এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “কলকাতা বন্দর সম্পর্কে টীকা লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

কলকাতা বন্দর সম্পর্কে টীকা লেখো।
অবস্থান – বঙ্গোপসাগরের উপকূল ভাগ থেকে প্রায় 180 কিমি অভ্যন্তরে হুগলি নদীর বামতীরে গড়ে ওঠা কলকাতা বন্দর পূর্ব ভারতের গুরুত্বপূর্ণ নদীবন্দর। এই বন্দরের পরিপূরক বন্দর হল হলদিয়া বন্দর।
কলকাতা বন্দর গড়ে ওঠার কারণসমূহ –
- ঐতিহাসিক কারণ – 1911 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কলকাতা ছিল ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতের রাজধানী। কলকাতা ছিল ভারতের প্রবেশ দ্বার। ব্রিটিশরা তাদের ব্যাবসাবাণিজ্যের সুবিধার জন্য এই বন্দর গড়ে তুলেছিল।
- নদীর নাব্যতা – হুগলি নদী বৃষ্টির জল, বরফগলা জল ও জোয়ারের জলে পুষ্ট হওয়ায় সারাবছর জল থাকে এবং নদীপথ সরল হওয়ায় জাহাজ চলাচলের অসুবিধা হয় না।
- উন্নত পোতাশ্রয় – বঙ্গোপসাগরের উপকূল থেকে প্রায় 128 কিমি অভ্যন্তরে অবস্থিত কলকাতা বন্দরের পোতাশ্রয় কৃত্রিম হলেও সামুদ্রিক ঝড়-ঝঞ্ঝা থেকে বন্দরটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত।
- সমৃদ্ধ পশ্চাদ্ভূমি – কলকাতা বন্দরের পশ্চাদ্ভূমি কৃষি, খনিজ ও শিল্পে অত্যন্ত সমৃদ্ধ, পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের কৃষিজাত দ্রব্য বিহার ও ঝাড়খণ্ডের খনিজদ্রব্যের সহজলভ্যতা এই অঞ্চলের শিল্পোন্নতির যেমন সহায়ক হয়েছে, তেমনি বন্দরের মাধ্যমে পণ্য আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। তা ছাড়াও উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের পণ্য সামগ্রী এই বন্দরের মাধ্যমে চলাচল করে।

রপ্তানিকৃত পণ্য – চা, পাটজাত দ্রব্য, কয়লা, লৌহ-আকরিক, তৈলবীজ, চিনি, কমলালেবু প্রভৃতি।
আমদানিকৃত পণ্য – খনিজ তেল, যন্ত্রপাতি, শিল্পজাত দ্রব্য, রাসায়নিক দ্রব্য, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি প্রভৃতি।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
কলকাতা বন্দর কোথায় অবস্থিত?
কলকাতা বন্দর বঙ্গোপসাগরের উপকূল থেকে প্রায় 180 কিলোমিটার অভ্যন্তরে হুগলি নদীর বাম তীরে অবস্থিত।
কলকাতা বন্দরকে কেন পূর্ব ভারতের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর বলা হয়?
কলকাতা বন্দর পূর্ব ভারতের প্রধান নদীবন্দর হওয়ায় এবং এর মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির পণ্য পরিবহন সুবিধাজনক হওয়ায় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কলকাতা বন্দরের পরিপূরক বন্দর কোনটি?
কলকাতা বন্দরের পরিপূরক বন্দর হল হলদিয়া বন্দর।
কলকাতা বন্দর গড়ে ওঠার ঐতিহাসিক কারণ কী?
1911 সাল পর্যন্ত কলকাতা ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ছিল এবং এটি ছিল ভারতের প্রধান বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বার, তাই ব্রিটিশরা তাদের বাণিজ্যিক সুবিধার জন্য এই বন্দর গড়ে তোলে।
হুগলি নদীর নাব্যতা কলকাতা বন্দরের জন্য কেমন সুবিধা তৈরি করে?
হুগলি নদীতে বৃষ্টির জল, বরফগলা জল ও জোয়ারের জল মিশে সারাবছর নাব্যতা বজায় থাকে, ফলে জাহাজ চলাচলে সুবিধা হয়।
কলকাতা বন্দরের পোতাশ্রয় কেমন?
কলকাতা বন্দরের পোতাশ্রয় কৃত্রিম হলেও এটি বঙ্গোপসাগরের উপকূল থেকে 128 কিলোমিটার অভ্যন্তরে অবস্থিত হওয়ায় সামুদ্রিক ঝড়-ঝঞ্ঝা থেকে সুরক্ষিত।
কলকাতা বন্দরের পশ্চাদ্ভূমি কীভাবে সমৃদ্ধ?
কলকাতা বন্দরের পশ্চাদ্ভূমি পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও অসমের কৃষিজাত ও খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ, যা বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানিতে সাহায্য করে।
কলকাতা বন্দর দিয়ে কী কী পণ্য রপ্তানি হয়?
কলকাতা বন্দর দিয়ে চা, পাটজাত দ্রব্য, কয়লা, লৌহ-আকরিক, তৈলবীজ, চিনি ও কমলালেবু রপ্তানি হয়।
কলকাতা বন্দর দিয়ে কী কী পণ্য আমদানি হয়?
এই বন্দর দিয়ে খনিজ তেল, যন্ত্রপাতি, শিল্পজাত দ্রব্য ও রাসায়নিক দ্রব্য আমদানি হয়।
কলকাতা বন্দরের অর্থনৈতিক গুরুত্ব কী?
কলকাতা বন্দর পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায় এটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “কলকাতা বন্দর সম্পর্কে টীকা লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন