অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – গাছের কথা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

Sourav Das

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের গাছের কথা অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে গাছের কথা অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় গাছের কথা অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই গাছের কথা অধ্যায়ের ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

Table of Contents

আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন একজন খ্যাতিমান বিজ্ঞানী ও লেখক। ১৮৫৮ সালের ৩০ নভেম্বর ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণকারী বসু, কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ ও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।

বিনা তারে বার্তা প্রেরণ পদ্ধতি আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত হলেও, প্রচারের অভাবে এই সম্মান পেয়েছিলেন ইতালির মার্কনি। উদ্ভিদের উপর বিদ্যুৎ স্পর্শের প্রভাব পর্যবেক্ষণের জন্য তিনি ‘ক্রেসকোগ্রাফ’ যন্ত্র তৈরি করেন।

একজন সাহিত্যিক হিসেবেও বসু খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। প্রকৃতিপ্রেমী বসু তার লেখায় উদ্ভিদের বিভিন্ন অনুভূতি ও বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন। তিনি বীজের জীবনযাত্রা ও বৃদ্ধির সাথে মানুষের জীবনের সংগ্রামের তুলনা করেছেন।

বসু বিশ্বাস করতেন যে জীবনের লক্ষণ হল গতি ও বৃদ্ধি, যা উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয়ের মধ্যেই পরিলক্ষিত হয়। বীজের মধ্যে গাছের জীবন ঘুমন্ত থাকে এবং অনুকূল পরিবেশে বীজ থেকে বৃক্ষশিশু জন্মগ্রহণ করে। বীজ বিভিন্ন উপায়ে ছড়িয়ে পড়ে উদ্ভিদজগতের প্রসার ঘটায়।

কঠিন আবরণ বীজের ভেতরের বৃক্ষশিশুকে প্রতিকূল পরিবেশ থেকে রক্ষা করে। পৃথিবী যেন একজন মায়ের মতো বীজকে কোলে ধরে রাখে এবং অনুকূল পরিবেশ পেলে বীজ থেকে জন্ম নেয় নতুন জীবন।

গাছের কথা – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

জগদীশচন্দ্র বসু কী আবিষ্কার করেছিলেন?

জগদীশচন্দ্র বসু ‘ক্রেসকোগ্রাফ’ নামক একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন, যার সাহায্যে উদ্ভিদের উপর বিদ্যুৎস্পর্শে জাগ্রত স্পন্দন পরিমাপ করা যায়। এ ছাড়াও ‘স্ফিগমোগ্রাফ’, ‘ফটোমিটার’, ‘ফটোসিন্থেটিক বাবলার’ প্রভৃতি স্বয়ংলেখ যন্ত্রও তিনি আবিষ্কার করেন। বিনা তারে বার্তাপ্রেরণের পদ্ধতিও প্রকৃতপক্ষে তিনিই প্রথম আবিষ্কার করেন।

ইহাদের মধ্যেও তাহার কিছু কিছু দেখা যায়। – কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের মধ্যে কী লক্ষ করা যায়?

এখানে গাছেদের কথা বলা হয়েছে।

মানুষের মধ্যে যেসব সদ্‌গুণ আছে, গাছেদের মধ্যেও তার কিছু কিছু লক্ষ করা যায়। এই গুণগুলির মধ্যে আছে একে অপরকে সাহায্য করা, বন্ধুত্ব, স্বার্থত্যাগ, সন্তানের জন্য নিজের জীবন দান ইত্যাদি।

গাছের জীবন মানুষের ছায়ামাত্র। – লেখকের এমন উক্তি অবতারণার কারণ বিশ্লেষণ করো।

গাছের কথা প্রবন্ধে জগদীশচন্দ্র বসু বলেছেন, গাছপালাকে ভালোবাসতে শিখে তিনি অনুভব করেছেন যে মানুষের মতোই গাছেরাও আহার করে, দিনে দিনে বাড়ে। মানুষের মতোই তাদেরও অভাব, তাদেরও দুঃখকষ্ট আছে, জীবনধারণের জন্য সদাব্যস্ততা আছে। কিছু মানুষ যেমন কষ্টে পড়লে চুরি-ডাকাতি করে, কোনো কোনো গাছের মধ্যেও সেই প্রবৃত্তি দেখা যায়। মানুষের বিভিন্ন সগুণ, যেমন – পারস্পরিক সাহায্য, বন্ধুত্ব, এমনকি মানুষের সর্বোচ্চ গুণ ‘স্বার্থত্যাগ’ও গাছের মধ্যে দেখা যায়। মানুষ মায়ের মতোই প্রয়োজনে সন্তানের জন্য জীবনত্যাগও গাছের মধ্যে দেখা যায়। এগুলি অনুভব করেই লেখক ‘গাছের জীবন মানুষের ছায়ামাত্র’ মন্তব্যটির অবতারণা করেছেন।

জীবনের ধর্ম কীভাবে রচনাংশটিতে আলোচিত ও ব্যাখ্যাত হয়েছে তা বিশ্লেষণ করো।

আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রচিত ‘গাছের কথা’ প্রবন্ধের বক্তব্য অনুধাবন করলে বোঝা যায় যে, লেখকের মতে গতি এবং বৃদ্ধি হল জীবনের ধর্ম। এই ধর্ম যেমন মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে দেখা যায়, তেমনই দেখা যায় উদ্ভিদের মধ্যেও। পাখির ডিমের মধ্যে জীবন যেমন সুপ্ত থাকে, তেমনই জীবন সুপ্ত থাকে বীজের মধ্যেও। উত্তাপ পেলে ডিম থেকে জন্মায় পাখির ছানা; তেমনই মাটি, জল ও উত্তাপ পেলে বীজ থেকে জন্ম নেয় বৃক্ষশিশু। জন্মলাভের পর জীবের গতি ও বৃদ্ধি দৃষ্টিগোচর হয়। যদিও প্রাণীদের মতো গাছের গতি সহজে বোঝা যায় না, তবুও লেখক দৃষ্টান্তস্বরূপ লতার ঘুরে ঘুরে গাছকে জড়ানোর কথা বলেছেন। এ ছাড়াও জীবনধারণের জন্য সংগ্রাম করতে গিয়ে নানা উপায় অবলম্বন; পারস্পরিক সহযোগিতা, বন্ধুত্ব, স্বার্থত্যাগ-এসবই প্রাণী এবং উদ্ভিদ উভয়েরই জীবনের ধর্ম।

নানা উপায়ে গাছের বীজ ছড়াইয়া যায়। – উপায়গুলি পাঠ্যাংশ অনুসরণে আলোচনা করো।

আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু তাঁর ‘গাছের কথা’ প্রবন্ধে গাছের বীজ ছড়িয়ে পড়ার কিছু উপায়ের উল্লেখ করেছেন। যেমন – কৃষকরা চাষের খেতে বীজ ছড়ায়, তা থেকে ফসল ফলে। পাখিরা ফল খেয়ে তার বীজ দূরদেশে নিয়ে যায়। এইভাবে জনমানবশূন্য দ্বীপেও গাছ জন্মায়। আবার শিমুল প্রভৃতি গাছের ফল ফেটে বীজ বাতাসে উড়ে যায়। এইভাবে বাতাসে ভেসেও বহু বীজ দেশদেশান্তরে ছড়িয়ে পড়ে।

লেখক তাঁর ছেলেবেলার কথা পাঠ্যাংশে কীভাবে স্মরণ করেছেন, তা আলোচনা করো।

গাছের কথা প্রবন্ধের লেখক জগদীশচন্দ্র বসু শিমুল গাছের বীজ ছড়ানোর প্রসঙ্গে নিজের ছেলেবেলার কথা স্মরণ করেছেন। পাকা শিমুল ফল রৌদ্রে ফেটে গেলে তার ভিতর থেকে বীজ তুলোর সঙ্গে বাতাসে ওড়ে। ছেলেবেলায় লেখক ও তাঁর সঙ্গীরা সেই বীজ ধরার জন্য ছুটতেন। কিন্তু হাত দিয়ে ধরতে গেলেই বাতাস সেই বীজকে তুলোসমেত অনেক উপরে উড়িয়ে নিয়ে যেত।

বৃক্ষদের মধ্যে একে অন্যকে সাহায্য করিতে দেখা যায়, ইহাদের মধ্যে একের সহিত অপরের বন্ধুত্ব হয়। – তোমার জানা কিছু দৃষ্টান্তের সাহায্যে বক্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।

বৃক্ষজগতেও পারস্পরিক সাহায্য এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ দেখা যায়। একটা বড়ো গাছের সুশীতল ছায়ায় ছোটোগাছ জন্মায়, একটা তীব্র ভূমিক্ষয়রোধী ক্ষমতাসম্পন্ন বৃক্ষ অন্য বৃক্ষদের জীবনযাপন সহজ করে, লতাজাতীয় গাছকে আশ্রয় দেয় সবল কাণ্ডের গাছ, মটরশুটি, শিমজাতীয় গাছেদের মাটিতে প্রয়োজনীয় উপাদান সরবরাহ অন্য গাছেদের বাঁচতে সাহায্য করে, শৈবাল ছত্রাকরা পরস্পরকে খাদ্যনির্মাণ ও পুষ্টিতে সাহায্য করে। বড়ো বৃক্ষের গায়ে জন্মে তার থেকে পুষ্টি নিয়ে পরজীবী উদ্ভিদ বাঁচে। এভাবে গাছেরা বন্ধুর মতো একে অন্যকে সাহায্য করে।

কষ্টে পড়িয়া ইহাদের মধ্যেও কেহ কেহ চুরি-ডাকাতি করে। – কীভাবে উদ্ভিদেরা কষ্টে পড়ে চুরি-ডাকাতি করে?

মানুষ যেমন কখনো-কখনো খাদ্য কিংবা অর্থের অভাবে চুরি-ডাকাতি করে থাকে, উদ্ভিদজগতেও তেমনটা দেখা যায়। ক্লোরোফিলযুক্ত সবুজ উদ্ভিদেরা নিজেদের খাদ্য প্রস্তুত করতে সক্ষম। কিন্তু যেসব উদ্ভিদের ক্লোরোফিল নেই, তারা তা পারে না। তখন তারা পরজীবীরূপে সবুজ উদ্ভিদকে আশ্রয় করে ও তার দেহ থেকে খাদ্য টেনে নেয়। এর ফলে সেই সবুজ উদ্ভিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, শুকিয়ে বা মরেও যেতে পারে। যেমন – বিভিন্ন ছত্রাক অথবা স্বর্ণলতার মতো পরজীবী উদ্ভিদ আশ্রয়দাতা উদ্ভিদের খাদ্য কেড়ে নিয়ে তাকে রুগ্ন করে দেয়।

ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন বীজ পাকিয়া থাকে। – উদ্ধৃতিটির সাপেক্ষে নীচের ছকটি পুরণ করো।

বীজকোন্ ঋতুতে পাকে?
আমগ্রীষ্ম।
লিচুগ্রীষ্ম।
ধানহেমন্ত।
যবহেমন্ত।
শিমুলগ্রীষ্ম।

আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন একজন অসাধারণ বিজ্ঞানী যিনি পদার্থবিজ্ঞান, উদ্ভিদবিদ্যায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি কেবল একজন বিজ্ঞানীই ছিলেন না, একজন সাহিত্যিক, দেশপ্রেমিক এবং সমাজ সংস্কারকও ছিলেন।

বসু উদ্ভিদের প্রতি গভীর ভালোবাসা অনুভব করতেন এবং তাদের জীবন ও প্রকৃতির সাথে সম্পর্ক নিয়ে গहन গবেষণা করেছিলেন। ‘ক্রেসকোগ্রাফ’ যন্ত্র আবিষ্কার করে তিনি উদ্ভিদের স্পন্দন পরিমাপে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

বসু বিশ্বাস করতেন যে উদ্ভিদও প্রাণীর মতোই জীবিত এবং তাদের মধ্যেও অনুভূতি ও দোষ-গুণ বিদ্যমান। তিনি উদ্ভিদের জীবনধারণের সংগ্রাম এবং তাদের লড়াইয়ের কথা সাহিত্যের মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন।

বসু মনে করতেন জীবনের লক্ষণ হল গতি ও বৃদ্ধি, যা উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয়ের মধ্যেই পরিলক্ষিত হয়। বীজের মধ্যে গাছের জীবন ঘুমিয়ে থাকে এবং অনুকূল পরিবেশ পেলেই তা জাগ্রত হয়ে বৃক্ষরূপে বিকশিত হয়।

বসু উদ্ভিদের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা ও জ্ঞানের মাধ্যমে আমাদের প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শিখিয়েছেন। তিনি একজন অনুপ্রেরণাদায়ক ব্যক্তিত্ব যার অবদান ভারত ও বিশ্বের জন্য চিরস্মরণীয়।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না –  ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer