আইন অমান্য আন্দোলন কি? আইন অমান্য আন্দোলনের কারণ

Rahul

আইন অমান্য আন্দোলন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের লড়াইয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই আন্দোলনের ইতিহাস, তাৎপর্য এবং কারণ সম্পর্কে এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে।

আইন অমান্য আন্দোলন

আইন অমান্য আন্দোলন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতির উপর ভিত্তি করে এই আন্দোলন ভারতীয় জনগণকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করে তুলেছিল।

এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল ১৯৩০ সালের ১২ই মার্চ, যখন গান্ধীজি লবণ আইন ভেঙে সমুদ্র উপকূলে লবণ তৈরি করেছিলেন। এরপর সারা দেশে লবণ আইন ভেঙে, ব্রিটিশ পণ্য বর্জন করে এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বয়কট করে জনগণ ব্যাপক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে।

গান্ধীজির অহিংস নীতির প্রতি অটল বিশ্বাস এবং জনগণকে অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা এই আন্দোলনকে স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ে পরিণত করে।

আইন অমান্য আন্দোলন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। প্রথমত, এটি ব্রিটিশ শাসনকে ভারতীয়দের দৃঢ় সংকল্প সম্পর্কে অবগত করেছিল। দ্বিতীয়ত, এটি ভারতীয় জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে এবং তাদের মধ্যে জাতীয়তাবাদের भावना জাগ্রত করে। তৃতীয়ত, এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন বৃদ্ধি করে।

যদিও আইন অমান্য আন্দোলন ভারতকে তাৎক্ষণিক স্বাধীনতা এনে দিতে পারেনি, তবুও এটি স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

আইন অমান্য আন্দোলন

আইন অমান্য আন্দোলনের কারণ

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ছিল আইন অমান্য আন্দোলন। মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে ১৯৩০ থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত এই আন্দোলন চলেছিল। বেশ কিছু কারণ এই আন্দোলনের পেছনে কাজ করেছিল।

  • লবণের কর ছিল আন্দোলনের তাৎক্ষণিক কারণ। লবণ ছিল প্রত্যেক ভারতীয়ের জন্য অপরিহার্য, এবং ব্রিটিশদের আরোপিত কর ও একচেটিয়া ব্যবস্থাকে অন্যায় ও শোষণমূলক মনে করা হত।
  • গোলটেবিল সম্মেলন, যা ভারতে সাংবিধানিক সংস্কার নিয়ে আলোচনার জন্য আয়োজিত হয়েছিল, ভারতীয় নেতাদের বৃহত্তর স্ব-শাসন ও প্রতিনিধিত্বের দাবি পূরণে ব্যর্থ হয়।
  • ব্রিটিশ নীতির কারণে ভারতীয়রা তীব্র অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। ব্রিটিশ শিল্পের পক্ষপাত ও ভারতীয় সম্পদের শোষণের ফলে কৃষক ও কৃষকরা ঋণ ও করের বোঝায় চাপা পড়েছিল।
  • ১৯৩০ সালের মধ্যে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলন গতি লাভ করেছিল। ব্রিটিশ শাসনের প্রতি ক্রমবর্ধমান বিরক্তি ও স্ব-শাসন ও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা জনগণকে আন্দোলনের দিকে ধাবিত করে।
  • বিশ্বব্যাপী প্রেক্ষাপটও ভূমিকা রেখেছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং অন্যান্য স্বাধীনতা আন্দোলনের উত্থান ভারতীয়দের তাদের নিজস্ব স্বাধীনতার দাবিতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
  • গান্ধীর অনুপ্রেরণামূলক কর্ম ও বক্তৃতা ভারতীয়দের মধ্যে ক্ষোভের বোধ জাগ্রত করে এবং আন্দোলনকে গতি প্রদান করে।

এই সকল কারণ একত্রিত হয়ে আইন অমান্য আন্দোলনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। আন্দোলনটি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় চিহ্নিত করে এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবিচারের প্রতি ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করে।

আইন অমান্য আন্দোলনের তাৎপর্য

আইন অমান্য আন্দোলন হল অহিংস প্রতিবাদের একটি রূপ যেখানে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী অন্যায় নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে বা সামাজিক, রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক পরিবর্তন আনতে ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু আইন ভঙ্গ করে। এটি পদ্ধতিগত অন্যায়, বৈষম্য এবং নিপীড়নের প্রতিবাদে ব্যবহৃত হয়। অহিংস নীতির উপর ভিত্তি করে, আইন অমান্য সামাজিক সমস্যাগুলির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে, জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং অভিযোগের সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষকে চাপ দেয়।

এই পদ্ধতির মাধ্যমে, কর্মীরা অসমতা তুলে ধরে এবং সমাজের সকল সদস্যের জন্য ন্যায্য আচরণ ও সমান অধিকারের দাবি জানায়। অবাধ্য কাজের মাধ্যমে তারা জনসাধারণ ও মিডিয়ার মনোযোগ আকর্ষণ করে, অন্তর্নিহিত সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা ও বিতর্কের সূত্রপাত করে।

আইন অমান্য আন্দোলন একটি শক্তিশালী হাতিয়ার যা ইতিহাস জুড়ে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সাহায্য করেছে।

আরও পড়ুন –  মাধ্যমিক ইতিহাস – বিশ শতকে ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষন – বিশ্লেষনমূলক প্রশ্নোত্তর

আন্দোলনের ইতিহাস, তাৎপর্য এবং কারণ নিয়ে এই আর্টিকেলে আলোচনা করে দেখা গেছে যে, ভারতীয় স্বাধীনতা অর্জনের যে লড়াই লক্ষ করা হয়েছে, তা আসলে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অমান্যতা, শোষণ এবং ব্যবসায়িক লাভের দিকে তাদের লক্ষ্য হওয়ায়, ভারতীয় জনগণের বিরুদ্ধে বিপুল আন্দোলনের জন্ম হয়েছিল। এই আন্দোলনে যুদ্ধসহ বিভিন্ন আক্রমণ, বিতর্ক, ব্লকেড উপায়ের সাহায্যে ভারতীয় জনগণ অবশেষে স্বাধীনতা অর্জন করে। এই অধ্যায়ের মূল অংশ হিসেবে এই অধ্যায়ের ক্রমাগত বিকাশ ও সংগ্রহের মাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম হিসেবে এই অধ্যায় অনবদ্য একটি বিশাল ধারা গড়ে তুলেছে, যা বিশেষভাবে ভারতীয় জনগণের সংগ্রামবাজি মনোভাব এবং তাদের সংগ্রাম প্রতি সঙ্গীতময় মুক্তিযুদ্ধ চেতনা উৎপন্ন করেছে। সেই সময়ের ঐতিহাসিক সত্ত্বা, স্বাধীনতা অভিযানের গভীর উদ্দিপনা এবং তার প্রতিষ্ঠান এবং পরিণাম এই আন্দোলনকে একটি অবিস্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে প্রকাশ করে।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI) কী? ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ইতিহাস, কার্যাবলী

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI) কী? ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ইতিহাস, কার্যাবলী

Padmashri Award 2011 Winner List

পদ্মশ্রী পুরস্কার ২০১১ – Padmashri Award 2011 Winner List

Padmashri Award 2012 Winner List

পদ্মশ্রী পুরস্কার ২০১২ – Padmashri Award 2012 Winner List

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer