আজকের এই আর্টিকেলে অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের অষ্টাদশ অধ্যায় ‘হাওয়ার গান’ থেকে ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হবে। এই প্রশ্নগুলো অষ্টম শ্রেণির বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসে।
হাওয়ার চোখে ঘরের যে ছবি পাওয়া যায়, তা কবিতা অনুসরণে লেখো।
বুদ্ধদেব বসু রচিত ‘হাওয়ার গান’ কবিতায় হাওয়ার চোখে রাত্রিবেলায় একটি ঘরের ছবি ফুটে উঠেছে। সেই ঘরে দোলনায় একটি মিষ্টি ছেলে ঘুমিয়ে আছে। আবছা ঘরের মেঝেতে কার্পেটের উপর পোষা কুকুরটি তন্দ্রাচ্ছন্ন। ঘরে জ্বলা মোমবাতির মৃদু আলোয় এক স্বপ্নময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু হাওয়া যাকে খুঁজে বেড়ায়, সে বুঝি সেই ঘর থেকেও বিদায় নিয়ে চলে গেছে।
সমুদ্রে জাহাজের চলার বর্ণনা দাও।
অন্ধকার সমুদ্রের বুকে জাহাজ যখন চলে, তখন তার মাস্তুলে আলো জ্বলে। জাহাজের যাত্রীরা কেউ সিনেমা দেখে, কেউ নাচে বা গান গায়। একসময় সেই সব থেমে গিয়ে ডেক জনশূন্য হয়ে পড়ে, চাঁদ অস্তগামী হয়; অকূল অন্ধকারে শুধু দুলে ওঠা সমুদ্রের একটানা গর্জন শোনা যায়।
হাওয়াদের কী নেই? হাওয়ারা কোথায় কীভাবে তার খোঁজ করে?
কবি বুদ্ধদেব বসু বলেছেন হাওয়াদের কোনো বাড়ি নেই।
হাওয়া তার খোঁজে সারা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ায়। পৃথিবীর সব জল ও তীর ছুঁয়ে, পাহাড়, বন্দর, নগর, অরণ্য, প্রান্তর ছুঁয়ে, পার্কের উপর দিয়ে, ঘুম ঘুম ঘরের পাশ দিয়ে, সমুদ্রের ঢেউয়ের মাথায় মাথায়, সমুদ্রে চলা জাহাজের ডেকের উপর দিয়ে হাওয়া অবিরাম ঘুরে বেড়ায়।
চিরকাল উত্তাল তাই রে – কে চিরকাল উত্তাল? কেন সে চিরকাল উত্তাল হয়ে রইল?
হাওয়া চিরকাল উত্তাল।
কবি বলেছেন হাওয়াদের কোনো বাড়ি নেই। তাই তারা চিরকাল বাইরে কেঁদে মরে। পৃথিবীর সব জায়গাকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে হাওয়া উত্তাল হয়। বয়ে যায় হয়তো সেই ঘরের খোঁজে, যে ঘর তার কোথাও নেই। নাকি কোনো অচেনা-অদেখা প্রিয়জন, যার খোঁজে সে উত্তাল, অস্থির হয়ে ছুটে বেড়ায়; তাকে সে কোথাও পায় না। পৃথিবীর সব জল, তীর, পাহাড়, বন্দর, নগর, অরণ্য-প্রান্তর ছুঁয়ে সে বৃথাই বয়ে যায়। ঝরাপাতা ঢাকা পার্কের বেঞ্চিকে, পাঁজর বেরোনো দেয়ালের গায়ের শার্সিকে, চিমনির শব্দ ও কাননের কান্নাকে সে প্রশ্ন করে। ঘুমন্ত ঘরের পাশ দিয়ে, সমুদ্রে ভেসে চলা জাহাজের উপর দিয়ে সে বয়ে চলে। কোথাও তাকে পায় না। হাওয়ার কোনো বিশ্রাম নেই। অন্তহীন সময় ধরে সারা বিশ্ব জুড়ে চলে তার এই অফুরান সন্ধান। তাই সে চিরকাল উত্তাল হয়ে থাকে।
হাওয়ার অফুরান সন্ধান-এর মধ্যে অন্য কোনো অর্থ কি তুমি খুঁজে পাও?
কবিতার বাচ্যার্থের আড়ালে অনেক সময়ই কোনো গভীর ব্যঞ্জনা লুকিয়ে থাকে। হাওয়ার এই ‘সে কোথায়, সে কোথায় হায় রে’ বলে যে ‘অফুরান সন্ধান’, তার মধ্য দিয়ে কবি হয়তো মননশীল মানুষের চিরব্যাকুল হৃদয়ের কথাই বলতে চেয়েছেন; যে হৃদয় কোনো অসীম, অচেনা কাউকে খুঁজে পাওয়ার জন্য ছুটে চলে সারা জীবন ধরে। কাকে সে খোঁজে তাও হয়তো সে ঠিক জানে না। তবু সারাজীবন ধরে চলে তার এই ‘অফুরান সন্ধান’।
আজকের এই নিবন্ধে অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের অষ্টাদশ অধ্যায় ‘হাওয়ার গান’ থেকে ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো পরীক্ষায় প্রায়ই আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনার পড়াশোনার জন্য উপকারী হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে বা অতিরিক্ত সাহায্য প্রয়োজন হয়, আপনি টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও, নিবন্ধটি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাতে তারাও উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ!