এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “সুরক্ষিত অরণ্য ও সংরক্ষিত অরণ্য বলতে কী বোঝো? সুরক্ষিত অরণ্য ও সংরক্ষিত অরণ্যের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদ” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

সুরক্ষিত অরণ্য ও সংরক্ষিত অরণ্য বলতে কী বোঝো?
সুরক্ষিত অরণ্য –
যে নির্দিষ্ট অরণ্যে উদ্ভিদ ও প্রাণী সুরক্ষিত থাকে এবং এই অরণ্যের ওপর নির্ভরশীল মানুষদের কাষ্ঠ সংগ্রহ, বনজ সম্পদ সংগ্রহ ও শিকারের অনুমতি দেওয়া হয়, তাকে সুরক্ষিত অরণ্য বলে। যেমন – ছোটোনাগপুর মালভূমির বহু অরণ্য হল সুরক্ষিত অরণ্য।
সংরক্ষিত অরণ্য –
যে নির্দিষ্ট অরণ্যে প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য মানুষের প্রবেশাধিকার এবং বিভিন্ন প্রকার ক্রিয়াকলাপ, যেমন – পশুশিকার, পশুচারণ, গাছকাটা প্রভৃতি নিষিদ্ধ তাকে সংরক্ষিত অরণ্য বলে।
উদাহরণ – গুজরাটের গির প্রভৃতি।
সুরক্ষিত অরণ্য ও সংরক্ষিত অরণ্যের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
সুরক্ষিত অরণ্য ও সংরক্ষিত অরণ্যের মধ্যে পার্থক্য –
বিষয় | সুরক্ষিত অরণ্য | সংরক্ষিত অরণ্য |
সীমানা | সুরক্ষিত অরণ্যের সীমানা নির্দিষ্ট নয়। | সংরক্ষিত অরণ্য নির্দিষ্ট সীমানাভুক্ত। |
প্রকৃতি | উদ্ভিদ কেবলমাত্র সরকারি ভাবে সুরক্ষিত। | উদ্ভিদ ও বন্যপ্রাণী বিশেষভাবে সংরক্ষণ করা হয়। |
প্রবেশ | সুরক্ষিত অরণ্যে প্রবেশের জন্য অনুমতি লাগে না। | সংরক্ষিত অরণ্যে প্রবেশের জন্য অনুমতি লাগে। |
কঠোরতা | বিশেষ অনুমতি নিয়ে পশু শিকার এবং বৃক্ষচ্ছেদন করা যায়। | পশুশিকার ও বৃক্ষচ্ছেদন দন্ডনীয় অপরাধ। |
বসবাস | অরণ্য নির্ভর কিছু সংখ্যক আদিবাসী মানুষ বাস করে। | মানুষের বসবাস নিষিদ্ধ। |
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
সুরক্ষিত অরণ্য ও সংরক্ষিত অরণ্য কী?
1. সুরক্ষিত অরণ্য – যে অরণ্যে উদ্ভিদ ও প্রাণী সুরক্ষিত থাকে, কিন্তু স্থানীয় মানুষদের সীমিতভাবে কাঠ সংগ্রহ, বনজ সম্পদ আহরণ ও শিকারের অনুমতি দেওয়া হয়।
2. সংরক্ষিত অরণ্য – যে অরণ্যে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য সাধারণ মানুষের প্রবেশ, শিকার, গাছ কাটা ইত্যাদি নিষিদ্ধ।
সুরক্ষিত ও সংরক্ষিত অরণ্যের উদাহরণ দাও।
1. সুরক্ষিত অরণ্য – ছোটোনাগপুর মালভূমির কিছু অরণ্য।
2. সংরক্ষিত অরণ্য – গুজরাটের গির অরণ্য, সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ।
সংরক্ষিত অরণ্যে কেন মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ?
সংরক্ষিত অরণ্যের উদ্দেশ্য হলো বন্যপ্রাণী ও প্রাকৃতিক পরিবেশকে রক্ষা করা। মানুষের অনিয়ন্ত্রিত প্রবেশ, শিকার ও গাছ কাটা বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে, তাই এখানে কঠোর নিয়ম প্রযোজ্য।
সুরক্ষিত অরণ্যে কী ধরনের কার্যকলাপ অনুমোদিত?
স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য সীমিত পরিমাণে কাঠ সংগ্রহ, বনজ সম্পদ আহরণ ও শিকার করা যেতে পারে, তবে সরকারি নিয়ম মেনে।
কোন ধরনের অরণ্যে বন্যপ্রাণীর সুরক্ষা বেশি?
সংরক্ষিত অরণ্যে বন্যপ্রাণীর সুরক্ষা বেশি, কারণ এখানে শিকার, গাছ কাটা ও মানুষের অনিয়ন্ত্রিত চলাচল নিষিদ্ধ।
ভারতে কোন কোন বিখ্যাত সংরক্ষিত অরণ্য আছে?
1. গির অরণ্য (গুজরাট)।
2. সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ (পশ্চিমবঙ্গ)।
3. কাঞ্চনজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যান (সিকিম)।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “সুরক্ষিত অরণ্য ও সংরক্ষিত অরণ্য বলতে কী বোঝো? সুরক্ষিত অরণ্য ও সংরক্ষিত অরণ্যের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদ” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন