তোমার প্রিয় পর্যটন কেন্দ্র – প্রবন্ধ রচনা

Gopi

আজকে আমরা এই আর্টিকেল এ তোমার প্রিয় পর্যটন কেন্দ্র প্রবন্ধ রচনা নিয়ে আলোচনা করবো, প্রবন্দ রচনা মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় বা স্কুলের পরীক্ষায় দেখা যাই, তোমার প্রিয় পর্যটন কেন্দ্র প্রবন্ধ রচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা এই রচনা প্রায়ই পরীক্ষায় দেখা যাই, এই রচনাটি তোমরা একবার মুখস্ত করলে ক্লাস ৬ থেকে ১২ পর্যন্ত যেকোনো পরীক্ষায় এই প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারবে।

মুর্শিদাবাদের ভাগীরথী নদীর তীরে অবস্থিত হাজারদুয়ারি প্রাসাদ বাংলার নবাবী আমলের স্থাপত্যশৈলীর এক অসাধারণ নিদর্শন। নবাব হুমায়ুন জাহ কর্তৃক নির্মিত এই প্রাসাদটি ১৭৭০ সালে সম্পূর্ণ হয়। ‘হাজারদুয়ারি’ নামকরণের কারণ হল এর অসংখ্য দরজা, যদিও প্রকৃতপক্ষে এতে ১০০০ টিরও বেশি দরজা নেই।

এই প্রাসাদ তিনতলা বিশিষ্ট এবং এর স্থাপত্যশৈলীতে মুঘল ও ইউরোপীয় স্থাপত্যর মিশ্রণ দেখা যায়। প্রাসাদের বাইরের অংশে সাদা মার্বেলের ব্যবহার লক্ষ্যণীয়, এবং ভেতরের অংশ সুন্দর টাইলস, আয়না ও চিত্রকর্মে সজ্জিত। প্রাসাদের মূল আকর্ষণ হল ‘দরবার হল’, যেখানে নবাবরা তাদের দরবার অনুষ্ঠান করতেন। এছাড়াও, প্রাসাদের ‘জাদুঘর’-এ নবাবী আমলের বিভিন্ন জিনিসপত্র, অস্ত্র, পোশাক ইত্যাদি সংরক্ষিত আছে।

হাজারদুয়ারি প্রাসাদ শুধু একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা নয়, বরং এটি বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যেরও প্রতীক। প্রতি বছর দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য পর্যটক এই প্রাসাদ পরিদর্শন করতে আসেন।

বলা যায় যে, মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারি প্রাসাদ বাংলার ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার জন্য একটি অপরিহার্য স্থান।

তোমার প্রিয় পর্যটন কেন্দ্র – প্রবন্ধ রচনা

তোমার প্রিয় পর্যটন কেন্দ্র - প্রবন্ধ রচনা

ভূমিকা –

জীবনের সীমায়িত পরিধিতে যে কয়টি স্থানে আমি ভ্রমণ করেছি, তার মধ্যে আমার প্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হল মুরশিদাবাদের হাজারদুয়ারি। ইতিহাসের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগের এমন মনোরম স্থান পশ্চিমবঙ্গের আর কোথাও নেই। পশ্চিমবঙ্গে যে কয়টি পর্যটন কেন্দ্র বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয়, হাজারদুয়ারি তাদের মধ্যে গাম্ভীর্যে এবং গৌরবে অতুলনীয়।

অবস্থান –

মুরশিদাবাদ জেলার বহরমপুর মহকুমার অন্তর্গত লালবাগে এই ঐতিহাসিক সৌধটি অবস্থিত। ভাগীরথীর পূর্ব পাড়ে এই সৌধটির সংলগ্ন ইমামবাড়াও প্রাচীনত্বে মহনীয়। সিরাজ-উদ্দৌলার মৃত্যুর পর হুমায়ুন জা হাজারদুয়ারি নির্মাণ করেন। বর্তমানে এটি ভারত সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে। এখানে নবাবি আমলের বহু নিদর্শন সংরক্ষিত আছে। এটি মূলত একটি সংগ্রহশালা। এই হাজারদুয়ারির নিকটবর্তী স্থানে আছে আরও অনেক দর্শনীয় স্থান। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কাঠগোলা বাগান, জগৎশেঠের বাড়ি, নবাব বংশের সমাধিস্থল, মীরজাফরের বাড়ি, কাটরা মসজিদ, মতিঝিল, খোসবাগ ইত্যাদি। নবাব সিরাজ-উদ্দৌলার স্মৃতি বুকে নিয়ে এই জায়গাগুলি বহু পর্যটকের সংবেদকে আকর্ষণ করে চলেছে। ভাগীরথীর পূর্ব পাড়ে খোসবাগে আছে আলিবর্দি খাঁ, আমিন ও সিরাজের সমাধিস্থল।

কেন প্রিয় –

ভালোলাগা, মন্দলাগা ব্যাপারটি মানুষের রুচির ওপর নির্ভরশীল। আমার কাছে যা প্রিয়, অন্যের কাছে তা নাও হতে পারে। তবে মুরশিদাবাদের একটি সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা আছে। বাংলার স্মরণীয় ইতিহাসের একটা অধ্যায় এখানে নীরব হয়ে আছে। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ্দৌলার স্মৃতি যেন প্রাচীন প্রাসাদগুলির অলিন্দে অলিন্দে আজও অক্ষত হয়ে আছে। এক অনির্বচনীয় ভাবাবেগে মন আবিষ্ট হয়। মনে হয় বাংলার এক গৌরবময় ইতিহাসের ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে আছি আমি। ইতিহাসের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগে মনের মধ্যে তৈরি হয় গভীর ভাবাবেগ। তাই হাজারদুয়ারি আমার প্রিয় পর্যটন কেন্দ্র।

সরকারি পদক্ষেপ –

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। তবে মুরশিদাবাদের প্রতি সরকারি পদক্ষেপ আরও জরুরি হওয়া প্রয়োজন। বহু প্রাচীন সৌধ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধ্বংসপ্রায়। সেগুলি অধিগ্রহণ করে অবিলম্বে সংস্কার করতে হবে। রাস্তাঘাটও উন্নত নয়। পর্যটকদের যাতায়াতে খুব অসুবিধা হয়। সরকারি নিয়ন্ত্রণে ঐতিহাসিক সৌধগুলির সংস্কার সাধন করতে পারলে বাংলার এই ঐতিহাসিক স্থানটি আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

উপসংহার –

কেউ ভালোবাসে পাহাড়, কেউ সমুদ্র, কেউ-বা অরণ্য। আমি ভালোবাসি ইতিহাস। ছোটোবেলা থেকেই ইতিহাসের কাহিনি আমার মনে গভীরভাবে রেখাপাত করে। মুরশিদাবাদের হাজারদুয়ারি দেখে আমি যেন আড়াইশো বছর আগের এক ধূসর অতীতে ফিরে গিয়েছিলাম। আজও স্বপ্নের মধ্যে দেখতে পাই বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ্দৌলাকে। আজও যেন কানে বাজে তাঁর জলসাঘরের টপ্পাঠুংরি। চিরদিন এই স্থানটি আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারি প্রাসাদ বাংলার নবাবী আমলের স্থাপত্যশৈলীর এক অমূল্য নিদর্শন। এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব, স্থাপত্যশৈলী এবং অসাধারণ সৌন্দর্য এটিকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে। প্রাসাদটিতে নবাবদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, অস্ত্র, পোশাক, এবং শিল্পকর্ম প্রদর্শিত রয়েছে যা আমাদেরকে নবাবী আমলের জীবনযাত্রা সম্পর্কে ধারণা দেয়। হাজারদুয়ারি প্রাসাদ কেবল একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা নয়, বরং বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক।

এই প্রাসাদটি পরিদর্শন করলে আমরা বাংলার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারি। তাই, সকলের উচিত হাজারদুয়ারি প্রাসাদ পরিদর্শন করে এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব উপলব্ধি করা।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

Class 10 English - Our Runaway Kite - Question and Answer

Class 10 English – Our Runaway Kite – Question and Answer

তোর আসল লজ্জা জলে, আসল গর্বও জলে। — কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

তোর আসল লজ্জা জলে, আসল গর্বও জলে। — কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

দশম শ্রেণি – বাংলা – প্রলয়োল্লাস – অতিসংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

দশম শ্রেণি – বাংলা – প্রলয়োল্লাস – অতিসংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer