নবম শ্রেণী – বাংলা – কলিঙ্গদেশের ঝড়-বৃষ্টি – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ননোত্তর

Mrinmoy Rajmalla

মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি কবিতাটি শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের একটি বিখ্যাত কবিতা। এই কবিতায় কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তী কলিঙ্গদেশে এক ভয়াবহ ঝড়বৃষ্টির বর্ণনা দিয়েছেন। ঝড়ের তাণ্ডবে প্রকৃতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গাছপালা ভেঙে পড়েছে, ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, মানুষ ও পশুপাখি প্রাণভয়ে ছোটাছুটি করছে।

Table of Contents

কবি এই কবিতায় ঝড়ের বিভিন্ন রূপ ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন। তিনি ঝড়ের পূর্বাভাস, ঝড়ের তাণ্ডব, ঝড়ের অবসান ইত্যাদি বর্ণনা করেছেন। কবির ভাষায়, ঝড়ের পূর্বাভাস ছিল ভয়াবহ। আকাশে মেঘের ঘনঘটায় আঁধার হয়ে গেল। বাতাস ঝোড়ো হয়ে উঠল। গাছের পাতাগুলি ঝড়ের তালে তালে দুলতে লাগল। ঝড়ের তাণ্ডবে গাছপালা ভেঙে পড়তে লাগল। ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হল। মানুষ ও পশুপাখি প্রাণভয়ে ছোটাছুটি করতে লাগল।

নবম শ্রেণী – বাংলা – কলিঙ্গদেশের ঝড়-বৃষ্টি – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ননোত্তর

মঙ্গলকাব্য কাকে বলে? এটি কয় প্রকার ও কী কী?

মঙ্গলকাব্য সংজ্ঞা – আনুমানিক খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতক থেকে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত কালসীমার মধ্যে রচিত পৌরাণিক সংস্কার দ্বারা লালিত, বাংলার শক্তিসঞ্চারক দেবদেবীগণের মাহাত্ম্যগাথা যে কাহিনি কাব্যে বর্ণিত হয়েছে তাকে মঙ্গলকাব্য বলা হয়।

প্রকার – বাংলা সাহিত্যের মঙ্গলকাব্যধারায় প্রধান ও অপ্রধান দুটি শাখাপ্রশাখাই বিস্তৃত হতে দেখা যায়। ‘মনসামঙ্গল’, ‘চণ্ডীমঙ্গল’ অন্নদামঙ্গল ও ‘ধর্মমঙ্গল’ কাব্যগুলিকে মঙ্গলকাব্যের প্রধান শাখা হিসেবে ধরা হয়। এছাড়া বেশ কয়েকটি অপ্রধান মঙ্গলকাব্য সেইসময় প্রচলিত ছিল। এগুলিহল — ‘শিবমঙ্গল’, ‘অন্নদামঙ্গল’, ‘কালিকামঙ্গল’, ‘শীতলামঙ্গল’, ‘রাধিকামঙ্গল’, ‘গঙ্গামঙ্গল’ ইত্যাদি।

শ্রীকবিকঙ্কণ কার উপাধি? তিনি কার গান রচনাকরেছেন?

যার উপাধি – মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি তথা অভয়ামঙ্গল বা চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের রচয়িতা মুকুন্দ চক্রবর্তীর উপাধি ছিল শ্রীকবিকঙ্কণ।

যার গান রচনা করা হয়েছে – শ্রীকবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তী তাঁর অনন্যসাধারণ কাহিনিকাব্যেযার গান রচনা অম্বিকা তথা চণ্ডী -র গান গেয়েছেন। তাইকবিতার ভণিতাংশে তিনি বলেছেন অম্বিকামঙ্গলগানশ্রীকবিকঙ্কণ।

ভণিতা কাকে বলে? পাঠ্যাংশে কবি যে ভণিতা প্রয়োগ করেছেন, তা উল্লেখ করো।

ভণিতা – মধ্যযুগে রচিত দেবদেবীর মাহাত্ম্যমূলক কাহিনিকাব্যগুলির পদশেষে কবিকর্তৃক নিজ নামের উল্লেখকে বলা হয় ভণিতা।

কবির ব্যবহৃত ভণিতা – কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তীর অম্বিকামঙ্গল বা চণ্ডীমঙ্গল কাব্যেরকবির ব্যবহৃত ভণিতা আখেটিক খণ্ড – এর কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি নামক নির্বাচিত পাঠ্যাংশটির শেষাংশে কবি যে ভণিতা প্রয়োগ করেছেন, তা হল — অম্বিকামঙ্গল গান শ্রীকবিকঙ্কণ। বলাবাহুল্য কবি এখানে নিজ নামের পরিবর্তে প্রাপ্তউপাধিটি ব্যবহার করেছেন।

কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশ অবলম্বনে মেঘের স্বরূপ বর্ণনা করো।

কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পটভূমিকায় মেঘের একটা নিজস্ব স্বরূপ দেখা যায়।

মেঘের স্বরূপ – কলিঙ্গের আকাশে অন্ধকার করে ঘন মেঘ ঘনিয়ে আসে। ঝলকিত বিদ্যুৎরেখার ভয়ংকরচিত্র আঁকতে আঁকতে ঈশান কোণ থেকে সে মেঘের উৎপত্তি ও বিকাশ।
নিমেষে সে মেঘ সারা আকাশ ছেয়ে ফেলে বজ্রনিনাদে নিনাদিত করে। উচ্চনাদী সেই চারিমেঘ তথা সম্বর্ত, আবর্ত, পুষ্কর, দ্রোণ থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হয়, মনে হয় যেন অষ্টগজরাজ বারিবর্ষণ করছে।

দেখিতে না পায় কেহ অঙ্গ আপনার। – কে, কেন এইকথা ব্যক্ত করেছেন?

বক্তা ও বক্তব্যের কারণ – কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশের কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী তাঁর কাব্যবর্ণনা প্রসঙ্গে প্রশ্নোক্ত কথাটি ব্যক্ত করেছেন। বর্ণনানুসারে দেখা যায়, কলিঙ্গদেশে হঠাৎ প্রবল ঝড়-বৃষ্টি-প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মুহূর্তমধ্যে আকাশ কালো মেঘে আচ্ছন্ন, যার বুক বিদীর্ণ করে ঘনঘন আবির্ভূত হচ্ছে ভয়াল বিদ্যুতের ঝলক। মেঘান্ধকার এমন আলোকহীনতা সৃজন করেছে, তার গাঢ় প্রলেপ পরিবেশকে এত কালোকরে দিয়েছে যে প্রজারা কেউ কারও দেহ দেখতে পাচ্ছে না।

উড়িয়া মেঘ ডাকে উচ্চনাদ। — মেঘ কোথায় ডাকে? প্রাসঙ্গিক পরিণতি লেখো।

যেখানে মেঘ ডাকে – কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে বর্ণিত কলিঙ্গরাজ্যের আকাশে মেঘ ডাকে।

পরিণতি — কলিঙ্গদেশের আকাশে হঠাৎই ঘন কালো মেঘের উত্থান দেখা যায় ঈশান কোণ থেকে। নিমেষে তা সমগ্র আকাশকে ছেয়ে ফেলে তীব্র বজ্র-বিদ্যুতের আগমনবার্তা ঘোষণা করে। প্রজারা বিপদের আশঙ্কায়প্রমাদ গুণতে শুরু করে। তাদের মন আচ্ছন্ন করে ফেলে তীব্রবিষাদক্লিষ্টতা। এরপর মেঘ-বৃষ্টি-বজ্র-বিদ্যুতেরদোসর হয়ে যখন প্রবল ঝড় ধেয়ে আসে, তখন — বিপাকে ভবন ছাড়ি প্রজা দিল রড়।

প্রজা ভাবয়ে বিষাদ। – প্রজাদের মন বিষাদগ্রস্ত কেন?

প্রজাদের রাজ্য – প্রখ্যাত মধ্যযুগীয় কবি মুকুন্দ চক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে প্রজাদের রাজ্য ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে কলিঙ্গরাজ্যের প্রজাদের কথা বলা হয়েছে।

প্রজাদের বিষাদগ্রস্ত অবস্থার কারণ — কলিঙ্গরাজ্যের প্রজাদের মন বিষাদে আচ্ছন্ন, কেন-না হঠাৎ সে-রাজ্যের আকাশে রাশি রাশি মেঘের সমাবেশ ঘটেছে। ঈষাণ কোণ থেকে এই মেঘরাশি জমাট বাঁধতে বাঁধতে সমূহ আকাশকে ক্রমে আচ্ছন্ন করে পরিবেশকে অন্ধকার করে দিয়েছে। ক্রমে সঞ্চারিত হয়েছে উত্তুরে বাতাস, ধেয়ে এসেছে তীব্র ঝড়। দূর থেকে ভেসে এসেছে মেঘগর্জন। দেখা দিয়েছে আকাশচেরা তীব্র বিদ্যুতের ঝলক। বাজ পড়েছে ঘনঘন। একসময় শুরু হয়েছে প্রবল বর্ষণ, যা থেকে নির্দয় দুর্যোগ আশঙ্কায় প্রজারা বিষাদক্লিষ্ট হয়ে পড়েছে।

কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ হলে প্রজাদের পরিস্থিতি কেমন হয়েছিল তা বর্ণনা করো।

প্রজাদের অবস্থা – কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে দেখা যায় কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি আরম্ভ হলে প্রজারা সম্পূর্ণ দিশেহারা হয়ে পড়ে। সারা আকাশ জুড়ে মেঘসজ্জার কারণে প্রজারা এমনিতেই কেউ কারো অঙ্গ দেখতে পাচ্ছিল না। ঝড়-বৃষ্টি-বজ্র-বিদ্যুৎ সহযোগে পরিস্থিতি আরওপ্রজাদের অবস্থা ঘোরালো হলে প্রলয় গনিয়া প্রজা ভাবয়েবিষাদ। এমতাবস্থায় বিপাকে পড়ে প্রজারা ঘরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। মাঠের শস্য নষ্ট হল দেখে তারা আশঙ্কায় চমকে ওঠে। ঘন মেঘের আঁধারে রাস্তা দেখা যায় না, দিন-রাত এক হয়ে গেছে। তাই ত্রস্ত প্রজারা ঋষি জৈমিনিকে একাগ্রচিত্তে স্মরণ করতে থাকে। অর্থাৎ তারা রীতিমতোসন্ত্রস্তহয়ে পড়ে।

সঘনে চিকুর পড়ে বেঙ্গ তড়কা বাজ। — তাৎপর্য লেখো।

তাৎপর্য – মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি মুকুন্দ চক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে এক অকাল দুর্যোগের পত্তন দেখানো হয়েছে। দৈবী তাৎপর্য প্রভাবজাত এই দুর্যোগ পরিস্থিতির ছবি আঁকতে গিয়ে কবি আকাশে সঞ্চারিত ঘন কালো মেঘের বর্ণনা দিয়েছেন। একসময় সেই মেঘের বুকে ঘন ঘন ও তীব্র বিদ্যুতের ঝলকানি লক্ষিত হয়। যার ফলশ্রুতি বজ্রপতন। ব্যাঙের মতো অহরহ
লাফিয়ে পড়তে থাকে সে বাজ।

জেলে মহী একাকার পথ হইল হারা। — মহী শব্দের অর্থ কী? মহীর অবস্থা কী হয়েছিল?

মহী অর্থ — কবিকঙ্কন মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশ থেকে নেওয়া প্রশ্নোধৃত অংশে মহী অর্থে পৃথিবীকেবোঝানো হয়েছে।

মহীর অবস্থা — কলিঙ্গদেশের অবস্থা ছিল সুস্থ ও স্বাভাবিক। হঠাৎ আকাশের ঈষাণ কোণ থেকে ধেয়ে আসে ঘন কালো মেঘরাশি, যা ক্রমে ক্রমে সারাআকাশে ব্যাপ্ত হয়ে পড়ে। এইমেঘাড়ম্বরের সঙ্গে চলতে থাকে তীব্র বিদ্যুৎ ঝলকানি ও সুতীব্র মেঘগর্জন। শুরু হয় প্রবল বারিবর্ষণ। মনে হয় যেন আট দিক থেকে আটটি হাতি তাদের শুঁড় থেকে ক্রমান্বয়ে বারিবর্ষণ করে চলেছে। পৃথ্বী বুঝি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এই ধারাবর্ষণে।

নদনদীগণ কার আদেশে কী করেছিল?

নদীর কার্যকলাপ — মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাহিনিকাব্যকার মুকুন্দ চক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশটি রচিত হয়েছিল দেবী চণ্ডীর আদেশে। দেবী চণ্ডীর আদেশেই কলিাদেশের আকাশে হঠাৎ ঘনকালো মেঘরাশি সঞ্চারিত হয়ে অকালবর্ষণেরপরিস্থিতি সৃজন করেছিল। এ বর্ষণ চলেছিল ক্রমাগত সাতদিন ধরে বিরামহীনভাবে। মহাপ্লাবনে জল ও স্থল সব যেন একাকার হয়ে গিয়েছিল। তাই যেন দৈবাদেশেই নদ-নদী ফুলেফেঁপে উঠেছিল সৃষ্টি হয়েছিল পর্বতপ্রমাণ ঢেউ। যার অভিঘাতে প্রজাদের ঘরবাড়ি সব সেই সর্বগ্রাসী ঢেউ-এর মাথায় টলমল করে দুলছিল।

সোঙরে সকল লোক যে জৈমিনি। — কোথাকার লোক? কবির এমন উক্তির কারণ কী?

লোক যেখানকার — মধ্যযুগীয় কবি মুকুন্দ চক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে সকল লোক বলে যাদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তারা কলিঙ্গদেশের বা কলিঙ্গরাজ্যের অধিবাসী।

এমন উক্তির কারণ — কলিঙ্গরাজ্যের আকাশে দৈবাদেশে হঠাৎ ঘনকালো মেঘরাশিসঞ্চারিত হয় এবং দেখতে দেখতে শুরু হয় অকালবর্ষণ। কালো মেঘের বুক চিরে বিদ্যুৎ শিখার ঝলকানি লোকের মনেত্রাস সঞ্চার করে, আর তার সঙ্গে বজ্রপতনও ঘটতে থাকে। পরিস্থিতি এমন হয় যে, বিপদের চরম আশঙ্কায় প্রজারা বজ্রনিবারক ঋষি জৈমিনির নাম স্মরণ করতে থাকে।

না পায় দেখিতে কেহ রবির কিরণ। — কবির এমনমন্তব্যের কারণ কী?

এমন মন্তব্যের কারণ — মধ্যযুগের কাহিনিকাব্যকার মুকুন্দ চক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে লক্ষ করা যায়, কলিঙ্গের আকাশে হঠাৎই দুর্যোগের ঘনঘটা দেখা দেয় আকাশ কালো করা মেঘাড়ম্বরে। মেঘরাশি গম্ভীর সজ্জায় ঈষাণ কোণ থেকে ধেয়ে এসে সমগ্র আকাশ ছেয়ে ফ্যালে। সঙ্গে অবিরামবিদ্যুৎঝলক, গুরুগম্ভীর মেঘধ্বনি ও মুষলধারেবৃষ্টিপাত হতে থাকে। কালো মেঘের নিশ্ছিদ্র সমাবেশে মুহূর্তমধ্যে দিন রাত্রির পার্থক্য দূর হয়ে যায়। দিন সাতেক ধরে অবিচ্ছিন্ন বৃষ্টিপাতের ফলে কেউ সূর্যের মুখ দেখতে পায় না। এ কারণেই কবি এমন মন্তব্য করেছেন।

নিরবধি সাত দিন বৃষ্টি নিরন্তর। — কতদিন বৃষ্টি হয়েছিল?এর পরিণতি কী হয়?

যতদিন বৃষ্টি হয়েছিল – কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে যতদিন বৃষ্টি সাত দিন অবিরত বৃষ্টি হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

পরিণতি — এমন সাতদিন নিরস্তর বৃষ্টিপাতের দরুণ কলিঙ্গরাজ্যের অবস্থা একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। মুষলধারে বর্ষণ হচ্ছিল, জল ও স্থলএকাকার হয়ে গিয়েছিল। দিনরাত্রির তফাত মুছে গিয়েছিল। সূর্যকিরণ দৃষ্ট হচ্ছিল না। আশ্রয় হারিয়ে সর্পকুলও জলেভেসে গিয়েছিল। খেতের কাজ বন্ধ হয়েছিল, ঘরবাড়ি জলে ভিজে ভগ্নদশাপ্রাপ্ত হয়েছিল। বাড়ির চাল ভেদ করে ভাদ্রের তালের মতো বড়ো বড়ো শিল এসে পড়ছিল। পর্বতপ্রমাণ ঢেউ এসে মঠ-অট্টালিকা ভেঙে তছনছ করে দিচ্ছিল। ঢেউ-এর উপর ঘরগুলো যেন টলমল দুলছিল।

ভাদ্রপদ মাসে যেন পড়ে থাকা তাল। – তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

তাৎপর্য – মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মঙ্গলকাব্যকার মুকুন্দ চক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে কলিঙ্গরাজ্যে ঝড়-বৃষ্টি-বন্যাজনিত এক প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের বর্ণনা আছে। হঠাৎ আকাশ কালো করে আসা মেঘরাশি থেকে যেন অকাল ধারাবর্ষণ নেমে এসেসমগ্র কলিঙ্গদেশকে প্লাবিত করেছিল। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছিল ভাদ্রমাসের তাল পড়ার ন্যায় ভয়ানক শিলা বৃষ্টি। ঘরের চাল ভেদ করে এই শিল মেঝেতে এসে পড়ে ঘরবাড়ি নষ্ট করতে বসেছিল। বলে লেখক এমন কথা বলেছেন।

ভাদ্রপদ মাসে যেন পড়ে থাকা তাল। – কবিতায় তাল শব্দটি কী হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে? কোন্ ঘটনার প্রেক্ষিতে এই উপমা?

কবিতায় তাল শব্দের ব্যবহার – উদ্ধৃতিটিতে কবি যে তাল শব্দটি ব্যবহার করেছেন, তার কবিতায় তোল অর্থ — এক সুদীর্ঘ, ঋজু ও শাখাহীন গাছের শব্দের ব্যবহার ফলবিশেষ। ভাদ্রমাসে এটি সুপক্ব হয়ে গাছ
থেকে খসে পড়ে।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে – কলিঙ্গদেশে হঠাৎ ঘনিয়ে আসা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে শিলাবৃষ্টি। প ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত হয়েছিল। বড়ো বড়ো শিল ঘরের চাল ভেদ ক মেঝেতে পড়ছিল। একেই কবি আলোচ্য উপমা দ্বারা বুঝিয়েছেন। বৃহৎ সেইসব শিল ঘরের চাল ভেদ করে মেঝোরে, এসে পড়ছিল, তাকে উপমিত করতেই এমন উপমা ৷

ঝড়বৃষ্টি প্রকৃতির এক অপূর্ব সৃষ্টি। এটি প্রকৃতিকে এক নতুন রূপে উদ্ভাসিত করে তোলে। ঝড়বৃষ্টির তীব্রতায় প্রকৃতি যেন এক ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। কিন্তু ঝড়বৃষ্টির পর প্রকৃতি আবার তার স্বভাবিক রূপ ফিরে পায়।

এই কবিতায় কবি ঝড়বৃষ্টির তীব্রতা ও সৌন্দর্যের পাশাপাশি প্রকৃতির ঐশ্বর্য ও শক্তির কথাও তুলে ধরেছেন।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Tom Loses a Tooth

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

The North Ship

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer