অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।
জীবনানন্দ দাশ বাংলা সাহিত্যের একজন বিখ্যাত কবি। তাঁর কবিতায় প্রকৃতির প্রতি গভীর ভালোবাসা ও মমতাবোধ লক্ষ্য করা যায়। “দ্বিপ্রহর” কবিতাটি তার অন্যতম জনপ্রিয় রচনা। এই কবিতায় কবি গ্রামবাংলার দ্বিপ্রহরের সৌন্দর্য ও বিষণ্ণতার মনোরম চিত্র তুলে ধরেছেন।
কবি জন্মেছিলেন গ্রামবাংলায়। তাই গ্রামের প্রকৃতির প্রতি তার ছিল অপরিসীম ভালোবাসা। কবিতার শুরুতেই তিনি গ্রামবাংলার প্রকৃতির সৌন্দর্য্যের বর্ণনা দিয়েছেন। দ্বিপ্রহরের রোদের গন্ধ, হলুদ পাতা ঝরা, জলসিড়ি নদীর তীর – এসবই কবির মনে জাগিয়ে তোলে অতীতের স্মৃতি। কবি স্মৃতির ডিঙিতে ভর করে ফেলে আসা দিনগুলিতে চলে যেতে চান। দ্বিপ্রহরের রোদের গন্ধে তার মনে জেগে ওঠে বহু স্বপ্ন, বহু গল্পকাহিনি। সেই স্বপ্ন ও গল্প কেবল কবিই জানে, অন্য কেউ জানে না।
কবিতার দ্বিতীয় অংশে কবি গ্রামবাংলার বর্তমান চিত্র তুলে ধরেছেন। ঝাঁঝরা-ফোঁপরা ডিঙি হিজলের সঙ্গে বাঁধা পড়ে আছে, মালিকের দেখা নেই। বুনো চালতা ঘাসের উপরে নুয়ে জলসিড়ি নদীর ধারে পড়ে আছে। এসব দৃশ্য দেখে কবির মনে এক অদ্ভুত বিষণ্ণতা নেমে আসে। তবুও কবি গ্রামবাংলাকে ভালোবাসেন। দ্বিপ্রহরের ভিজে রোদে হারিয়ে ফেলা স্মৃতির বেদনাপূর্ণ গন্ধ তাকে আকৃষ্ট করে।
“দ্বিপ্রহর” কবিতাটি জীবনানন্দ দাশের কবিতাগুলির মধ্যে একটি অনন্য রচনা। এই কবিতায় কবি গ্রামবাংলার প্রতি তার গভীর ভালোবাসা ও মমতাবোধ ফুটিয়ে তুলেছেন। একই সাথে, গ্রামবাংলার বর্তমান বেদনাদায়ক চিত্রও তিনি তুলে ধরেছেন। এই দ্বৈত অনুভূতিই এই কবিতাকে করে তুলেছে অসাধারণ।
![অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর 1 পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর](http://solutionwbbse.com/wp-content/uploads/2024/04/পাড়াগাঁর-দু-পহর-ভালোবাসি-–-অষ্টম-শ্রেণি-–-বাংলা-–-অতিসংক্ষিপ্ত-প্রশ্ন-ও-উত্তর-1.webp)
জীবনানন্দ দাশের লেখা দুটি কবিতার বইয়ের নাম লেখো।
জীবনানন্দ দাশের লেখা দুটি কবিতায় বইয়ের নাম হল – ‘বনলতা সেন’ ও ‘রূপসী বাংলা’।
তাঁর লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কী?
তাঁর লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম হল – ‘ঝরা পালক’।
দু-পহর শব্দের অর্থ কী?
দু-পহর শব্দের অর্থ হল ‘দ্বিপ্রহর’।
কেবল প্রান্তর জানে তাহা – ‘প্রান্তর’ কী জানে?
কবির হৃদয়ে যে কোন্ গল্প-কাহিনি, স্বপ্ন ঘর বেঁধেছে তা প্রান্তর জানে।
তাহাদের কাছে/যেন এ-জনমে নয়-যেন ঢের যুগ ধরে কথা শিখিয়াছে/এ হৃদয় – কাদের কথা এখানে বলা হয়েছে?
কবির পাড়াগাঁর প্রান্তর আর প্রান্তরের শঙ্খচিলদের কথা এখানে বলা হয়েছে।
জলসিড়িটির পাশে ঘাসে – কী দেখা যায়?
জলসিড়িটির পাশে ঘাসে দেখা যায় বহুদিনের বুনো চালতার শাখা নুয়ে আছে ছন্দহীনভাবে।
জলে তার মুখখানা দেখা যায় – জলে কার মুখ দেখা যায়?
জলে বুনো চালতার মুখ দেখা যায়।
ডিঙিও ভাসিছে কার জলে – ডিঙিটি কেমন?
ডিঙিটি বহুদিনের জীর্ণ, কোথাও কোথাও ‘ঝাঁঝরা-ফোঁপরা’ হয়ে পড়েছে।
ডিঙিটি কোথায় বাঁধা রয়েছে?
ডিঙিটি জলসিড়ি নদীর ধারে হিজল গাছে বাঁধা রয়েছে।
পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি কবিতাটির রচয়িতা হলেন (রবীন্দ্রনাথ/যতীন্দ্রনাথ/জীবনানন্দ)।
জীবনানন্দ।
রৌদ্রে (পাতার/ফুলের/স্বপনের) গন্ধ লেগে আছে।
স্বপনের।
আলোচ্য কবিতায় (জলসিড়ি/ধানসিড়ি/গঙ্গা) নদীর কথা আছে।
জলসিড়ি।
কবি ভালোবাসেন (পাড়াগাঁর/শহরের/গঞ্জের) দু-পহর।
পাড়াগাঁর।
স্বপ্নে (আনন্দ/বেদনা/আহ্লাদ) আছে।
বেদনা।
রৌদ্রে যেন _ লেগে আছে/স্বপনের –
গন্ধ।
কেবল প্রান্তর/জানে তাহা, আর ঐ প্রান্তরের _।
শঙ্খচিল।
নকশাপেড়ে শাড়িখানা মেয়েটির _ ভিতর.
রৌদ্রের।
ডিঙিটিরে বেঁধে রেখে গিয়েছে _।
হিজলে।
কেঁদে-কেঁদে ভাসিতেছে _ তলে।
আকাশের।
জীবনানন্দের একটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
জীবনানন্দের একটি কাব্যগ্রন্থের নাম ‘মহাপৃথিবী’।
কবি কী ভালোবাসেন?
কবি পাড়াগাঁর দ্বিপ্রহরকে ভালোবাসেন।
আলোচ্য কবিতায় বর্ণিত একটি পাখির নাম লেখো।
আলোচ্য কবিতায় বর্ণিত একটি পাখির নাম শালিক।
ডিঙিটি কীসের সঙ্গে বাঁধা আছে?
ডিঙিটি হিজল গাছের সঙ্গে বাঁধা আছে।
বেদনার গন্ধ কোথায় লেগে আছে?
রৌদ্রে ভিজে বেদনার গন্ধ লেগে আছে।
পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি’ কবিতাটির উৎস কী? জীবনানন্দের একটি আখ্যানধর্মী রচনার নাম লেখো।
পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি কবিতাটির উৎস হল ‘রূপসী বাংলা’ কাব্যগ্রন্থ। জীবনানন্দের একটি আখ্যানধর্মী রচনার নাম হল ‘মাল্যবান’।
শাখাগুলো নুয়ে আছে – কীসের শাখা, কোথায় নুয়ে আছে?
প্রশ্নে প্রদত্ত অংশে চালতার শাখার কথা বলা হয়েছে। চালতার শাখা জলসিড়ি নদীর পাশে ঘাসের উপরে নুয়ে আছে।
ঢের যুগ ধরে কথা শিখিয়াছে – কে, কোথা থেকে কথা শিখেছে?
প্রশ্নে প্রদত্ত অংশে বলা হয়েছে কবির হৃদয় কথা শিখেছে। পাড়াগাঁর প্রান্তর, প্রান্তরের শঙ্খচিল প্রভৃতিদের কাছ থেকে কবির হৃদয় ঢের যুগ ধরে কথা শিখেছে।
কেউ তাহা জানেনাকো – উদ্ধৃতিটি কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে? কী না জানার কথা কবি বলেছেন?
প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি জীবনানন্দ দাশের ‘পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
কোনো গল্প, কী কাহিনি, কী স্বপ্ন কবির হৃদয়ে ঘর বেঁধেছে, তা কেউ জানে না বলে কবি মনে করেছেন।
কেঁদে-কেঁদে ভাসিতেছে – কে কাঁদছে? কোথায় ভাসিতেছে?
প্রশ্নে প্রদত্ত অংশে ভিজে বেদনার গন্ধ কাঁদছে।
তা আকাশের তলে ভাসছে।
কবি জীবনানন্দ দাশের “দ্বিপ্রহর” কবিতাটিতে গ্রামবাংলার প্রতি কবির গভীর প্রেম ও স্মৃতিচারণার মনোমুগ্ধকর চিত্র ফুটে উঠেছে। দ্বিপ্রহরের রোদের গন্ধে কবির মনে জাগে অতীতের সুখ-স্মৃতি, হারানো স্বপ্ন ও গল্পকাহিনী। ঝাঁঝরা-ফোঁপরা ডিঙি, বন্য চালতা ঘাস, জলসিড়ি নদীর তীর – সবকিছুতেই কবির চোখে ধরা পড়ে এক অযত্নের ছাপ। তবুও কবি ভালোবাসেন এই দ্বিপ্রহরকে, কারণ এখানেই তিনি পেয়েছিলেন প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য ও শান্তি।
কবিতাটির শেষে কবি লিখেছেন, “হারানো সুখের স্মৃতি নিয়ে / এই দ্বিপ্রহর ভালোবাসি।” এই লাইনটিই যেন সমগ্র কবিতার সারসংক্ষেপ। জীবনের সুখ-দুঃখ, লাভ-ক্ষতি সবকিছু মিলিয়েই গঠিত হয় মানুষের জীবন। কবি জানেন, হারানো সুখ ফিরে আসবে না, তবুও সেই স্মৃতি ধারণ করেই তিনি এগিয়ে যান জীবনের পথে। এই বেদনাময় স্মৃতিই তাকে করে তোলে আরও সংবেদনশীল, আরও মানবিক।
“দ্বিপ্রহর” কবিতাটি কেবল গ্রামবাংলার প্রতি কবির মমতারই প্রকাশ নয়, বরং জীবনের বাস্তবতা ও নश्वরতার এক মর্মস্পর্শী চিত্র।
মন্তব্য করুন