নদীর যাত্রা শুরু হয় পাহাড়ের চূড়া থেকে, যেখানে দ্রুত প্রবাহিত জল ক্ষয়কার্যের মাধ্যমে পাহাড় কেটে নদী তৈরি করে। এরপর নদী সমভূমি দিয়ে প্রবাহিত হতে হতে ধীর গতিতে সমুদ্রের দিকে এগিয়ে যায়। এই সময় নদী তার বহন করে আনা পলি, বালি, কাদা ইত্যাদি নদীতলদেশে জমা করে। এই প্রক্রিয়াকেই নদীর অবক্ষেপণ বলা হয়।
নিম্নগতিতে নদীর প্রধান কাজ অবক্ষেপণ – ব্যাখ্যা করো।
নদী যখন মোহানার কাছাকাছি চলে আসে, তখন শুরু হয় নদীর নিম্নগতি। এই অংশে ভূমির ঢাল খুব কমে যায় বলে নদী অত্যন্ত ধীরগতিতে প্রবাহিত হয়। এজন্য নদীর ক্ষয়কার্যের ক্ষমতা থাকে না এবং বহন ক্ষমতাও খুব কমে যায়। ফলে ঊর্ধ্বগতি ও মধ্যগতি থেকে বহন করে আনা পলি, বালি প্রভৃতি নদী আর বহন করতে পারে না, এগুলি নদীখাতে জমতে শুরু করে। সুতরাং, বদ্বীপ প্রবাহ বা নিম্নগতিতে নদীর প্রধান কাজ হয় অবক্ষেপণ।
আরও পড়ুন – জলপ্রপাত কাকে বলে? জলপ্রপাতের শ্রেণিবিভাগ করো।
নদী সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
নদী কি?
উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল বা মালভূমি থেকে বৃষ্টির জল, হিমবাহ গলা জল অথবা হ্রদ বা ঝর্ণার জল যখন ভূমির ঢাল অনুসরণ করে বিভিন্ন গতিতে প্রবাহিত হয়ে স্বাভাবিক জলধারা সৃষ্টি করে ও কোনো সাগর, মহাসাগর, হ্রদ বা অন্য কোনো জলাশয়ে গিয়ে পতিত হয়, তখন তাকে নদী বলে।
আদর্শ নদী কি?
উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত যে নদীর গতিপথে ক্ষয়সাধন, বহন এবং অবক্ষেপণ এই তিনটি কাজ সুস্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়, তাকে আদর্শ নদী বলে। গঙ্গা নদীকে আদর্শ নদীর উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
শাখা নদী কি?
নদীর মূল জলপ্রবাহ থেকে যেসব জলধারা শাখার আকারে বেরিয়ে অন্যত্র পতিত হয়, তাকে শাখানদী বলে। পদ্মা গঙ্গার একটি প্রধান শাখানদী।
উপনদী কি?
প্রধান নদীর গতিপথে অনেকস্থানে ছোট ছোটো নদী এসে মূল নদীতে মিলিত হয়, এইসব ছোটো নদীকে প্রধান নদীর উপনদী বলে। যমুনা গঙ্গার একটি উপনদী।
নদী অববাহিকা কি?
যে অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রধান নদী এবং তার শাখানদী ও উপনদী প্রবাহিত হয় সেই অঞ্চলকে মূল নদীর অববাহিকা বলে। উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের সমভূমি হল গঙ্গার অববাহিকা।
নদী উপত্যকা কি?
নদীর উৎপত্তি স্থল থেকে নদীর মোহনা পর্যন্ত যে খাতের মধ্যদিয়ে নদীর জলধারা প্রবাহিত হয়, সেই খাতকে নদী উপত্যকা বলে।