জলশোধন প্রক্রিয়ায় কীভাবে জলকে জীবাণু মুক্ত করা যায়? নর্দমার জল পরিশোধন পদ্ধতি

Rahul

আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে দেখবো যে জলশোধন প্রক্রিয়ায় কীভাবে জলকে জীবাণু মুক্ত করা যায়? নর্দমার জল পরিশোধন পদ্ধতি এই প্রশ্ন দশম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, জলশোধন প্রক্রিয়ায় কীভাবে জলকে জীবাণু মুক্ত করা যায়? নর্দমার জল পরিশোধন পদ্ধতি – এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের চতুর্থ অধ্যায় বজ্র ব্যাবস্থাপনার প্রশ্ন। আপনি পরীক্ষার জন্য তৈরী করে গেলে আপনি লিখে আস্তে পারবেন।

জলশোধন প্রক্রিয়ায় কীভাবে জলকে জীবাণু মুক্ত করা যায়?

জলের জৈবিক অক্সিজেনের চাহিদা বা BOD (Biological Oxygen Demand) কমাতে পারলে জলবে জীবাণুমুক্ত করা যায়, দূষিত জলে নানারকম ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, জীবাণু বসবাস করে। ওইসব জীবাণু জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন সংগ্রহ করে বেঁচে থাকে। সেই কারণে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন হ্রাস করতে পারলেই জলকে জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব।

নর্দমার জল পরিশোধন পদ্ধতি

নর্দমার জল আমাদের পানীয় জলের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস, কিন্তু খালি চোখে পরিষ্কার দেখালেও, এটি বিভিন্ন ধরণের দূষিত পদার্থ ধারণ করতে পারে। এই জলকে পানের উপযোগী করার জন্য, জলের পরিশোধন কারখানাগুলিতে বহু-পর্যায়ের জটিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।

নর্দমার জল পরিশোধন প্রক্রিয়া সাধারণত চারটি প্রধান ধাপে বিভক্ত:

প্রাথমিক শোধন

এই ধাপে বড় আকারের দূষিত পদার্থ যেমন কাঠি, পাতা, প্লাস্টিকের বোতল, এবং অন্যান্য ভাসমান বস্তুগুলোকে জল থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর, জলকে কিছু সময়ের জন্য স্থিত করে রাখা হয়, যাতে ভারী কণা (বালি, পাথর ইত্যাদি) তলায় নিঃস্তরিত হয়। পরবর্তীতে, এই তলানি অপসারণ করা হয়।

দ্বিতীয় শোধন

এই ধাপে জল থেকে জৈবিক পদার্থের বিঘटन ঘটানো হয়। এর জন্য জলকে একটি ট্যাংকে স্থানান্তরিত করা হয় যেখানে নির্দিষ্ট জাতের ব্যাকটেরিয়া জৈব পদার্থগুলোকে খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে বিভাজিত করে। এই প্রক্রিয়ায় জল থেকে ক্ষতিকারক জীবাণু এবং পুষ্টি উপাদান (যা জলজ উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়) কমে যায়। এরপর, জলকে ফিল্টার করা হয়, যাতে ব্যাকটেরিয়া এবং জৈব পদার্থের অবশিষ্টাংশগুলি পানি থেকে পৃথক করা যায়।

তৃতীয় শোধন (ঐচ্ছিক)

কিছু ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত পরিশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। এই ধাপে আরও উন্নত জৈবিক চিকিৎসা পদ্ধতি বা রাসায়নিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। উন্নত জৈবিক চিকিৎসায় বিশেষ জাতের ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করা হয় জলের মধ্যে অবশিষ্ট থাকা জৈব পদার্থ এবং পুষ্টি উপাদানগুলোকে আরও কുറিয়ে দেওয়ার জন্য। রাসায়নিক পদ্ধতিতে, ফসফেটের মতো নির্দিষ্ট ধরণের রাসায়নিক পদার্থ অপসারণের জন্য রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়।

নির্বীজন

পরিশোধনের শেষ ধাপে জলকে পানের উপযোগী করার জন্য জীবাণুমুক্ত করা হয়। এই কাজে সাধারণত ক্লোরিন, অতিবেগুনী আলো (UV) বা ওজোন ব্যবহার করা হয়। ক্লোরিন সবচেয়ে সাধারণ জীবাণুমুক্তকরণ পদ্ধতি, কিন্তু এটি পানিতে একটি সামান্য গন্ধ এবং স্বাদ তৈরি করতে পারে। অতিবেগুনী আলো এবং ওজোন পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি, কিন্তু এগুলি কম ব্যবহৃত হয় কারণ এগুলি ক্লোরিনের মতো স্থায়ী।

আরও পড়ুন – নিরাপদ কীটনাশক কী? কীটনাশক ব্যবহারের সুফল ও কুফল

এই আর্টিকেলে, আমরা নর্দমার জল পরিশোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জলকে জীবাণুমুক্ত করার বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আমরা দেখেছি যে, কীভাবে বহু-পর্যায়ের জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নোংরা জলকে পানের উপযোগী করে তোলা হয়।

এই আর্টিকেলটি দশম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি মাধ্যমিক ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি এই আর্টিকেলটি পড়ে পরীক্ষার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারেন।

Please Share This Article

Related Posts

মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা ও বঙ্গোপসাগরীয় শাখার মধ্যে পার্থক্য লেখো

মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা ও বঙ্গোপসাগরীয় শাখা কী? মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা ও বঙ্গোপসাগরীয় শাখার মধ্যে পার্থক্য

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান - পরিবেশের জন্য ভাবনা - স্থিতিশীল উন্নয়নে শক্তি উৎসের ব্যবহার

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – পরিবেশের জন্য ভাবনা – স্থিতিশীল উন্নয়নে শক্তি উৎসের ব্যবহার

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান - পরিবেশের জন্য ভাবনা - ওজোন স্তর, গ্রিনহাউস এফেক্ট এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – পরিবেশের জন্য ভাবনা – ওজোন স্তর, গ্রিনহাউস এফেক্ট এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা ও বঙ্গোপসাগরীয় শাখা কী? মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা ও বঙ্গোপসাগরীয় শাখার মধ্যে পার্থক্য

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – পরিবেশের জন্য ভাবনা – স্থিতিশীল উন্নয়নে শক্তি উৎসের ব্যবহার

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – পরিবেশের জন্য ভাবনা – ওজোন স্তর, গ্রিনহাউস এফেক্ট এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – পরিবেশের জন্য ভাবনা – বায়ুমণ্ডলের গঠন

নবম শ্রেণি – বাংলা – আকাশে সাতটি তারা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর