেন?
1. লেনার্ড এলমহার্স্ট (ব্রিটিশ কৃষিবিদ ও সমাজসেবী),
2. কালীমোহন ঘোষ (রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ সহযোগী)।
শ্রীনিকেতন ও শান্তিনিকেতনের মধ্যে পার্থক্য কী?
শ্রীনিকেতন ও শান্তিনিকেতনের মধ্যে পার্থক্য হল –
1. শান্তিনিকেতন মূলত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়), যেখানে আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক শিক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়।
2. শ্রীনিকেতন একটি গ্রামীণ উন্নয়ন কেন্দ্র, যেখানে কৃষি, শিল্প ও স্বাস্থ্য উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামবাসীদের স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করা হয়।
শ্রীনিকেতনের শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন ছিল?
শ্রীনিকেতনের শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল –
1. শিক্ষাসত্রের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে হাতেকলমে শিক্ষা দেওয়া হত।
2. লোকশিক্ষা সংসদ (1936 খ্রিস্টাব্দ) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গ্রামীণ শিক্ষার প্রসার ঘটানো হয়।
শ্রীনিকেতনের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উদ্যোগগুলি কী ছিল?
শ্রীনিকেতনের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উদ্যোগগুলি ছিল –
1. গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন।
2. শিশু ও মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র (1941 খ্রিস্টাব্দ) প্রতিষ্ঠা করে নারী ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নতি।
শ্রীনিকেতনের কৃষি সংক্রান্ত পদক্ষেপগুলি কী ছিল?
শ্রীনিকেতনের কৃষি সংক্রান্ত পদক্ষেপগুলি ছিল –
1. সুরুল ফার্ম প্রতিষ্ঠা করে আধুনিক কৃষি পদ্ধতির প্রচলন।
2. পোলট্রি ফার্মিং ও সমবায় চাষাবাদের প্রসার।
শ্রীনিকেতনের বর্তমান অবস্থা কী?
শ্রীনিকেতন এখনও সক্রিয় রয়েছে এবং এটি গ্রামীণ উন্নয়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে। এটি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অংশ হিসেবে পরিচালিত হয়।
শ্রীনিকেতনের দর্শন কী ছিল?
রবীন্দ্রনাথের মতে, “গ্রামই হল ভারতের প্রাণ” – এই ধারণা থেকেই শ্রীনিকেতন গ্রামীণ সমাজের সার্বিক উন্নয়নের জন্য কাজ করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “শ্রীনিকেতন কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “শ্রীনিকেতন কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের পঞ্চম অধ্যায় “বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন