এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “উত্তর ভারতের নদী ও দক্ষিণ ভারতের নদীগুলির বৈশিষ্ট্য লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারত” -এর “ভারতের নদনদী ও হ্রদসমূহ” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

উত্তর ভারতের নদী ও দক্ষিণ ভারতের নদীগুলির বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর ভারতের নদীগুলির বৈশিষ্ট্য –
- উৎস – উত্তর ভারতের নদীগুলির অধিকাংশই উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে।
- প্রশস্ত নদী অববাহিকা – উত্তর ভারতের অধিকাংশ নদীই সুদীর্ঘ এবং এদের অববাহিকাও প্রশস্ত।
- চিরপ্রবাহী – বরফগলা জল ও বৃষ্টির জলে পুষ্ট হওয়ায় নদীগুলি চিরপ্রবাহী।
- সুগভীর গিরিখাত – পার্বত্য প্রবাহে নদীগুলি সুগভীর গিরিখাতের সৃষ্টি করেছে।
- নাব্যতা – সমভূমিতে নদীগুলি মন্দস্রোতা হওয়ায় নৌকা ও স্টিমার চলাচলের উপযোগী।
- বদ্বীপ – প্রতিটি নদীই মোহানায় বদ্বীপ সৃষ্টি করেছে।
দক্ষিণ ভারতের নদীগুলির বৈশিষ্ট্য –
- উৎস – উপদ্বীপীয় মালভূমি থেকে দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি উৎপত্তিলাভ করেছে।
- অগভীর ও নাতিদীর্ঘ উপত্যকা – দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি দৈর্ঘ্যে ছোটো এবং উপত্যকাও অগভীর।
- অনিত্যবহ – নদীগুলি কেবল বৃষ্টির জলে পুষ্টহওয়ায় অনিত্যবহ।
- বন্যার প্রকোপ কম – নদীগুলিতে বন্যার প্রকোপ কম থাকে।
- প্রবাহ পথ – নদীগুলিতে উচ্চ, মধ্য ও নিম্নগতি সুস্পষ্ট নয়।
- জলবিদ্যুৎ শক্তি – খরস্রোতা হওয়ায় জলবিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদনে উপযোগী।
- বদ্বীপ – নদীগুলির মোহানায় সৃষ্ট বদ্বীপ ক্ষুদ্র হয়। নর্মদা, তাপ্তীর মোহানায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়নি।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
উত্তর ভারতের প্রধান নদীগুলি কী কী?
গঙ্গা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, সিন্ধু, গোদাবরী (উত্তরাংশ), গোমতী, ঘর্ঘরা ইত্যাদি।
উত্তর ভারতের নদীগুলি চিরপ্রবাহী কেন?
হিমালয়ের বরফ গলা জল ও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে এগুলি সারা বছর প্রবাহিত হয়।
উত্তর ভারতের নদীগুলির অববাহিকা প্রশস্ত হওয়ার কারণ কী?
হিমালয় থেকে বয়ে আনা পলি দ্বারা গঠিত বিশাল সমভূমি অঞ্চল জুড়ে এগুলি প্রবাহিত হয় বলে।
কোন নদীকে উত্তর ভারতের ‘জীবনরেখা’ বলা হয়?
গঙ্গা নদীকে উত্তর ভারতের জীবনরেখা বলা হয়।
দক্ষিণ ভারতের প্রধান নদীগুলি কী কী?
কৃষ্ণা, কাবেরী, গোদাবরী, তুঙ্গভদ্রা, পেন্নার, ভীমা, নর্মদা, তাপ্তী ইত্যাদি।
দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি অনিত্যবহ কেন?
এগুলি প্রধানত বৃষ্টির জলে পুষ্ট এবং শুষ্ক মৌসুমে অনেক নদীর জলপ্রবাহ কমে যায় বা শুকিয়ে যায়।
কোন দক্ষিণ ভারতীয় নদীর মোহনায় বদ্বীপ নেই?
নর্মদা ও তাপ্তী নদীর মোহনায় বদ্বীপ গঠিত হয়নি।
দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে কেন উপযোগী?
পার্বত্য অঞ্চলে খরস্রোতা প্রবাহ ও উচ্চনতি থাকায় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের জন্য আদর্শ।
উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদীর প্রধান পার্থক্য কী?
উত্তর ভারতের নদীগুলি দীর্ঘ, চিরপ্রবাহী ও প্রশস্ত অববাহিকাযুক্ত, দক্ষিণের নদীগুলি অপেক্ষাকৃত ছোট, অনিত্যবহ ও সংকীর্ণ উপত্যকাযুক্ত।
কোন অঞ্চলের নদী কৃষির জন্য বেশি উপযোগী?
উত্তর ভারতের নদীগুলি পলি সমৃদ্ধ ও সারা বছর জল সরবরাহ করে বলে কৃষির জন্য বেশি উপযোগী।
কোন নদী ব্যবস্থা বেশি নাব্য?
উত্তর ভারতের নদীগুলি সমভূমিতে মন্দগতিতে প্রবাহিত হওয়ায় বেশি নাব্য।
বন্যার প্রবণতা কোন অঞ্চলের নদীতে বেশি?
উত্তর ভারতের নদীগুলিতে বন্যার প্রবণতা বেশি, বিশেষত ব্রহ্মপুত্র ও গঙ্গা অববাহিকায়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “উত্তর ভারতের নদী ও দক্ষিণ ভারতের নদীগুলির বৈশিষ্ট্য লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারত” -এর “ভারতের নদনদী ও হ্রদসমূহ” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন