আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক বাংলার সপ্তম পাঠের প্রথম অংশ, ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান,’ থেকে কিছু অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসতে পারে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হবে।
রাজশেখর বসুর ছদ্মনাম কী?
রাজশেখর বসুর ছদ্মনাম হল পরশুরাম।
রাজশেখর বসু রচিত দুটি গ্রন্থের নাম লেখো।
রাজশেখর বসু রচিত দুটি গ্রন্থের নাম হল গড্ডলিকা এবং হনুমানের স্বপ্ন।
রাজশেখর বসু রচিত বাংলা অভিধানের নাম কী?
রাজশেখর বসু রচিত বাংলা অভিধানের নাম হল চলন্তিকা।
তোমার পাঠ্য বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধটি কোন্ গ্রন্থ থেকে গৃহীত?
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধটি রাজশেখর বসু রচিত বিচিন্তা গ্রন্থ থেকে গৃহীত।
তাদের মোটামুটি দুই শ্রেণিতে ভাগ করা যেতে পারে – তাদের বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে?
আলোচ্য অংশে তাদের বলতে বিজ্ঞানবিষয়ক বাংলা গ্রন্থের পাঠকদের বোঝানো হয়েছে।
যাদের জন্য বিজ্ঞান বিষয়ক বাংলা গ্রন্থ বা প্রবন্ধ লেখা হয় তাদের মোটামুটি দুই শ্রেণিতে ভাগ করা যেতে পারে। – শ্রেণি দুটি কী কী?
প্রথম শ্রেণি হল যারা ইংরেজি জানে না বা অতি অল্প জানে, এবং দ্বিতীয় শ্রেণি হল যারা ইংরেজি জানে।
প্রথম শ্রেণির পাঠকদের সম্পর্কে প্রাবন্ধিক কী বলেছেন?
প্রাবন্ধিক বলেছেন, প্রথম শ্রেণির পাঠকরা গুটিকয়েক ইংরেজি পারিভাষিক শব্দ ছাড়া বিজ্ঞানের সঙ্গে তেমন পরিচিত নন।
গুটিকতক ইংরেজি পারিভাষিক শব্দ হয়তো তারা শিখেছে। – শব্দগুলি কী?
প্রবন্ধে উল্লিখিত গুটিকতক ইংরেজি পারিভাষিক শব্দগুলি হল টাইফয়েড, আয়োডিন, মোটর, ক্রোটন, জেব্রা।
অনেক রকম স্থূল তথ্যও তাদের জানা থাকতে পারে – কীরকম স্থূল তথ্যের কথা প্রাবন্ধিক বলেছেন?
প্রাবন্ধিক উল্লেখ করেছেন, যেমন জল এবং কপূর উবে যায়, লাউ-কুমড়ো গাছে দুই ধরনের ফুল হয় — এ ধরনের স্থূল তথ্য তারা জানে।
এই শ্রেণির পাঠক ইংরেজি ভাষার প্রভাব থেকে মুক্ত। – এই শ্রেণির বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে?
এই শ্রেণির বলতে বিজ্ঞানের সঙ্গে পূর্বপরিচিত নয় এমন পাঠকদের বোঝানো হয়েছে।
ছেলেবেলায় রাজশেখর বসু কার লেখা জ্যামিতি বই পড়তেন?
ছেলেবেলায় রাজশেখর বসু ব্রহ্মমোহন মল্লিকের লেখা বাংলা জ্যামিতি বই পড়তেন।
এর মানে বুঝতে বাধা হয়নি। – এর মানে বলতে কী?
এখানে এর মানে বলতে ব্রহ্মমোহন মল্লিকের লেখা নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধ সরলরেখার উপর সমবাহু ত্রিভুজ আঁকতে বলা হয়েছে, সেটি বুঝতে প্রাবন্ধিকের অসুবিধা হয়নি।
তাদের কাছে উক্ত প্রতিজ্ঞাবাক্যটি সুশ্রাব্য ঠেকবে না। — তাদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে?
এখানে তাদের বলতে যারা ইংরেজিতে জ্যামিতি পড়েছে, তাদের বোঝানো হয়েছে।
যে লোক আজন্ম ইজার পড়েছে – আজন্ম, ইজার এই শব্দ দুটির অর্থ লেখো।
আজন্ম বলতে জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত বোঝানো হয়েছে, এবং ইজার বলতে পাজামা বা প্যান্টালুন বোঝানো হয়েছে।
বৈজ্ঞানিক সন্দর্ভ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
বিজ্ঞানবিষয়ক প্রবন্ধ বা রচনাকে বৈজ্ঞানিক সন্দর্ভ বলা হয়েছে।
দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠক যখন মাতৃভাষায় বৈজ্ঞানিক সন্দর্ভ পড়ে তখন তার কোন্ চেষ্টা আবশ্যক?
দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠকদের ইংরেজির প্রতি পক্ষপাত ত্যাগ করে মাতৃভাষার পদ্ধতি ভালোবেসে আয়ত্ত করার চেষ্টা প্রয়োজন।
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার একটি বাধা কী যা প্রাবন্ধিক উল্লেখ করেছেন?
প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসুর মতে, বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার একটি বড় বাধা হলো বাংলায় পারিভাষিক শব্দের অভাব।
তার ফলে সংকলিত পরিভাষার সাম্য হয়নি – ‘তার ফলে’ বলতে প্রাবন্ধিক কী বোঝাতে চেয়েছেন?
প্রাবন্ধিক বলতে চেয়েছেন, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের বিদ্যোৎসাহী লেখকেরা একত্রিত হয়ে কাজ না করায়, একই ইংরেজি শব্দের বিভিন্ন প্রতিশব্দ রচিত হয়েছে। ফলে নতুন রচিত পরিভাষাগুলোর মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করা যায়নি।
পরিভাষা রচনার ক্ষেত্রে কাদের উদযোগে ত্রুটি ছিল বলে প্রাবন্ধিক মন্তব্য করেছেন?
পরিভাষা রচনায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের বিদ্যোৎসাহী লেখকদের উদ্যোগে ত্রুটি ছিল বলে প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু মন্তব্য করেছেন।
তার ফলে তাঁদের চেষ্টা অধিকতর সফল হয়েছে। – তার ফলে কথাটি প্রাবন্ধিক কেন ব্যবহার করেছেন?
1936 খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিযুক্ত পরিভাষা সমিতিতে বিভিন্ন বিষয়ের অধ্যাপক এবং লেখকরা একযোগে কাজ করেছিলেন বলে তাঁদের পরিভাষা নির্মাণের চেষ্টা অধিকতর সফল হয়েছিল। একযোগে কাজ করার কারণেই প্রাবন্ধিক ‘তার ফলে’ কথাটি ব্যবহার করেছেন।
পরিভাষা সংকলনে কাদের চেষ্টা অধিকতর সফল হয়েছে বলেছেন প্রাবন্ধিক?
1936 খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নিযুক্ত পরিভাষা সমিতির পরিভাষা নির্মাণের চেষ্টা অনেক বেশি সফল হয়েছিল বলে মনে করেন প্রাবন্ধিক।
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কবে পরিভাষা সমিতি নিযুক্ত করেছিলেন?
1936 খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পরিভাষা সমিতি নিযুক্ত করেছিলেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নিযুক্ত পরিভাষা সমিতির বিশেষত্ব কী?
এই সমিতিতে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার অধ্যাপক, ভাষাতত্ত্বজ্ঞ, সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত এবং লেখকেরা একযোগে কাজ করেছিলেন, যা তাঁদের কাজকে সফল করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় নিযুক্ত পরিভাষা সমিতি কী বিধান দিয়েছে?
অথবা, বিশ্ববিদ্যলয় নিযুক্ত পরিভাষা সমিতি নবাগত রাসায়নিক বস্তুর ইংরেজি নাম সম্বন্ধে কী বিধান দিয়েছিলেন?
নতুন কোনো রাসায়নিক বস্তুর ইংরেজি নামই বাংলায় ব্যবহার করা যাবে, এই বিধান দিয়েছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নিযুক্ত পরিভাষা সমিতি।
উপযুক্ত পরিভাষা না পাওয়া পর্যন্ত প্রাবন্ধিক কী পরামর্শ দিয়েছেন?
প্রাবন্ধিক পরামর্শ দিয়েছেন, উপযুক্ত বাংলা পরিভাষা না পাওয়া পর্যন্ত বাংলা বানানে ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করা যেতে পারে।
আমাদের সরকার ক্রমে ক্রমে রাজকার্যে দেশি পরিভাষা চালাচ্ছেন। — তাতে অনেকে মুশকিলে পড়েছেন কেন?
সরকার দেশি পরিভাষা চালু করায় অনেকে মুশকিলে পড়েছেন, কারণ তাঁরা ইংরেজিতে অভ্যস্ত ছিলেন, ফলে নতুন পরিভাষাগুলি তাঁদের নতুন করে শিখতে হচ্ছে।
বৈজ্ঞানিক সন্দর্ভ বোঝা কঠিন। – এ কথা কেন বলা হয়েছে?
প্রাবন্ধিকের মতে, এদেশের মানুষের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান কম। প্রাথমিক বিজ্ঞান সম্পর্কে ধারণা না থাকলে সাধারণ মানুষের পক্ষে বৈজ্ঞানিক সন্দর্ভ বোঝা কঠিন।
কোন্ দেশে বৈজ্ঞানিক সন্দর্ভ লেখা সহজ এবং কেন?
ইউরোপ এবং আমেরিকার মতো পাশ্চাত্য দেশে বৈজ্ঞানিক সন্দর্ভ লেখা সহজ, কারণ সেখানে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার ঘটেছে। তাই সাধারণ মানুষ বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলো সহজেই বুঝতে পারে।
তাঁরা এ – বিষয়ে অবহিত না হলে তাঁদের লেখা জনপ্রিয় হবে না। – এরূপ বলার তাৎপর্য কী?
আমাদের দেশের জনসাধারণের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান সীমিত, এমনকি প্রাথমিক বিজ্ঞানের সঙ্গেও তাদের খুব কম যোগ রয়েছে। বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ রচয়িতাদের এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
কালক্রমে এ দেশে বিজ্ঞান শিক্ষার বিস্তার হলে এই অসুবিধা দূর হবে – কোন অসুবিধার কথা বলা হয়েছে?
বাংলা ভাষায় বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ লেখার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের প্রাথমিক বিজ্ঞানের সঙ্গে পরিচয় না থাকার কারণে প্রবন্ধ বোঝার যে অসুবিধা হচ্ছে, সেটির কথা বলা হয়েছে।
তখন বৈজ্ঞানিক সাহিত্য রচনা সুসাধ্য হবে। — কখন সুসাধ্য হবে?
এ দেশে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার ঘটলে, জনসাধারণ বিজ্ঞানের বিষয়ে সচেতন হবে এবং তখন বৈজ্ঞানিক সাহিত্য লেখা ও বোঝা সহজ হবে।
এই দোষ থেকে মুক্ত না হলে বাংলা বৈজ্ঞানিক সাহিত্য সুপ্রতিষ্ঠিত হবে না। – এই দোষ বলতে প্রাবন্ধিক কী বুঝিয়েছেন?
ভাষার আড়ষ্টতা এবং ইংরেজির আক্ষরিক অনুবাদের ত্রুটি দূর না করলে, বাংলা ভাষায় বৈজ্ঞানিক সাহিত্য সুপ্রতিষ্ঠিত হবে না।
এজন্য অনেক সময় তাঁরা অদ্ভুত অদ্ভুত শব্দ প্রয়োগ করেন। – কেন তাঁরা এরুপ করেন?
ইংরেজি শব্দের মতো বাংলা শব্দেও অর্থের ব্যাপ্তি আনার চেষ্টায় অনেক সময় লেখকরা অদ্ভুত শব্দ প্রয়োগ করেন।
কীসের অনুবাদকে লেখক উৎকট বলেছেন এবং কী লিখলে ঠিক হয় বলেছেন?
লেখকের মতে, Sensitized Paper – এর অনুবাদ স্পর্শকাতর কাগজ লিখলে তা অর্থের দিক থেকে উৎকট হয়। বরং সুগ্রাহী কাগজ লিখলে তা সঠিক হয়।
Sensitized paper – এর ঠিক অনুবাদ কী?
Sensitized Paper-এর সঠিক অনুবাদ হওয়া উচিত সুগ্রাহী কাগজ।
এতে রচনা উৎকট হয়। — কী কারণে রচনা উৎকট হয় বলেছেন প্রাবন্ধিক?
বাংলা ভাষায় বৈজ্ঞানিক সাহিত্য রচনা করার সময়, যদি ইংরেজিতে ভেবে নিয়ে তা হুবহু বাংলায় অনুবাদ করা হয়, তখন রচনা উৎকট হয়ে যায়।
এ রকম বর্ণনা বাংলা ভাষায় প্রকৃতিবিরুদ্ধ। — কীরকম বর্ণনা প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক এই উক্তি করেছেন?
The atomic engine has not even reached the blueprint stage – এর বাংলা পরমাণু ইঞ্জিন নীল চিত্রের অবস্থাতেও পৌঁছায়নি এই ধরনের বর্ণনাকে প্রাবন্ধিক প্রকৃতিবিরুদ্ধ বলেছেন।
এ রকম বর্ণনা বাংলা ভাষায় প্রকৃতিবিরুদ্ধ। – কীরকম লিখলে ভালো হয় বলেছেন প্রাবন্ধিক?
প্রাবন্ধিকের মতে, The atomic engine has not even reached the blueprint stage এর বাংলা হওয়া উচিত পরমাণু ইঞ্জিনের নকশা পর্যন্ত এখনও প্রস্তুত হয়নি।
কী প্রসঙ্গে লেখক মাছিমারা নকল কথাটি বলেছেন?
যখন গন্ধক হাওয়ায় পোড়ে, তখন নাইট্রোজেন প্রতিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না — এই আক্ষরিক অনুবাদকে প্রাবন্ধিক মাছিমারা নকল বলেছেন।
এই ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়। — কোন্ ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয় বলেছেন প্রাবন্ধিক?
প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসুর মতে, সমস্ত পারিভাষিক শব্দ বাদ দিয়ে বক্তব্য প্রকাশ করলে রচনা সহজ হয় — এই ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়।
স্থানবিশেষে পারিভাষিক শব্দ যে বাদ দেওয়া চলে তোমার পাঠ্য বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধ থেকে তার একটা উদাহরণ দাও।
অমেরুদণ্ডী শব্দের বদলে যেসব প্রাণীর শিরদাঁড়া নেই, এরকম লিখে স্থানবিশেষে পারিভাষিক শব্দ বাদ দেওয়া চলে।
পরিভাষার উদ্দেশ্য কী বলেছেন লেখক?
অথবা, পরিভাষার উদ্দেশ্য কী?
প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসুর মতে, পরিভাষার উদ্দেশ্য ভাষাকে সংক্ষিপ্ত করা এবং তার অর্থ সুনির্দিষ্ট করা।
শব্দ সম্পর্কে আলংকারিকরা যে ত্রিবিধ বলেছেন তা কী কী?
অথবা, আমাদের আলংকারিকগণ শব্দের ত্রিবিধ কথা বলেছেন – কোন্ ত্রিবিধ কথা – র প্রসঙ্গ লেখক স্মরণ করেছেন?
অথবা, আমাদের আলংকারিকগণ শব্দের ত্রিবিধ কথা বলেছেন – শব্দের ত্রিবিধ কথা কী?
রাজশেখর বসু রচিত বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধে বলা হয়েছে, শব্দ সম্পর্কে আলংকারিকরা অভিধা, লক্ষণা এবং ব্যঞ্জনা — এই তিনটি বৃত্তির উল্লেখ করেছেন।
সাধারণদের জন্য লিখিত বৈজ্ঞানিক সন্দর্ভে পারিভাষিক শব্দের কীরূপ ব্যবহারের পরামর্শ প্রাবন্ধিক দিয়েছেন?
প্রাবন্ধিকের মতে, সাধারণদের জন্য লিখিত বৈজ্ঞানিক সন্দর্ভে অল্প পরিচিত পারিভাষিক শব্দ প্রথমবার ব্যবহার হলে তার ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত। পরে শুধু পারিভাষিক শব্দটির ব্যবহারই যথেষ্ট।
অভিধা কী? একটি উদাহরণ দাও।
শব্দের মুখ্য অর্থ প্রকাশিত হয় যে বৃত্তির দ্বারা, তার নাম অভিধা। যেমন — পাঁকে জন্মে যা, তা পঙ্কজ হলেও শব্দটির অভিধা পদ্ম অর্থেই সীমাবদ্ধ।
লক্ষণা কী? একটি উদাহরণ দাও।
যখন কোনো শব্দের মুখ্য অর্থের চেয়ে গৌণ অর্থ বেশি ব্যবহৃত হয়, তখন তা হয় লক্ষণা। যেমন — এই রিকশা, এদিকে এসো — এখানে রিকশা নয়, রিকশাওয়ালাই লক্ষণার্থে ফুটে উঠেছে।
ব্যঞ্জনা কী? একটি উদাহরণ দাও।
যে প্রবণতার কারণে শব্দ নতুন অর্থের ইঙ্গিত তৈরি করে, তাকে বলা হয় ব্যঞ্জনা। যেমন — অরণ্যে রোদন, যার আক্ষরিক অর্থ অন্য কিছু হলেও ব্যঞ্জনা অনুযায়ী অর্থ হলো নিষ্ফল খেদ।
একটি দোষ প্রায় নজরে পড়ে। – কোন্ দোষের কথা বলা হয়েছে?
বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে লেখকরা বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে যেসব ভুল তথ্য দেন, সেটাই এখানে উল্লেখ করা দোষ।
অলংকারের প্রয়োগের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক সাহিত্য ও সাধারণ সাহিত্যে কী পার্থক্য রয়েছে?
বৈজ্ঞানিক সাহিত্য অলংকারহীন, সহজ এবং স্পষ্ট হওয়া উচিত। সাধারণ সাহিত্যের ভাষা উপমা, উৎপ্রেক্ষা প্রভৃতি অলংকারে পূর্ণ কাব্যিক হতে পারে।
কোন্ উক্তিকে লেখক কাব্যের উপযুক্ত, ভূগোলের উপযুক্ত নয় বলেছেন?
প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু বলেছেন, হিমালয় যেন পৃথিবীর মানদণ্ড — কালিদাসের এই উক্তি কাব্যের উপযুক্ত, ভূগোলের উপযুক্ত নয়।
বৈজ্ঞানিক সাহিত্যে যত কম থাকে তত ভালো। – কী কম থাকার কথা বলা হয়েছে?
লক্ষণা বা ব্যঞ্জনা এবং উৎপ্রেক্ষা, অতিশয়োক্তি ইত্যাদি অলংকার বৈজ্ঞানিক রচনায় যত কম থাকে, তত ভালো।
এই কথাটি সকল লেখকেরই মনে রাখা উচিত। – কোন্ কথা মনে রাখা উচিত?
বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধের ভাষা অত্যন্ত সরল ও স্পষ্ট হওয়া উচিত — এই কথাটি সমস্ত বাংলা ভাষায় বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ রচয়িতাদের মনে রাখা উচিত।
এই রকম ভুল লেখা সাধারণ পাঠকের পক্ষে অনিষ্টকর। – কোন ভুলের কথা বলেছেন প্রাবন্ধিক?
প্রাবন্ধিক বলেছেন, অক্সিজেন বা হাইড্রোজেন স্বাস্থ্যকর এ বিষয়ে কোনো বৈজ্ঞানিক যুক্তি নেই। কিন্তু ওজোন গ্যাস স্বাস্থ্যকর — এই ধরনের ভুল লেখা সাধারণ পাঠকের জন্য অনিষ্টকর।
অল্পবিদ্যা ভংয়করী প্রবাদটিকে একটি বাক্যে প্রয়োগ করো।
হাতুড়ে ডাক্তাররা যেভাবে সামান্য জ্ঞান নিয়ে মানুষের চিকিৎসা করে, তাতে বিপদ ডেকে আনতে পারে। কথায় বলে, অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী।
অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী কোন্ বিষয় সম্পর্কে এই অভিমত দেওয়া হয়েছে?
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনার সময় ভুল তথ্য দেওয়ার প্রসঙ্গে এই অভিমতটি দেওয়া হয়েছে।
কিছুদিন আগে একটি পত্রিকায় দেখেছি – কিছুদিন আগে পত্রিকায় প্রাবন্ধিক কী দেখেছেন?
প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু কিছুদিন আগে একটি পত্রিকায় দেখেছিলেন যে অক্সিজেন বা হাইড্রোজেনকে স্বাস্থ্যকর বলে দাবি করা হচ্ছে, কিন্তু এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এরা শুধুমাত্র জীবনে বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। তবে ওজোন গ্যাসকে স্বাস্থ্যকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক বাংলার সপ্তম পাঠের প্রথম অংশ, ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান,’ নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এ ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই পরীক্ষায় দেখা যায়। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। যদি কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকে, তবে আপনারা টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। এছাড়া, এই পোস্টটি আপনার পরিচিতদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।