“তাহলে একটু গুছিয়ে লিখে দিন” এই উক্তিটি দশম বাংলা সহায়ক পাঠ কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। “তাহলে একটু গুছিয়ে লিখে দিন” – কে, কাকে বলেছিলেন? লেখার মূল বক্তব্য কী ছিল? এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যান্ত গুরুত্তপূর্ণ। কোনি উপন্যাসের এই রচনাধর্মী প্রশ্নটি তৈরী করে গেলে মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় একটি ৫ নম্বরের পাওয়া যেতে পারে।
বিষ্টুচরণ ধরের বক্তৃতাগুলি গুছিয়ে লিখে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল ক্ষিতীশ সিংহের উপর। এক বক্তৃতায় বিষ্টুচরণ বলেন, ট্যালেন্ট ঈশ্বরের দান, কিন্তু ট্যালেন্ট থাকা সত্ত্বেও কেউ তা প্রকাশ না করলে সে অপরাধী। আমাদের দেশে অনেক প্রতিভাবান মানুষ আছেন যারা শুধু নিজেদের খাওয়া-পরার প্রয়োজনে ব্যস্ত।
খেলোয়াড়দের গৌরবের আলোয় গোটা দেশ আলোকিত হয়। অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, ইথিওপিয়া প্রভৃতি দেশের কথা উচ্চারণ করলে সর্বপ্রথম মাথায় আসে ডন ব্র্যাডম্যান, পেলে বা বিকিলার মতো খেলোয়াড়দের কথা যাঁরা খেলার মাধ্যমে দেশকে বিশ্বের দরবারে বিখ্যাত করেছেন।
ক্ষিতীশ সিংহের মতে, দেশের একজন সেনাপতির তুলনায় একজন খেলোয়াড় বড়ো এবং প্রকৃত বীর। কারণ একজন খেলোয়াড় বা সাঁতারু জীবনের ও প্রাণের প্রতীক। তারা পৃথিবীর মানুষকে মৃত্যু বা ধ্বংস নয়, বেঁচে থাকার এবং সংগ্রামের প্রেরণা জোগায়। এটা শুধু সাঁতারুদের ক্ষেত্রেই নয়, সমস্ত খেলোয়াড়দের জন্যও প্রযোজ্য।
আমাদের দেশে খেলোয়াড়রা বঞ্চিত এবং অবহেলিত। তাই সরকারের উচিত তাদের জন্য উপযুক্ত খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের ব্যবস্থা করা। বিষ্টুচরণের বক্তৃতার মূল বক্তব্য ছিল এটাই।
ক্ষিতীশ যখন বক্তৃতা লেখার জন্য থামলেন, তখন বিষ্টুচরণ বললেন, এত ভারী ভারী কথায় তার মাথা ঘুরে যাচ্ছে। তাই তিনি ক্ষিতীশকেই এইসব কথা গুছিয়ে লিখে দিতে বললেন।
“তাহলে একটু গুছিয়ে লিখে দিন” – কে, কাকে বলেছিলেন? লেখার মূল বক্তব্য কী ছিল?
বক্তা এবং উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসের সপ্তম পরিচ্ছেদে বিষ্টুচরণ ধর ক্ষিতীশ সিংহকে এই কথাটি বলেছেন।
লেখার মূল বক্তব্য –
- প্রতিভার বহিঃপ্রকাশ – বিষ্টুচরণ ধরের বক্তৃতাগুলি গুছিয়ে লিখে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল ক্ষিতীশ সিংহের ওপর। এইরকম একটা বক্তৃতায় তিনি লেখেন, ট্যালেন্ট ঈশ্বরের দান। ট্যালেন্ট থাকা সত্ত্বেও কেউ তা প্রকাশ না করলে সে অপরাধী। আমাদের দেশে এইরকম বহু প্রতিভাসম্পন্ন মানুষ আছেন যারা শুধু নিজেদের খাওয়া-পরার প্রয়োজন মেটাতেই ব্যস্ত।
- গৌরবোজ্জ্বল খেলোয়াড় – খেলোয়াড়দের গৌরবের আলোয় গোটা দেশ আলোকিত হয়। অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, ইথিওপিয়া প্রভৃতি দেশের কথা উচ্চারণ করলে সর্বপ্রথম মাথায় আসে ডন ব্র্যাডম্যান, পেলে বা বিকিলার মতো মানুষদের কথা যাঁরা খেলার মাধ্যমে তাঁদের দেশকে সারা বিশ্বের দরবারে বিখ্যাত করেছেন।
- সেনাপতির সঙ্গে খেলোয়াড়ের তুলনা – ক্ষিতীশ সিংহের মতে, দেশের একজন সেনাপতির তুলনায় একজন খেলোয়াড় বড়ো এবং প্রকৃত বীর। কারণ একজন খেলোয়াড় বা সাঁতারু জীবনের ও প্রাণের প্রতীক। তাঁরা পৃথিবীর মানুষকে মৃত্যু বা ধ্বংস নয়, বাঁচার এবং সংগ্রামের প্রেরণা জোগায়। এটা শুধু সাঁতারু নয় সমস্ত খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য।
- অবহেলিত খেলোয়াড়দের জন্য সুব্যবস্থা – আমাদের দেশে খেলোয়াড়রা বঞ্চিত এবং অবহেলিত হয়ে থাকে। তাই সরকার থেকেই তাঁদের জন্য উপযুক্ত খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের বন্দোবস্ত করা প্রয়োজন। বিষ্টুচরণের বক্তৃতার মূল বক্তব্য হবে এটাই। এতদূর বলে ক্ষিতীশ দম নেওয়ার জন্য থামতেই বিষ্টু ধর বলেন, এত ভারী ভারী কথায় তাঁর গোলমাল হয়ে যাচ্ছে। তাই তিনি ক্ষিতীশকেই এইসব কথা গুছিয়ে লিখে দিতে বলেন।
আরও পড়ুন, হঠাৎ কোনির দুচোখ জলে ভরে এল। – কোনির দু-চোখ জলে ভরে এল কেন? এরপর কী হয়েছিল?
উপসংহারে বলা যায়, বিষ্টুচরণ ধরের বক্তৃতাগুলি খেলাধুলার গুরুত্ব এবং খেলোয়াড়দের প্রতি সমাজের কর্তব্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। বক্তৃতাগুলিতে খেলোয়াড়দের জীবনের ও প্রাণের প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং তাদের দেশকে বিশ্বের দরবারে বিখ্যাত করে তোলার ক্ষমতার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। বক্তৃতাগুলিতে আরও বলা হয়েছে যে খেলোয়াড়রা প্রায়শই বঞ্চিত এবং অবহেলিত হয় এবং তাদের জন্য উপযুক্ত খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব।
বিষ্টুচরণ ধরের বক্তৃতাগুলি আজও প্রাসঙ্গিক কারণ খেলাধুলা আমাদের সমাজে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খেলাধুলা শুধু আমাদের শারীরিকভাবে সুস্থ রাখে না, বরং আমাদের মানসিক শক্তি এবং নৈতিক মূল্যবোধও বিকশিত করে। খেলাধুলার মাধ্যমে আমরা শৃঙ্খলা, সহযোগিতা, এবং স্পোর্টসম্যানশিপের মতো গুরুত্বপূর্ণ জীবন দক্ষতা শিখতে পারি।
বিষ্টুচরণ ধরের বক্তৃতাগুলি আমাদের সকলকে খেলাধুলার গুরুত্ব এবং খেলোয়াড়দের প্রতি আমাদের কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। আমাদের সকলকেই খেলাধুলার প্রসার ও বিকাশে সহায়তা করার জন্য এবং খেলোয়াড়দের তাদের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে সাহায্য করার জন্য কাজ করা উচিত।