এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “মুম্বাই বন্দর সম্পর্কে টীকা লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

মুম্বাই বন্দর সম্পর্কে টীকা লেখো।
অবস্থান – মহারাষ্ট্রের কোঙ্কণ উপকূলীয় সমভূমিতে অবস্থিত মুম্বাই ভারতের প্রধানতম সামুদ্রিক বন্দর যা ভারতের প্রবেশদ্বার নামে পরিচিত।
অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি গড়ে ওঠার কারণ –
- ভগ্ন উপকূল – কোঙ্কণ উপকূল ভগ্ন হওয়ায় বন্দর গড়ে ওঠার সুবিধা হয়েছে।
- গভীর উপকূল – উপকূল সংলগ্ন জলভাগ প্রায় 9-12 মিটার গভীর হওয়ায় এবং মগ্নচড়া না থাকায় জাহাজ সহজেই আসা-যাওয়া করতে পারে।
- স্বাভাবিক পোতাশ্রয় – এই বন্দরের পোতাশ্রয়টি স্বাভাবিক ও প্রশস্ত হওয়ায় বন্দরের বিকাশ সম্ভব হয়েছে।
- প্রশস্ত ডক ও জেটি – মালপত্র খালাসের জন্য ভিক্টোরিয়া, আলেকজান্দ্রা ও প্রিন্সেস নামে তিনটি বড়ো ডক ও মেরামতের জন্য 5টি ড্রাইডক রয়েছে।
- সমৃদ্ধ পশ্চাদ্ভূমি – সমগ্র মহারাষ্ট্র, গুজরাটের দক্ষিণ-পূর্বাংশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, দিল্লি, কর্ণাটকের উত্তরাংশ এবং অন্দ্রের পশ্চিমাংশ এই বন্দরের পশ্চাদ্ভূমির আওতায় রয়েছে।
- ভৌগোলিক অবস্থান – পাশ্চাত্যের শিল্পোন্নত দেশ, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের খনিজ তৈল সমৃদ্ধ দেশগুলির সঙ্গে ভারতের ব্যাবসায়িক আদানপ্রদান বৃদ্ধি পাওয়ায় মুম্বই বন্দরের ক্রমোন্নতি সম্ভব হয়েছে।
রপ্তানিকৃত পণ্য – তুলা, কার্পাস বস্ত্র, ম্যাঙ্গানিজ, অভ্র, লৌহ আকরিক, চর্ম প্রভৃতি।
আমদানিকৃত পণ্য – খনিজ তেল, তৈলজাত দ্রব্য, রাসায়নিক দ্রব্য, যন্ত্রপাতি, দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলা, ওষুধ প্রভৃতি।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
মুম্বাই বন্দরটি ভারতের কোথায় অবস্থিত?
মুম্বাই বন্দরটি মহারাষ্ট্রের কোঙ্কণ উপকূলীয় সমভূমিতে অবস্থিত এবং এটি ভারতের প্রধানতম সামুদ্রিক বন্দর হিসেবে পরিচিত।
মুম্বাই বন্দরকে কেন “ভারতের প্রবেশদ্বার” বলা হয়?
মুম্বাই বন্দরটি ভারতের অন্যতম বৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হওয়ায় দেশের আমদানি-রপ্তানির একটি প্রধান কেন্দ্র, তাই একে “ভারতের প্রবেশদ্বার” বলা হয়।
মুম্বাই বন্দরের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রধান কারণগুলি কী কী?
মুম্বাই বন্দরের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রধান কারণগুলি হলো — ভগ্ন উপকূল, গভীর জলভাগ, স্বাভাবিক পোতাশ্রয়, প্রশস্ত ডক ও জেটি, সমৃদ্ধ পশ্চাদ্ভূমি এবং অনুকূল ভৌগোলিক অবস্থান।
মুম্বাই বন্দরের পোতাশ্রয় কেমন?
মুম্বাই বন্দরের পোতাশ্রয়টি স্বাভাবিক ও প্রশস্ত হওয়ায় বড়ো জাহাজগুলি সহজেই প্রবেশ করতে পারে, যা বন্দরের বিকাশে সহায়ক হয়েছে।
মুম্বাই বন্দরের জলভাগের গভীরতা কত?
মুম্বাই বন্দরের উপকূল সংলগ্ন জলভাগের গভীরতা প্রায় 9-12 মিটার, যা জাহাজ চলাচলের জন্য উপযোগী।
মুম্বাই বন্দরে কয়টি প্রধান ডক রয়েছে ও তাদের নাম কী?
মুম্বাই বন্দরে মালপত্র খালাসের জন্য তিনটি প্রধান ডক রয়েছে — ভিক্টোরিয়া ডক, আলেকজান্দ্রা ডক এবং প্রিন্সেস ডক।
মুম্বাই বন্দর থেকে কী কী পণ্য রপ্তানি হয়?
মুম্বাই বন্দর থেকে তুলা, কার্পাস বস্ত্র, ম্যাঙ্গানিজ, অভ্র, লৌহ আকরিক, চর্ম প্রভৃতি পণ্য রপ্তানি হয়।
মুম্বাই বন্দরে কী কী পণ্য আমদানি হয়?
মুম্বাই বন্দরে খনিজ তেল, তৈলজাত দ্রব্য, রাসায়নিক দ্রব্য, যন্ত্রপাতি, দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলা, ওষুধ প্রভৃতি পণ্য আমদানি হয়।
মুম্বাই বন্দরের উন্নতির পিছনে ভৌগোলিক অবস্থানের কী ভূমিকা রয়েছে?
মুম্বাই বন্দর পাশ্চাত্যের শিল্পোন্নত দেশ, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে সাহায্য করেছে, যা বন্দরের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “মুম্বাই বন্দর সম্পর্কে টীকা লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন