ভারতে পাতাল রেলের বিকাশ ও গুরুত্ব সংক্ষেপে লেখো।

Rohit

 এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতে পাতাল রেলের বিকাশ ও গুরুত্ব সংক্ষেপে লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতে পাতাল রেলের বিকাশ ও গুরুত্ব সংক্ষেপে লেখো
ভারতে পাতাল রেলের বিকাশ ও গুরুত্ব সংক্ষেপে লেখো
Contents Show

ভারতে পাতাল রেলের বিকাশ ও গুরুত্ব সংক্ষেপে লেখো।

মাটির তলা দিয়ে প্রসারিত রেলপথ ‘পাতাল রেল’ বা ‘ভূগর্ভস্থ রেলপথ’ নামে পরিচিত। ভারতের দ্রুত যাত্রী পরিবহণে পাতাল রেলের গুরুত্ব অপরিসীম।

পাতাল রেলের বিকাশ –

  1. কলকাতা মেট্রো – 1984 খ্রিস্টাব্দের 24 অক্টোবর ভারতে কলকাতায় প্রথম Underground বা ভূগর্ভস্থ রেলপথ (পাতালরেল) চালু হয়। বর্তমানে রেলপথ উত্তরে নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণে কবি সুভাষ বা গড়িয়া পর্যন্ত বিস্তৃত। কলকাতা মেট্রোরেলের দ্বিতীয় প্রকল্পে সেক্টর 5 থেকে গঙ্গার নীচ দিয়ে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত বিস্তৃত। মোট প্রস্তাবিত দৈর্ঘ্য 13.77 কিমি যার মধ্যে 8 কিমি থাকছে মাটির নীচে বাকি 5.77 কিমি থাকবে মাটির উপরে।
  2. দিল্লি মেট্রো – 2002 খ্রিস্টাব্দের 24 ডিসেম্বর দিল্লিতে পাতালরেল চালু হয়। এর দৈর্ঘ্য 40 কিমি।
  3. বেঙ্গালুরু মেট্রো বা Namma Metro – 2011 খ্রিস্টাব্দের 20 অক্টোবর বেঙ্গালুরু মেট্রো বা Namma Metro চালু হয়। মোট দৈর্ঘ্য 42.3 কিমি, এখনও 72.1 কিমির কাজ চলছে।
  4. মুম্বাই মেট্রো – 2014 খ্রিস্টাব্দের 8 জুন মুম্বাইতে মেট্রোরেল চালু হয়। এই রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য 11.4 কিমি।

ভারতের পরিবহণে পাতাল রেলের গুরুত্ব –

  1. যানজট থেকে মুক্তি – ভারতের মতো বিপুল জনসংখ্যার দেশে যানজট নিত্যসঙ্গী। তাই যানজটের হাত থেকে রক্ষা পেতে ভূগর্ভস্থ রেলপথে যাত্রী পরিবহণ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে।
  2. আরামদায়ক – বর্তমানে মেট্রোরেলে আধুনিকতার ছোঁয়ায় শীততাপ নিয়ন্ত্রিত রেক ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে যাত্রীরা অত্যন্ত আরামে গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে।
  3. দ্রুত গন্তব্যস্থলে পৌঁছোনো – ভূগর্ভস্থ রেলপথের মাধ্যমে খুব কম সময় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে একসাথে অনেক যাত্রী পৌঁছে যাচ্ছে।
  4. সুলভ পরিবেশ প্রাপ্তি – স্বল্প মূল্যে যাত্রী পরিবহণে মেট্রোরেলের গুরুত্ব অপরিসীম। এই ভারতে ভূগর্ভস্থ রেলপথ পরিসেবা বেশ সুলভ।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

ভারতে প্রথম পাতাল রেল বা মেট্রো পরিষেবা কোন শহরে চালু হয়েছিল?

ভারতে প্রথম পাতাল রেল পরিষেবা কলকাতায় 1984 সালের 24 অক্টোবর চালু হয়, যা কলকাতা মেট্রো নামে পরিচিত।

কলকাতা মেট্রোর বর্তমান রুটটি কোথা থেকে কোথা পর্যন্ত বিস্তৃত?

কলকাতা মেট্রোর বর্তমান রুট উত্তরে নোয়াপাড়া থেকে দক্ষিণে কবি সুভাষ বা গড়িয়া পর্যন্ত বিস্তৃত।

দিল্লি মেট্রো কবে চালু হয় এবং এর দৈর্ঘ্য কত?

দিল্লি মেট্রো 2002 সালের 24 ডিসেম্বর চালু হয় এবং এর প্রাথমিক দৈর্ঘ্য ছিল 40 কিলোমিটার।

বেঙ্গালুরু মেট্রো (Namma Metro) কবে চালু হয় এবং এর মোট দৈর্ঘ্য কত?

বেঙ্গালুরু মেট্রো 2011 সালের 20 অক্টোবর চালু হয় এবং এর মোট দৈর্ঘ্য 42.3 কিলোমিটার, তবে আরও 72.1 কিলোমিটার রুট নির্মাণাধীন রয়েছে।

মুম্বাই মেট্রো কবে চালু হয় এবং এর দৈর্ঘ্য কত?

মুম্বাই মেট্রো 2014 সালের 8 জুন চালু হয় এবং এর প্রাথমিক রুটের দৈর্ঘ্য 11.4 কিলোমিটার।

ভারতে পাতাল রেলের প্রধান গুরুত্ব কী?

ভারতে পাতাল রেল যানজট হ্রাস, দ্রুত ও আরামদায়ক যাত্রী পরিবহন, সাশ্রয়ী মূল্যে ভ্রমণ এবং পরিবেশ বান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পাতাল রেল কীভাবে যানজট কমাতে সাহায্য করে?

পাতাল রেল ভূগর্ভস্থ বা উঁচু রেলপথে চলার কারণে রাস্তার যানবাহনের চাপ কমায়, ফলে যানজট হ্রাস পায়।

আধুনিক মেট্রো রেলে কী ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়?

আধুনিক মেট্রো রেলে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কোচ, দ্রুত গতি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সাশ্রয়ী ভাড়ায় যাত্রী পরিবহনের সুবিধা রয়েছে।

কলকাতা মেট্রোর দ্বিতীয় প্রকল্পে কোন নতুন সংযোগ স্থাপন করা হচ্ছে?

কলকাতা মেট্রোর দ্বিতীয় প্রকল্পে সেক্টর 5 থেকে গঙ্গার নিচ দিয়ে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করা হচ্ছে, যার মোট দৈর্ঘ্য 13.77 কিলোমিটার।

ভারতে পাতাল রেল ভবিষ্যতে কীভাবে আরও উন্নত হবে?

ভারত সরকার বিভিন্ন শহরে নতুন মেট্রো প্রকল্প চালু করছে এবং বিদ্যমান মেট্রো লাইনগুলিকে প্রসারিত করছে, যাতে আরও বেশি যাত্রী দ্রুত ও নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ভারতে পাতাল রেলের বিকাশ ও গুরুত্ব সংক্ষেপে লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

কলকাতা বন্দরের পরিপূরক বন্দর হিসেবে হলদিয়া বন্দর গড়ে ওঠার কারণ

কলকাতা বন্দরের পরিপূরক বন্দর হিসেবে হলদিয়া বন্দর গড়ে ওঠার কারণ

ভারতে সড়কপথ কয়প্রকার ও কী কী

ভারতে সড়কপথ কয়প্রকার ও কী কী?

ভারতের পশ্চিম উপকূল ও পূর্ব উপকূলের প্রধান প্রধান সামুদ্রিক বন্দর

ভারতের পশ্চিম উপকূল ও পূর্ব উপকূলের প্রধান প্রধান সামুদ্রিক বন্দরের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

About The Author

Rohit

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

প্ল্যাটিনাম তারকে সহজেই কাচের দণ্ডে সিল করা যায় কিন্তু তামার তারকে করা যায় না কেন?

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – তাপীয় রোধ

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – পদার্থের তাপ পরিবাহিতা

নবম শ্রেণী ইতিহাস – প্রাককথন: ইউরোপ ও আধুনিক যুগ

নবম শ্রেণী ইতিহাস – বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ – বিষয়সংক্ষেপ