অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – স্বাধীনতা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

Sourav Das

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের স্বাধীনতা অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে স্বাধীনতা অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় স্বাধীনতা অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই স্বাধীনতা অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

Table of Contents

“স্বাধীনতা” কবিতাটি অনুবাদকৃত, মূল লেখক বিখ্যাত আমেরিকান কবি ল্যাংস্টন হিউজ। বাংলা অনুবাদ করেছেন কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ও মুকুল গুহ। এই কবিতাটি স্বাধীনতা ও স্বাধিকারবোধের প্রতি গভীর অনুভূতি প্রকাশ করে। কবি জন্মগত স্বাধীনতার ধারণা তুলে ধরেছেন এবং বড় হওয়ার সাথে সাথে এই বোধের বিকাশের কথা বলেছেন।

কবিতায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, ভয় স্বাধীনতা অর্জনের পথে প্রধান বাধা। স্বাধীনতা কখনোই আপস বা সমঝোতার মাধ্যমে পাওয়া যায় না। যারা নিজেরা স্বাধীনতা উপভোগ করে, তারা কখনোই অন্যকে অধীন করে রাখতে চায় না। কবি স্পষ্ট করে বলেছেন, স্বাধীনতা অর্জনের জন্য লড়াই করতে হবে। স্থির, রক্ষণশীল বা দুর্বল চিত্তের মানুষেরা হয়তো বলবে “সময়ে সবই হবে, কাল একটা নতুন দিন।” কিন্তু কবি মনে করেন, এই ধারণা বিপজ্জনক। কারণ পরাধীনতার মধ্যে মৃত্যু হলে, স্বাধীনতার আর কোন মূল্য থাকে না।

আমাদের মনে রাখতে হবে, স্বাধীনতা নামক শক্তিশালী বীজ আমাদের সকলের মধ্যেই নিহিত। স্বাধীনতার প্রশ্নে কোন আপস নেই, তা অবশ্যই অর্জন করতে হবে। এই কবিতাটি শুধু অনুবাদ নয়, বরং বাংলা সাহিত্যে একটি উল্লেখযোগ্য রচনা। স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের বার্তা বহন করে এটি আজও সমাজের জন্য প্রাসঙ্গিক।

স্বাধীনতা – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

স্বাধীনতা বলতে কী বোঝো? কী কী বিষয়ে মানুষের স্বাধীনতা প্রয়োজন বলে তুমি মনে করো?

স্বাধীনতা হল মানবমনের এক জাগ্রত স্বাধিকারবোধ। এই বোধের অন্যতম ভাবটি হল, অন্যের অধীনে না থাকার মানসিকতা।

মানুষের মনে অনেক বিষয়েই স্বাধীনতা বা স্বাধিকারবোধ কাজ করে। তার মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হল — বাকস্বাধীনতা , মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, কাজ করার স্বাধীনতা, বেঁচে থাকার স্বাধীনতা ইত্যাদি। তবে সমাজতাত্ত্বিকরা মনে করেন, মানুষের উল্লেখযোগ্য স্বাধীনতাবোধটি হল আর্থিক স্বাধীনতা।

মানুষ পরাধীন হয় কখন?

মানুষ পরাধীন হয় তখনই, যখন বলপূর্বক কোনো মানুষের স্বাধীন সত্তাকে হরণ করে নেওয়া হয়। অনেকসময় দেখা যায় রাজনীতিগতভাবে ক্ষমতা দখল করে, মারণাস্ত্রের ভয় দেখিয়ে, মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে মানুষের স্বাধীনতা হরণ করে নেওয়া হয়। এতে মানুষের স্বাধীনতাবোধের অপমৃত্যু হয়। তখনই মানুষ অন্যের অধীন হয়ে পড়ে। নিজের উপর আর তার নিজের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না।

মৃত্যুর পরে তো আমার কোনো/স্বাধীনতার প্রয়োজন হবে না, – পঙ্ক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

স্বাধীনতা হল এক গভীরতম ভোগের বিষয়। কেন-না এই জীবনবোধের মধ্য দিয়ে চলমান যে-কোনো মানুষই সার্বিক সুখী। পরাধীন মানুষ কখনও যথার্থ সুখী হতে পারে না। মানুষ যখন বেঁচে থাকে, তখন তার স্বাধিকার ও স্বাধীনতা নিয়ে বাঁচার প্রশ্ন দেখা দেয়। মৃত মানুষের যেহেতু জৈবনিক কোনো লক্ষণ থাকে না, সেহেতু স্বাধীনতা ভোগ করার তার কোনো প্রয়োজনীয়তাই থাকে না। অতএব যদি স্বাধীনতা প্রয়োজন হয় তবে তা অর্জন করতে হবে এখনই। পরাধীনতায় কাতর হতে হতে মৃত্যু হয় যদি, তবে সে মৃত্যু হবে আপশোশের। স্বাধীনতা ভোগ করে জীবনপথ পার হওয়াই শ্রেষ্ঠ বাঁচা।

স্বাধীনতা একটা শক্তিশালী বীজপ্রবাহ, – পঙ্ক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

বীজ হল একটা সত্তা। স্বাধীনতাবোধও তেমনই এক সত্তা, যা বীজাকারে মানবহৃদয়ের অন্দরে নিহিত থাকে। জন্মগ্রহণ করেই মানুষ একপ্রকার স্বাধীনতা অর্জন করে। কিন্তু পিতা-মাতা যদি পরাধীন দেশের নাগরিক হয়, তবে জন্মলাভ করেই পরাধীনতা তার আপনিই অর্পিত হয়। পরাধীন মানুষ যতই নির্যাতিত হোক, তার অন্তরে কিন্তু স্বাধীনতার বীজটি লালিত হতে থাকে হৃদয়ের রসে জারিত হয়ে। বীজ যেমন উপযুক্ত উপাদান পেলে অঙ্কুরিত হয়, তেমনই স্বাধীনতাও বীজপ্রবাহ-স্বরূপ উপযুক্ত ইন্ধন পেলে বোধের প্রসার ঘটায়। কখনো-কখনো এই বোধ উন্মাদনার আকার নিয়ে বিস্ফোরণের মতো ফেটে পড়ে। তখনই স্বাধীনতা অর্জনের পথ পরিষ্কৃত হয়।

আমাদেরও তো অন্য সকলের মতন/অধিকার রয়েছে,/দুপায়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকার,/দুকাঠা জমির মালিকানার। – পঙ্ক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

স্বাধীনতার অন্য নাম স্বাধিকার। এই স্বাধিকার বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। তা পল্লবিত হতে হতে জীবনের অজস্র চাহিদাকে স্পর্শ করে স্পর্ধিত হতে পারে। কিন্তু যদি স্বাধীনতা না থাকে, তখন মানুষের মধ্যে গুমরে মরা স্বাধিকার বোধেরই একদিন অপমৃত্যু ঘটে। কবি আপস করে বাঁচতে রাজি নন। তাঁর চাই অধিকার। অন্য সকলের মতো তিনি সেই অধিকারের প্রত্যাশী, যা তাঁর নিজভূমে তাঁকে দু-পায়ে শক্ত হয়ে দাঁড় করিয়ে রাখতে পারে। অর্থাৎ তিনি চান, সেই ভূমি যা তাঁর নিজস্ব, সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে পারেন। যে ভূমিতে শিকড় চালিয়ে তাঁর স্বাধিকারবোধ পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠতে পারে।

স্বাধীনতা আমার প্রয়োজন/তোমার যেমন। – পঙ্ক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

স্বাধীনতা এমন একটি নিজস্ব জীবনবোধ, যা প্রত্যেক মানুষেরই জন্মগত অধিকার, যা না থাকলে মানুষ জীবন্মৃত। এই স্বাধিকারবোধ অর্জনই তাঁর কাছে একমাত্র প্রত্যাশা। কারণ তিনি বাঁচার মতো বাঁচতে চান। তবে একা স্বাধীনতা অর্জন করে বাঁচা তাঁর প্রত্যাশা নয়। সকলেই স্বাধীনভাবে বাঁচুক এমন বোধে আক্রান্ত কবি স্বাধীনতাবোধকে প্রসারিত করে দিতে চেয়েছেন অন্যান্য স্বাধীনতাপ্রত্যাশীদের অন্তরে। স্বাধীনতা তাঁর নিশ্চিত প্রয়োজন, যেমন অন্যেরও।

স্বাধীনতা কোনদিন আসবে না – কবির এমন ধারণা কেন হয়েছিল?

কবি অর্থাৎ ‘স্বাধীনতা’ নামক অনুবাদ কবিতার কথক মনে করেন স্বাধীনতা হল মানুষের এক এমন স্বাধিকারবোধ, যা প্রয়োগ করতে গেলে চাই তীব্র আন্দোলন, ভয়ংকর শক্তির প্রবল প্রহার। ভয় বা সমঝোতা নয়, পিছিয়ে পড়া বা আপস নয়, স্বাধীনতার পথে স্বাধীনতা পেতে চাই-চাওয়ার অধিকার। নাহলে কোনোদিনই স্বাধীনতা আসবে না।

কোন্ কথা শুনে কবির কেন কান পচে গিয়েছিল?

যারা রক্ষণশীল, স্থবির, যারা বড়ো আন্দোলনে শামিল হতে ভয় পায় বা ‘যা পেয়েছি যথেষ্ট পেয়েছি’ বলে যারা সন্তুষ্ট হয়ে বসে থাকে, তাদের কথা শুনে কবির কান পচে গিয়েছিল। তাদের বক্তব্য হল – ‘সময়ে/সবই হবে, কাল একটা নূতন দিন।’ কবির বিশ্বাস এই কাল কোনোদিনই আসে না। আজ নয়, কাল হবে, ভেবে বেঁচে থাকতে তিনি রাজি নন।

মৃত্যু হওয়ার পূর্বেই কবি কী, কেন প্রার্থনা করেছিলেন?

মৃত্যু যেভাবেই আসুক না কেন, তা জীবন শেষ হয়ে যাওয়াকেই নির্দেশিত করে। তাই কবির সদম্ভ ঘোষণা – ‘মৃত্যুর পরে তো আমার কোনো/স্বাধীনতার প্রয়োজন হবে না,’ স্বাধীনতা নামক পরম পাওয়াটি তিনি আজই পেতে চান। কারণ তাঁর গভীর বিশ্বাস আগামীকালের রুটি দিয়ে আজ বাঁচা যায় না। তা ছাড়া কবি স্বাধীনতাকে মনে করেছেন একটা শক্তিশালী বীজপ্রবাহ, যা তলে তলে অঙ্কুরিত হয় এবং শিকড় বিস্তার করে।

শক্তি চট্টোপাধ্যায় ও মুকুল গুহ, আধুনিক বাংলা সাহিত্যের দুই বিখ্যাত কবি, মার্কিন কবি ল্যাংস্টন হিউজের বিখ্যাত কবিতা “স্বাধীনতা” বাংলায় অনুবাদ করেছেন। এই অনুবাদটি একটি অসাধারণ সৃষ্টি, কারণ একজন বিখ্যাত কবির কবিতা যখন অন্য ভাষায় অনুবাদ করেন সেই ভাষারই একজন খ্যাতিমান কবি, তখন তা সৃষ্টি করে অসাধারণ সৌন্দর্য।

এই অনুবাদে, কবিদ্বয় ল্যাংস্টন হিউজের মূল কবিতার স্বাধীনতাবোধের তীব্র অনুভূতিটি অক্ষুণ্ণ রেখেছেন। তারা আক্ষরিক অনুবাদের পরিবর্তে ভাবানুবাদকে প্রাধান্য দিয়েছেন, যার ফলে অনুবাদটি বাংলা ভাষার সাথে স্বাভাবিকভাবে মিশে গেছে।

এই অনুবাদের চমৎকারিত্ব অস্বীকার করা যায় না। মানুষের স্বাধীনতাবোধ, স্বাধীনতা লাভের জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষা এবং প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির বেদনা এত স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠেছে যে মনে হয় কবিতাটি বাংলা ভাষাতেই রচিত হয়েছে। এই অনুবাদ “স্বাধীনতা” কবিতাকে বাংলা সাহিত্যের একটি অমূল্য সম্পদে পরিণত করেছে।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না –  ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer