মাধ্যমিক ভূগোল – ভারতের প্রকৃতিক পরিবেশ – ভারতের ভূপ্রকৃতি – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

Gopi

আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” এর অন্তর্ভুক্ত ভারতের ভূপ্রকৃতি বিভাগের কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষার পাশাপাশি কম্পিটিটিভ পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষা ও চাকরির পরীক্ষায় প্রায়শই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হবে।

Table of Contents

ভারতের প্রকৃতিক পরিবেশ - ভারতের ভূপ্রকৃতি - সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন।vvvvvvvvvvvvvvvvv

ভূপ্রকৃতি অনুসারে ভারতকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী?

ভূপ্রকৃতি অনুসারে ভারতকে পাঁচটি প্রধান বিভাগে ভাগ করা যায়। বিভাগগুলি হল —1. উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল, 2. উত্তরের সমভূমি অঞ্চল, 3. উপদ্বীপীয় মালভূমি অঞ্চল, 4. উপকূলের সমভূমি অঞ্চল, এবং 5. দ্বীপ অঞ্চল।

হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের তিনটি হ্রদ ও তিনটি গিরিপথের নাম লেখো।

হিমালয়ের তিনটি হ্রদ – কুমায়ুন অঞ্চলের 1. নৈনিতাল, কাশ্মীর উপত্যকার 2. উলার এবং 3. ডাল হ্রদ।
হিমালয়ের তিনটি গিরিপথ – জম্মু ও কাশ্মীরের 1. বানিহাল, হিমাচল প্রদেশের 2. বরলাচা লা এবং সিকিমের 3. নাথুলা।

হিমালয়ের উৎপত্তি কবে হয়েছে?

ভূতাত্ত্বিক কালপঞ্জী অনুযায়ী টার্শিয়ারি যুগে অর্থাৎ প্রায় ছয় থেকে সাত কোটি বছর আগে হিমালয়ের উত্থান শুরু হয় এবং সেই উত্থান পর্ব এখনও ঘটে চলেছে।

হিমালয় পর্বতমালাকে কী কী অঞ্চলে ভাগ করা যায়?

দৈর্ঘ্য বরাবর হিমালয় পর্বতমালাকে তিনটি অঞ্চলে ভাগ করা যায়। এগুলি হল —
পশ্চিম হিমালয়, মধ্য হিমালয়, এবং পূর্ব হিমালয়।
প্রস্থ বরাবর হিমালয় পর্বতমালাকে চারভাগে ভাগ করা যায়। এগুলি হল — টেথিস হিমালয়, হিমাদ্রি হিমালয়, হিমাচল হিমালয়, এবং শিবালিক হিমালয়।

পূর্বাচল বলতে কী বোঝায়?

হিমালয় পর্বতশ্রেণি অরুণাচল প্রদেশের উত্তর-পূর্বে (তিব্বতে) নামচাবারওয়া শৃঙ্গের কাছে গিয়ে সম্পূর্ণ দক্ষিণ দিকে বেঁকে গিয়েছে। পাটকই, নাগা, লুসাই, মিশমি প্রভৃতি নামে এই পর্বতশ্রেণি বিচ্ছিন্নভাবে অরুণাচল, অসম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা প্রভৃতি রাজ্যের মধ্যে দিয়ে আরও দক্ষিণ দিকে প্রসারিত হয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের এইসব পর্বতশ্রেণি অধ্যুষিত অঞ্চলকে বলা হয় পূর্বাচল।

দুন কী?

পশ্চিম হিমালয় অঞ্চলে মধ্য হিমালয় পর্বতশ্রেণি এবং শিবালিক পর্বতশ্রেণির মধ্যবর্তী অংশে যেসব দীর্ঘ কিন্তু অল্পবিস্তৃত প্রায় সমতল উপত্যকা আছে, সেগুলিকে দুন বলা হয়। যেমন — দেরাদুন (উত্তরাখণ্ড), উধমপুর (জম্মু ও কাশ্মীর) প্রভৃতি।

ভূস্বর্গ বা প্রাচ্যের নন্দনকানন কাকে বলে?

অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জন্য কাশ্মীর উপত্যকাকে ভূস্বর্গ বা প্রাচ্যের নন্দনকানন বলা হয়।

মালনাদ কাকে বলে?

কন্নড় ভাষায় মালনাদ কথাটির অর্থ পাহাড়ি দেশ। কর্ণাটক মালভূমির পশ্চিমভাগের পশ্চিমঘাট পর্বতসংলগ্ন পাহাড়ি ভূমিকে মালনাদ বলে।

ব্যাকওয়াটার্স কী?

কেরল রাজ্যের মালাবার উপকূলে বহু উপহ্রদ বা লেগুন আছে। এগুলিকে ব্যাকওয়াটার্স বলা হয়। এর স্থানীয় নাম কয়াল। উদাহরণ — ভেমবানাদ, অষ্টমুদি, পোনমুদি প্রভৃতি।

ভারতের সর্বোচ্চ মালভূমি ও দীর্ঘতম হিমবাহের নাম লেখো।

সর্বোচ্চ মালভূমি – ভারতের সর্বোচ্চ মালভূমি হল লাদাখ৷
দীর্ঘতম হিমবাহ – ভারতের দীর্ঘতম হিমবাহ হল সিয়াচেন (76 কিমি)৷

ভারতের উচ্চতম পর্বত ও জলপ্রপাতের নাম লেখো।

উচ্চতম পর্বত – ভারতের উচ্চতম পর্বত হল কারাকোরাম, এর উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ গডউইন অস্টিন বা K2 (8611 মি)।
উচ্চতম জলপ্রপাত – ভারতের উচ্চতম জলপ্রপাত হল সরাবতী নদীর গেরসোপ্পা (275 মি)।

পূর্বাচলের কয়েকটি পর্বতশ্রেণির নাম করো।

পূর্বাচলের কয়েকটি পর্বতশ্রেণি হল – পাটকই, নাগা, লুসাই প্রভৃতি।

ভারতের প্রাচীন ও নবীন ভঙ্গিল পর্বতের নাম লেখো।

প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত – ভারতের প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত হল আরাবল্লি।
নবীন ভঙ্গিল পর্বত – ভারতের নবীন ভঙ্গিল পর্বত হল হিমালয়।

উত্তর ভারতের সমভূমিকে ভারতের শস্যভাণ্ডার বলা হয় কেন?

উত্তর ভারতের সমভূমি অত্যন্ত উর্বর। এটি একটি কৃষিসমৃদ্ধ অঞ্চল। এখানে ধান, পাট, আখ, গম, তুলো, ডাল, তৈলবীজ প্রভৃতি শস্য প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হয়। এই জন্য এই অঞ্চলটিকে ‘ভারতের শস্যভাণ্ডার’ বলা হয়।

পূর্ব ভারতের উচ্চভূমি কাকে বলে?

ঝাড়খন্ড রাজ্যের ছোটোনাগপুর মালভূমি, ছত্তিশগড় রাজ্যের বাঘেলখণ্ড মালভূমি ও সমতল ক্ষেত্রসহ মহানদী অববাহিকা এবং ওডিশার দণ্ডকারণ্য অঞ্চলকে একসঙ্গে ‘পূর্ব ভারতের উচ্চভূমি’ বলা হয়।

ব্যাসল্ট শিলায় গঠিত ভারতের কয়েকটি পাহাড়ের নাম লেখো।

ব্যাসল্ট শিলায় গঠিত ভারতের কয়েকটি পাহাড় হল দলমা, নেতারহাট এবং রাজমহল।

ধ্রিয়ান কাকে বলে ও ভারতের কোথায় দেখা যায়?

মরুভূমিতে যেসব বালিয়াড়ি বায়ুপ্রবাহের গতি পরিবর্তিত হওয়ার কারণে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরে সরে যায়, সেগুলিকে চলনশীল বা অস্থায়ী বালিয়াড়ি বা ধ্রিয়ান বলে। রাজস্থানের থর মরুভূমিতে এই ধ্রিয়ান দেখা যায়।

ভারতীয় উপদ্বীপের কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্রের নাম লেখো।

ভারতীয় উপদ্বীপের কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্রের নাম হল – আরাবল্লির মাউন্ট আবু, ছোটোনাগপুরের নেতারহাট, মহাদেব পাহাড়ের পাঁচমারি, তামিলনাড়ুর উদাগামণ্ডলম (উটি) প্রভৃতি।

রান কাকে বলে?

গুজরাতে কচ্ছ উপদ্বীপের বিস্তীর্ণ অগভীর লবণাক্ত জলাভূমিকে রান বলে। এর উত্তরভাগের নাম বৃহৎ রান এবং দক্ষিণভাগের নাম ক্ষুদ্র রান।

ভারতের একটি আগ্নেয় পর্বতের নাম লেখো এবং এর অবস্থান নির্দেশ করো।

ভারতের একটি আগ্নেয় পর্বতের নাম নারকোন্ডম এবং এটি আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত।

ভারতের একটি লাভা গঠিত মালভূমি ও একটি প্রবাল গঠিত দ্বীপপুঞ্জের নাম লেখো।

ভারতের একটি লাভা গঠিত মালভূমি হল মহারাষ্ট্রের ডেকান ট্র্যাপ। ভারতের একটি প্রবাল গঠিত দ্বীপপুঞ্জ হল লাক্ষাদ্বীপ, মিনিকয় ও আমিনদিভি।

গুজরাতের দুটি পাহাড়ের নাম লেখো।

জরাতের কাথিয়াবাড় উপদ্বীপে দুটি পাহাড় আছে — গির এবং গিরনার।

দক্ষিণ ভারতের যে-কোনো দুটি গিরিপথের নাম করো।

দক্ষিণ ভারতের দুটি গিরিপথের নাম — নাসিকের কাছে থলঘাট গিরিপথ এবং পুনের কাছে ভোরঘাট গিরিপথ। এই দুটিই পশ্চিমঘাট পর্বতশ্রেণির গিরিপথ।

হিমালয়ের যে-কোনো দুটি গিরিপথের নাম করো। 

হিমালয়ের দুটি গিরিপথের নাম — পূর্ব হিমালয়ে সিকিমের নাথুলা গিরিপথ এবং পশ্চিম হিমালয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের বানিহাল গিরিপথ।

মরুস্থলী নামকরণ কেন হয়েছে?

‘মরু’ শব্দের অর্থ মৃত বা নিষ্প্রাণ এবং ‘স্থলী’ শব্দের অর্থ দেশ বা ভূমি, অর্থাৎ মরুস্থলীর অর্থ মৃতের দেশ বা জল ও উদ্ভিদহীন নিষ্প্রাণ স্থান। রাজস্থানের ‘মরুস্থলী’ প্রায় জনশূন্য এবং বৃক্ষহীন একটি নিষ্প্রাণ ভূমি বা মরুভূমি। এজন্যই অঞ্চলটিকে মরুস্থলী বলে (মরুস্থলীর আর-এক নাম থর মরুভূমি)।

পশ্চিমঘাট পর্বতমালার দুটি গিরিপথের নাম লেখো।

পশ্চিমঘাট পর্বতমালার দুটি গিরিপথের নাম — নাসিকের কাছে থলঘাট গিরিপথ এবং পুনের কাছে ভোরঘাট গিরিপথ।

পূর্বঘাট পর্বতের অবস্থান এবং এই পর্বতের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত একটি নদীর নাম করো।

পূর্বঘাট পর্বতের অবস্থান – পূর্বঘাট পর্বত দাক্ষিণাত্য মালভূমির পূর্বসীমায় বা পূর্ব উপকূল সমভূমির পশ্চিম সীমায় অবস্থিত এবং পূর্ব উপকূলের সমান্তরালভাবে উত্তর-পূর্বে মহানদীর উপত্যকা থেকে দক্ষিণে তামিলনাড়ুর প্রায় দক্ষিণপ্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। পূর্বঘাট পর্বতের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত একটি নদী – গোদাবরী নদী।

হিমালয় পর্বতমালার ও পশ্চিমঘাট পর্বতের একটি করে গিরিপথের নাম লেখো।

হিমালয় পর্বতমালার একটি গিরিপথের নাম – পূর্ব হিমালয়ে সিকিমের নাথুলা গিরিপথ।
পশ্চিমঘাট পর্বতের একটি গিরিপথের নাম – নাসিকের কাছে থলঘাট গিরিপথ।

হিমালয়ের পশ্চিম প্রান্ত ও পূর্ব প্রান্তের শৃঙ্গ দুটির নাম লেখো।

হিমালয়ের পশ্চিম প্রান্ত ও পূর্ব প্রান্তের শৃঙ্গ হল যথাক্রমে নাঙ্গা পর্বত (8126 মি) ও নামচাবারওয়া (7782 মি)।

আকসাই চিন কী?

জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের উত্তর-পূর্ব ভাগের নাম আকসাই চিন অঞ্চল। সুউচ্চ কারাকোরাম পর্বতশ্রেণির উত্তর-পূর্বে অবস্থিত এই আকসাই চিন অঞ্চলটি প্রকৃতপক্ষে একটি পর্বতবেষ্টিত উচ্চ মালভূমি। এখানকার গড় উচ্চতা 4500 মিটার হলেও কোনো কোনো জায়গায় উচ্চতা 6000 মিটার বা তারও বেশি। এর প্রশাসনিক কাজকর্ম চিন সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়। এই অঞ্চলের উত্তরে আছে বিখ্যাত সোডা সমভূমি।

সোডা সমভূমি কাকে বলে?

কাশ্মীরের উত্তর-পূর্ব প্রান্তের নাম সোডা সমভূমি। এলাকাটি কারাকোরাম পর্বতশ্রেণির পূর্বে এবং আকসাই চিন অঞ্চলের উত্তরে অবস্থিত। এই সোডা সমভূমি প্রকৃতপক্ষে একটি উচ্চভূমি। এর উপরিভাগ প্রায় সমতল।

খাদার ও ভাঙ্গর কাকে বলে?

উত্তর ভারতে গঙ্গা এবং তার বিভিন্ন উপনদী-বাহিত পলি নদী উপত্যকার দুই ধারে ধীরে ধীরে সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমির সৃষ্টি হয়েছে তার মধ্যে যেসব এলাকা নতুন পলিগঠিত সেগুলিকে বলে খাদার। নদী উপত্যকা থেকে দূরবর্তী যেসব অঞ্চল প্রাচীন পলি দ্বারা গঠিত তাদের বলে ভাঙ্গর। নতুন পলিগঠিত বলে ভাঙ্গরের তুলনায় খাদার বেশি উর্বর হয়।

ভাবর অঞ্চল বলতে কী বোঝ?

গঙ্গা সমভূমি অঞ্চলের উত্তর প্রান্তের নাম ভাবর। এলাকাটি হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত। এখানকার মাটি বালি ও নুড়িপূর্ণ এবং সচ্ছিদ্র। হিমালয়ের খরস্রোতা নদীগুলি নুড়ি, বালি, কাকর প্রভৃতি বয়ে এনে এই ভূমি গঠন করেছে। এখানকার ভূমি সচ্ছিদ্র বলে হিমালয় থেকে আসা ছোটো ছোটো নদী এই অঞ্চলে এসে ভূগর্ভে প্রবেশ করে হারিয়ে যায়।

কয়াল কী?

মালাবার উপকূলের অভ্যন্তরস্থ জলাভূমি উপহ্রদগুলিকে স্থানীয় ভাষায় কয়াল বলে। প্রকৃতপক্ষে, ভূ-আন্দোলনজনিত কারণে মালাবার উপকূলের বারবার উত্থান ও নিমজ্জন ঘটেছে। এই উত্থান ও নিমজ্জনের চিহ্নস্বরূপ এখানে অসংখ্য জলাভূমির সৃষ্টি হয়েছে যা স্থানীয় ভাষায় কয়াল নামে পরিচিত। কেরল রাজ্যের মালাবার উপকূলের দুটি বিখ্যাত কয়াল হল ভেমবানাদ ও অষ্টমুদি। কয়ালগুলি যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে।

তাল কী?

কুমায়ুন হিমালয়ে হিমবাহের ক্ষয়কার্যের মাধ্যমে অসংখ্য নীচু জায়গা তৈরি হয়। পরবর্তীকালে ওইসব জায়গাগুলি জল জমে গিয়ে হ্রদের সৃষ্টি করে। ওই হ্রদগুলিকে স্থানীয় ভাষায় তাল বলে। সাততাল, ভীমতাল, নৈনিতাল এধরনের তাল।

শিবালিক পর্বত কোথায় অবস্থিত?

হিমালয়ের যে চারটি সমান্তরাল শ্রেণি আছে, তার দক্ষিণতম শ্রেণিকে বলা হয় শিবালিক পর্বত। এটি কাশ্মীরের পশ্চিম অঞ্চল থেকে পূর্বে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত। এটি সবচেয়ে নীচু অংশ। শিবালিকের দক্ষিণে উত্তর ভারতের সমভূমি রয়েছে।

পূর্বাচলের কয়েকটি পর্বতের নাম লেখো।

পূর্বাচলের কয়েকটি পর্বত হল — পাটকই, বুম, লুসাই, গারো, কোহিমা, খাসি, জয়ন্তিয়া, নাগা প্রভৃতি। এগুলির উচ্চতা যথেষ্ট বেশি।

রোহি কী?

অবস্থান – রাজস্থানের মরু অঞ্চলের বাগার অঞ্চলের পশ্চিমদিকে রোহি বলে।
বিবরণ – আরাবল্লি পর্বত থেকে কয়েকটি নদী পশ্চিমে প্রবাহিত হয়েছে। এবং মরু অঞ্চলে গিয়ে শুকিয়ে গেছে। ফলে বৃষ্টি হলে নদীগুলিতে প্লাবন দেখা যায়। আর ওই প্লাবনে যে সমভূমি তৈরি হয় তা রোহি।

চিলকা কী? এটি কোথায় অবস্থিত?

চিলকা একটি উপহ্রদ। কারণ এই হ্রদটির একদিক বঙ্গোপসাগরের সাথে যুক্ত, তিনদিক স্থলভাগ বেষ্টিত। একদিক জলভাগে উন্মুক্ত হ্রদকে উপহ্রদ বলা হয়, সেহেতু চিলকা একটি উপহ্রদ। এটি ওডিশা রাজ্যের উপকূলে অবস্থিত।

কাশ্মীর হিমালয়ের পর্বতগুলির নাম লেখো।

কাশ্মীর হিমালয়ের দক্ষিণ থেকে উত্তরে পরপর পাঁচটি পর্বতশ্রেণি পূর্ব থেকে পশ্চিমে বিস্তৃত রয়েছে — শিবালিক, পীর পাঞ্জাল, জাস্কর, লাদাখ, কারাকোরাম।

ট্রান্স হিমালয় কী?

হিমাদ্রি হিমালয়ের উত্তরসীমা থেকে তিব্বতের মালভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত অংশকে ট্রান্স হিমালয় বা টেথিস হিমালয় বলে। এখানেই রয়েছে জাস্কর, লাদাখ, কারাকোরাম পর্বত ও লাদাখ মালভূমি।

বাগার অঞ্চল কী?

আরাবল্লি পর্বতের পাদদেশে, মরুভূমির একেবারে পূর্বদিকে অবস্থিত অঞ্চলটির নাম বাগার। এটি মরুভূমি এবং সমভূমির মাঝখানে অল্প বালুকাময় স্থান এবং বেশিরভাগ জায়গা ঘাসে ঢাকা। এর মধ্যে কোথাও কোথাও কৃষিকাজ হয়।

ধান্দ কী?

ভারতের রাজস্থান মরুভূমিতে দুটি সমান্তরাল বালিয়াড়ির মধ্যের স্থানে অনেক সময় হ্রদ দেখা যায়। যারা বছরের বেশিরভাগ সময়ে শুকনো থাকে। এইসব শুকনো হ্রদগুলিকে স্থানীয়ভাবে ধান্দ বলে।

হামাদা কী?

ভারতীয় মরুভূমির রোহি এবং ক্ষুদ্র মরু অঞ্চলের পশ্চিমদিকে বালিযুক্ত নরম শিলা দিয়ে গঠিত পাথুরে ভূমিভাগকে হামাদা বলে। এটি সম্পূর্ণ কৃষি অনুন্নত ভূমিভাগ।

মালনাদ কাকে বলে?

কর্ণাটক মালভূমির পশ্চিমদিকের অংশ মালনাদ নামে পরিচিত। এটি পশ্চিমঘাট পর্বতের পূর্বদিকে অবস্থিত। অঞ্চলটি উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্বে ঢালু। এখানকার পাহাড়গুলোর চূড়া গোলাকার। এটি প্রধানত গ্র্যানাইট ও নিস শিলা গঠিত।

ভারতের প্রাচীনতম এবং উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গটির নাম করো।

ভারতের প্রাচীনতম পর্বতটি হল আরাবল্লি। কারাকোরাম পর্বতের গডউইন অস্টিন বা K2 (8611 মি) শৃঙ্গটি হল ভারতের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ।

মেঘালয় মালভূমি কোথায় অবস্থিত? এই মালভূমির প্রান্তে অবস্থিত শৈলশিরাগুলির নাম করো।

অবস্থান – ভারতের উত্তর-পূর্বদিকে মেঘালয় রাজ্যে মেঘালয় মালভূমি অবস্থিত। প্রান্তিক শৈলশিরাসমূহ – এই মালভূমির দক্ষিণপ্রান্ত বরাবর পশ্চিম থেকে পূর্বে বিস্তৃত তিনটি শৈলশিরা হল — গারো পাহাড়, খাসি পাহাড়, এবং জয়ন্তিয়া পাহাড়।

কারেওয়া কী?

অবস্থান – কাশ্মীর উপত্যকা অঞ্চলের 100-200 মিটার উচ্চ হ্রদের চারপাশে যে ধাপযুক্ত উর্বর পলিস্তরের সৃষ্টি হয়েছে, তাকে স্থানীয় ভাষায় কারেওয়া নামে ডাকা হয়। কারেওয়ার মধ্যে দিয়ে ঝিলাম নদী প্রবাহিত হচ্ছে। এই পলিমাটি নদী এবং হিমবাহের ক্ষয়জাত পদার্থ সঞ্চিত হয়ে সৃষ্টি হয়েছে।
কৃষিতে প্রভাব – কারেওয়া মাটিতে খুব ভালো জাফরান চাষ হয়।

বাগার বলতে কী বোঝ?

অবস্থান – ভারতীয় মরু অঞ্চলে একেবারে পূর্বদিকে আরাবল্লি পাদদেশে অল্প বালুকাময় অংশ বাগার নামে পরিচিত।
অন্য নাম – একে অর্ধ মরু অঞ্চলও বলে।
বৈশিষ্ট্য –
1. এখানে সামান্য বৃষ্টিপাত হয় বলে ভূমিভাগ ঘাসে ঢাকা।
2. যেখানে জলের ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে শুষ্ক ফসল চাষ করা হয়।

টেরিস বা থেরিস কী?

ভারতের পশ্চিম উপকূলে খুব বেশি বালিয়াড়ি চোখে পড়ে না। কিন্তু মালাবার উপকূলে কিছু কিছু ছোটো ছোটো বালিয়াড়ি দেখা যায়। ওইসব ছোটো বালিয়াড়িগুলিকে এখানে থেরিস বা টেরিস বলে।

ভারতের দ্বীপভূমির অর্থনৈতিক গুরুত্ব কতখানি?

ভারতের দ্বীপভূমির অর্থনৈতিক গুরুত্ব –
1. এখানে প্রচুর নারকেল বাগিচা রয়েছে। এ ছাড়া চাষাবাসও যথেষ্ট করা হয়।
2. প্রতিটি দ্বীপই পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রসিদ্ধ হয়েছে। তাই পর্যটন শিল্প এখানকার প্রধান শিল্প।
3. সামুদ্রিক নানা দ্রব্যের সংগ্রহের প্রধান কেন্দ্র এই দ্বীপগুলি।
4. মাছ শিকারের প্রধান কেন্দ্র।

দোয়াব অঞ্চল কাকে বলে?

দো = দুই এবং আব = জল। উত্তর ভারতে দুই নদীর মধ্যবর্তী সমভূমিকে দোয়াব বলে। আর একসঙ্গে পরপর অনেকগুলি দোয়াব থাকলে তাকে দোয়াব অঞ্চল নামে অভিহিত করা হয়।

তরাই বলতে কী বোঝ?

‘তরাই’ একটি ফরাসি শব্দ, যার অর্থ ভিজে ও স্যাঁতসেঁতে ভূমি। গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র সমভূমির উত্তর প্রান্তে হিমালয়ের পাদদেশে নুড়ি ও পাথরের স্তূপ ও জলাভূমি দেখতে পাওয়া যায়। ওখানে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয় বলে গভীর বনভূমি সৃষ্টি হয়েছে এই জন্য বেশিরভাগ সময় ভূমিভাগ ভিজে স্যাঁতসেঁতে থাকে। এজন্য ওই অঞ্চলটিকে তরাই নামে অভিহিত করা হয়।

ময়দান কাকে বলে?

প্রাচীন গ্র্যানাইট-নিস শিলা গঠিত কর্ণাটক মালভূমির পশ্চিমাংশের ভূপ্রকৃতি বন্ধুর ও পর্বতময়। কিন্তু মালভূমির পূর্বাংশের ভূমি অপেক্ষাকৃত সমতল ও উন্মুক্ত। এজন্য কর্ণাটক মালভূমির পূর্বাংশকে ময়দান নামে অভিহিত করা হয়।

কচ্ছের রান কী?

গুজরাতের কচ্ছ উপদ্বীপের সমগ্র উত্তর ও পূর্বাংশ জুড়ে কাদায় ভরা এক বিস্তীর্ণ লোনা জলাভূমি আছে। এর নাম রান অঞ্চল। এর মধ্যে উত্তরের বড়ো জলাভূমিকে বড়ো রান এবং পূর্বের ছোটো জলাভূমিকে ছোটো রান বলে। সমুদ্রের জোয়ারে বা বর্ষাকালে এই রান অঞ্চল প্লাবিত হয়। আর বর্ষার পরে লোনা জল বাষ্পীভূত হলে রানে প্রচুর পরিমাণ লবণ জমে থাকে।

বেট কী?

সিন্ধুর পাঁচটি উপনদী (শতদ্রু, বিপাশা, ইরাবতী, চন্দ্রভাগা ও বিতস্তা) অধ্যুষিত পাঞ্জাব সমভূমির যেসব এলাকা নতুন পলিগঠিত, বিশেষত নদী-তীরবর্তী স্থানসমূহকে বা নীচু প্লাবনভূমিকে স্থানীয় ভাষায় বেট বলে।

আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” এর অন্তর্ভুক্ত ভারতের ভূপ্রকৃতি বিভাগের কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষার পাশাপাশি কম্পিটিটিভ পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষা ও চাকরির পরীক্ষায় প্রায়শই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকে, তাহলে আমাকে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। এছাড়াও, নিচে এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন যার এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

মাধ্যমিক - ভূগোল - বারিমন্ডল - জোয়ার ভাটা - রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

মাধ্যমিক – ভূগোল – বারিমন্ডল – জোয়ার ভাটা – রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – About Author and Story

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – About Author and Story

The Passing Away of Bapu

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – Question and Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer