ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ (যাযাবর জীবন থেকে স্থায়ী বসতি স্থাপন) – পাঠ্যাংশের অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর

Solution Wbbse

এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায়, ‘ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ (যাযাবর জীবন থেকে স্থায়ী বসতি স্থাপন)’ অধ্যায়ের পাঠ্যাংশের অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও সহায়ক। কারণ ষষ্ঠ শ্রেণী এবং চাকরির পরীক্ষায় এই ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই আসতে দেখা যায়।

ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ (যাযাবর জীবন থেকে স্থায়ী বসতি স্থাপন)
ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ (যাযাবর জীবন থেকে স্থায়ী বসতি স্থাপন)
Contents Show

সঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো

আদিম মানুষ প্রথমে_____(রান্না করা খাবার/পোড়া মাংস/কাঁচা মাংস ও ফলমূল) খেত।

উত্তর – কাঁচা মাংস ও ফলমূল

আদিম মানুষের প্রথম হাতিয়ার ছিল_____(ভোঁতা পাথর/হালকা ছুঁচোলো পাথর/পাথরের কুঠার)।

উত্তর – ভোঁতা পাথর

আদিম মানুষের জীবনে প্রথম জরুরি আবিষ্কার_____(ধাতু/চাকা/আগুন)।

উত্তর – আগুন

‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো

‘ক’ স্তম্ভ‘খ’ স্তম্ভ
১. কৃষিকাজক .মধ্যপ্রদেশ
২. পশুপালনখ. নতুন পাথরের যুগ
৩. ভীমবেটকাগ. মাঝের পাথরের যুগ
৪. হুন্সগিঘ. কর্ণাটক

উত্তর –

‘ক’ স্তম্ভ‘খ’ স্তম্ভ
১. কৃষিকাজখ. নতুন পাথরের যুগ
২. পশুপালনগ. মাঝের পাথরের যুগ
৩. ভীমবেটকাক .মধ্যপ্রদেশ
৪. হুন্সগিঘ. কর্ণাটক

আদিম মানুষ যাযাবর ছিল কেন?

আদিম মানুষরা চাষবাস জানত না। তাই তারা পশুশিকার করে কাঁচামাংস ও ফলমূল খেয়ে জীবনধারণ করত। ক্রমে তারা পশুপালন শেখে। তাই নিজেদের খাবার ও পালিত পশুর খাদ্যের (মূলত ঘাস) সন্ধানে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে বেড়াত। এজন্যই আদিম মানুষ যাযাবর জীবনযাপন করত।

পশু শিকাররত আদিম মানুষ
পশু শিকাররত আদিম মানুষ

আগুন জ্বালাতে শেখার পর আদিম মানুষের কী কী সুবিধা হয়েছিল?

প্রাণীদের মধ্যে একমাত্র মানুষই আগুন জ্বালাতে ও ব্যবহার করতে পারে। আগুন জ্বালাতে শেখার ফলে –

  • আদিম মানুষেরা প্রচণ্ড শীতের হাত থেকে রক্ষা পায়।
  • আগুনকে যেহেতু বন্য পশুরা ভয় পায়, সেহেতু এদের আক্রমণের হাত থেকে আদিম মানুষরা রক্ষা পায়।
  • তখন থেকে তারা কাঁচা মাংস আগুনে ঝলসে খাওয়া শুরু করে। এর ফলে তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। শরীরে জোর বাড়ে ও বুদ্ধির বিকাশ হয়। অন্যদিকে দেহাবয়বেও নানা পরিবর্তন হতে শুরু করে। চোয়াল সরু হয়, সামনের ধারালো উঁচু দাঁত ছোট হতে থাকে।
আদিম মানুষের আগুনের ব্যবহার
আদিম মানুষের আগুনের ব্যবহার

আদিম মানুষ কেন জোট বেঁধেছিল? এর ফলে তাদের কী লাভ হয়েছিল?

আদিম মানুষ নানা কারণে জোট বেঁধে থাকত। কারণ –

  • তাতে তাদের পশু শিকারের কাজ সহজ হত।
  • হিংস্র জীবজন্তুর আক্রমণের হাত থেকে তারা নিজেদের রক্ষা করতে পারত।
  • জোট বেঁধে থাকার ফলে আদিম মানুষের খাদ্য সংগ্রহ করা সহজ হত।

জোট বাঁধার ফল

  • জোট বেঁধে থাকার ফলে আদিম মানুষের অনেক লাভ হয়েছিল। যেমন –
  • তাদের মধ্যে সামাজিকতা গড়ে ওঠে এবং বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী গড়ে ওঠে।
  • অনেকের মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা গড়ে ওঠে।
  • বিভিন্ন জীবিকার উদ্ভব হয়।
  • হিংস্র পশুর আক্রমণ প্রতিরোধ করা ও পশু শিকারের কাজ সহজ হয়।
  • একসঙ্গে অনেক মানুষ থাকার ফলে কাজ ভাগ করে নেওয়া সহজ হয়।
জোটবদ্ধ আদিম মানুষ
জোটবদ্ধ আদিম মানুষ

নীচের ছবিটিতে মানুষের প্রতিটি ধাপের মধ্যে কী কী বদল দেখতে পাওয়া যাচ্ছে?

নীচের ছবিটি থেকে মানুষের পরপর ধাপগুলি হল –

মানুষের বিবর্তন
মানুষের বিবর্তন
  • প্রথম ধাপ – দু-পায়ে ভর দিয়ে এই পর্যায়ের মানুষ কোনোক্রমে দাঁড়াতে পারত। তাদের চোয়াল ছিল শক্ত ও সুগঠিত। তারা খাবার চিবিয়ে খেতে পারত।
  • দ্বিতীয় ধাপ – এই ধাপে মানুষ হাঁটতে পারত। হাতের চেটো দিয়ে কিছু ধরার জন্য হাতের চেটোর গঠনগত পরিবর্তন হল। তারা হাঁটুতে ভর করে সামনের দিকে ঝুঁকে থাকত।
  • তৃতীয় ধাপ – দু-পায়ে ভর দিয়ে তারা বেশ কিছুটা সোজা হয়ে হাঁটতে পারত। এই পর্যায়ে তাদের চোয়াল ধীরে ধীরে সরু হতে থাকে।
  • চতুর্থ ধাপ – এই পর্যায়ে চেহারায় নানারকম পরিবর্তন এল, শরীরে জোর বাড়ল এবং মানুষের বুদ্ধির বিকাশ হল।
  • পঞ্চম ধাপ – এই পর্যায়ে মানুষ সোজা হয়ে দাঁড়াতে ও হাঁটতে পারত এবং এই সময় তাদের সামনের ধারালো উঁচু দাঁত ছোটো হয়ে গিয়েছিল।

নীচের ছবি দুটি থেকে আদিম মানুষের পাথরের হাতিয়ার বানানোর পদ্ধতি বিষয়ে কী জানা যাচ্ছে?

প্রথম ছবিতে পাথরের একটি বড়ো টুকরোকে অন্য একটি পাথরের ছোটো টুকরো দিয়ে হাতিয়ার বানানোর চেষ্টা হচ্ছে। দ্বিতীয় ছবিতে একটি বড়ো পাথরের টুকরোকে পাথরের ছেনি দিয়ে আঘাত করে হাতিয়ার বানানোর চেষ্টা হচ্ছে।

আদিম মানুষের পাথরের হাতিয়ার বানানোর পদ্ধতি
আদিম মানুষের পাথরের হাতিয়ার বানানোর পদ্ধতি

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায়, “ভারতীয় উপমহাদেশে আদিম মানুষ (যাযাবর জীবন থেকে স্থায়ী বসতি স্থাপন)” অধ্যায়ের পাঠ্যাংশের অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সহায়ক হবে, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনাদের উপকারে এসেছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তবে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমি সর্বদা প্রস্তুত। ধন্যবাদ!

Please Share This Article

Related Job Posts

ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – নমুনা প্রশ্ন ও উত্তরপত্র (Sample Questions with Answers)

ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – নমুনা প্রশ্ন ও উত্তরপত্র (Model Question)

ভারত ও সমকালীন বহির্বিশ্ব (খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত) – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – ভারত ও সমকালীন বহির্বিশ্ব (খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত) – রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

ভারত ও সমকালীন বহির্বিশ্ব (খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত) – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

ষষ্ঠ শ্রেণী – ইতিহাস – ভারত ও সমকালীন বহির্বিশ্ব (খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত) – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

About The Author

Solution Wbbse

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

বাংলায় শিশুশিক্ষার প্রসারে মুদ্রণ শিল্পের ভূমিকা সম্পর্কে কী জানো?

বাংলায় বিজ্ঞান চর্চার বিকাশে ডঃ মহেন্দ্রলাল সরকারের কীরূপ অবদান ছিল?

ছাপাবই -এর সঙ্গে শিক্ষাবিস্তারের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কীভাবে ঔপনিবেশিক শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন?

বাংলায় মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে উইলিয়াম কেরির কীরূপ অবদান ছিল?