নবম শ্রেণি – বাংলা – হিমালয় দর্শন – সামগ্রিক বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর

Gopi

নবম শ্রেণির বাংলা পাঠ্যপুস্তকের হিমালয় দর্শন প্রবন্ধটি রচনা করেছেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রখ্যাত বাঙালি নারীবাদী লেখিকা বেগম রোকেয়া। এই প্রবন্ধে লেখিকা তার স্বামী সৈয়দ আহমদ খান চৌধুরীর সাথে হিমালয় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন।

প্রবন্ধটিতে লেখিকা হিমালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি সম্পর্কেও লিখেছেন। তিনি হিমালয়ের নারীদের স্বাধীনতা ও কর্মজীবনের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।

নবম শ্রেণি – বাংলা – হিমালয় দর্শন – সামগ্রিক বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর

হিমালয় দর্শন রচনাংশটির অন্য কোনো নামকরণ করো। কেন তুমি সেই নামকরণ দিলে বুঝিয়ে দাও।

নতুন নামকরণ – বেগম রোকেয়া রচিত হিমালয় দর্শন প্রবন্ধটির শিরোনাম হিসেবে হিমালয়ের পথে – প্রান্তরে দেওয়া যেতে পারে।

নামকরণের যথার্থতা – হিমালয়ান রেলগাড়ি চড়ে শিলিগুড়ি থেকে ৪৮৬৪ ফিট উচ্চতার শৈলশহর কার্সিয়াং যাওয়ার সময় পথের দুধারের পর্বতের উঁচু উঁচু চূড়া, নিবিড় অরণ্য, চা বাগানের প্রাকৃতিক শোভা এবং জলপ্রপাতগুলির অবর্ণনীয় সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন তিনি। কার্সিয়াং-এর মনোরম প্রকৃতির সঙ্গে স্বাস্থ্যকর আবহাওয়া লেখিকার পার্বত্য শহরবাসকে আনন্দদায়ক করে তোলে।

পার্বত্যপ্রকৃতির রাজ্যে মেঘ ও বাতাসের লুকোচুরি খেলা, পশ্চিম আকাশকে সোনার রঙে রাঙিয়ে দিয়ে সূর্যের অস্ত যাওয়া—এ সবই লেখিকার সৌন্দর্যপিপাসু মনকে তৃপ্তি দিয়েছে।

কার্সিয়াং-এ লেখিকার বাসার মাত্র এক মাইলের মধ্যে অবস্থিত জলপ্রপাতের রূপ তাঁকে মোহিত করেছে। দুধের ফেনার মতো সাদা জলধারার কলতান তাঁর হৃদয়ে তুলেছে আনন্দের ঢেউ। সর্বোপরি সুউচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এবং তার বুক চিরে বয়ে চলা ঝরনার অতুলনীয় সৌন্দর্য দেখে সেগুলিকে তাঁর ঈশ্বরের নিপুণ তুলিতে আঁকা ছবি বলেই মনে হয়েছে। সৃষ্টির সৌন্দর্যে মোহিত লেখিকার হৃদয় শ্রদ্ধা জানিয়েছে স্রষ্টাকে। আবার প্রকৃতি শুধু নয়, পাহাড়ের জনজীবনও তাঁর লেখায় উঠে এসেছে। বিশেষত পাহাড়ের মহিলাদের বা ভুটিয়া রমণীদের কষ্টসহিষ্ণুতা, কর্মনিষ্ঠা, সততা ইত্যাদিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন লেখিকা। তাই সব দিক বিচার করে হিমালয় দর্শন প্রবন্ধটির বিকল্প নাম হিসেবে আমাদের হিমালয়ের পথে-প্রান্তরে নামটিকেই যথাযথ মনে হয়৷

হিমালয় দর্শন রচনাংশে লেখিকার চরিত্রের কোন দিকগুলি ফুটে উঠেছে?

কথামুখ – হিমালয় দর্শন রচনাংশে আমরা লেখিকা বেগম রোকেয়ার চরিত্রের বিশেষ কয়েকটি দিক উন্মেচিত হতে দেখেছি।

প্রকৃতিপ্রীতি – পার্বত্যপথের দু-ধারের উচ্চচূড়া এবং নিবিড় অরণ্যের মনোরম দৃশ্য লেখিকার মনকে আনন্দিত করেছে। গাছ, লতা, ঘাস, পাতা, সবুজ চা বাগান সবই তাঁর কাছে মনোহর লেগেছে। জলপ্রপাতগুলির সৌন্দর্যে বিভোর হয়েছেন তিনি। পার্বত্য অঞ্চলে হালকা বায়ুর আনাগোনায় মেঘখণ্ডগুলি যে সৌন্দর্য রচনা করে তা প্রকৃতিপ্রেমী লেখিকার মন ছুঁয়ে গেছে। প্রকৃতির অপূর্ব শোভা দেখে তাঁর তৃপ্ত মনপ্রাণ ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।

বিদুষী ও জ্ঞানপিপাসু – রচনাংশটির ক্ষুদ্র পরিসরে মহিলা পত্রিকার অনুষঙ্গ বা ভূতত্ত্ব গ্রন্থের প্রসঙ্গ উত্থাপনের মধ্য দিয়ে তাঁর চরিত্রের বিদুষী ও জ্ঞানপিপাসু দিকটি ফুটে উঠেছে।

নারীসমাজের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ – ভুটিয়ানিদের চরিত্রের শ্রমশীলা, কার্যপ্রিয়, সাহসী দিকগুলি উদাহরণ-সহ তুলে ধরে লেখিকা বেগম রোকেয়া প্রমাণ করেছেন যে নারী, পুরুষ অপেক্ষা কোনো অংশেই কম নয়। তারা পরনির্ভরশীল না হয়ে পুরুষের মতোই উপার্জন করে। একজন মেয়ে হিসেবে মেয়ের এই বিশ্লেষণে নারীসমাজের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা ফুটে উঠেছে।

ঈশ্বরের সৃষ্টি-মাহাত্ম্যে বিশ্বাসী – সমগ্র জগৎ ও প্রকৃতির সৃষ্টিতে ঈশ্বরের সৃষ্টি-মাহাত্ম্যই প্রকাশ পায়। তাই প্রকৃতির অপূর্ব শোভায় মুগ্ধ লেখিকা নির্দ্বিধায় ঈশ্বরের প্রশংসা করেছেন এবং তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

হিমালয় দর্শন রচনাংশে প্রকৃতির শোভা দেখে লেখিকার যে মুগ্ধতা ব্যক্ত হয়েছে তা আলোচনা করো।

লেখিকার মুগ্ধতা প্রকাশ – কথামুখ, হিমালয়ান রেলগাড়ি চড়ে শিলিগুড়ি থেকে কার্সিয়াং শহরে পৌঁছোনো এবং শৈলশহর কার্সিয়াং-এ থাকার সময়ে প্রকৃতি তার অগাধ সৌন্দর্যের যে ডালি লেখিকার সামনে তুলে ধরেছেন, তা দেখে লেখিকার মন ভরে গেছে। ঘন অরণ্যের সৌন্দর্য – খেলনা গাড়ির মতন হিমালয়ান রেলগাড়ি খুব ধীরগতিতে পার্বত্যপথে এঁকেবেঁকে ওপরে ওঠার সময় পথের দু-পাশে পর্বতের উচ্চচূড়া এবং ঘন অরণ্য লেখিকার মনোহরণ করেছে। সবুজের সমাবেশ – গাছ, ঘাস, লতা-পাতা, চা বাগানের সবুজ সমারোহে তিনি অভিভূত হয়েছেন।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০০০ ফিট উচ্চতায় উঠে নীচের উপত্যকার সাদা কুয়াশা দেখে তিনি নদী বলে ভুল করেছেন। উপমার প্রয়োগ – প্রকৃতির সৌন্দর্যে বিভোর হয়ে বারবার সেগুলির নানা উপমা টেনেছেন তিনি। চা বাগানের মধ্য দিয়ে সরু পথগুলি ধরণীর সীমন্ত, নিবিড় বন বসুমতীর ঘন কেশপাশ, পথগুলি আঁকাবাঁকা সিঁথি বলে মনে হয়েছে লেখিকার। জলপ্রপাতের সৌন্দর্য – যাত্রাপথে দেখা জলপ্রপাতগুলির সৌন্দর্য লেখিকা প্রাণভরে উপভোগ করেছেন। সৌন্দর্যের রাজ্য – কার্সিয়াং শহরের বাসায় পৌঁছেও মেঘ ও বায়ু আর অস্তগামী সূর্যের দ্বারা রচিত সৌন্দর্যের রাজ্য দেখে তিনি আনন্দে আত্মহারা হয়েছেন। সাদা দুধের ফেনার মতো জলপ্রপাতের জলরাশি এবং জলধারার কল্লোলধ্বনি শুনে তাঁর সময় কেটেছে। বিস্মিত হয়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য অন্তরে উপলব্ধি করেছেন লেখিকা।

হিমালয় দর্শন প্রবন্ধটি একটি মনোরম ও শিক্ষামূলক প্রবন্ধ। এই প্রবন্ধে লেখিকা হিমালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, মানুষের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে লিখেছেন। তিনি হিমালয়ের নারীদের স্বাধীনতা ও কর্মজীবনের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এই প্রবন্ধটি পাঠকদের প্রকৃতি ও মানব সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Tom Loses a Tooth

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

The North Ship

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer