কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুটি পদ্ধতির ব্যাখ্যা করো।

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুটি পদ্ধতির ব্যাখ্যা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুটি পদ্ধতির ব্যাখ্যা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের চতুর্থ অধ্যায় “বর্জ্য ব্যবস্থাপনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুটি পদ্ধতির ব্যাখ্যা করো।
কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুটি পদ্ধতির ব্যাখ্যা করো।

কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুটি পদ্ধতির ব্যাখ্যা করো।

অথবা, ভরাটকরণ ও দহনের মাধ্যমে বর্জ্যের অনেকখানি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব – ব্যাখ্যা করো।

কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি –

কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বেশ কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে দুটি পদ্ধতি হল –

  1. ওপেন ডাম্পিং।
  2.  বর্জ্য দহন।

নীচু জমি ভরাটকরণ (Open dumping) –

লোকালয় থেকে দূরে কোনো ফাঁকা জায়গায় কিংবা নীচু পতিত জমিতে বিপজ্জনক নয় এমন কঠিন বর্জ্য পদার্থ জমা করা হয়। এই সমস্ত কঠিন বর্জ্যের প্রধান উৎস হল নির্মাণ সামগ্রী এবং নির্মাণ কাজ ভেঙে পাওয়া কঠিন ইমারত দ্রব্য সামগ্রী। এ ছাড়া গার্হস্থ্য ও কুটির শিল্প, শিল্পজাত কঠিন বর্জ্য এখানে নিক্ষেপ করা হয়। এই পদ্ধতি প্রয়োগে খরচ কম হয় এবং এটি পরিকল্পনাহীন। ভারতের বিভিন্ন স্থানে এই পদ্ধতি প্রচলিত।,

ক্ষতিকারক দিক – বর্জ্য পদার্থের Open dumping জনস্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। স্তূপীকৃত বর্জ্য পদার্থের ওপর ইঁদুর, মাছি ও কীটপতঙ্গ বাসা বাঁধে। বর্জ্য পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়। উদাহরণ – কলকাতার পূর্বে অবস্থিত ধাপা জঞ্জাল স্তূপ।

নীচু জমি ভরাটকরণ (Open dumping)
নীচু জমি ভরাটকরণ (Open dumping)

বর্জ্য দহন –

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অন্য প্রচলিত পদ্ধতি হল বর্জ্য দহন বা ইনসিনারেশন। কঠিন বর্জ্য পদার্থকে উচ্চ চাপে ও তাপে পোড়ানো হয়। ইনসিনারেশন পদ্ধতিতে বর্জ্য পদার্থগুলির নিয়ন্ত্রিত দহন ঘটিয়ে জারণ পদ্ধতিতে তাকে সরলতম রূপে পরিণত করা হয়। দাহ্যবস্তু পুড়ে গেলে ছাই, কাচ, অন্যান্য ধাতু ও অন্যান্য অদাহ্য বস্তু পড়ে থাকে। এগুলিকে আলাদা করে পুনরায় সেগুলি থেকে ধাতু, কাচ প্রভৃতি নিষ্কাশন করা হয়। দহনজনিত তাপশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যায়। চিকিৎসা ক্ষেত্রের বিপজ্জনক বর্জ্য পদার্থের নিয়ন্ত্রিত দহন ঘটিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কী?

কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা হলো বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহ, পরিবহন, প্রক্রিয়াকরণ, পুনর্ব্যবহারযোগ্যকরণ এবং সঠিকভাবে নিষ্পত্তির একটি পদ্ধতি, যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি রোধ করে।

কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রধান পদ্ধতিগুলো কী কী?

1. ভরাটকরণ (ল্যান্ডফিল/ওপেন ডাম্পিং)।
2. বর্জ্য দহন (ইনসিনারেশন)।
3. পুনর্ব্যবহার (রিসাইক্লিং)।
4. জৈবিক প্রক্রিয়াকরণ (কম্পোস্টিং)।

ওপেন ডাম্পিং পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধা কী?

সুবিধা –
1. কম খরচে বর্জ্য নিষ্পত্তি করা যায়।
2. বড় আকারের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্ভব।

অসুবিধা –
1. মাটি, বায়ু ও জল দূষণ ঘটায়।
2. ইঁদুর, মাছি ও রোগজীবাণুর বিস্তার ঘটে।
3. দুর্গন্ধ ও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে।

বর্জ্য দহন (ইনসিনারেশন) পদ্ধতি কীভাবে কাজ করে?

উচ্চ তাপমাত্রায় বর্জ্য পোড়ানো হয়, যার ফলে –
1. বর্জ্যের আয়তন কমে (~90%)।
2. শক্তি উৎপাদন সম্ভব (তাপ বা বিদ্যুৎ)।
3. বিপজ্জনক বর্জ্য ধ্বংস করা যায়।

বর্জ্য দহনের সুবিধা ও অসুবিধা কী?

সুবিধা –
1. দ্রুত বর্জ্য নিষ্পত্তি হয়।
2. শক্তি উৎপাদন করা যায়।
3. ভূমি দূষণ কম হয়।

অসুবিধা –
1. বায়ু দূষণ (বিষাক্ত গ্যাস যেমন – ডাইঅক্সিন নির্গত হয়)।
2. উচ্চ ব্যয়বহুল প্রযুক্তি প্রয়োজন।
3. ছাই ব্যবস্থাপনা জটিল।

ভরাটকরণ ও দহন পদ্ধতির মধ্যে কোনটি ভালো?

1. ভরাটকরণ সস্তা কিন্তু পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
2. দহন দ্রুত ও কার্যকর কিন্তু ব্যয়বহুল।
3. আদর্শ সমাধান হলো পুনর্ব্যবহার ও কম্পোস্টিং এর সাথে সমন্বয় করা।

কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমাদের ভূমিকা কী?

1. বর্জ্য কম তৈরি করা (Reduce)।
2. পুনর্ব্যবহার করা (Recycle)।
3. জৈব বর্জ্য কম্পোস্টে রূপান্তর করা।
4. সঠিকভাবে বর্জ্য ফেলা (বিন বিভাজন)।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুটি পদ্ধতির ব্যাখ্যা করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুটি পদ্ধতির ব্যাখ্যা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের চতুর্থ অধ্যায় “বর্জ্য ব্যবস্থাপনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

সক্রিয় সেনসর ও নিষ্ক্রিয় সেনসর বলতে কী বোঝো

সক্রিয় সেনসর ও নিষ্ক্রিয় সেনসর বলতে কী বোঝো? সক্রিয় সেনসর ও নিষ্ক্রিয় সেনসরের মধ্যে পার্থক্য

জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহ বলতে কী বোঝো

জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহ কী? জিওস্টেশনারি ও সান-সিনক্রোনাস উপগ্রহের মধ্যে পার্থক্য

ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র ও উপগ্রহ চিত্র বলতে কী বোঝো

ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র ও উপগ্রহ চিত্র কী? ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র ও উপগ্রহ চিত্রের পার্থক্য

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

কোনো প্রিজমের মধ্য দিয়ে আলোর প্রতিসরণের ক্ষেত্রে দেখাও যে চ্যুতিকোণ(δ) = i1+i2−A

তোমার জীবনের একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা – প্রবন্ধ রচনা

একটি গ্রামের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা – প্রবন্ধ রচনা

অরণ্য ভ্রমণের অভিজ্ঞতা – প্রবন্ধ রচনা

র‍্যাগিং ও ছাত্রসমাজ – প্রবন্ধ রচনা