অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ঘুরে দাঁড়াও – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই ঘুরে দাঁড়াও অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

এই কবিতাটিতে কবি জীবনের বাস্তবতাকে চিত্রিত করেছেন একাকী ও অসহায় মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে। টানাপোড়েনের মধ্যে জীবনের এক বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন তিনি। কবি বিশ্বাস করেন, বিপন্ন মানুষকে একসময় ঘুরে দাঁড়াতে হয়, নতৃত্বা না দিলে একদিন হারিয়ে যেতে হয়। এই সত্যই কবিতাটির মূল বার্তা।

কবি মনে করেন, জীবনের সকল দিক থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখা, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেকে পরিবর্তন না করা, এবং সবকিছুর সাথে একাত্ম না হলে মানুষের কোন মর্যাদা থাকে না। একসময় তাদের হারিয়ে যেতে হয়। তাই ঘুরে দাঁড়িয়ে সমকালের সকল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়াই নিজের উপস্থিতি প্রকাশের প্রকৃত উপায়। এই কারণেই কবি বারবার কবিতায় ঘুরে দাঁড়ানোর, অর্থাৎ প্রতিবাদী সত্তার জাগরণের কথা বলেছেন।

ঘুরে দাঁড়াও – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা  – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

কবিতায় কবি কোন্ আহ্বান জানিয়েছেন?

কবিতায় কবি সামাজিক মানুষকে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। ক্রমাগত সরে যেতে থাকলে পরিস্থিতি বা সমস্যা থেকে ক্ষণিক স্বস্তি পেলেও মুক্ত হওয়া যায় না। তাই নিজেকে বদলাতে হয়। যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সেখানেই সব কিছুকে টেনে নিতে হয়। কবি প্রকৃতার্থে মানুষের ‘মেনে নেওয়া’ বা আপসকারী মনোভাবকে বদল ও আত্মজাগৃতির আহ্বান জানিয়েছেন।

সরতে সরতে সরতে, তুমি বিন্দুর মতো মিলিয়ে যাবে। — কবি কোথা থেকে এই ‘সরণ’ লক্ষ করেছেন? এক্ষেত্রে তাঁর দেওয়া পরামর্শটি কী?

কবি প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত তাঁর ‘ঘুরে দাঁড়াও’ কবিতায় আত্মজীবনের স্থিতি ও অবস্থান থেকে মানুষের সরণ লক্ষ করেছেন।

মানুষ জীবনে বহু সংগ্রাম, পরিশ্রম, ত্যাগ ও তিতিক্ষায় নিজের দাঁড়ানোর জায়গা তৈরি করে। পরিস্থিতি বা সমস্যাজনিত কারণে বারবার স্থানচ্যুত হলে জীবনের লক্ষ হারিয়ে যায়, বিপন্ন হয় মানুষের অস্তিত্ব। সংকটকল্পনায় বিহ্বল না হয়ে তাই কবি পরামর্শ দিয়েছেন ঘুরে দাঁড়ানোর, নিজের প্রয়োজনীয় সব কিছুকে হাত বাড়িয়ে নিজের ভূমিতে টেনে আনার।

এবার ঘুরে দাঁড়াও। আর ‘এখন ঘুরে দাঁড়াও।’ – পঙ্ক্তি দুটিতে ‘এবার’ আর ‘এখন’ শব্দদুটির প্রয়োগ-সার্থকতা বুঝিয়ে দাও।

এবার অর্থাৎ এই সময় বা এ অবস্থায় এবং ‘এখন’ অর্থাৎ এই ক্ষণে বা মুহূর্তে বা বর্তমানকালে। কবি প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত পাঠ্য ‘ঘুরে দাঁড়াও’ কবিতায় সামাজিক মানুষকে পরিস্থিতির ক্রীড়নক না হয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন চিরকাল সরে যেতে থাকা সাময়িক স্বস্তি দিলেও সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় না। তাই সংকটের থেকে সরে না গিয়ে মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়, নিজের প্রয়োজনীয় যা কিছু তাকেই হাতের সামনে টেনে নিতে হয়। না হলে ধ্বংস হয়, মুছে যায় মানবিক অস্তিত্ব। এই চিন্তা কেবল কর্তব্য ভেবে থেমে গেলে হবে না, মানবজীবনের সার্থকতার জন্য তা এখনই করা দরকার। এতদিনকার অভ্যাস মুছে এই মুহূর্ত থেকে এই আচরণ শুরু করার জন্য ‘এবার’ ও ‘এখন’ সময়বাচক শব্দ দুটো কবি ব্যবহার করেছেন।

নির্দেশ অনুসারে বাক্য পরিবর্তন করো –

তুমি আর কোথায় সরবে? (প্রশ্ন পরিহার করো)

তোমার আর কোথাও সরবার জায়গা নেই।

এবার ঘুরে দাঁড়াও। (না-সূচক বাক্যে)

এবার না ঘুরে দাঁড়িও না।

তুমি যদি বদলে দিতে না পারো/তাহলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মরতে হবে। (সরল বাক্যে)

বদলে দিতে না পারলে তোমায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মরতে হবে।

নইলে সরতে সরতে সরতে/তুমি বিন্দুর মতো মিলিয়ে যাবে। (প্রশ্নবোধক বাক্যে)

নইলে সরতে সরতে সরতে তুমি বিন্দুর মতো মিলিয়ে যাবে না কি?

গাছগুলো নদীর জলে স্নান করে আসুক। (নির্দেশক বাক্যে)

গাছেরা নদীর জলে স্নান করে এসো।

ব্যাসবাক্যসহ সমাসের নাম লেখো –

বনান্তর, ছায়াপথ, উপান্ত, সাইকেল-রিকশো

সমাসব্যাসবাক্যসমাসের শ্রেণি
বনান্তরঅন্য বননিত্য
ছায়াপথছায়াঘেরা পথমধ্যপদলোপী কর্মধারয়
উপান্তঅন্তরের সমীপে।উপসর্গ তৎপুরুষ
সাইকেল-রিকশোসাইকেল ও রিকশোদ্বন্দ্ব

মানুষের জীবন যেন এক প্রবাহিত নদীর ধারা। এই নদীতে কখনো মৃদু স্রোত, কখনো ঝড়ো ঢেউ। জীবনের এই টানাপোড়েনের মধ্যে কবি দেখেছেন অসহায় মানুষের একাকিত্ব, তাদের ভেঙে পড়ার ঝুঁকি। কবিতাটিতে তিনি এই সত্যকেই তুলে ধরেছেন যে, জীবনে টিকে থাকার জন্য, সময়ের সাথে সাথে নিজেকে বদলে নিতে হবে, পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে হবে। নিজেকে সবকিছুর থেকে আলাদা রাখলে, সবকিছুর সাথে একাত্ম না হলে একজন মানুষের কোন মর্যাদা থাকে না। একসময় সে হারিয়ে যাবে।

তাই কবি বারবার কবিতায় ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন। এই ঘুরে দাঁড়ানো মানে কেবল শারীরিকভাবে নয়, বরং মানসিকভাবেও। সমকালের সবকিছুর মুখোমুখি হয়ে, প্রতিবাদী সত্তার জাগরণ ঘটিয়েই একজন মানুষ তার নিজস্ব মর্যাদা রক্ষা করতে পারে, জীবনে টিকে থাকতে পারে।

এই কবিতাটি একটি জাগরণের বার্তা বহন করে। প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত মানুষকে নিষ্ক্রিয়তা ছেড়ে সক্রিয় হতে এবং সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

Share via:

মন্তব্য করুন