দশম শ্রেণি – বাংলা – অদল বদল – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

Gopi

পান্নালাল প্যাটেলের লেখা অদল বদল গল্পটি দশম শ্রেণির বাংলা পাঠ্যপুস্তকের একটি উল্লেখযোগ্য গল্প। গল্পটিতে দুটি শিশুর, অমৃত ও ইসাবের, অদলবদলের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।

Table of Contents

দশম শ্রেণি – বাংলা – অদল বদল – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

বলতে গেলে ছেলে দুটোর সবই একরকম, তফাত শুধু এই যে। – ‘ছেলে দুটো’ কে কে? তাদের মিল ও অমিল উল্লেখ করো।

ছেলে দুটো-র পরিচয় – উল্লিখিত অংশে ‘ছেলে দুটো’ বলতে অমৃত আর ইসাবের কথা বলা হয়েছে।

ছেলে দুটির মিল ও অমিল – প্রখ্যাত গুজরাতি লেখক পান্নালাল প্যাটেল রচিত ‘অদল বদল’ গল্পের দুই বন্ধু অমৃত ও ইসাব একই ক্লাসে এবং একই স্কুলে পড়ত। তাদের বাড়ি ছিল মুখোমুখি, দুজনেরই বাবা পেশায় ছিল চাষি। জমির পরিমাণও তাদের প্রায় এক। দুজনের বাবাকেই বিপদে-আপদে ধার নিতে হত। এইগুলোই ছিল তাদের মধ্যে মিল। কেবল একটি জায়গাতেই তাদের অমিল ছিল-অমৃত তার মা, বাবা আর তিন ভাইয়ের সঙ্গে থাকত, কিন্তু ইসাবের শুধু বাবাই ছিল।

নতুন জামা পাবার জন্য তুমি কী কাণ্ডটাই না করেছিলে – কার কথা বলা হয়েছে? নতুন জামা পাওয়ার জন্য সে কী কাণ্ড করেছিল?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – উল্লিখিত অংশে অমৃতর কথা বলা হয়েছে।

নতুন জামা পাওয়ার ঘটনা – ইসাবের নতুন জামা হওয়ায়, অমৃতও চেয়েছিল তার নতুন জামা হোক। কিন্তু বাড়ি থেকে নতুন জামা দিতে রাজি না হওয়ায়, সে স্কুল যাওয়া বন্ধ করেছিল, খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল। নতুন জামা পাওয়ার জন্য মার খেতেও সে রাজি ছিল। এমনকি জামা না পাওয়ায় অমৃত রাতে বাড়ি ফিরতেও চায়নি। জামা না দিলে সে বাড়ি আসবে না বলে স্থির করে ইসাবের বাবার গোয়ালঘরে লুকিয়েছিল।

অমৃত এতেও পিছপা হতে রাজি নয়। – অমৃত কেন পিছপা হতে রাজি নয়?

অমৃত তার বাবা-মায়ের কাছে ঠিক ইসাবের জামার মতোই একটা জামার জন্য বায়না ধরে। অমৃতের মা তখন ওকে বেকায়দায় ফেলার জন্য বলেন, নতুন জামা দেবার আগে ইসাবের বাবা ওকে খুব মেরেছিলেন, তুইও সেরকম মার খেতে রাজি আছিস? এই কথা শুনেও অমৃত পিছপা হতে রাজি হয়নি। বন্ধুর মতো জামা পেতে সে বাবার কাছে মার খেতেও রাজি ছিল।

নতুন জামা পরে রাস্তায় বেরোনোর পর অমৃতের সঙ্গে কী ঘটনা ঘটেছিল?

অনেক জেদের পর অমৃত তার মা-বাবার থেকে নতুন জামা পায়। তাই সে এমন কিছু করতে চায়নি যাতে তার নতুন জামাটি নোংরা হয়। কিন্তু অমৃতকে নতুন জামা পরে বেরোতে দেখে ছেলেদের দলের মধ্য থেকে একটি ছেলে তাকে কুস্তি লড়তে বলে এবং জোর করে ধরে খোলা মাঠে নিয়ে যায়। অমৃত রাজি না হলেও, কালিয়া বলে ছেলেটি অমৃতকে ছাড়ে না, কুস্তি লড়ার নামে তাকে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।

এই বলে সে অমৃতকে খোলা মাঠে নিয়ে এল – অমৃতকে কেন খোলা মাঠে আনা হয়েছিল? খোলা মাঠে আনার পর কী ঘটনা ঘটেছিল?

অমৃতকে খোলা মাঠে আনার কারণ – কালিয়া নামের একটি ছেলে চেয়েছিল অমৃতের সঙ্গে কুস্তি লড়তে। অমৃত রাজি না হলেও সে তাকে কুস্তি লড়ার জন্য খোলা মাঠে নিয়ে এসেছিল।

পরবর্তী ঘটনা – মাঠে নিয়ে এসে কালিয়া অমৃতকে কুস্তি লড়তে বাধ্য করে এবং অমৃতকে ছুঁড়ে মাটিতে ফেলে দেয়। বন্ধু অমৃতর এই অপমানে ইসাব রেগে যায়। বন্ধুর হারের শোধ নিতে ইসাব নিজে কালিয়াকে তার সঙ্গে লড়তে বলে আর তাকে সে কুস্তিতে হারিয়ে দেয়।

অমৃতের অত জোর দিয়ে বলার কারণ ছিল – অমৃত জোর দিয়ে কী বলেছিল? জোর দিয়ে বলার কারণ কী ছিল? 

অমৃতের বক্তব্য – অমৃত জোর দিয়ে কুস্তি না লড়ার কথা বলেছিল।

অমৃতের জোর দেওয়ার কারণ – হোলির দিন বাড়ি থেকে বেরোবার সময় অমৃতের মা তাকে এই বলে সাবধান করে দিয়েছিলেন যে, অমৃত যেন তার গায়ের নতুন জামাটি ময়লা না-করে বা ছিঁড়ে না- আনে। কারণ নতুন জামা পাওয়ার জন্য অমৃত তার বাবা-মাকে খুব জ্বালিয়েছিল। তাই জামায় ময়লা লাগলে বা সেটা ছিঁড়লে মায়ের হাতে মার খাওয়া নিশ্চিত ছিল বলে অমৃত কুস্তি লড়তে রাজি হয়নি।

ইসাবের মেজাজ চড়ে গেল। – ইসাবের মেজাজ চড়ে গিয়েছিল কেন?

পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্প থেকে প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। গল্পের কেন্দ্রীয় দুই চরিত্র ইসাব ও অমৃত খুব ভালো বন্ধু ছিল। একে অন্যের বিপদে সবসময় এগিয়ে যেত। তাদের জামাকাপড়, বাড়ির অবস্থা সব কিছুতেই ছিল মিল। হোলির পড়ন্ত এক বিকেলে এই দুই বন্ধু নতুন জামা পড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তখনই কালিয়া নামের একটি ছেলে অমৃতকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কুস্তি লড়তে বাধ্য করে আর তাকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। বন্ধুর এই লাঞ্ছনায় ইসাব রেগে গিয়েছিল।

ইসাব কী কারণে রেগে গিয়েছিল? রেগে গিয়ে সে কী করেছিল?

রেগে যাওয়ার কারণ – ইসাব ও অমৃত দুই বন্ধু বিকেলে নতুন জামা পড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তখনই কালিয়া নামের একটি ছেলে অমৃতকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কুস্তি লড়তে বাধ্য করে আর তাকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। বন্ধুর এই লাঞ্ছনায় ইসাব রেগে গিয়েছিল।

রেগে যাওয়ার ফল – ইসাব রেগে গিয়ে কালিয়াকে অর্থাৎ যে ছেলেটি অমৃতকে কুস্তি লড়তে বাধ্য করেছিল, তাকে আবার কুস্তি লড়তে আহ্বান জানায় আর তাকে ল্যাং মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। এই ভাবেই ইসাব কালিয়াকে কুস্তিতে হারিয়ে দেয়।

অমৃত আর ইসাবও রণভূমি ত্যাগ করল। – কাকে রণভূমি বলা হয়েছে? তারা কেন সেই রণভূমি ত্যাগ করেছিল?

রণভূমির পরিচয় – কালিয়া নামের ছেলেটি অমৃতকে কুস্তি লড়ার জন্য যে খোলা মাঠে নিয়ে গিয়েছিল সেই মাঠটাকেই ‘রণভূমি’ বলা হয়েছে।

রণভূমি ত্যাগের কারণ – কালিয়া অমৃতকে কুস্তি লড়তে গিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার পরে ইসাব আর স্থির থাকতে পারে না। সে নিজেই নেমে পড়ে কুস্তি লড়তে। কালিয়াকে সে হারিয়েও দেয়। কিন্তু কালিয়ার বাবা-মা এসে সেখানে উপস্থিত ছেলেদের মারতে পারে এই ভয়ে তারা সবাই পালিয়ে যায়। সবাই চলে যাবার পর অমৃত আর ইসাবও মাঠ ত্যাগ করে চলে যায়।

ওদের তখন বুকের ধুকপুকুনি বন্ধ হবার জোগাড়। – কখন, কী কারণে ওদের বুকের ধুকপুকুনি বন্ধ হবার জোগাড় হয়েছিল?

সময়কাল – বন্ধু অমৃতের সঙ্গে হওয়া অপমানের বদলা নিতে ইসাব কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়েছিল। সেই কুস্তিতে কালিয়া হেরে গেলেও ইসাবের নতুন জামাটা ছিঁড়ে যায়। জামাটা কতটা ছিঁড়েছে তা পরীক্ষা করার সময় ওরা শুনতে পেল ইসাবের বাবা ইসাবকে ডাকছেন। তখনই তাদের এই অবস্থা হয়।

বুকের ধুকপুকুনি বন্ধ হওয়ার কারণ – জামা ছেঁড়ার জন্য ইসাবের বাবা ওর চামড়া তুলে নেবেন, এই চিন্তা করে ওদের দুজনের বুকের ধুকপুকুনি বন্ধ হবার জোগাড় হয়েছিল।

 হঠাৎ অমৃতের মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল – অমৃতের মাথায় কখন কী বুদ্ধি খেলেছিল?

অমৃতের অনিচ্ছা সত্ত্বেও কালিয়া তাকে কুস্তি লড়ার জন্য জোর করে এবং খোলা মাঠে নিয়ে গিয়ে অমৃতকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। বন্ধু অমৃতর সাথে হওয়া এই অপমানে ইসাব রেগে গিয়ে কালিয়াকে তার সঙ্গে কুস্তি লড়তে বলে এবং তাকে হারিয়ে দেয়। কিন্তু এতে ইসাবের নতুন জামা ছিঁড়ে যায়। ইসাব তখন খুব ভয় পেয়ে যায়, কারণ সে জানত বাবার মারের হাত থেকে সে নিস্তার পাবে না। ইসাবকে ভয় পেতে দেখে অমৃতের মাথায় একটা বুদ্ধি খেলেছিল। অমৃত বুদ্ধি দিয়েছিল তার জামার সঙ্গে ইসাবের জামা অদলবদল করে নেওয়ার।

কিন্তু আমাকে বাঁচানোর জন্য তো আমার মা আছে। – কে কথাটি বলেছিল? কথাটি ব্যাখ্যা করো।

বক্তা – ‘অদল বদল’ গল্প থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত কথাটি বলেছিল অমৃত।

ব্যাখ্যা – অমৃতের লাঞ্ছনার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়তে গিয়ে ইসাবের জামা ছিঁড়ে যায়। তখন অমৃত ইসাবকে তার বাবার মারের হাত থেকে বাঁচাতে ইসাবের সঙ্গে নিজের জামা পালটাপালটি করে নেয়। এতে যদি অমৃতের বিপদ হয়-ইসাব এ কথা বললে অমৃত তার উত্তরে উক্ত মন্তব্যটি করে। অমৃতের এই কথা থেকে সহজেই বোঝা যায় যে মা-র স্নেহই যে-কোনো সন্তানের নিশ্চিন্ত আশ্রয় হতে পারে। ইসাবের মা না থাকায় সেই সুযোগ ছিল না।

এতে দু’জনেরই ভয় কেটে গেল। – দু’জন কে কে? কী কারণে ওদের ভয় কেটে গেল?

দুজনের পরিচয় – প্রশ্নে উল্লিখিত দুজন হল অমৃত আর ইসাব।

ভয় কেটে যাওয়ার কারণ – ইসাবের সঙ্গে জামা অদলবদল করলেও বাড়ি ফিরে ছেঁড়া জামা দেখে অমৃতের মা কী বলবেন সেটা ছিল অমৃত-ইসাব দুজনেরই ভয়ের কারণ। কিন্তু দিনটা হোলির হওয়ায় একটু ধস্তাধস্তি টানাহ্যাঁচড়া চলেই। তাই অমৃতের মা ভুরু কোঁচকালেও শেষপর্যন্ত জামা ছেঁড়ার জন্য অমৃতকে মাফ করে দিলেন। তিনি একটা ছুঁচ-সুতো নিয়ে ছেঁড়া জামাটা রিফু করে দিলেন। এতে দুজনেরই ভয় কেটে গেল।

তারা ভয়ে বাড়ির দিকে ছুটে পালাতে লাগল – তারা কারা? তারা কেন বাড়ির দিকে ছুটেছিল?

তাদের পরিচয় – ‘অদল বদল’ গল্প থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে ‘তারা’ বলতে অমৃত ও ইসাবকে বোঝানো হয়েছে।

বাড়ির দিকে ছুটে যাওয়ার কারণ – কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়তে গিয়ে ইসাবের নতুন জামা ছিঁড়ে গেছিল। ফলে ইসাবকে তার বাবার মারের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য অমৃত তার সঙ্গে ইসাবের জামা অদলবদল করেছিল। আর এই জামা অদলবদলের দৃশ্য গ্রামের একটি ছেলে দেখেছিল। তার কাছ থেকে অন্য ছেলেরাও ব্যাপারটা জেনে যায়। তখন তারা সবাই ‘অদল-বদল, অদল-বদল’ বলে চিৎকার করতে থাকে। যদি অমৃত ও ইসাবের বাবা-মা এই ব্যাপারটা জেনে যায়, সেই ভয়ে তারা দুজনেই তখন বাড়ির দিকে ছুটেছিল।

ইসাবের বাবা ইসাব আর অমৃতের জামা অদলবদলের কাহিনি কীভাবে জানতে পেরেছিলেন? জানার পর ইসাবের বাবা কী করেছিলেন?

জামা অদলবদলের কাহিনি জানতে পারা – বাবার মারের হাত থেকে ইসাবকে বাঁচাতে অমৃত জামা অদলবদল করার বুদ্ধি দিয়েছিল। তারা যখন গলিতে ঢুকে নিজেদের জামা অদলবদল করছিল তখন সেই দৃশ্য ইসাবের বাবা দেখেছিলেন। সেভাবেই তিনি জামা অদলবদলের কাহিনি জানতে পারেন।

পরবর্তী ঘটনা – তিনি আনন্দে অমৃতকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। তারপর অমৃতের মাকে ডেকে সমস্ত পাড়াপড়শির সামনে ইসাবের বাবা অমৃত ও ইসাবের পরস্পরের প্রতি ভালোবাসার গল্প শুনিয়েছিলেন।

ওঁর শান্ত গলা শুনে ওদের চিন্তা হলো – ‘ওঁর’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? শান্ত গলা শুনে চিন্তা হওয়ার কারণ কী?

উদ্দিষ্ট জন – উল্লিখিত অংশে ‘ওঁর’ বলতে ইসাবের বাবা হাসান পাঠানের কথা বলা হয়েছে।

শান্ত গলা শুনে চিন্তার কারণ – কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়তে গিয়ে ইসাবের জামা ছিঁড়ে যায়। অমৃত বুঝতে পারে, এর ফলে ইসাবকে বাবার কাছে মার খেতে হবে। তাই তাকে বাবার মারের হাত থেকে বাঁচানোর জন্ম সে নিজের জামাটি ইসাবের সঙ্গে পালটে নেয়। পাড়ার ছেলেরা এজন্য তাদের উদ্দেশ্যে ‘অদল-বদল’ বলে চিৎকার করতে থাকে। আর বাড়ির লোকের কাছে ব্যাপারটি জানাজানি হওয়ার ভয়ে ইসাব-অমৃত তখন সেখান থেকে পালাতে থাকে। এই সময়েই দাওয়ায় খাটিয়ায় বসে হুঁকো খেতে ব্যস্ত ইসাবের বাবা তাদের দুজনকে নিজের কাছে ডাকেন। ইসাবরা ভয় পায় যে, তিনি হয়তো প্রকৃত ঘটনাটা জেনেও, শুধু ভালোবাসার ভান করছেন। ইসাবের বাবার শান্ত গলা শুনে তাই ওদের চিন্তা হয়েছিল।

উনি দশ বছরের অমৃতকে জড়িয়ে ধরলেন – ‘উনি’ কে? কেন অমৃতকে উনি জড়িয়ে ধরলেন?

উনি-র পরিচয় – ‘অদল বদল’ গল্পে ‘উনি’ বলতে ইসাবের বাবাকে বোঝানো হয়েছে।

অমৃতকে জড়িয়ে ধরার কারণ – ইসাবের জামা ছিঁড়ে যাওয়ায়, ইসাবকে তার বাবার মারের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য অমৃত নিজের জামার সঙ্গে তার জামা বদলে নিয়েছিল। কারণ অমৃত বুঝেছিল তার বাবার মারের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য তার মা আছে কিন্তু ইসাবের মা নেই, তার রয়েছে শুধু বাবা। আড়াল থেকে অমৃতের মনের উদারতার এই পরিচয় পেয়ে আনন্দে ইসাবের বাবা অমৃতকে বুকে জড়িয়ে ধরেছিলেন।

বাহালি বৌদি, আজ থেকে আপনার ছেলে আমার। – বাহালি বৌদি কে? বক্তা কেন তাঁকে এ কথা বলেছেন?

বাহালি বৌদির পরিচয় – বাহালি বৌদি হলেন অমৃতের মা।

এ কথা বলার কারণ – ইসাবের ছেঁড়া জামা নিজের গায়ে পরে নিয়ে অমৃত তাকে বাবার হাতে মার খাওয়া থেকে বাঁচিয়েছিল। কারণ সে জানত, ইসাবের মা নেই। অমৃতের মা আছেন, তিনিই অমৃতকে বাবার মারের হাত থেকে বাঁচাবেন। আড়াল থেকে জামা অদল-বদলের এই দৃশ্য দেখে ইসাবের বাবা মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। এত অল্প বয়সে অমৃতের এরকম বন্ধুপ্রীতি আর উদারতার পরিচয় পেয়েই তিনি আলোচ্য উক্তিটি করেছিলেন।

অমৃতের মতো ছেলে পেলে আমি একুশজনকেও পালন করতে রাজি আছি। – বক্তা কে? তাঁর এমন উক্তির কারণ কী?

বক্তা – ইসাবের বাবা হাসান পাঠান হলেন উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা।

এমন উক্তির কারণ – কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়তে গিয়ে ইসাবের জামা ছিঁড়ে গেলে অমৃত নিজের নতুন জামাটা ইসাবকে দিয়ে দেয়। সে তাকে বলে যে, তার মা তাকে বাবার হাতে মার খাওয়া থেকে বাঁচাবেন কিন্তু ইসাবের তো মা নেই। এ কথা ইসাবের বাবা আড়াল থেকে শুনেছিলেন। একটি ছোটোছেলের বন্ধুর প্রতি এই ভালোবাসা এবং এরকম বড়ো মনের পরিচয় পেয়েই ইসাবের বাবা উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন।

ও আমাকে শিখিয়েছে, খাঁটি জিনিস কাকে বলে। — ‘ও’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? সে কাকে, কী শিখিয়েছিল?

উদ্দিষ্ট জন – উল্লিখিত অংশে ‘ও’ বলতে অমৃতকে বোঝানো হয়েছে।

শিক্ষণীয় বিষয় – ইসাবের বাবা ইসাব আর অমৃতের জামা বদলের ঘটনাটা আড়াল থেকে দেখেছিলেন। ইসাবকে অমৃত তার ভালো জামাটা দিয়ে ইসাবের ছেঁড়া জামাটা নিজে নিয়ে বলেছিল যে অমৃতের বাবা অমৃতকে মারলে তার মা তাকে রক্ষা করবেন। অমৃতের এই মন্তব্যকেই ইসাবের বাবা ‘খাঁটি জিনিস’ বলে মনে করেছেন। সংসারে মায়ের যে কতখানি মূল্য তা অমৃত-ই যেন ইসাবের বাবাকে শিখিয়েছিল।

অমৃত ও ইসাবের জামা অদলবদলের কাহিনি যখন সবাই জানতে পারল তখন কী ঘটনা ঘটল?

অমৃত ও ইসাবের পরস্পরের প্রতি ভালোবাসার আর জামা অদলবদলের কাহিনি শুনে পাড়াপড়শির মন ভরে গিয়েছিল। ছেলের দল তাদের ঘিরে অমৃত-ইসাব অদল-বদল, ভাই অদল-বদল বললে অমৃত এবং ইসাবও আর এই ডাক শুনে অপ্রস্তুত বোধ করত না, বরং খুশিই হত তারা। এমনকি গ্রামপ্রধানের কানে গিয়ে যখন এ কথা পৌঁছোল তখন তিনি ঘোষণা করে দিলেন, অমৃত ও ইসাবকে ‘অদল বদল’ বলে ডাকার কথা। সবাই এই ঘোষণায় খুশি হল।

গল্প শুনে তাদেরও বুক ভরে গেল। – কোন্ গল্প? তা শুনে বুক ভরে যাওয়ার কারণ কী?

গল্পটির পরিচয় – অমৃত আর ইসাবের পরস্পরের প্রতি ভালোবাসার গল্পের কথাই এখানে বলা হয়েছে।

গল্প শুনে বুক ভরে যাওয়ার কারণ – ইসাব আর অমৃত ছিল পরস্পরের বন্ধু। তাদের বন্ধুত্ব এতই নিবিড় ছিল যে, তারা একে অপরের জন্য প্রাণ দিতেও রাজি ছিল। আন্তরিকতাই তাদের বন্ধুত্বকে ‘খাঁটি সোনায় পরিণত করেছিল। জামা অদলবদলের ঘটনা তারই জ্বলন্ত উদাহরণ। উভয়ের এই অকৃত্রিম বন্ধুত্বের পরিচয় পেয়ে গর্বে পাড়াপ্রতিবেশীদের বুক ভরে গিয়েছিল।

বরঞ্চ অদল-বদল বলাতে তাদের ভালোই লাগল। – কারা ‘অদল-বদল’ বলেছিল? এ কথা ওদের ভালোলাগার কারণ কী?

অদল-বদল বলা – ছেলের দল বাজি আর বুড়ির বাড়ি পোড়ানো দেখে ফেরার সময় অমৃত আর ইসাবকে ‘অদল-বদল’ বলেছিল।

ভালোলাগার কারণ – অমৃত আর ইসাব পরস্পর জামা বদল করেছিল। ইসাবের ছেঁড়া জামাটা অমৃত পরেছিল। ওদের বন্ধুপ্রীতি দেখে ইসাবের বাবা মুগ্ধ হয়েছিলেন। বিশেষ করে ইসাবের প্রতি অমৃতের এই আন্তরিকতা তাঁর মন ছুঁয়ে গিয়েছিল। ফলে জামা অদলবদলের কারণে তাদের আর ভয় পাওয়ার কোনো কারণ ছিল না। তাই ইসাব আর অমৃত ছেলেদের ‘অদল-বদল’ ডাক শুনে অপ্রস্তুত না হয়ে খুশিই হয়েছিল।

অদল বদল গল্পটি একটি ছোট্ট ছেলে অমৃতের অন্তরের দয়া ও সহানুভূতির গল্প। গল্পটি আমাদের শিক্ষা দেয় যে, আমরা যেকোনো পরিস্থিতিতে অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত। আমরা অন্যের দুঃখ-কষ্টকে নিজের দুঃখ-কষ্ট মনে করে সাহায্য করার চেষ্টা করা উচিত।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

মাধ্যমিক - ভূগোল - বারিমন্ডল - জোয়ার ভাটা - রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

মাধ্যমিক – ভূগোল – বারিমন্ডল – জোয়ার ভাটা – রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – About Author and Story

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – About Author and Story

The Passing Away of Bapu

Class 10 English – The Passing Away of Bapu – Question and Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer