দশম শ্রেণি – বাংলা – নদীর বিদ্রোহ – অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

নদীর বিদ্রোহ একটি বিখ্যাত বাংলা ছোটগল্প। এটি রচনা করেছেন বিখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৩৫ সালে। গল্পটিতে একটি নদীর বিদ্রোহের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।

Table of Contents

দশম শ্রেণি – বাংলা – নদীর বিদ্রোহ – অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

নদীর বিদ্রোহ গদ্যাংশটি কার লেখা?

নদীর বিদ্রোহ গদ্যাংশটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা।

নদীর বিদ্রোহ গল্পে নদেরচাঁদ পেশায় কী ছিল?

নদীর বিদ্রোহ গল্পে নদেরচাঁদ পেশায় ছিল একজন স্টেশনমাস্টার।

নদেরচাঁদ স্টেশনমাস্টারি করতে এসে কতদিন তার পরিচিত নদীটিকে দেখতে পায়নি?

নদেরচাঁদ স্টেশনমাস্টারি করতে এসে পাঁচ দিন তার পরিচিত নদীটিকে দেখতে পায়নি।

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকৃত নাম কী?

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকৃত নাম প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়।

নদেরচাঁদের দেশের নদীটি কীরকম ছিল?

নদেরচাঁদের দেশের নদীটি ছিল ক্ষীণস্রোতা ও নির্জীব।

নদেরচাঁদ ছেলেমানুষের মতো ঔৎসুক্য বোধ করিতে লাগিল। — কেন তার এমন বোধ হয়েছিল?

নদীকে না দেখতে পেয়ে নদেরচাঁদের অবস্থা ছেলেমানুষের মতো হয়ে গিয়েছিল। সে ছোটোছেলের মতো উতলা হয়ে উঠেছিল নদীকে দেখার জন্য।

নদীকে এভাবে ভালোবাসিবার একটা কৈফিয়ত নদেরচাঁদ দিতে পারে। — নদেরচাঁদের নদীকে ভালোবাসার কৈফিয়ত কী ছিল?

নদেরচাঁদ নদীর ধারে জন্মেছে, নদীর ধারেই মানুষ হয়েছে, নদী যেন তার চিরপরিচিত আপনজন। এই বিষয়টিকেই নদেরচাঁদ নদীর প্রতি তার ভালোবাসার সহজ কৈফিয়ত হিসেবে তুলে ধরতে পারে।

নদেরচাঁদের ওপর কীসের দায়িত্ব ছিল?

নদেরচাঁদ স্টেশনমাস্টার ছিল। তাই সারা দিনরাতে যেসব মেল, প্যাসেঞ্জার ও মালগাড়িগুলি তীব্রগতিতে ছুটে চলে, তাদের গতি নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব ছিল নদেরচাঁদের ওপর।

স্টেশনমাস্টারি করতে এসে নদেরচাঁদের সাথে পরিচয় হওয়া নদী আর তার দেশের নদীর মধ্যে পার্থক্য কী ছিল?

স্টেশনমাস্টারি করতে এসে নদেরচাঁদের সঙ্গে পরিচয় হওয়া নদীটি ছিল গভীর, প্রশস্ত ও জলপূর্ণ আর তার দেশের নদীটি ছিল ক্ষীণস্রোতা ও নির্জীব।

নদেরচাঁদের দেশের ক্ষীণস্রোতা নদীটি শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে তার অবস্থা কীরকম হয়েছিল?

নদেরচাঁদের দেশের ক্ষীণস্রোতা নদীটি শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে সে প্রায় কেঁদে ফেলেছিল। দুরারোগ্য ব্যাধিতে পরমাত্মীয় মারা যাওয়ার উপক্রম হলে মানুষ যেভাবে কাঁদে সে-ও সেভাবেই কেঁদেছিল।

দেখিয়া সে প্রায় কাঁদিয়া ফেলিয়াছিল — সে কী দেখে প্রায় কেঁদে ফেলেছিল?

নদেরচাঁদের দেশের ক্ষীণস্রোতা নদীটি অনাবৃষ্টির বছরে প্রায় শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে সে কেঁদে ফেলেছিল।

নদেরচাঁদ সব বোঝে, — নদেরচাঁদ কী বোঝে?

তিরিশ বছর বয়সে নিজের পেশারত দায়িত্ব কীভাবে পালন করতে হয় এবং আচরণ কেমন হওয়া উচিত তা নদেরচাঁদ বোঝে।

নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হইয়া গেল। — নদেরচাঁদের স্তম্ভিত হওয়ার কারণ কী?

ব্রিজের কাছে এসে নদীর দিকে প্রথমবার তাকিয়ে নদীর উন্মত্ত চেহারা দেখেই নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়ে গেল।

ফেনিল আবর্ত রচনা করিতেছে। — কীভাবে নদীতে আবর্ত রচনা হয়েছিল?

নদীর জল বর্ষায় অনেকটা বেড়ে গেছিল। তাই নদীর স্রোত ব্রিজের ধারকস্তম্ভে বাধা পেয়ে আবর্ত রচনা করছিল।

জলপ্রবাহকে আজ তাহার জীবন্ত মনে হইতেছিল। — কেন নদেরচাঁদের নদীর জলপ্রবাহকে জীবন্ত মনে হল

বৃষ্টির জল পেয়ে নদীর জলপ্রবাহ উন্মত্ত হয়ে উঠেছিল। আর এই উন্মত্ততার জন্যই নদেরচাদের নদীর জলপ্রবাহকে জীবন্ত বলে মনে হল।

চিঠি পকেটেই ছিল। — কোন্ চিঠির কথা বলা হয়েছে?

নদেরচাঁদ তার স্ত্রীকে পাঁচ পৃষ্ঠার যে বিরহ-বেদনাপূর্ণ চিঠিটি লিখেছিল। এখানে সেই চিঠির কথা বলা হয়েছে।

কীসের সঙ্গে সুর মিলিয়ে নদেরচাঁদ স্ত্রীকে চিঠি লিখেছিল?

অবিরাম হয়ে চলা বৃষ্টিধারার সঙ্গে সুর মিলিয়ে নদেরচাঁদ তার স্ত্রীকে চিঠি লিখেছিল।

পুরোনো চিঠিটি নদীর জলস্রোতে ফেলার পর নদেরচাঁদের কী মনে হল?

স্ত্রীকে লেখা পুরোনো চিঠিটি নদীর জলস্রোতে ফেলার পর নদেরচাঁদের মনে হল নদীর জীবন্ত জলপ্রবাহ চিঠিটাকে যেন তাড়াতাড়ি লুকিয়ে ফেলেছে।

নদেরচাঁদের কখন মনে হল তার সর্বাঙ্গ অবশ, অবসন্ন হয়ে আসছে?

নদী থেকে উঠে আসা অশ্রুতপূর্ব একটা শব্দের সঙ্গে বৃষ্টির ঝমঝম শব্দ মিশে যেন একটা সংগত পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। ওই শব্দ শুনে নদেরচাঁদের মনে হল তার সর্বাঙ্গ যেন অবশ ও অবসন্ন হয়ে আসছে।

বড়ো ভয় করিতে লাগিল নদেরচাঁদের — নদেরচাঁদ কেন ভয় পেয়েছিল?

নদীর অবস্থা ভয়ংকর ছিল, নদী যেন রোষে, ক্ষোভে উন্মত্ত ছিল। নদেরচাঁদ নদী থেকে এক হাত উঁচুতেই বসেছিল। তাই বর্ষার জলে ফুলেফেঁপে ওঠা নদী যে-কোনো মুহূর্তে বিপদ ঘটাতে পারে-এই ভেবে নদেরচাঁদ ভয় পেয়েছিল।

তাহাকে বিশ্বাস নাই। — কাকে, কেন বিশ্বাস নেই?

নদেরচাঁদ নদীকে বিশ্বাস করতে পারেনি তার উন্মত্ত চেহারার জন্য।

নদী কী চায় বলে নদেরচাঁদের মনে হল?

ব্রিজ ও মানুষের হাতে-গড়া বাঁধ ভেঙে নদী নিজের স্বাভাবিক গতি ফিরে পেতে চায় বলে নদেরচাঁদের মনে হল।

নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে। — নদীর বিদ্রোহের কারণ নদেরচাঁদ বুঝতে পারল কীভাবে?

শুকনো নদী পাঁচ দিনের বৃষ্টির জলে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। উন্মত্ত নদীর তীব্র স্রোতযুক্ত জলধারা দেখে নদেরচাঁদ নদীর বিদ্রোহের কারণ বুঝতে পারল।

ব্রিজ ও বাঁধ ভেঙে ফেললেও নদী কেন রেহাই পাবে না বলে নদেরচাঁদের মনে হল?

ব্রিজ ও বাঁধ ভেঙে ফেললেও নদী রেহাই পাবে না বলে নদেরচাঁদের মনে হল। কারণ, মানুষ আবারও নতুন করে ব্রিজ ও বাঁধ গড়ে তুলে নদীকে বন্দি করবে।

নদেরচাঁদ গর্ব অনুভব করিয়াছে — নদেরচাঁদ কীসের জন্য গর্ব অনুভব করেছে?

স্টেশনের কাছে নতুন রং করা ব্রিজটির জন্য নদেরচাঁদ গর্ব অনুভব করেছিল।

কীভাবে নদেরচাঁদের মৃত্যু হয়েছিল?

অন্ধকারে অন্যমনস্কভাবে লাইন ধরে স্টেশনের দিকে যাওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় নদেরচাঁদের মৃত্যু হয়েছিল।

পাঁচ দিন পর নদীকে দেখে নদেরচাঁদ কেন স্তম্ভিত হয়েছিল?

পাঁচ দিন ধরে বৃষ্টির জল পেয়ে নদী যেন ভয়ংকর হয়ে উঠেছিল, বাঁধ ভেঙে বেরিয়ে আসতে চাইছিল। নদীর এই উন্মত্ত রূপ দেখেই নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল।

আজও সে সেইখানে গিয়ে বসল। — কোথায় গিয়ে বসল?

নদেরচাঁদ ব্রিজের মাঝামাঝি ইট, সুরকি আর সিমেন্ট দিয়ে গাঁথা ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে গিয়ে বসল।

এক একখানি পাতা ছিঁড়িয়া দুমড়াইয়া মোচড়াইয়া জলে ফেলিয়া দিতে লাগিল। — উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কীসের পাতা জলে ফেলতে লাগল?

নদেরচাঁদ তার স্ত্রীকে লেখা পত্রখানি নদীর জলে ছিঁড়ে ফেলতে লাগল।

নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে — নদীর বিদ্রোহের কারণ কী ছিল?

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে আমরা দেখি, নদেরচাঁদ অনুভব করে নদীর ওপরে ব্রিজ তৈরি করা ও বাঁধ দেওয়ার কারণেই নদী যেন বিদ্রোহ করেছে।

ট্রেনটি নদেরচাঁদকে পিষিয়া দিয়া চলিয়া গেল — কোন্ ট্রেনটি?

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্প থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে ৭ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার ট্রেনের কথা বলা হয়েছে।

নদীর বিদ্রোহ গল্পটি একটি অসাধারণ সৃষ্টি, যা আমাদেরকে প্রকৃতি সম্পর্কে সচেতন হতে শিখিয়েছে। এটি একটি প্রতীকী গল্প, যেখানে নদীর বিদ্রোহ প্রকৃতির বিদ্রোহের প্রতীক। গল্পটি আমাদেরকে প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে এবং প্রকৃতির উপর অযথা হস্তক্ষেপ না করতে শিখিয়েছে।

Share via:

মন্তব্য করুন