অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – নাটোরের কথা –অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Gopi

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের নাটোরের কথা অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে নাটোরের কথা অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় নাটোরের কথা অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই নাটোরের কথা অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

এই গল্পটি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিকথামূলক রচনা, যা স্বদেশি আন্দোলনের পটভূমিতে লেখা হয়েছে। রচনাটিতে তিনি নাটোরে অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক সম্মেলনের ঘটনা বর্ণনা করেছেন, যেখানে তরুণ প্রজন্ম বাংলা ভাষার সম্মান প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছিল।

নাটোরের মহারাজ জগদিন্দ্রনাথ ঠাকুরবাড়ি সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন এবং অবনীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানান। ট্রেন ও স্টিমার যাত্রা করে অতিথিরা নাটোরে পৌঁছান। মহারাজ তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করেছিলেন এবং স্থানীয় খাবার, যার মধ্যে রয়েছে বিখ্যাত নাটোরের সন্দেশ, পরিবেশন করা হয়।

সম্মেলন শুরু হলে, রবীন্দ্রনাথের সহায়তায় তরুণরা সম্মেলনটি সম্পূর্ণ বাংলায় পরিচালনা করার প্রস্তাব দেন। বয়স্করা প্রথমে ইংরেজিতে কথা বলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তীব্র প্রতিবাদের মুখে তাদের বাধ্য হয়ে তরুণদের প্রস্তাব মেনে নিতে হয়। এই ঘটনাই ছিল বাংলা ভাষার জন্য একটি ঐতিহাসিক বিজয়, কারণ এটি প্রথমবার জনসম্মেলনে সর্বসমক্ষে সম্মানিত হয়েছিল। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাবলীল ভাষায় এই ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন, যা পাঠকদের মনে দেশপ্রেম ও ভাষাভালবাসার অনুভূতি জাগ্রত করে।

এই গল্পে লেখক স্বদেশি যুগে বাংলা ভাষা প্রচলনের একটি ঘটনা বর্ণনা করেছেন। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তাঁর তরুণ বন্ধুরা প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্স উপলক্ষে নাটোর যান। ট্রেনে করে সারাঘাট পৌঁছে সেখান থেকে স্টিমারে যেতে হয়। স্টিমারে যাবার পথে তরুণ অবনীন্দ্রনাথ ও তাঁর বন্ধুরা দেখতে পান যে, কংগ্রেসের নামজাদা বয়োজ্যোষ্ঠ নেতারা বহু খাবার আগেভাগে বেশি বেশি খেয়ে নেওয়ায় তাদের ভাগ্যে কিছুই জুটছিল না।

প্রভিন্সিয়াল কংগ্রেসের মিটিংয়ে তরুণদল স্থির করেন যে তাঁরা সমস্ত বক্তৃতা বাংলায় দেবেন। কিন্তু বয়স্ক নেতারা তাদের একথা মানতে রাজি হন না এবং ইংরেজিতেই বক্তৃতা দেওয়া শুরু করলে তরুণদল তাদের “বাংলায়”, “বাংলায়” বলে থামিয়ে দেন। শেষে নামজাদা নেতারা বাংলাতেই বক্তৃতা দিতে বাধ্য হন।

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – নাটোরের কথা

 নাটোরের কথা অধ্যায়ের লেখক পরিচিতি

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একজন খ্যাতিমান ভারতীয় চিত্রশিল্পী, নন্দনতাত্ত্বিক এবং সুলেখক। তিনি প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের প্রপৌত্র, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৃতীয় ভ্রাতা গিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৌত্র এবং গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কনিষ্ঠ পুত্র। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তাঁর পিতৃব্য অর্থাৎ কাকা। ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দের ৭ আগস্ট জোড়াসাঁকোয় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথের অনুপ্রেরণায় তাঁর লেখার সূত্রপাত। অঙ্কনশিল্পী হিসেবেও তিনি যথেষ্ট বিখ্যাত ছিলেন।

১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনে তাঁর চিত্রপ্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় এবং ইংরেজ সরকার তাঁকে CIE উপাধি দেন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডিলিট উপাধি দেয়। তিনি রবীন্দ্রনাথের ‘চিত্রাঙ্গদা’-র অলংকরণ করেন। ১৯৪১-১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি শান্তিনিকেতনের আচার্য পদের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিলাতি শিল্পীদের কাছে অঙ্কন শিক্ষা করেন। অবনীন্দ্রনাথ ‘ভারতীয় মডার্ন আর্ট-এর জনক’ হিসেবে পরিগণিত হন। মোগল ও প্রাচীন ভারতের মহিমা এবং ভারতীয় জীবনচিত্র তাঁর ছবির অন্যতম বিষয়। তাঁর তত্ত্বাবধানেই জন্ম নেয় চিত্রশিল্পীদের নতুন প্রজন্ম। নন্দলাল বসু, অসিত হালদার, ক্ষিতীন্দ্রনাথ মজুমদার, যামিনী রায় প্রমুখ শিল্পীরা তাঁর তত্ত্বাবধানে ও অনুপ্রেরণায় অঙ্কন শিল্পে এক নব ও পরিবর্তিত যুগের সূচনা করেন। ছোটোদের জন্য তাঁর লেখা বইগুলি বাঙালির অক্ষয় সম্পদ। বাংলাদেশের জীবনচিত্র তাঁর লেখায় যেন নতুন করে প্রাণ পেয়েছে। ‘শকুন্তলা’, ‘ক্ষীরের পুতুল’, ‘রাজকাহিনি’, ‘ভারতশিল্প’, ‘ভূতপরীর দেশ’, ‘নালক’, ‘বাংলার ব্রত’, ‘খাজাঞ্চির খাতা’, ‘প্রিয়দর্শিকা’, ‘চিত্রাক্ষর’, ‘বুড়ো আংলা’, ‘ভারত শিল্পের ষড়ঙ্গ’, ‘আলোর ফুলকি’, ‘ঘরোয়া’, ‘রং-বেরং’ ইত্যাদি তাঁর রচিত বিখ্যাত গ্রন্থ। ‘ওমর খৈয়াম’, ‘আরব্য উপন্যাসের গল্প’, ‘ঋতুসংহার’, ‘কবিকঙ্কণ চণ্ডী’, ‘বুদ্ধ’, ‘সুজাতা’ তাঁর আঁকা বিখ্যাত চিত্রকর্ম। পাঠ্যাংশ গৃহীত গল্পাংশটি তাঁর ‘ঘরোয়া’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দের ৫ ডিসেম্বর এই মহান শিল্পী পরলোকগমন করেন।

 নাটোরের কথা অধ্যায়ের পাঠপ্রসঙ্গ

ইংরেজশাসিত ভারতবর্ষে স্বাধীনতা আনার ক্ষেত্রে বাংলার একটা বিশেষ ভূমিকা বর্তমান। আর বাংলার অন্যতম প্রধান পরিবার হিসেবে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের নাম করা যেতে পারে। ইংরেজদের শাসনে ও শোষণে বিপর্যস্ত মানুষ তখন ইংরেজ বিতাড়নের উদ্দেশ্যে গোপনে একত্রিত হয়ে ইংরেজবিরোধী কার্যকলাপ শুরু করে। আর তারই বহিঃপ্রকাশ হিসেবে মাঝে মাঝে ইংরেজদের আক্রমণ করে ব্যতিব্যস্ত করে তুলতে থাকে। এই সময়টাকে বলা হয় স্বদেশি যুগ। ঠাকুর পরিবারের সদস্যরাও ইংরেজবিরোধী কার্যকলাপ সমর্থন করেন। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ক্ষেত্রে তাঁদের ভূমিকা কম নয়। রবীন্দ্রনাথ তাঁর লেখার দ্বারা জনগণকে স্বাধীনতা সংগ্রামে উদবুদ্ধ করেন। সকলেই এই আবহে মেতে ওঠেন।

অবনীন্দ্রনাথও এই বিষয়ের সমর্থনকারী। অবিভক্ত বাংলার রাজশাহী ডিভিশনের নাটোরে রাজা জগদিন্দ্রনাথের আতিথেয়তায় ও সাহায্যে স্বাধীনতা বিষয়ক প্রাদেশিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই প্রসঙ্গেই পরিণত বয়সে লিখতে গিয়ে নাটোরের সম্মেলনের কথা লেখকের মনে পড়েছে। স্বাদেশিকতার মন্ত্রে উদবুদ্ধ রবীন্দ্রনাথ, অবনীন্দ্রনাথ এবং তরুণ বয়সি বেশ কিছু সদস্যের প্রচেষ্টায় এই সম্মেলনেই মাধ্যম হিসেবে বাংলা ভাষা প্রথম ব্যবহৃত হয়। তখন পোশাকি ভাষা হিসেবে ইংরেজি ভাষারই চল ছিল। তখনকার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলা ভাষার জনসমক্ষে প্রচলন একটি বিশাল পদক্ষেপ বলা যেতে পারে। স্বদেশি যুগের বিষয়ে লেখার প্রসঙ্গেই এই নাটোর বিষয়ক গল্পটি লেখকের স্মৃতিচারণায় প্রাধান্য পেয়েছে।

 নাটোরের কথা অধ্যায়ের বিষয়সংক্ষেপ

স্বদেশি আন্দোলনের পটভূমিকায় পাঠ্যরচনাটি লেখা হয়েছে। এটি একটি স্মৃতিকথামূলক রচনা। সত্য ঘটনাকেই লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর গল্পের মতো করে প্রাঞ্জল ভাষায় পরিবেশন করেছেন। নাটোরে সে বছর প্রভিনসিয়াল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নাটোরের তৎকালীন মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ ঠাকুরবাড়ির বিশিষ্ট সকল মানুষদের এবং তরুণ প্রজন্মের ছেলেদেরও আমন্ত্রণ জানান। অবনীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথ এবং আরও বয়স্যবর্গ সকলে মহারাজার ব্যবস্থা করা স্পেশাল ট্রেনে রওনা হন। তারপর সারাঘাট স্টেশনে নেমে পদ্মানদীতে স্টিমারে চেপে নাটোরে পৌঁছোন। পথে অতিথিদের দেখাশোনা, খাওয়াদাওয়া সব কিছুর সুবন্দোবস্ত করা হয়। নাটোরে পৌঁছেও মহারাজার তরফ থেকে অতিথিরা সবিশেষ সমাদর লাভ করেন। মহারাজার নিযুক্ত পরিচারকরা অতিথিদের সকল কাজ করে দিতে থাকে। খাওয়াদাওয়ার বিষয়ে মহারাজা বিশেষ নজর দেন। নাটোরের বিখ্যাত সন্দেশ বাড়িতে টাটকা তৈরি করে খাওয়ানো হয়।

এখানে প্রাদেশিক সম্মেলন শুরু হলে রবীন্দ্রনাথের সহায়তায় তরুণরা সম্মেলনটি সম্পূর্ণ বাংলায় চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। বয়স্করা বা বড়োরা এই প্রস্তাব না মেনে ইংরেজিতেই সম্মেলন শুরুর চেষ্টা করেন, কিন্তু তরুণরা তীব্র প্রতিবাদ জানাতে থাকে এবং বড়োরা বাধ্য হয়ে এই প্রস্তাব মেনে নেন। মূলত এভাবেই জনসম্মেলনে সর্বসমক্ষে বাংলা ভাষা সম্মান পায়।

 নাটোরের কথা অধ্যায়ের নামকরণ

বর্তমানে পূর্ববঙ্গের কিন্তু তৎকালীন অবিভক্ত বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের রাজশাহী ডিভিশনের নাটোর নামক বর্ধিষ্ণু গ্রাম বা অঞ্চলের কথা এই গল্পে বর্ণিত হয়েছে। স্বদেশি আন্দোলনের জোয়ারে তখন বাংলা ভাসছে। সকলের মধ্যেই স্বাদেশিকতার মানসিকতা গড়ে উঠছে। এইরকম অবস্থায় নাটোরে প্রাদেশিক সম্মেলন হবে বলে স্থির হল। নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ ঠাকুরবাড়ির গুণীজনদের আমন্ত্রণ জানালেন। অবনীন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথ এবং অন্যান্যরা সকলে তৈরি হলেন যাওয়ার জন্য। মহারাজা অতিথিদের জন্য বিশেষ ট্রেন ও স্টিমারের ব্যবস্থা করলেন। সকলে নাটোরে পৌঁছোলেন। গ্রামটি সকলের ভালো লাগল। নাটোরের রানি ভবানী নিজে হাতে পিঠে ও পায়েস করে অতিথিদের খাওয়ালেন। এ ছাড়া হালুইকর নাটোরের বিখ্যাত মিষ্টি সন্দেশ ও অন্যান্য মিষ্টি তৈরি করে টাটকা খেতে দিল। সকলে খাওয়াদাওয়ার বিষয়ে সম্যক প্রীত হলেন। এরপর নাটোরে প্রাদেশিক সম্মেলন গোলটেবিল বৈঠকের মতো করে অনুষ্ঠিত হল। সেখানে রবীন্দ্রনাথ, অবনীন্দ্রনাথ ও অন্যান্য অনুজ তরুণদের চেষ্টায় সম্মেলনটি সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায় সুচারুরূপে সম্পন্ন হল। এই রচনার সম্পূর্ণটাই নাটোর অঞ্চলটিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। তা ছাড়া মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ ঠাকুর বাড়ির সকলের কাছে ‘নাটোর’ নামে পরিচিত ছিলেন। সম্পূর্ণ গল্পে মহারাজা ‘নাটোরে’র ভূমিকাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। নাটোর গ্রাম ও মানুষ নাটোর এই দুয়ের সমন্বিত ভূমিকায় ‘নাটোরের কথা’ রচনাটি পরিবেশিত হয়েছে। তাই রচনাটির ‘নাটোরের কথা’ ‘নামটি সার্থক হয়েছে বলা যেতে পারে।

 নাটোরের কথা অধ্যায়ের শব্দার্থ ও টীকা

স্বদেশি যুগ – ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের সমকালীন বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময়কাল। ভূমিকম্প – ভূমির বা পৃথিবীর কম্পন। প্রভিনসিয়াল কনফারেন্স – প্রাদেশিক সম্মেলন। নাটোর – বর্তমান বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অংশে অবস্থিত রাজশাহী ডিভিশনের মূল বর্ধিষ্ণু গ্রাম। জগদিন্দ্রনাথ – নাটোরের মহারাজা, রবীন্দ্রনাথের বন্ধু। নাটোররাজ গোবিন্দনাথের পত্নী ব্রজসুন্দরী শৈশবে তাঁকে দত্তক পুত্ররূপে গ্রহণ করেন। রিসেপসন কমিটির প্রেসিডেন্ট – অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি। সম্ভাষণ – সম্বোধন। রবিকাকা – কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ন্যাশনাল কংগ্রেস – জাতীয় কংগ্রেস। চাঁই – প্রধান; নেতা। জানকীনাথ ঘোষাল – দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের চতুর্থ কন্যা স্বর্ণকুমারী দেবীর স্বামী। ডবলিউ. সি. বোনার্জি – উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। ইনি ছিলেন জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনের সভাপতি। লালমোহন ঘোষ – ব্যারিস্টার ও সুবক্তা। সুরেন্দ্র বাঁড়ুজ্জে – সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। ইনি ‘ভারতসভা’র প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ‘রাষ্ট্রগুরু’ নামে সমধিক প্রসিদ্ধ ছিলেন। হাঙ্গাম – ঝামেলা; গণ্ডগোল। স্পেশাল ট্রেন – বিশেষ ট্রেন। চোগাচাপকান – লম্বা ঢিলা জামাবিশেষ। মহাফুর্তি – ভীষণ আনন্দ। মোটঘাট – পোঁটলাপুঁটলি। নির্ভাবনা – নিশ্চিন্ত; মনে চিন্তাভাবনা নেই। ডেক – জাহাজ বা স্টিমারের পাটাতন বা মেঝে। হোমরাচোমরা – সম্ভ্রান্ত ও খ্যাতি প্রতিপত্তিযুক্ত। ছোকরা – নবযুবক। বয় – এক্ষেত্রে খাবার পরিবেশক। কাটলেট – মাছ, মাংস ইত্যাদি সহযোগে তৈরি এক ধরনের বড়াবিশেষ। পুডিং – ডিম ও দুধের সমন্বয়ে তৈরি এক ধরনের মিষ্টি সুস্বাদু খাদ্য। জাইগ্যানটিক – দৈত্যাকৃতি। কার্পেট – গালিচা। ইন্দ্রপুরী – দেবরাজ ইন্দ্রের বাসস্থান; অমরাবতী। রাজসমাদর – রাজার আদর। ব্যগ্রতা – ব্যাকুলতা; আগ্রহ। ক্যাম্প – তাঁবু খাঁটিয়ে নির্মিত অস্থায়ী ঘর। গড়গড়া – দীর্ঘ নলবিশিষ্ট এক ধরনের হুঁকো। হালুইকর – যে মিষ্টি তৈরি করে; ময়রা। স্কেচ – নকশা। অন্দরমহল – অন্তঃপুর; ভিতরবাড়ি। ফরমাশ – আজ্ঞা; আদেশ; বায়না। রাউন্ড টেবিল কনফারেন্স – গোলটেবিল সম্মেলন। জরির তাজ – জরির কাজ করা এক ধরনের টুপি। স্পিচ – বক্তৃতা। উল্লাস – পরমানন্দ; হর্ষ। পাবলিকলি – জনসমক্ষে।

এই স্মৃতিকথাটি স্বদেশি আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত, যেখানে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাটোরে অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক সম্মেলনের বিবরণ তুলে ধরেছেন। লেখকের প্রাঞ্জল ভাষা ও গল্পের মতো বর্ণনা পাঠকদের মনে দেশপ্রেম ও ভাষাভালবাসার অনুভূতি জাগ্রত করে।

এই সম্মেলনে তরুণ প্রজন্ম, রবীন্দ্রনাথের সহায়তায়, সম্মেলনটি সম্পূর্ণ বাংলায় পরিচালনা করার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এই ঘটনা ছিল বাংলা ভাষার জন্য একটি বিরাট জয়, কারণ এটি প্রথমবার জনসম্মেলনে সর্বসমক্ষে সম্মানিত হয়েছিল।

লেখকের সাবলীল বর্ণনা ও এই ঐতিহাসিক ঘটনার তুলে ধরা পাঠকদের মনে দেশপ্রেম ও ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত করে, যা আজও প্রাসঙ্গিক।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না –  ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer