অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – সবুজ জামা – বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

Gopi

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের সবুজ জামা অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে সবুজ জামা অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় সবুজ জামা অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই সবুজ জামা অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

এই কবিতাটিতে, একজন অল্পবয়সী তোতাইয়ের কল্পনা এবং তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়েছে। তোতাইটি গাছের সবুজ পাতাগুলোকে জামা ভেবে মনে করে, গাছেরা সবুজ জামা পরে থাকে। তাই সেও স্কুলে না গিয়ে বর্ণমালা না শিখে সবুজ জামা পরতে চায়। কারণ তার মনে হয়, সবুজ জামা পরলে তার ডালে প্রজাপতি বসবে, ফুল ফুটবে এবং তার কোলে ফুল ঝরে পড়বে। এভাবে সে খেলাধুলায় মত্ত থাকতে পারবে।

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – সবুজ জামা

সবুজ জামা অধ্যায়ের লেখক পরিচিতি

বিংশ শতকের মধ্যভাগের প্রগতিশীল চেতনার অধিকারী কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাংলাদেশের (পূর্বতন পূর্ববঙ্গ) ঢাকার বিক্রমপুরে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ২ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। প্রথম জীবনে তিনি অনুশীলন দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে বামপন্থী মতাদর্শে দীক্ষিত হন। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর প্রথম কাব্য ‘গ্রহচ্যুত’ প্রকাশ পায়। দ্বিতীয় কাব্য ‘রাণুর জন্য’ প্রকাশের পর পাঠকমহলে তাঁর পরিচিতি হয়। তাঁর বিশিষ্ট কাব্য – ‘উলুখড়ের কবিতা’, ‘মৃত্যুত্তীর্ণ’, ‘লখিন্দর’, ‘জাতক’, ‘ভিসা অফিসের সামনে’, ‘মহাদেবের দুয়ার’, ‘মানুষের মুখ’, ‘ভিয়েতনাম-ভারতবর্ষ’, ‘অথচ ভারতবর্ষ তাদের’, ‘আমার যজ্ঞের ঘোড়া’, ‘অফুরন্ত জীবনের মিছিল’ প্রভৃতি। এ ছাড়া তিনি বেশ কিছু কবিতা অনুবাদ করেন – যা তাঁর প্রতিভার পরিচয় বহন করে। তাঁর কবিতায় প্রকৃতি, মানুষ, সাধারণ জীবনের সংগ্রাম ও বাস্তব পরিস্থিতির বিচিত্র রূপায়ণ ধরা পড়ে। ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’ গ্রন্থের জন্য তিনি ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’ পান। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দের ৭ নভেম্বর তাঁর লোকান্তর ঘটে।

সবুজ জামা অধ্যায়ের উৎস

বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিশিষ্ট কাব্য ‘উলুখড়ের কবিতা’ থেকে প্রদত্ত কবিতাটি গৃহীত হয়েছে।

সবুজ জামা অধ্যায়ের বিষয়সংক্ষেপ

গাছেরা এক আশ্চর্য সবুজ জামা গায়ে দেয়। অল্পবয়স্কি তোতাই-এরও অনুরূপ সবুজ জামার বাসনা। কিন্তু তোতাই স্কুলে গিয়ে বর্ণমালা শিখবে। আসলে বৃক্ষশিশু জানে মানবশিশু স্কুলের পাঠক্রমে ব্যস্ত থাকবে। গাছগুলো এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকে সবুজ জামা পরে, তোতাই সেই সবুজ জামার প্রতি তীব্র আগ্রহ এবং আসক্তি অনুভব করে।

তোতাই হঠাৎ করে বৃক্ষ হয়ে যেতে চায়। সে বর্ণমালা শিখতে চায় না, স্কুলে যাওয়ার প্রতি ভীষণ অনাসক্তি দেখায়। গাছেদের মতো সে এক পায়ে দাঁড়িয়ে আনন্দের খেলায় মেতে উঠতে চায়। তার মনে হয় গাছেরা কেমন এক পায়ে দাঁড়িয়ে একে অন্যের সঙ্গে খেলা করে, অনুরূপভাবে সেও মত্ত হতে চায় খেলার আনন্দে। তোতাই-এর পিতামহ চশমা ছাড়া প্রকৃতির সবুজ দেখতে পায় না বলে শিশুর আক্ষেপের অবধি নেই। দাদু যে সবুজের সমারোহ দর্শন থেকে বঞ্চিত-এই ভেবে তোতাই বিষণ্ণ হয়।

তোতাই মনে করে তার যদি গাছেদের মতো সবুজ একটা জামা থাকত তাহলে ঠিক তার গায়ে প্রজাপতিরা ভিড় জমাত। আর তার কোলের কাছে একটা, দুটো, তিনটে লাল-নীল ফুল নেমে এসে তাকে পুষ্পময় করে তুলত। তোতাই নিজে একসময় বৃক্ষ হয়ে সবুজ পাতার আনন্দে বিভোর হয়ে উঠবে-এই বিশ্বাস কবিতায় আছে।

সবুজ জামা অধ্যায়ের নামকরণ

সবুজ পাতায় ঢাকা গাছেরা সবুজ রঙের জামা পরে থাকে। তোতাই নামের এক শিশুর বিশ্বাস সেও গাছেদের মতো সবুজ জামা পরে আনন্দে থাকবে। তোতাইকে স্কুলে পাঠালে সে আবদ্ধ হবে এবং বর্ণমালা শিখবে। কিন্তু তোতাই সেই পাঠের মধ্যে কোনো আনন্দ পায় না। গাছেরা কেমন এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকে, অনুরুপভাবে তোতাইও বন্ধুদের সঙ্গে এক্কা-দোক্কা খেলবে গাছেদের মতো।

কবির বিশ্বাস, প্রকৃতি থেকে সবুজ কমে যাওয়ায় প্রকৃতি ধীরে ধীরে সবুজ হারাচ্ছে এবং দূষণে পূর্ণ হচ্ছে বিশ্ব। দূষণমুক্ত প্রকৃতির প্রয়োজনে আরও সবুজ প্রয়োজন এবং এজন্য আরও গাছ লাগাতে হবে। সবুজায়নে প্রকৃতি দূষণমুক্ত হবে। সবুজ জামা পরে প্রকৃতি যেমন সুন্দর হয় এবং পত্রময় বৃক্ষের ডালে ডালে প্রজাপতি এসে বসে আনন্দ প্রকাশ করে তেমন তোতাই যদি সবুজ জামা পরে থাকে তাহলে তার গায়েও প্রজাপতি এসে বসবে।

প্রকৃতির বিস্তৃত সবুজের সঙ্গে মিশে তোতাই নামের শিশুটি যথার্থভাবে সবুজ পাতা হয়ে উঠবে। প্রকৃতিতে সবুজের সমারোহ একান্ত আবশ্যক-এই বিশ্বাস এ কবিতায় রয়েছে। এজন্য কবিতার নামকরণটি যথার্থই সার্থক।

সবুজ জামা অধ্যায়ের শব্দার্থ ও টীকা

গাছেরা – সবুজ উদ্ভিদেরা। সবুজ – একটি বিশেষ বর্ণ বা রং। জামা – পরিধেয় বস্তু। অ-আ-ক-খ – বাংলা বর্ণমালা। ইস্কুলে – বিদ্যালয়ে। চশমা – নাকের উপর স্থাপনীয় দৃষ্টিসহায়ক কাচের যন্ত্রবিশেষ। প্রজাপতি – রংবেরঙের ডানাযুক্ত ষটপদী পতঙ্গবিশেষ।

এই কবিতাটিতে আমরা দেখতে পাই, একটি ছোট তোতাই প্রকৃতির প্রতি তার অপার ভালোবাসা এবং গাছের মতো হয়ে ওঠার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে। তোতাই স্কুলে গিয়ে বর্ণমালা শিখতে চায় না, বরং গাছেদের মতো এক পায়ে দাঁড়িয়ে খেলায় মেতে উঠতে চায়। সে মনে করে যদি তার গাছেদের মতো সবুজ জামা থাকে, তাহলে তার গায়ে প্রজাপতিরা ভিড় জমাত এবং তার কোলে লাল-নীল ফুল ফুটে উঠবে।

কিন্তু তোতাইয়ের এই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে না। কারণ, সে একজন মানুষের সন্তান এবং তার নিজস্ব ভাগ্য রয়েছে। তাকে স্কুলে গিয়ে শিক্ষা অর্জন করতে হবে এবং বর্ণমালা শিখতে হবে। তবে, তোতাই প্রকৃতির প্রতি তার ভালোবাসা ধরে রাখতে পারে এবং গাছেদের থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে। সে গাছের যত্ন নিতে পারে, তাদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে এবং প্রকৃতির সাথে একাত্মতা অনুভব করতে পারে।

এই কবিতা আমাদের প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা এবং প্রকৃতির সাথে আমাদের সম্পর্কের গুরুত্ব সম্পর্কে শেখায়।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না –  ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

লোকটা জানলই না – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – লোকটা জানলই না – রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer