অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – নাটোরের কথা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

Sourav Das

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের নাটোরের কথা অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে নাটোরের কথা অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় নাটোরের কথা অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই নাটোরের কথা অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

Table of Contents

এই রচনাটি স্বদেশি আন্দোলনের সময়কালে লেখা একটি স্মৃতিকথামূলক প্রবন্ধ। লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর সত্য ঘটনাকেই গল্পের আঙ্গিকে প্রাঞ্জল ভাষায় তুলে ধরেছেন।

নাটোরে সে বছর প্রাদেশিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। নাটোরের তৎকালীন মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ ঠাকুরবাড়ির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং তরুণ প্রজন্মের ছেলেদের আমন্ত্রণ জানান। অবনীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথ এবং অন্যান্য বয়স্ক ব্যক্তিরা মহারাজার ব্যবস্থা করা বিশেষ ট্রেনে রওনা হন। এরপর সারাঘাট স্টেশনে নেমে পদ্মানদীতে স্টিমারে করে নাটোরে পৌঁছান। পথে অতিথিদের দেখাশোনা, খাওয়া-দাওয়া সব কিছুরই সুন্দর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। নাটোরে পৌঁছেও মহারাজার পক্ষ থেকে অতিথিদের বিশেষ সমাদর জানানো হয়। মহারাজার নিযুক্ত কর্মচারীরা অতিথিদের সকল কাজ করে দিতে থাকেন। খাওয়াদাওয়ার বিষয়ে মহারাজা বিশেষ নজর দেন এবং নাটোরের বিখ্যাত সন্দেশ তৈরি করে খাওয়ানো হয়।

এখানেই প্রাদেশিক সম্মেলন শুরু হয়। রবীন্দ্রনাথের সহায়তায় তরুণরা সম্মেলনটি সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায় পরিচালনা করার প্রস্তাব দেন। বয়স্করা এই প্রস্তাব না মেনে ইংরেজিতেই সম্মেলন শুরু করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তরুণরা তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং বয়স্করা বাধ্য হয়ে তাদের প্রস্তাব মেনে নেন। মূলত এভাবেই জনসম্মেলনে সর্বসমক্ষে বাংলা ভাষা তার সম্মান ফিরে পায়।

নাটোরের কথা – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

নাটোর নেমন্তন্ন করলেন – সেই নেমন্তন্নের তালিকায় কাদের নাম ছিল বলে লেখক স্মরণ করতে পেরেছেন?

নাটোর অর্থাৎ মহারাজ জগদিন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিবারের সকল পুরুষ সদস্যকে নিমন্ত্রণ করলেন। এ ছাড়া আরও অনেক বিখ্যাত লোককে আমন্ত্রণ জানালেন। তবে লেখক এই নিমন্ত্রিতদের তালিকায় যাঁদের নাম স্মরণ করতে পেরেছেন, তাঁরা হলেন রবীন্দ্রনাথ, দীপুদা, জানকীনাথ ঘোষাল, ডব্লিউ.সি.বোনার্জি, লালমোহন ঘোষ, লেখকের মেজো জ্যাঠামশাই, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অবনীন্দ্রনাথ নিজে।

রওনা হলুম সবাই মিলে হৈ-হৈ করতে করতে। – কোথায় রওনা হলেন? কীভাবেই বা রওনা হলেন?

ভূমিকম্পের বছরে নাটোরের প্রভিনসিয়াল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমান বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাংশে রাজশাহী ডিভিশনের তখনকার বর্ধিষ্ণু গ্রাম নাটোরের রাজা জগদিন্দ্রনাথের আমন্ত্রণে অবনীন্দ্রনাথ ও তার সঙ্গীসাথিরা নাটোরের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

তখন যাওয়া-আসায় হাঙ্গামা থাকলেও তাদের জন্য স্পেশাল ট্রেন ছিল। সম্মেলনের উপযুক্ত ধুতি-পাঞ্জাবি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বাক্সপেটরায় নিয়ে সবাই চোগাচাপকান পরে হইহই করতে করতে নাটোরের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

যেন ইন্দ্রপুরী। – কীসের সঙ্গে ‘ইন্দ্রপুরী’র তুলনা করা হয়েছে? কেনই বা লেখক এমন তুলনা করেছেন?

নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথের বাড়ি অর্থাৎ নাটোরের রাজবাড়িটিকে ইন্দ্রপুরীর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

পুরাণ অনুসারে ইন্দ্র স্বর্গের বিশিষ্ট দেবতাদের অন্যতম। তিনি সৌন্দর্যের দেবতা। তাই তাঁর পুরী অর্থাৎ রাজপ্রাসাদটি অত্যন্ত সুন্দর, সুরম্য, মনোহারী। সেটি বিশালতায় যেমন অনন্য তেমনি সৌন্দর্যে, সৌকর্যে অতুলনীয়। নাটোরের রাজবাড়িটিও বিশাল এবং ঝাড়লণ্ঠন, রাজবাড়িটি যেন হয়ে উঠেছে সৌন্দর্যের আধার এক প্রাসাদ। তাই ইন্দ্রপুরীর সঙ্গে রাজবাড়ির তুলনা করা হয়েছে।

নাটোরেরও খুব আগ্রহ – কোন্ প্রসঙ্গে তাঁর আগ্রহের কথা এখানে বলা হয়েছে?

মহারাজা জগদিন্দ্রনাথের নাটোরের রাজবাড়ি, গ্রাম দেখার সময় গ্রামের বাড়িঘর, মন্দির সব দেখে অবনীন্দ্রনাথের ভালো লাগে এবং তিনি সেগুলির স্কেচ আঁকতে শুরু করেন। মহারাজার এই স্কেচগুলি খুব পছন্দ হয় এবং তিনি লেখককে আরও স্কেচ করে দেওয়ার জন্য রাজবাড়ির অন্দরমহলে রানি ভবানির ঘরে নিয়ে যান। এই প্রসঙ্গে মহারাজার সম্পর্কে লেখক স্কেচ বিষয়ে তাঁর আগ্রহের কথা লিখেছেন।

আগে থেকেই ঠিক ছিল – আগে থেকে কী ঠিক থাকার কথা বলা হয়েছে? সেই উপলক্ষ্যে কোন্ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কথা পাঠ্যাংশে রয়েছে, তা আলোচনা করো।

রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর সমর্থনকারীদের আগে থেকে ঠিক করে রাখা বিষয় অনুযায়ী নাটোরের প্রাদেশিক সম্মেলনে রবীন্দ্রনাথ প্রস্তাব রাখেন যে, সমস্ত সম্মেলনটি বাংলা ভাষায় হবে।

এই প্রস্তাব সকলে মানলেন না। এই নিয়ে ছোটোদের সঙ্গে বড়োদের মতবিরোধ বাধল। সমস্ত লোক দু-ভাগে ভাগ হয়ে গেল। বড়োরা চাইলেন ইংরেজিতে সম্মেলন হোক এবং ছোটোরা চাইল বাংলা ভাষা ব্যবহৃত হোক। বড়োরা ইংরেজিতে বক্তৃতা দিতে উঠলেই ছোটোরা ‘বাংলা বাংলা’ বলে চিৎকার শুরু করে। অবশেষে সকলেই এই প্রস্তাব মেনে নিল এবং সম্মেলন বাংলা ভাষাতেই সম্পন্ন হল।

আমাদের তো জয়জয়কার। – কী কারণে লেখক ও তাঁর সঙ্গীদের ‘জয়জয়কার’ হল?

নাটোরে অনুষ্ঠিত প্রভিনসিয়াল কনফারেন্সে রবি ঠাকুর প্রস্তাব করেন যে, সম্মেলন বাংলা ভাষায় হোক। কিন্তু দলের নেতারা তা মানলেন না। তাঁরা ইংরেজি ভাষাই চাইলেন। অনেক তর্কবিতর্কের পর সমস্ত দলটি দু-ভাগে বিভক্ত হল। বড়োরা ইংরেজিতে বলতে উঠলেই ‘বাংলা বাংলা’ বলে চিৎকার করে ছোটোরা বক্তৃতা পণ্ড করে দেয়। অবশেষে বাধ্য হয়ে নেতৃত্ব স্থানীয়েরা বাংলা ভাষার দিকেই মত দিলেন এবং সম্মেলন বাংলাতেই হল। এই সাফল্যটিকেই লেখক তাঁদের ‘জয়জয়কার’ বলে বর্ণনা করেছেন।

সেই প্রথম আমরা পাবলিকলি বাংলা ভাষার জন্য লড়লুম। – লেখকের অনুসরণে সেই ‘লড়াই’-এর বিশদ বিবরণ দাও।

আগে থেকে ঠিক করে রাখা পরিকল্পনা অনুযায়ী নাটোরের প্রভিনসিয়াল কনফারেন্সে রবীন্দ্রনাথ প্রস্তাব রাখলেন যে, সম্মেলন বাংলা ভাষায় হোক। বড়োরা কেউ এই প্রস্তাব মানলেন না। লেখক রবিকাকাকে উৎসাহ জোগালেন যে তাঁরা এই লড়াইয়ে হার মানবেন না। ছোটোদের সঙ্গে বড়োদের অনেক তর্কাতর্কির পর বাংলার পক্ষে ও বিপক্ষে দুটি দল তৈরি হয়ে গেল। বাংলায় ‘সোনার বাংলা’ গানটি গাওয়া হল। তারপর ইংরেজিতে বক্তৃতা দেওয়ার চেষ্টা হতেই ছোটোরা সকলে ‘বাংলা বাংলা’ বলে চিৎকার করে বক্তৃতা ভেস্তে দিতে লাগল। অবশেষে সকলে হার মেনে বাংলা ভাষায় প্রস্তাবটিকে মেনে নিলেন ও সম্মেলনটি শেষপর্যন্ত বাংলাতেই সুসম্পন্ন হল। এভাবেই লেখক ও অন্যান্যরা বাংলা ভাষার জন্য প্রথম ‘পাবলিকলি’ লড়াই করেছিলেন।

নাটোরের রাজবাড়িতে খাবারের ব্যবস্থা কেমন ছিল?

রাজবাড়িতে রাজা এলাহি খাবারের ব্যবস্থা করেন। মাছ, মাংস, ডিম সব কিছুর ব্যবস্থা ছিল। রানিমা নিজে হাতে পিঠেপায়েস করেছেন। হালুইকর এবেলা-ওবেলা মিষ্টি তৈরি করে দেয়, এমনকি খাওয়ার সময় ঘরের সামনে বসেও টাটকা সন্দেশ তৈরি করে দেয়। এমনকি সোডা, ডাবের জল ইত্যাদির ব্যবস্থাও নিখুঁত এবং যথাযথ ছিল। আতিথেয়তা এতটাই যে, প্রতিটি ব্যক্তির পছন্দ অনুযায়ী তার সামনে ঠিক সময়ে জিনিসটি পৌঁছে যেত।

স্বদেশি যুগের কার্যকলাপ কেমন ছিল?

ইংরেজরা ভারতবাসীদের শোষণে ও অত্যাচারে পর্যুদস্ত করে ফেলেছিল। তাতে বিপন্ন, বিরক্ত দেশবাসী গোপনে মিলিত হয়ে ইংরেজ বিতাড়নের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা করতে থাকে। তারা দলবদ্ধ হয়ে ইংরেজদের আঘাত হানার পরিকল্পনা করে। একেই বলা হয় স্বদেশি কার্যকলাপ। এই স্বাদেশিকতার মন্ত্রে উদবুদ্ধ হয়ে তারা ইংরেজদের সুযোগমতো আঘাত করে, আক্রমণ করে। এতে বহু দেশবাসীর প্রাণ যায়। তথাপি বলা যায় ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের স্বাধীনতা এইসকল মানুষের প্রাণদানের ফলেই এসেছিল।

নাটোরের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

নাটোর জেলা বর্তমান বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। নাটোরের দিঘাপাতিয়া রাজবাড়ি বর্তমানে ‘উত্তরায়ণ ভবন’ নামে পরিচিত। নাটোরের বিখ্যাত বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা হলেন মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ, রানি ভবানী, হেমেন্দ্র কুমার রায়, রাজা প্রসন্ননাথ রায় প্রমুখ। নাটোরের কাঁচাগোল্লা বিখ্যাত। নাটোরের কতকগুলি বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান হল – উত্তরা গণভবন, চলন বিল, বুধপাড়া কালিমন্দির, লালপুরের পদ্মার চর, শহিদ সাগর, ধরাইল জমিদারবাড়ি ইত্যাদি।

এই রচনাটি স্বদেশি আন্দোলনের পটভূমিতে বাংলা ভাষার সম্মান প্রতিষ্ঠার জন্য তরুণ প্রজন্মের লড়াইয়ের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা তুলে ধরে। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মৃতিকথামূলক শৈলীতে সাবলীল ভাষায় এই ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন, যা পাঠকদের মনে দেশপ্রেম ও ভাষাভালবাসার অনুভূতি জাগ্রত করে।

নাটোরে অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক সম্মেলনে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহায়তায় তরুণরা সম্মেলনটি সম্পূর্ণ বাংলায় পরিচালনা করার প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাব বয়স্কদের বিরোধিতার সম্মুখীন হলেও, তীব্র প্রতিবাদের মুখে তাদের বাধ্য হয়ে তরুণদের মতামত মেনে নিতে হয়। এই ঘটনা ছিল বাংলা ভাষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয়, কারণ এটি প্রথমবার জনসম্মেলনে সর্বসমক্ষে সম্মানিত হয়েছিল।

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই রচনা বাংলা ভাষার প্রতি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়। আমাদের সকলেরই উচিত মাতৃভাষা বাংলাকে সম্মান ও লালন করা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এর গুরুত্ব তুলে ধরা।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না –  ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer