আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক বাংলা সপ্তম পাঠের প্রথম অংশ ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান’ এর বিষয়সংক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এসব প্রশ্ন পরীক্ষায় প্রায়ই আসতে দেখা যায়। আশা করছি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হবে।
লেখক পরিচিতি
ভূমিকা –
সাহিত্যিক রাজশেখর বসু ‘পরশুরাম’ ছদ্মনামেই বেশি পরিচিত। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ হাস্যরসাত্মক গল্পকার, পরিভাষা ও অভিধান রচয়িতা, রসায়নবিদ এবং অনুবাদক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি।
জন্ম ও শৈশব –
1880 খ্রিস্টাব্দের 16 মার্চ বর্ধমান জেলার শক্তিগড়ের কাছে বামুনপাড়া গ্রামে মামার বাড়িতে রাজশেখর বসুর জন্ম হয়। পণ্ডিত চন্দ্রশেখর বসু এবং লক্ষ্মীমণি দেবীর দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন তিনি। তাঁর ছেলেবেলার অনেকটা সময় দ্বারভাঙ্গায় কাটে। মুঙ্গের, খড়গপুর এবং বাংলা দেশের বাইরে ঘুরে তাঁর শৈশব কেটেছে।
শিক্ষাজীবন –
1885 থেকে 1895 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দ্বারভাঙ্গার রাজ স্কুলে পড়াশোনা করে তিনি এনট্রান্স পাস করেন। 1895-1897 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পাটনা কলেজে পড়াশোনা করেন। 1899 খ্রিস্টাব্দে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বিএ পাস করেন। 1900 খ্রিস্টাব্দে রসায়নে এমএ পরীক্ষা দিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন।
কর্মজীবন –
বিজ্ঞানচর্চার প্রতি ভালোবাসা থেকেই রাজশেখর বসু 1903 খ্রিস্টাব্দে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল কেমিক্যাল প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। খুব অল্প মাইনেতে কাজ শুরু করলেও 1904 খ্রিস্টাব্দে নিজের দক্ষতায় তিনি কোম্পানির পরিচালক হন। একদিকে গবেষণার কাজ, অন্যদিকে ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দেন। 1932 খ্রিস্টাব্দে এখান থেকেই তিনি অবসর গ্রহণ করেন এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ডিরেক্টর হিসেবে এই কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত থাকেন।
সাহিত্যজীবন –
1920 খ্রিস্টাব্দে রাজশেখর বসুর লেখালিখি শুরু হয়। 1922 সালে পরশুরাম ছদ্মনামে ‘শ্রীশ্রীসিদ্ধেশ্বরী লিমিটেড’ নামে এক ব্যঙ্গ রচনা প্রকাশ হওয়ার পরই তাঁর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে — লঘুগুরু, বিচিন্তা, ভারতের খনিজ, কুটির শিল্প প্রভৃতি প্রবন্ধগ্রন্থ; কালিদাসের মেঘদূত, বাল্মীকির রামায়ণ, ব্যাসের মহাভারত, গীতা প্রভৃতির অনুবাদ এবং চলন্তিকা নামক অভিধান। এ ছাড়া তাঁর উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থ হলো — গড্ডলিকা, কজ্জলী, হনুমানের স্বপ্ন, ধুস্তরী মায়া প্রভৃতি।
সাহিত্যরীতি – গল্প বলার ঢংয়ে কাহিনিকে ফুটিয়ে তোলা, চরিত্রের নিপুণ বিবরণ দিয়ে তাকে জীবন্ত করে তোলা তাঁর পরিচিত সাহিত্যরীতি। উদ্ভট ঘটনা এবং কল্পনাশক্তির মিশেলে তাঁর সৃষ্ট সাহিত্য হয়ে উঠেছে অনন্য। বুদ্ধিদীপ্ত হাস্যরসের সাহায্যে ব্যঙ্গ-কৌতুক রচনায় তাঁর দক্ষতা বিশেষভাবে লক্ষণীয়।
সম্মাননা –
রাজশেখর বসু 1955 খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত হন। 1956 খ্রিস্টাব্দে তিনি সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত হন। 1935 খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বানান সংস্কার সমিতি এবং 1948 খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিভাষা সংস্কার কমিটির সভাপতিত্ব করেন। 1957-1958 খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডিলিট উপাধিতে ভূষিত করে। 1956 খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার রাজশেখর বসুকে পদ্মভূষণ পুরস্কারে সম্মানিত করে।
জীবনাবসান –
1960 খ্রিস্টাব্দে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজশেখর বসু পরলোকগমন করেন।
উৎস
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধটি 1955 খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত বিচিন্তা গ্রন্থের অন্তর্গত।
বিষয়সংক্ষেপ
বাংলা ভাষায় যাঁরা বিজ্ঞান পড়েন, আলোচ্য প্রবন্ধে রাজশেখর বসু তাঁদের দুটি ভাগে ভাগ করেছেন। যাঁরা ইংরেজি জানেন না বা খুব অল্প জানেন, তাঁরা রয়েছেন প্রথম শ্রেণিতে। অল্পবয়স্ক ছেলেমেয়েরা এবং অল্পশিক্ষিত বয়স্ক মানুষেরা এই শ্রেণিতে পড়েন। দ্বিতীয় শ্রেণিতে আছেন সেইসব মানুষ, যাঁরা ইংরেজি জানেন এবং ইংরেজি ভাষায় সামান্য হলেও বিজ্ঞান পড়েছেন।
প্রথম শ্রেণির পাঠকদের সঙ্গে বিজ্ঞানের বিশেষ পরিচয় নেই, যদিও কয়েকটি সাধারণ পারিভাষিক শব্দ ও বৈজ্ঞানিক তথ্য তাঁদের জানা থাকতে পারে। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞানের খুঁটিনাটি তথ্য সম্পর্কে তাঁরা ওয়াকিবহাল নন। তাঁরা যখন বাংলা ভাষায় লেখা কোনো বৈজ্ঞানিক রচনা পড়েন, তখন বৈজ্ঞানিক বিষয়টি শিখে নিলেই তাঁদের চলে, ভাষা সেখানে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় না। কিন্তু দ্বিতীয় শ্রেণির যাঁরা আছেন, অর্থাৎ যাঁরা ইংরেজি জানেন এবং ইংরেজিতেই বিজ্ঞান পড়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বাংলায় লেখা কোনো বাক্য সহজ মনে হয় না, অর্থও পরিষ্কার হয় না। এর কারণ হলো ইংরেজি ভাষার প্রতি পক্ষপাত। এই শ্রেণির পাঠকদের যেহেতু ভাষাই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় এবং সেই সমস্যা এড়িয়ে বিষয়টি জানতে হয়, তাই এই পাঠকদের বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান পড়তে হলে অন্য পাঠকদের তুলনায় বেশি প্রচেষ্টা করতে হয়।
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চায় কয়েকটি বাধার কথা প্রাবন্ধিক উল্লেখ করেছেন। প্রথম বাধা হলো পরিভাষার সমস্যা। বাংলায় পারিভাষিক শব্দের অভাব দূর করতে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ উদ্যোগ নিয়েছিল। সেখানে পণ্ডিত লেখকরা নানা বিষয়ের পরিভাষা রচনা করেছেন। কিন্তু তাঁরা একসাথে কাজ না করায় নতুন রচিত পরিভাষায় সংগতি থাকেনি। এরপরে 1936 খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞানের অধ্যাপক, ভাষাতত্ত্ববিদ, সংস্কৃতজ্ঞ ও কয়েকজন লেখককে নিয়ে পরিভাষা রচনার একটি প্রচেষ্টা চালায় এবং সেটি অনেক বেশি সফল হয়। লেখকের মতে, বিজ্ঞান রচনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনমতো বাংলা শব্দ না পাওয়া গেলে ইংরেজি শব্দই বাংলা বানানে ব্যবহার করা যায়, যেমন অক্সিজেন, প্যারাডাইক্লোরোবেনজিন ইত্যাদি।
পাশ্চাত্য দেশের তুলনায় এদেশের জনসাধারণের প্রাথমিক বিজ্ঞানের সঙ্গে পরিচয় অত্যন্ত কম। ফলে বাংলায় পপুলার সায়েন্স লেখা সহজ কাজ নয়। তবে প্রাবন্ধিক মনে করেন, এদেশে বিজ্ঞানশিক্ষার প্রসার ঘটার সঙ্গে সঙ্গে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।
বিজ্ঞান আলোচনার জন্য প্রয়োজনীয় রচনাপদ্ধতি অনেক লেখকই আয়ত্ত করতে পারেননি। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের ভাষা আড়ষ্ট ও ইংরেজি শব্দের আক্ষরিক অনুবাদ হয়ে দাঁড়ায়। ইংরেজি শব্দের অর্থের ব্যাপ্তির সঙ্গে মিলিয়ে বাংলা প্রতিশব্দ ব্যবহার করতে গিয়ে তাঁরা অদ্ভুত শব্দ প্রয়োগ করেন। ইংরেজিতে কোনো বাক্য ভেবে নিয়ে তা বাংলায় প্রকাশ করতে গিয়ে রচনার ভাষা উৎকট হয়ে পড়ে। “When sulphur burns in air, the nitrogen does not take part in the reaction” – এই বাক্যের বাংলা অনুবাদ যদি হয় “গন্ধক যখন বাতাসে পোড়ে, নাইট্রোজেন প্রতিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না,” তবে তা সঠিক হয় না। বরং “নাইট্রোজেনের কোনো পরিবর্তন হয় না” বললে বিষয়টি অনেক বেশি স্পষ্ট হয়।
আবার অনেকে মনে করেন, পারিভাষিক শব্দ একেবারে বাদ দিলে বিষয়টি সহজ হয়। কিন্তু সবসময় তা ঘটে না। যেমন, ‘আলোকতরঙ্গ’-এর বদলে ‘আলোর নাচন’ বা ‘কাঁপন’ লিখলে তা বৈজ্ঞানিকভাবে যথাযথ হয় না এবং বাক্যের অর্থও স্পষ্ট হয় না। এ-প্রসঙ্গেই প্রাবন্ধিক শব্দের ‘ত্রিবিধ’ (তিন প্রকার) শক্তির কথা বলেছেন। তিনি অভিধা, লক্ষণা ও ব্যঞ্জনা – এই তিন প্রকার শক্তির মধ্যে বৈজ্ঞানিক সাহিত্যে ‘অভিধা’-র ব্যবহারই যথাযথ বলে মনে করেছেন। প্রবন্ধের শেষে রাজশেখর বসু বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ রচয়িতাদের আরেকটি দোষের কথা বলেছেন। অল্প বিদ্যার ওপর নির্ভর করে বিজ্ঞান রচনার ফলে অনেক ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভুল থেকে যায়। তাই সম্পাদকের উচিত কোনো বৈজ্ঞানিক রচনা প্রকাশের আগে অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে দিয়ে তা যাচাই করিয়ে নেওয়া।
নামকরণ
যে কোনো সাহিত্যের ক্ষেত্রেই নামকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নামকরণের মাধ্যমেই পাঠক বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা পেতে পারে এবং লেখকের চিন্তাধারার আভাসও পাওয়া যায়। যেকোনো রচনার নামকরণ বিভিন্ন দিক থেকে হতে পারে। কখনও তা হয় চরিত্রধর্মী, আবার কখনও বিষয়মুখী। অনেক সাহিত্যিকের প্রথম পছন্দ ব্যঞ্জনাধর্মী নামকরণও। প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু তাঁর ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান’ রচনায় বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান রচনার ক্ষেত্রে অনেকগুলি সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন। এ প্রসঙ্গে প্রথমেই তিনি পাঠকদের অবস্থান স্পষ্ট করতে চেয়েছেন। পাঠকদের মধ্যে ইংরেজি না জানা অল্পবয়স্ক ছেলেমেয়ে এবং অল্পশিক্ষিত বয়স্ক লোক যেমন আছেন, তেমনি ইংরেজি জানা ও ইংরেজিতে বিজ্ঞান পড়া অল্প কিছু পাঠকও আছেন। প্রথম শ্রেণির পাঠকেরা বিজ্ঞান সেভাবে পড়েননি, তবে কোনো ভাষার প্রতি পক্ষপাত তাঁদের নেই। কিন্তু দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠকদের ক্ষেত্রে ভাষাগত সমস্যা রয়েছে। তাই ইংরেজি প্রবন্ধ পড়ায় অভ্যস্ত সেইসব মানুষের কাছে বাংলায় রচিত বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধের অর্থ স্পষ্ট হয় না।
পাঠকদের এই অবস্থান নির্দিষ্ট করার পর, বাংলায় বিজ্ঞান রচনার ক্ষেত্রে যে যে সমস্যা রয়েছে, তার আলোচনা শুরু করেন তিনি। প্রথমেই আসে পারিভাষিক শব্দের অভাবের কথা। এই সমস্যার সমাধানে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যোগী হয়। তবুও এখনও বহু ইংরেজি শব্দকে আমাদের বাংলা বানানে লিখতে হয়। এ দেশের জনসাধারণের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান অত্যন্ত কম; সেই কারণে এখানে ইউরোপ বা আমেরিকার মতো জনপ্রিয় বিজ্ঞান রচনা করা কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়ায়। তাই প্রথমে বিজ্ঞানশিক্ষার প্রসারের প্রয়োজন। অনুবাদের ক্ষেত্রে আক্ষরিক অনুবাদ ও আড়ষ্টতা থেকে দূরে থাকা, সহজ ও স্পষ্ট বাংলায় লেখা, অলংকার, উৎপ্রেক্ষা, অতিশয়োক্তি বাদ দিয়ে শব্দের মূল অর্থকে সামনে রাখা—এসব বিজ্ঞানের প্রসারে প্রয়োজন। এ ছাড়াও খেয়াল রাখতে হবে, বৈজ্ঞানিক তথ্য যথাযথভাবে না জেনে যেন প্রবন্ধ রচনা করা না হয়। তাতে রচনার মধ্যে তথ্যগত ভুল থাকার সম্ভাবনা থেকে যায়।
রাজশেখর বসুর এই প্রবন্ধের লক্ষ্যই হল বাংলায় বিজ্ঞান রচনাকে আরও সহজ এবং জনপ্রিয় করে তোলার জন্য যেসব সমস্যা রয়েছে, তা দূর করা। প্রবন্ধের বিভিন্ন উদাহরণের মাধ্যমে তিনি সেই সমস্যাগুলি আলোচনা করেছেন এবং সমাধানের পথ দেখিয়েছেন। এই প্রবন্ধের নামকরণ থেকে স্পষ্টই তাঁর বক্তব্য ধারণা করা যায় এবং এই কারণেই তাঁর দেওয়া নামটি সার্থক হয়েছে।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক বাংলার সপ্তম পাঠের প্রথম অংশ, ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান,’ এর বিষয়সংক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য সহায়ক হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকে, তাহলে আমাকে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমি যথাসাধ্য উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। এছাড়াও, পোস্টটি আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।