1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের তাৎক্ষণিক ফলাফল কী হয়েছিল? 1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের পর ভারতে ব্রিটিশ প্রশাসনে কীরূপ পরিবর্তন এসেছিল?

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের তাৎক্ষণিক ফলাফল কী হয়েছিল? 1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের পর ভারতে ব্রিটিশ প্রশাসনে কীরূপ পরিবর্তন এসেছিল?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের তাৎক্ষণিক ফলাফল কী হয়েছিল? 1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের পর ভারতে ব্রিটিশ প্রশাসনে কীরূপ পরিবর্তন এসেছিল?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের তাৎক্ষণিক ফলাফল কী হয়েছিল? 1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের পর ভারতে ব্রিটিশ প্রশাসনে কীরূপ পরিবর্তন এসেছিল?

1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের তাৎক্ষণিক ফলাফল কী হয়েছিল?

মহাবিদ্রোহের তাৎক্ষণিক ফলাফল হল –

  • ভারতে কোম্পানির শাসনের অবসান এবং ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ভারত সাম্রাজ্যের অধিগ্রহণ;
  • সাম্রাজ্য বিস্তার নীতির পরিত্যাগ;
  • দেশীয় রাজ্য গ্রাস না করার প্রতিশ্রুতি;
  • ভারতীয়দের ধর্মীয় স্বাধীনতা, যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরি পাওয়ার অধিকার প্রভৃতির স্বীকৃতি এবং
  • বড়োলাটের আইন পরিষদে ভারতীয় সদস্য গ্রহণের ব্যবস্থা।

1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের পর ভারতে ব্রিটিশ প্রশাসনে কীরূপ পরিবর্তন এসেছিল?

1.857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের অভিঘাতে ভারতে কোম্পানির শাসনের উপর যবনিকা নেমে আসে, পরিবর্তে সূচিত হয় ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রত্যক্ষ তথা মহারানির পরোক্ষ শাসন। 1858 খ্রিস্টাব্দের ‘উন্নততর ভারত শাসন’ আইনে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের 15 জন প্রতিনিধিকে নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ভারত শাসন বিষয়ক সর্বোচ্চ সংস্থা – ‘কাউন্সিল অফ স্টেট’ এবং এর প্রধান নিযুক্ত হন ‘ভারত সচিব’। এই সংস্থাই ভারত শাসন বিষয়ে চূড়ান্ত নীতি নির্ধারণ করে এবং শেষ পর্যন্ত মহারানির নামমাত্র সম্মতিতে তা আইনে পরিণত হয়। ভারতে অবস্থিত ‘ভাইসরয়’ নামধারী রাজপ্রতিনিধি এই আইন মোতাবেক ভারত শাসন করতে থাকেন।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের প্রধান কারণগুলি কী ছিল?

1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের প্রধান কারণগুলি হল –
1. সামরিক কারণ – এনফিল্ড রাইফেলের কার্তুজে গরু ও শূকরের চর্বি ব্যবহার, ভারতীয় সৈন্যদের প্রতি বৈষম্য।
2. রাজনৈতিক কারণ – ডক্ট্রিন অফ ল্যাপসের মাধ্যমে দেশীয় রাজ্যগুলির অধিগ্রহণ।
3. অর্থনৈতিক কারণ – কৃষকদের উপর অতিরিক্ত কর, শিল্প ধ্বংস ও ব্রিটিশ শোষণ।
4. সামাজিক-ধর্মীয় কারণ – খ্রিস্টান মিশনারিদের কার্যকলাপ, হিন্দু-মুসলিম ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত।

1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে “প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম” বলা হয় কেন?

1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে “প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম” বলা হয় কারণ –
1. এটি ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম বৃহৎ ও সংগঠিত প্রতিরোধ
2. হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায় একত্রে লড়াই করেছিল।
3. পরবর্তী স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত্তি তৈরি করেছিল।

1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ ব্যর্থ হয়েছিল কেন?

1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ ব্যর্থ হয়েছিল কারণ –
1. সীমিত অংশগ্রহণ – সমগ্র ভারত জুড়ে এটি ছড়ায়নি, মূলত উত্তর ও মধ্য ভারতে সীমাবদ্ধ ছিল।
2. নেতৃত্বের অভাব – কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বা সুস্পষ্ট লক্ষ্যের অভাব ছিল।
3. প্রযুক্তিগত পশ্চাৎপদতা – ব্রিটিশদের আধুনিক অস্ত্রের কাছে ভারতীয়রা পিছিয়ে ছিল।
4. কূটনৈতিক সমর্থনের অভাব বিদেশি সাহায্য বা ঐক্যবদ্ধ পরিকল্পনা ছিল না।

1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের সময় ব্রিটিশদের দমননীতি কী ছিল?

1. কঠোর শাস্তি বিদ্রোহীদের ফাঁসি, কামান দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা।
2. মনস্তাত্ত্বিক আঘাত – দিল্লির লাল কেল্লায় সিপাহিদের গণহত্যা, জনগণকে ভীত করার চেষ্টা।
3. ধর্মীয় অবমাননা – মসজিদ-মন্দিরে সৈন্য মোতায়েন, বিদ্রোহীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত।

1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে ‘সিপাহি বিদ্রোহ’ বলা হয় কেন?

1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহকে ‘সিপাহি বিদ্রোহ’ বলা হয় কারণ –
1. এটি মূলত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভারতীয় সৈন্যদের (সিপাহিদের) দ্বারা সংগঠিত হয়েছিল।
2. তবে পরে এটি জনবিদ্রোহে পরিণত হয়, তাই একে “মহাবিদ্রোহ” বা “প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম”ও বলা হয়।

1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের ফলে ভারতীয় সমাজে কী প্রভাব পড়ে?

1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের ফলে ভারতীয় সমাজে প্রভাব –
1. হিন্দু-মুসলিম ঐক্য – প্রথম দিকে উভয় সম্প্রদায় একসাথে লড়াই করলেও, ব্রিটিশরা পরে ফাটল সৃষ্টি করে।
2. জাতীয়তাবাদের উন্মেষ – পরবর্তীতে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেরণা হিসেবে কাজ করে।
3. শিক্ষা ও সংস্কারে পরিবর্তন – ব্রিটিশরা পাশ্চাত্য শিক্ষা ও প্রশাসনিক সংস্কার জোরদার করে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের তাৎক্ষণিক ফলাফল কী হয়েছিল? 1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের পর ভারতে ব্রিটিশ প্রশাসনে কীরূপ পরিবর্তন এসেছিল?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের তাৎক্ষণিক ফলাফল কী হয়েছিল? 1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের পর ভারতে ব্রিটিশ প্রশাসনে কীরূপ পরিবর্তন এসেছিল?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে ছাত্রদের অবদান আলোচনা করো।

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে ছাত্রদের অবদান আলোচনা করো।

রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন (1953 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল? ভারতের রাজ্য পুনর্গঠন এর ভিত্তিগুলি লেখো।

রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন (1953 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল? ভারতের রাজ্য পুনর্গঠন এর ভিত্তিগুলি লেখো।

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

Madhyamik Life Science Suggestion 2026 – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – স্তম্ভ মেলাও

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – সত্য মিথ্যা

Madhyamik Life Science Suggestion 2026 – শূন্যস্থান পূরণ

Madhyamik Life Science MCQ Suggestion 2026