অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের শিকল-পরার গান অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে শিকল-পরার গান অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় শিকল-পরার গান অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই শিকল-পরার গান অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম ‘শিকল-পরার গান’-এ ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন। কবিতাটিতে তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে ব্রিটিশরা ভারতীয়দের শোষণ করছে এবং তাদের স্বাধীনতা লাঞ্ছিত করছে।
কবি বিশ্বাস করেন যে এই শিকল পরানো কেবলই ছল, বিপ্লবীদের দমন করার অপচেষ্টা। বরং এই শিকলই তাদের মনের সাহস ও শক্তিকে আরও বৃদ্ধি করবে। কারাগারে আটকে থাকা বিপ্লবীরা মনের ভয় জয় করে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
কবি আশাবাদী যে একদিন ভারতীয়রা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পাবে। তারা তখন শুধু নিজেদের মুক্তিই করবে না, বরং বিশ্বকেও দেখাবে যে সত্য ও ন্যায়ের বিজয় অবশ্যম্ভাবী। ‘শিকল-পরার গান’ কেবল একটি কবিতা নয়, এটি একটি বিদ্রোহের স্বর। এটি ভারতীয়দের মুক্তি সংগ্রামে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল এবং আজও এটি প্রাসঙ্গিক।
শিকল-পরার গান অধ্যায়ের কবি পরিচিতি
বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার অন্তর্গত চুরুলিয়া গ্রামে ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২৪ মে নজরুল ইসলামের জন্ম হয়। তাঁর পিতা হলেন কাজী ফকির আহমেদ এবং মাতা জাহেদা খাতুন। নজরুলের শৈশব অতিবাহিত হয়েছে অত্যধিক দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে। মাত্র ৯ বছর বয়সেই তাঁর পিতৃবিয়োগ হওয়ায় সংসারে অর্থকষ্ট নেমে আসে। ফলে শৈশবেই অর্থোপার্জনের চেষ্টায় লিপ্ত হতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। তাঁর বাল্যশিক্ষা শুরু হয়েছিল মক্তবে। রানিগঞ্জের শিয়ারশোল রাজ হাই স্কুলে দশম শ্রেণিতে পাঠরত অবস্থাতেই তিনি বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগদান করেন এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে প্রথমে লাহোর ও পরে করাচি সেনাশিবিরে যোগ দেন। ১৯১৭ থেকে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত নজরুল সৈনিকের দায়িত্ব পালন করেন। এই সময় থেকেই শুরু হয় তাঁর সাহিত্য কীর্তি। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা’য় প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কবিতা ‘মুক্তি’। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতায় চলে আসেন এবং অল্প দিনের মধ্যেই তিনি কবি এবং গায়ক হিসেবে সমাদর লাভ করতে থাকেন। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় নজরুলের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অগ্নিবীণা’। তবে ১৯২১ খ্রিস্টাব্দেই ‘বিজলী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি। এই কবিতাটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বাংলা সাহিত্যজগতে তাঁর আসনটি চিরস্থায়িত্ব লাভ করে। বিদেশি ইংরেজ সরকারের শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে হাতিয়াররূপে তিনি ব্যবহার করতে চেয়েছেন তাঁর সাহিত্যকে। যেখানে অন্যায়, অবিচার, শোষণ, ধর্মের নামে ভণ্ডামি, জাতের নামে বজ্জাতি সেখানেই প্রতিবাদে মুখর হয়েছে নজরুলের সাহিত্য। তাঁর সাহিত্যে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির বাণী ধ্বনিত হয়েছে। বিদ্রোহের সুর ধ্বনিত হওয়ায় ‘অগ্নিবীণা’, ‘বিষের বাঁশি’ প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ ব্রিটিশ সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল, কিন্তু তাতে একেবারেই ভীত হননি নজরুল ইসলাম। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল – ‘অগ্নিবীণা’, ‘বিষের বাঁশি’, ‘সাম্যবাদী’, ‘সর্বহারা’, ‘ফণিমনসা’, ‘প্রলয়শিখা’ ইত্যাদি। বেশ কিছু গল্প ও কয়েকটি উপন্যাসও তিনি রচনা করেছেন। তবে নজরুল সবথেকে বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন তাঁর সংগীতের মাধ্যমে। গজল, শ্যামাসংগীত, আধুনিক নানা ধরনের গান তিনি যেমন রচনা করেছেন, তেমনই গেয়েছেনও। নজরুলের গান বিপ্লবীদের শক্তি জোগাত, অনুপ্রাণিত করত। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৯ আগস্ট কবি নজরুল পরলোকগমন করেন। তাঁর স্মরণীয় সাহিত্যকীর্তির জন্যই বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে তিনি আজও অমর হয়ে আছেন।
শিকল-পরার গান অধ্যায়ের উৎস
শিকল-পরার গান কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিষের বাঁশি’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
শিকল-পরার গান অধ্যায়ের পাঠপ্রসঙ্গ
ব্রিটিশ সরকার ভারতের বুকে প্রায় দুই শত বছর শাসন-শোষণ চালিয়েছে। সেই ত্রাসের শাসনে ভারতবাসী ছিল শৃঙ্খলিত। এমন পরাধীন বন্দিদশা থেকে মুক্তির জন্য ভারতের সন্তানগণ বিপ্লবের কাজে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। তাঁরা নির্ভীকচিত্তে মুক্তি-সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, ফাঁসির মঞ্চে জীবনকে করেছিলেন বলিদান। বিদেশি সরকার ভয় দেখিয়ে, পীড়ন চালিয়ে বিপ্লবকে স্তব্ধ করতে চেয়েছেন, তাই লৌহকারাগারে বন্দি করে অত্যাচার চালানো হত দেশসেবকদের উপরে। এরই প্রতিবাদে মুখর হয়েছিলেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি দেশবাসীকে নির্ভীক হৃদয়ে দেশমাতৃকার সেবায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মনে করেছেন ইংরেজের লৌহ শিকলে দীর্ঘদিন বেঁধে রাখা যাবে না ভারতীয়দের। সেই প্রসঙ্গই ‘শিকল-পরার গান’ কবিতায় বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম তুলে ধরতে চেয়েছেন।
শিকল-পরার গান অধ্যায়ের বিষয়সংক্ষেপ
অগ্নিযুগের কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর কাব্যের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের কথা প্রচার করেছেন। ইংরেজের শোষণের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার কথা ঘোষণা করেছেন কবি তাঁর নানা কবিতায় ও গানে। কবি নজরুল উদবুদ্ধ করতে চেয়েছেন যুবশক্তিকে, এমনই একটি কবিতা হল ‘শিকল-পরার গান’।
কবি দেখেছেন ব্রিটিশ রাজশক্তি ভারতীয়দের শাসনের নামে শোষণ করে চলেছে, পদে পদে লাঞ্ছিত হচ্ছে ভারতীয়দের স্বাধীনতা। যারাই বিপ্লবের কথা বলেন বা সরকারবিরোধী আন্দোলন করেন, তাদেরই শৃঙ্খলিত জীবন কাটাতে বাধ্য করা হচ্ছে। লৌহকারাগার পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে বিপ্লবীদের সমাবেশে, কিন্তু কবি বলতে চাইছেন – এই শিকল পরার মাধ্যমেই শিকল ভাঙার কাজ ত্বরান্বিত হবে। আজ যাদের হাতে-পায়ে শিকল পরানো হচ্ছে, আন্দোলনকে স্তব্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে-তাদেরই দেখানো পথ ধরে আরও অনেক অনেক বিপ্লবী ঝাঁপ দেবে বিপ্লবে, তখন তাদের আর শিকল পরিয়ে কারাগারে আটকে রাখা যাবে না; বরং তারাই দলবদ্ধভাবে ভেঙে ফেলবে ব্রিটিশ কারাগারের লৌহকপাট – তাই এই শিকল পরা ছলনামাত্র। বন্দিশালা তাদের ধরে রাখতে ব্যর্থ হবে, কেবল মনের সকল ভয়কে জয় করতেই যেন সাধ করে বিপ্লবীগণ বন্দি হতে এসেছেন। যখন এই ভয় দূর হয়ে যাবে তখন কোনো বাঁধনেই বিপ্লবীদের আর বেঁধে রাখা যাবে না। তখনই বিদেশি সরকার বুঝবে যে শৃঙ্খলিত পায়ে ভারতীয়দের আর বদ্ধ রাখা যাবে না, আত্মশক্তিতে জেগে উঠে ভারতীয়রা সকল শিকলকে ভেঙে ফেলবে।
বিদেশি সরকার ভেবেছে ভয় দেখিয়েই বিশ্বকে গ্রাস করবে, কিন্তু তা সম্ভব হবে না বলে কবি মনে করেন। কারণ বিধাতার সৃষ্ট এই জগতে ত্রাসের শাসন দীর্ঘস্থায়ী হয় না। যেদিন ভয় দেখানো ভূতকে সকলে পরাজিত করতে শিখবে, সেদিন কোনো বাঁধনেই কাউকে বেঁধে রাখা যাবে না, সেদিন বলহীনও আত্মশক্তিতে মাভৈঃ মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে বলবীর্য লাভ করে জয়ের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে। ভারতীয়রা তখন ভয়ের টুটি টিপে ধরবে এবং ভয়ের শাসনের অবসান ঘটবে। ফলে বিপ্লবের পথে চলতে গিয়ে ফাঁসির মঞ্চেও হাসি মুখে তারা জীবনের জয়গান রচনা করবে।
কবি তাই দেশের মুক্তিকামী মানুষদের বলতে চেয়েছেন যে-আর কান্না নয়, আর বন্ধন নয়-মুক্তিপথের অগ্রদূতের চরণে নিজেদের সমর্পণ করতে হবে। শত লাঞ্ছনার জবাব দিতে হবে লাঞ্ছিতদেরই। তাদের দেহের অস্থি দিয়েই তৈরি হবে বজ্র, আবার জ্বলবে বজ্রানল-সেই আগুনেই ধ্বংস হবে বন্ধন, শৃঙ্খল।
এভাবেই ‘শিকল-পরার গান’ কবিতায় দেশের সন্তানদের কবি জাতীয় চেতনায় উদবুদ্ধ করতে চেয়েছেন।
শিকল-পরার গান অধ্যায়ের নামকরণ
সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল নামকরণ। মূলত নামকরণের মাধ্যমেই রচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে আগাম ধারণা করা যায়। নামকরণ বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে, যেমন – চরিত্রধর্মী, বিষয়ধর্মী, ব্যঞ্জনাধর্মী প্রভৃতি। এবার আলোচনা করে দেখা যাক যে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘শিকল-পরার গান’ কবিতাটির নামকরণ সার্থক কি না।
কবি নজরুল যখন আলোচ্য কবিতাটি লিখেছেন, তখন ভারতবাসী পরাধীন, ভারতীয়দের বুকের উপর দিয়ে চলছে ব্রিটিশ সরকারের অত্যাচারের স্টিমরোলার। শোষিত ভারতীয়রা ব্রিটিশের কারাগারে বন্দিজীবন কাটাচ্ছে, সরকার ভয় দেখিয়ে দেশবাসীর জাতীয় চেতনাকে স্তব্ধ করার চেষ্টা করে চলেছে অনবরত। তবে কবি নজরুল আশাবাদী, তিনি ইংরেজ সরকারকে বুঝিয়ে দিতে চান যে-ভয় দেখিয়ে জনসাধারণের মন জয় করা যায় না। বর্তমানে যতই ভারতীয়দের লৌহশিকলে বেঁধে রাখা হোক না কেন এই শিকল অচিরেই ভেঙে পড়বে। ভারতীয়রা দলবদ্ধভাবে শিকল ভাঙার খেলায় মেতে উঠে লৌহকারাগারকে ভরিয়ে তুলবে আর তাদের আন্দোলনেই বন্দিশালার লৌহকপাট ভেঙে খান-খান হয়ে যাবে। ত্রাসের শাসন আর বেশিদিন চলবে না, ভয় দেখানো ভূতকে বিপ্লবীরা জয় করবেনই আর তখন ইংরেজ সরকারের তৈরি করা শিকল ভারতীয়দের বাঁধতে সক্ষম হবে না বলে কবি নজরুল মনে করেছেন। ফাঁসির মঞ্চে জীবনের জয়গান গাইবেন বিপ্লবীগণ, লাঞ্ছিত ভারতীয়রা আপন বুকের অস্থি দিয়েই বজ্রানল প্রজ্বলিত করবেন, সকল ভয়ভীতি-দৈন্য ভুলে শিকল ভাঙার গানে মেতে উঠবেন তারা।
শিকল-পরার গান – সমস্ত কবিতাটির মধ্যেই কবির পূর্বোক্ত আশাবাদ ধ্বনিত হয়েছে। সেদিক থেকে বিচার করে বলা যায় যে, কবিতাটির ব্যঞ্জনাধর্মী নামকরণ সার্থকভাবে প্রযুক্ত হয়েছে।
শিকল-পরার গান অধ্যায়ের শব্দার্থ ও টীকা
শিকল – ধাতুর তৈরি বেড়ি। ছল – ছলনা; কৌশল। বিকল – অচল। কারা – কারাগার; জেলখানা। বন্দী – রুদ্ধ থাকা। মোরা – আমরা। বন্ধনী – বাঁধা হয় যা দিয়ে। ব্রিটিশ সরকার বিপ্লবীদের লৌহশিকলে বাঁধার ব্যবস্থা করেছিল। সরকার কারাগার নামক বন্ধনীতে বেঁধে রাখার জন্য সচেষ্ট হয়েছিল ভারতীয়দের স্বাধীনতাকে। ত্রাস – ভীতি; আতঙ্ক। হ্রাস – কমে যাওয়া। মাভৈঃ – নেই ভয়; ভয়হীন। বলহীন – শক্তিহীন। টুটি – কণ্ঠ। লয় – ধ্বংস। ক্রন্দন – কান্না। ঝঞ্ঝনা – ধাতব আওয়াজ; লৌহশিকলের ধ্বনি। মুক্তি-পথ – মুক্তির পথ। বিপ্লবীগণ এই মুক্তিপথের পথিক; ‘মুক্তি’ বলতে স্বাধীনতার কথা বোঝানো হয়েছে। অগ্রদূত – অগ্রে খবর সংগ্রহ করে আনেন যে দূত, এখানে পথপ্রদর্শক। চরণ – পা; পদ। বন্দনা – উপাসনা; আরাধনা। চরণ-বন্দনা – চরণকে বন্দনা করা। লাঞ্ছনা – অপমান; পীড়ন; নিগ্রহ। অস্থি – হাড়। বজ্রানল – বজ্রবিদ্যুতের আগুন।
কবি নজরুল ইসলাম ‘শিকল-পরার গান’-এ ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের বার্তা জানিয়েছেন। তিনি দেখান, শিকল পরানোই বিপ্লবের সূচনা, কারণ এটি বন্দিদের মনে সাহস জাগিয়ে তোলে এবং তাদের আরও শক্তিশালী করে তোলে। লৌহকারাগার তাদের ধরে রাখতে পারবে না, কারণ তারা আত্মশক্তিতে বিশ্বাসী এবং মুক্তির জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।
কবি আহ্বান জানান, আর কোনো কান্না নয়, আর কোনো বন্ধন নয় – মুক্তিপথের অগ্রদূতের চরণে নিজেদের সমর্পণ করতে হবে। শত লাঞ্ছনার জবাব দিতে হবে লাঞ্ছিতদেরই। তাদের দেহের অস্থি দিয়েই তৈরি হবে বজ্র, আবার জ্বলবে বজ্রানল – সেই আগুনেই ধ্বংস হবে বন্ধন, শৃঙ্খল।
নজরুল বিশ্বাস করেন, বিপ্লবীদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। তাদের ত্যাগের বিনিময়েই ভারত স্বাধীন হবে এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পতন ঘটবে।
এই কবিতাটি ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম। এটি আজও প্রাসঙ্গিক, কারণ এটি আমাদের মনে সাহস ও আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তোলে এবং আমাদেরকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অনুপ্রাণিত করে।