এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “বৃষ্টির জল সংরক্ষণ সম্পর্কে টীকা লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারত” -এর “ভারতের নদনদী ও হ্রদসমূহ” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

বৃষ্টির জল সংরক্ষণ সম্পর্কে টীকা লেখো।
ধারণা – যে পদ্ধতিতে বৃষ্টির জলকে সরাসরি বাড়ির ছাদে বা ভূপৃষ্ঠস্থ জলাশয়ে সঞ্চয় করে গৃহস্থালি, কৃষি, পশুপালন, শিল্পের কাজে ব্যবহার করা হয় তাকে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ বলে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জলের চাহিদা মেটানোর জন্য অত্যন্ত সহজ ও সুন্দর পদ্ধতি হল বৃষ্টির জল সংরক্ষণ পদ্ধতি।
পদ্ধতি – বৃষ্টির জলসংরক্ষণের দুটি পদ্ধতি রয়েছে। যথা –
- বাড়ির ছাদে জল সংরক্ষণ।
- ভূপৃষ্ঠে বিভিন্ন আধারে জলসংরক্ষণ।
বাড়ির ছাদে জলসংরক্ষণ (Roof top Harvesting) –
বর্ষার সময় সরাসরি বৃষ্টির জলকে পাইপের মধ্যে দিয়ে বাড়ির ছাদে সংরক্ষণ করা হয়। এরপর বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে পরিশ্রুত করে গৃহস্থালির দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করা হয়। (যেমন – স্নান করা, জামাকাপড় কাচা, গাছে জল দেওয়া ইত্যাদি। উদাহরণ হিসেবে সমগ্র ভারতের Role Model তামিলনাড়ুর দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হল। তামিলনাড়ুর প্রায় 42% শহরের বাড়ি ও 36% গ্রামীণ বাড়ি বৃষ্টির জল সংরক্ষণের উপযোগী হয়েছে। এছাড়াও রাজস্থানের জয়পুর ও থর এলাকাতেও এরূপ প্রকল্প রয়েছে।
ভূপৃষ্টে বিভিন্ন আধারে জল সংরক্ষণ –
বৃষ্টির জলকে বিভিন্ন জলাশয়, কৃত্রিম কংক্রিটের পুকুর, কুয়ো, খাল প্রভৃতিতে সঞ্চয় করে যখন ব্যবহার করা হয় তখন তাকে ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন আধারে জলসংরক্ষণ বলে। এছাড়া জলভরণ কুয়ো, জলভরণ জলকূপ পদ্ধতিতে মাটির অনেক গভীরে পাইপ প্রবেশ করিয়ে বৃষ্টির জলকে সরাসরি ভূগর্ভে নিয়ে যাওয়া হয়। এই জল চুঁইয়ে চুঁইয়ে ভৌমজলের সঞ্চয় বাড়ায়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
বৃষ্টির জল সংরক্ষণ কী?
বৃষ্টির জলকে ছাদ, জলাশয় বা ভূপৃষ্ঠস্থ আধারে সংরক্ষণ করে গৃহস্থালি, কৃষি ও শিল্পে ব্যবহার করাকে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ বলে। এটি জল সংকট কমাতে সহজ ও কার্যকরী পদ্ধতি।
বৃষ্টির জল সংরক্ষণের প্রধান পদ্ধতিগুলি কী কী?
মূলত দুটি পদ্ধতি রয়েছে –
1. ছাদে জল সংরক্ষণ (Roof Top Harvesting) – বৃষ্টির জলকে পাইপের মাধ্যমে ছাদ থেকে সংগ্রহ করে পরিশোধন করে ব্যবহার।
2. ভূপৃষ্ঠে জল সংরক্ষণ – পুকুর, কুয়ো, কৃত্রিম জলাধার বা খালে জল জমিয়ে রাখা।
বৃষ্টির জল সংরক্ষণের গুরুত্ব কী?
1. ভূগর্ভস্থ জলস্তর বাড়ায়।
2. জলসংকট ও খরার হাত থেকে রক্ষা করে।
3. কৃষি ও গৃহস্থালির কাজে সহজলভ্য জল সরবরাহ করে।
4. পরিবেশবান্ধব ও টেকসই পদ্ধতি।
তামিলনাড়ুতে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের সাফল্য কী?
তামিলনাড়ু ভারতের রোল মডেল —
1. 42% শহুরে বাড়ি এবং 36% গ্রামীণ বাড়ি বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে।
2. রাজস্থানের থর মরুভূমি অঞ্চলেও এই পদ্ধতি সফল।
বৃষ্টির জল কীভাবে পরিশোধন করা হয়?
1. প্রাথমিক পরিশোধন – বালি, কয়লা ও নুড়ি স্তর দিয়ে ছাঁকা।
2. রাসায়নিক পরিশোধন – ক্লোরিন বা ফিটকিরি ব্যবহার।
3. আধুনিক পদ্ধতি – UV বা RO ফিল্টার ব্যবহার।
বৃষ্টির জল সংরক্ষণের সুবিধা কী?
1. জলের অপচয় রোধ।
2. কৃষি ও শিল্পে সহজলভ্য জল।
3. ভূগর্ভস্থ জলস্তর রিচার্জ।
4. জলবিলের খরচ কমায়।
বৃষ্টির জল সংরক্ষণের অসুবিধা কী?
1. প্রাথমিক বিনিয়োগ বেশি লাগে।
2. অপরিচ্ছন্ন ছাদ থেকে জল দূষিত হতে পারে।
3. শুষ্ক অঞ্চলে বৃষ্টির অনিশ্চয়তা রয়েছে।
গ্রামীণ এলাকায় বৃষ্টির জল সংরক্ষণ কীভাবে করা যায়?
1. পুকুর, কুয়ো ও ডোবা সংরক্ষণ।
2. কাঁচা পাত্র বা মাটির হাঁড়িতে জল জমানো।
3. চেক ড্যাম বা কনট্যুর ট্রেঞ্চ তৈরি।
শহরে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের উপায় কী?
1. বাড়ির ছাদে ট্যাঙ্ক লাগানো।
2. সাব-সারফেস স্টোরেজ সিস্টেম।
3. রেইনওয়াটার হার্ভেস্টিং প্রকল্প।
বৃষ্টির জল সংরক্ষণে সরকারি উদ্যোগ কী?
1. ভারতের জল শক্তি মন্ত্রক ও জলাধার প্রকল্প চালু রয়েছে।
2. তামিলনাড়ু, রাজস্থান, মহারাষ্ট্রে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “বৃষ্টির জল সংরক্ষণ সম্পর্কে টীকা লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারত” -এর “ভারতের নদনদী ও হ্রদসমূহ” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন