এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটা কি? সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটার মধ্যে পার্থক্য

আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে দেখবো যে সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটা কি? সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটার মধ্যে পার্থক্য এই প্রশ্ন দশম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের তৃতীয় অধ্যায় বারিমণ্ডলের প্রশ্ন। সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটা কি? সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটার মধ্যে পার্থক্য – আপনি পরীক্ষার জন্য তৈরী করে গেলে আপনি লিখে আস্তে পারবেন।

সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটা কি? সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটার মধ্যে পার্থক্য

সমুদ্রস্রোত

সমুদ্রের জলরাশি নিয়মিতভাবে, নির্দিষ্ট দিকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রবাহিত হয়। এই জলের প্রবাহকেই সমুদ্রস্রোত বলা হয়। সমুদ্রস্রোত সাধারণত একমুখী হয় এবং বায়ুপ্রবাহের প্রভাবে এর গতিবেগ খুবই কম, ঘন্টায় মাত্র ৫-১০ কিলোমিটার।

সমুদ্রস্রোত দুই প্রকার –

  • পৃষ্ঠস্রোত বা বহিঃস্রোত: যখন সমুদ্রজলের প্রবাহ সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপর দিয়ে ঘটে তখন তাকে পৃষ্ঠস্রোত বা বহিঃস্রোত বলে। মোট সমুদ্রজলের মাত্র ১০% পৃষ্ঠস্রোতরূপে প্রবাহিত হয়।
  • অন্তঃস্রোত: যখন সমুদ্রজলের প্রবাহ ৪০০ মিটার গভীর অংশে ঘটে তখন তাকে অন্তঃস্রোত বলে। মোট সমুদ্রজলের ৯০% অন্তঃস্রোতরূপে প্রবাহিত হয়।

জোয়ারভাটা

সাগর-মহাসাগরের জলরাশি নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট সময় অন্তর এক জায়গায় ফুলে ওঠে এবং অন্য জায়গায় নেমে যায়। জলরাশির এই স্ফীতিকে বলা হয় জোয়ার এবং অবনমনকে বলা হয় ভাটা।

সাগর-মহাসাগরে সমুদ্রস্রোত ও তরঙ্গের বাইরেও আরেক রহস্যময় গতি লুকিয়ে আছে। এই গতির ফলে প্রতিদিন দু’বার করে সমুদ্রের জল কোথাও ফুলে ওঠে, আবার কোথাও নেমে যায়। এই অসাধারণ ঘটনাকেই জোয়ার-ভাটা বলা হয়।

মূলত চাঁদের অসাধারণ আকর্ষণী শক্তির প্রভাবে, এবং কিছুটা সূর্যের আকর্ষণের প্রভাবে সমুদ্রের জল নিয়মিতভাবে ফুলে ওঠে ও নেমে যায়। পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘোরে। এর ফলে জোয়ারের স্রোত পৃথিবীর গতির বিপরীতে, অর্থাৎ পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়।

উপকূলের কাছে জলের গভীরতা কমে যায়। ফলে সেখানে জলরাশি অনেক বেশি ফুলে ওঠে বা নেমে যায়। সমুদ্রের মোহনা থেকে নদীর গতিপথে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জোয়ার-ভাটা দেখা যায়। বর্ষাকালে গ্রীষ্ম বা শীতকালের তুলনায় জোয়ার-ভাটার প্রভাব বেশি দেখা যায়।

জোয়ার-ভাটা জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে, জাহাজ চলাচলে, মাছ ধরায় সহায় করে। এছাড়াও জলাভূমি ও উপকূলীয় অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটার মধ্যে পার্থক্য

সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটার পার্থক্যগুলি হল —

বিষয়সমুদ্রস্রোতজোয়ারভাটা
ধারণাবিভিন্ন কারণে সমুদ্রজলরাশির একমুখী প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলে।বিভিন্ন কারণে সমুদ্রজল উত্তাল হলে তাকে জোয়ার এবং নেমে গেলে তাকে ভাটা বলে।
নিয়ন্ত্রকবায়ুপ্রবাহ, পৃথিবীর আবর্তন, সমুদ্রজলের উষ্ণতা, লবণতা প্রভৃতি সমুদ্রস্রোতকে নিয়ন্ত্রণ করে।চাঁদ এবং সূর্যের আকর্ষণ জোয়ারভাটাকে নিয়ন্ত্রণ করে।
অবস্থানমহাসমুদ্রের বিস্তীর্ণ অংশে সমুদ্রস্রোতের প্রভাব রয়েছে।কেবল উপকূলভাগে জোয়ারভাটা দেখা যায়।
প্রভাবকোনো অঞ্চলের মগ্নচড়া, জলবায়ু, মাছ সংগ্রহ সমুদ্রস্রোতের দ্বারা প্রভাবিত হয়।নদীতে জাহাজ চলাচল, নদীর নাব্যতা, নদীর জলের বরফমুক্ততা, উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষিজমির বৈশিষ্ট্য জোয়ারভাটা দ্বারা প্রভাবিত হয়।

আজকের আলোচনায় আমরা সমুদ্রের দুটি রহস্যময় গতি, সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারভাটা, সম্পর্কে জানলাম। আমরা দেখলাম যে সমুদ্রস্রোত হলো সমুদ্রজলের একমুখী প্রবাহ, যা বিভিন্ন কারণে, যেমন বাতাস ও পৃথিবীর আবর্তন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। অন্যদিকে, জোয়ারভাটা হলো চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের নিয়মিত উত্থান-পতন।

মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য এই দুটি ঘটনার মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারা গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, এই আলোচনা আপনাদেরকে সেই পার্থক্যগুলো স্পষ্টভাবে বুঝতে এবং পরীক্ষার জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত হতে সাহায্য করবে।

Share via:

মন্তব্য করুন