এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “সিঙ্গাপুরের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে জলবায়ু ও গোলার্ধ শনাক্ত করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “সিঙ্গাপুরের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে জলবায়ু ও গোলার্ধ শনাক্ত করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

সিঙ্গাপুরের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে জলবায়ু ও গোলার্ধ শনাক্ত করো।
- স্থান – সিঙ্গাপুর (সিঙ্গাপুর, এশিয়া)।
- অক্ষাংশ – 1°36′ উত্তর।
- দ্রাঘিমা – 103°45′ পূর্ব।
মাসের নাম | উষ্ণতা (সেলসিয়াস) | বৃষ্টিপাত (সেন্টিমিটার) |
Jan. | 26.7 | 24.2 |
Feb. | 27.3 | 16.3 |
Mar. | 27.7 | 18.4 |
Apr. | 28.5 | 17.8 |
May. | 28.2 | 17.1 |
June. | 28.1 | 16.2 |
July. | 27.7 | 15.8 |
Aug. | 27.6 | 17.6 |
Sep. | 27.5 | 16.9 |
Oct. | 27.5 | 19.3 |
Nov. | 27.1 | 25.5 |
Dec. | 26.6 | 24.1 |
জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ (সিঙ্গাপুর) –
উষ্ণতা সংক্রান্ত –
- উষ্ণতম মাস → এপ্রিল, উষ্ণতা 28.5° সেলসিয়াস।
- শীতলতম মাস → ডিসেম্বর, উষ্ণতা 26.6° সেলসিয়াস।
- গড় বার্ষিক উষ্ণতা → 27.56° সেলসিয়াস।
- বার্ষিক উষ্ণতার প্রসর → 1.9° সেলসিয়াস।
বৃষ্টিপাত সংক্রান্ত –
- বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ → 229.2 সেমি।
- বৃষ্টিবহুল মাস → নভেম্বর, বৃষ্টিপাত 25.5 সেমি।
- সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাতের মাস → ফেব্রুয়ারি, বৃষ্টিপাত 16.3 সেমি।

জলবায়ু শনাক্তকরণ –
উক্ত জলবায়ু অঞ্চলটির উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাত বিশ্লেষণে দেখা যায়, এখানে সারাবছর গড় উষ্ণতা প্রায় সমান এবং বার্ষিক উষ্ণতার প্রসর খুবই কম। বাৎসরিক বৃষ্টিপাত খুব বেশি এবং কোনো মাসেই বৃষ্টি 16.3 সেমির কম নয়। সারাবছরই উষ্ণ-আর্দ্র ঋতু বিরাজ করে। সুতরাং, এই বৈশিষ্ট্যের সাপেক্ষে সহজেই বলা হতে পারে স্থানটি (সিঙ্গাপুর) আর্দ্র নিরক্ষীয় জলবায়ুর অন্তর্গত।
গোলার্ধ শনাক্তকরণ –
সংশ্লিষ্ট জলবায়ু অঞ্চলের উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতের তথ্য এবং লেখচিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, এখানে প্রতিমাসের। প্রায় সমান ও যথেষ্ট বেশি। একটানা উষ্ণতা রেখার লেখচিত্রটি প্রায় সমান্তরালে বিস্তৃত হয়েছে। বাৎসরিক উষ্ণতার প্রসর মাত্র 1.9° সেলসিয়াস এবং সার যথেষ্ট বৃষ্টিপাত ঘটে বলে সহজেই বলা যায় অঞ্চলটি নিরক্ষীয় অঞ্চলে অবস্থিত। তবে এক্ষেত্রে আমরা জানি যে, নিরক্ষরেখা বরাবর অবস্থি স্থানের গোলার্ধ নির্ণয় করা বেশ কঠিন। সুতরাং, উক্ত স্থানটির (সিঙ্গাপুর) গোলার্ধ নির্ণয় করা সম্ভব নয়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
সিঙ্গাপুরের জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?
1. উষ্ণতা – বার্ষিক গড় উষ্ণতা প্রায় 27.56° সেলসিয়াস (সারাবছর উষ্ণ ও আর্দ্র)।
2. বৃষ্টিপাত – বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত 229.2 সেমি, সব মাসেই পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়।
3. উষ্ণতম মাস – এপ্রিল (28.5° সেলসিয়াস)।
4. শীতলতম মাস – ডিসেম্বর (26.6° সেলসিয়াস)।
5. উষ্ণতার প্রসর – মাত্র 1.9° সেলসিয়াস (সারাবছর প্রায় সমান উষ্ণতা)।
সিঙ্গাপুরের জলবায়ু কোন ধরনের?
সিঙ্গাপুরের জলবায়ু আর্দ্র নিরক্ষীয় জলবায়ু (Tropical Rainforest Climate – Af, কোপ্পেন শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী)। কারণ –
1. সারাবছর উচ্চ তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা।
2. বাৎসরিক উষ্ণতার প্রসর খুব কম (< 2° সেলসিয়াস)।
3. প্রচুর বৃষ্টিপাত (প্রতিমাসে 16 সেমি বা বেশি)।
সিঙ্গাপুর কোন গোলার্ধে অবস্থিত?
1. সিঙ্গাপুরের অক্ষাংশ 1°36′ উত্তর, অর্থাৎ এটি উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত।
2. নিরক্ষরেখার খুব কাছাকাছি (1° উত্তর) হওয়ায় এখানে নিরক্ষীয় জলবায়ু বিদ্যমান।
সিঙ্গাপুরে কেন সারাবছর উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া থাকে?
1. নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্য সারাবছর প্রায় লম্বভাবে কিরণ দেয়, ফলে তাপমাত্রা উচ্চ থাকে।
2. উষ্ণ বায়ু উপরে উঠে গিয়ে ঘনীভূত হয়ে প্রতিদিনই বৃষ্টিপাত ঘটায় (কনভেকশনাল রেইন)।
সিঙ্গাপুরে ঋতু পরিবর্তন হয় না কেন?
1. নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্যের অবস্থান প্রায় একই রকম থাকে, তাই ঋতুভিত্তিক পরিবর্তন দেখা যায় না।
2. উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতের মাত্রা সারাবছর প্রায় সমান থাকে।
সিঙ্গাপুরের জলবায়ু গ্রাফ বিশ্লেষণ করলে কী দেখা যায়?
1. উষ্ণতা রেখা প্রায় সমান্তরাল (সারাবছর স্থির)।
2. বৃষ্টিপাতের কলাম সব মাসেই উঁচু (নিয়মিত ও প্রচুর বৃষ্টি)।
সিঙ্গাপুরের জলবায়ু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো কেন?
মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ডের দক্ষিণাংশেও একই ধরনের আর্দ্র নিরক্ষীয় জলবায়ু দেখা যায়, কারণ এগুলোও নিরক্ষীয় অঞ্চলে অবস্থিত।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “সিঙ্গাপুরের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে জলবায়ু ও গোলার্ধ শনাক্ত করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “সিঙ্গাপুরের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে জলবায়ু ও গোলার্ধ শনাক্ত করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন