অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

Sourav Das

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার প্রথম পর্বে, রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠানের জন্য যোগ্য শিক্ষকদের সন্ধান করছিলেন। তার সত্যানুসন্ধান দৃষ্টি তাকে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেও ধাবিত করেছিল। অপরিচিতি, খ্যাতির অভাব – এসবই রবীন্দ্রনাথকে বিচলিত করেনি। পাকা জহুরি যেমন সঠিক রত্ন চিনতে পারেন, তেমনি রবীন্দ্রনাথও বাংলার গ্রামবাংলার থেকে প্রতিভাবান ব্যক্তিত্বদের বাছাই করে এনেছিলেন। প্রতিভার স্ফুরণ লক্ষ্য করে তিনি তাদেরকে প্রতিভা বিকাশের উন্মুক্ত ক্ষেত্র শান্তিনিকেতনে নিয়ে আসেন। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন সেই প্রতিভাধর ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম।

হরিচরণের মধ্যে বিদ্যাচর্চার প্রতি আগ্রহ ছিল প্রবল। রবীন্দ্রনাথ যখন তাকে অভিধান রচনার কাজ দেন, তিনি তা সাদরে গ্রহণ করেন। হরিচরণের মধ্যে ছিল লুকিয়ে থাকা এক বিদ্যানুসীলন প্রতিভা, আর বিশ্বকবি সেই প্রতিভাকে সঠিক দিকে পরিচালিত করেছিলেন। অভিধান রচনার কাজ শুরু হয়, এবং চল্লিশ বছর একনিষ্ঠ পরিশ্রমের ফসল হিসেবে প্রকাশিত হয় “বঙ্গীয় শব্দকোষ”। হরিচরণের এই অসাধারণ কাজের বর্ণনা দিয়েছেন হীরেন্দ্রনাথ দত্ত। অশক্ত শরীর, ক্ষীণ দৃষ্টি সত্ত্বেও, হরিচরণ শত প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে অভিধান রচনায় লেগে থাকেন। অদম্য মানসিক শক্তি তাকে এই কাজে অনুপ্রাণিত করে। একক প্রচেষ্টায় তিনি এই অভাবনীয় কাজ সম্পন্ন করেছিলেন, যা বাংলা সাহিত্যে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে।

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

রবীন্দ্রনাথের অধ্যাপক নির্বাচনকে কেন শেকসপিয়রের প্লট নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?

শেকসপিয়র যেমন যা কিছু প্লট অর্থাৎ কাহিনির সন্ধান পেতেন তা দিয়েই মহৎ সাহিত্য সৃষ্টি করতেন আপন ক্ষমতাগুণে তেমনি রবীন্দ্রনাথও অতি সাধারণ অথচ সম্ভাবনাময় ব্যক্তিদের দিয়ে অসাধ্যসাধন করিয়ে নিতেন। মানুষের মধ্যে নিহিত প্রচ্ছন্ন সম্ভাবনাকে তিনি উৎসাহ ও প্রেরণা দিয়ে পত্রেপুষ্পে সমৃদ্ধিশালী করিয়ে নিতে পারতেন।

হরিচরণ কোন্ কোন্ লৌকিক পুরস্কার লাভ করেন?

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ‘সরোজিনী স্বর্ণপদক’ দিয়ে সম্মানিত করেছে। শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক সংঘ প্রাচীন ভারতীয় রীতিতে যোড়শোপচারে তাঁকে সংবর্ধনা দেয়। বিশ্বভারতী হরিচরণকে ‘দেশিকোত্তম’ (ডিলিট) উপাধিদানে সম্মানিত করে। এ ছাড়াও ‘শিশির কুমার স্মৃতি পুরস্কারে’ তিনি ভূষিত হয়েছেন।

একক প্রচেষ্টায় এরূপ বিরাট কাজের দৃষ্টান্ত বিরল। – কোন্ কাজের কথা বলা হয়েছে? একে ‘বিরাট কাজ’ বলার কারণ কী?

হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত সুবৃহৎ বাংলা অভিধান ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’ -এর কথা এখানে বলা হয়েছে।

অভিধান রচনা অত্যন্ত পরিশ্রমসাধ্য এবং সময়সাধ্য কাজ। বিশেষত হরিচরণের আলোচ্য অভিধানটি সেকালে ১০৫ খণ্ডে মুদ্রিত হয়ে প্রকাশ পেয়েছিল। পরবর্তীকালে ‘সাহিত্য আকাদেমি’ থেকে দুটি খণ্ডে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। শুধুমাত্র পরিমাণগত বাহুল্যে নয়, গুণগত উৎকর্ষের দিক থেকেও এ গ্রন্থ মহান। নানা বিদ্যার একত্র সমাবেশে এই অভিধান রচনা তাই ‘বিরাট কাজ’ বলে চিহ্নিত হয়েছে।

হরিচরণবাবুকে দেখে তাঁর সম্পর্কিত শ্লোকটি আমার মনে পড়ে যেত – শ্লোকটি কার লেখা? শ্লোকটি উদ্ধৃত করো।

শ্লোকটি রচনা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

শ্লোকটি হল –

‘কোথা গো ডুব মেরে রয়েছ তলে
হরিচরণ! কোন্ গরতে?
বুঝেছি! শব্দ-অবধি-জলে
মুঠাচ্ছ খুব অরথে!

হরিচরণকে অভিধান প্রণয়নে পুনঃপ্রবৃত্ত করতে রবীন্দ্রনাথ কোন্ উদ্যোগ নেন?

আর্থিক অনটনের কারণে শান্তিনিকেতন ছেড়ে হরিচরণ কলকাতায় চলে গেলে রচনাকাজে ব্যাঘাত ঘটে। এ ঘটনায় দুঃখিত রবীন্দ্রনাথ বিদ্যোৎসাহী রাজা মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দীকে অনুরোধ করে। হরিচরণকে মাসিক পঞ্চাশ টাকা বৃত্তির ব্যবস্থা করে দেন। এভাবে আর্থিক নিশ্চয়তার বাতাবরণ তৈরি হলে অভিধান রচনায় জোয়ার আসে। হয়তো আপাতভাবে সে প্লট বা কাহিনিসূত্র ক্ষীণ ও দুর্বল মনে হত।

শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার প্রথম পর্বে, রবীন্দ্রনাথ কেবল শিক্ষিত ব্যক্তিই নয়, বরং চরিত্রবান ও প্রতিভাবান ব্যক্তিদেরও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করতে চেয়েছিলেন। তার সত্যানুসন্ধানী দৃষ্টি তাকে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অপরিচিত ও অখ্যাত ব্যক্তির দিকে আকৃষ্ট করে। রবীন্দ্রনাথ, একজন জ্ঞানী ব্যক্তি, হরিচরণের মধ্যে লুকিয়ে থাকা অসাধারণ প্রতিভা ও জ্ঞানের আলো দেখতে পেয়েছিলেন।

হরিচরণ ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষাবিদ ও বিদ্বান। রবীন্দ্রনাথের আহ্বানে তিনি শান্তিনিকেতনে যোগদান করেন এবং প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাদর্শন ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। রবীন্দ্রনাথ তাকে “বঙ্গীয় শব্দকোষ” রচনার কাজ দিলে, তিনি আনন্দের সাথে তা গ্রহণ করেন। চল্লিশ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর, হরিচরণ এই অভিধান সম্পন্ন করেন। হীরেন্দ্রনাথ দত্ত তার অক্লান্ত পরিশ্রম ও অদম্য ইচ্ছাশক্তির প্রশংসা করেছেন।

হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু একজন বিদ্বানই ছিলেন না, তিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথের একজন নিবেদিতপ্রাণ অনুগামী। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাদর্শনের প্রতি তার গভীর শ্রদ্ধা ছিল এবং তিনি শান্তিনিকেতনের ছাত্রদের মধ্যে সেই শিক্ষাদর্শন ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছিলেন।

হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন ও কর্ম বাংলার শিক্ষা ও সংস্কৃতির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। রবীন্দ্রনাথের সত্যানুসন্ধানী দৃষ্টির মাধ্যমে আবিষ্কৃত, তিনি শান্তিনিকেতনের অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না –  ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer